ADVERTISEMENT
home / লাইফস্টাইল
ভূতের সঙ্গে এনকাউন্টার! গা ছমছমে ভৌতিক অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন পাঁচজন ভিন্ন পেশার মানুষ!

ভূতের সঙ্গে এনকাউন্টার! গা ছমছমে ভৌতিক অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন পাঁচজন ভিন্ন পেশার মানুষ!

ভূত আছে না নেই, এই নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। এক দল বলেন ভূত নেই, এগুলো আসলে মানুষের কল্পনা মাত্র। আবার এক দলের ভূতের নাম শুনলেই দাঁতকপাটি লেগে যায়! আর এর মাঝামাঝি আছেন অন্য এক দল মানুষ। ভূত (ghost) আদৌ আছে না নেই, সেই নিয়ে কোনও তর্কে আমরা যাব না। সরাসরি ভূত না দেখলেও, ভৌতিক অনুভূতি হতেই পারে। আবার অলৌকিক কিছু ঘটনাও ঘটতে পারে, যার ব্যাখ্যা সহজ নয়। তবে এই নিয়ে আমরা কথা বলেছি পাঁচজন ভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে। তাঁরা শেয়ার করেছেন তাঁদের নানা ভৌতিক (uncanny) অভিজ্ঞতার (experiences) কথা।

সেই পা জোড়া…

pexels.com

অ্যান্টিক জিনিসের প্রতি আমার বরাবরের আকর্ষণ। একবার পার্ক স্ট্রিটের এক দোকান থেকে একটা পুরনো ড্রেসিং টেবিল কিনে ফেললাম জলের দরে। সঙ্গে আয়নাও লাগানো ছিল। হঠাৎ একদিন রাতে আচমকা ঘুম ভেঙে গেল। জল খেতে উঠে চোখ গেল ড্রেসিং টেবিলের দিকে। যা দেখলাম শিরদাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল! দেখলাম আয়নায় এক জোড়া আলতা পরা পা ঝুলছে! চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে গেলাম। আমার বাড়ির লোকেরা কেউ বিশ্বাস করল না আমার কথা। কিন্তু আমি প্রায়ই ওই ঝুলন্ত পা জোড়া দেখতাম। আমার স্বামী বললেন, এটা দোকানে ফেরত দিয়ে আসতে। মন চাইছিল না। তবু গেলাম। অনেক খোঁচানোর পর মালিক জানালেন এক দম্পতির সংসারের আসবাবপত্র এসেছিল দোকানে। তিনিও বিশেষ কিছু জানেন না। তবে এটুকু শুনেছেন যে স্বামীর অত্যাচারে তিতিবিরক্ত হয়ে গলায় দড়ি দিয়েছিলেন স্ত্রী। পত্রপাঠ ওই ড্রেসিং টেবিল বিদায় করি। এত বছর হয়ে গেছে এখনও সেই আলতা পরা পায়ের কথা ভাবলেই শিউরে উঠি! 

ADVERTISEMENT

তমসা মল্লিক, মিউজিক টিচার, ফলতা 

২২ নম্বর পাতা

pexels.com

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন গবেষণা করছি। সদ্য বিয়ে হয়েছে। হঠাৎ করে ডাক এল নেদারল্যান্ড যাওয়ার। ওখানে একটি সেমিনারে আমায় পেপার পড়তে হবে। আমস্টারডামে একটা দারুণ হোটেলে থাকার ব্যবস্থা হল। আমার রুমটা বেশ ভাল, ছিমছাম গোছানো। একটা স্টাডি টেবিল আছে। আমি রুমে ঢুকে দেখলাম টেবিলের উপর একটা বাইবেল খোলা। ২২ নম্বর পাতায় একটা বুকমার্ক দেওয়া। মনে হল, এই রুমে যিনি আগে ছিলেন তিনি বোধ হয় এটা ফেলে গেছেন। পরে হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানাব এই ভেবে বইটা বন্ধ করে রেখে দিলাম এক পাশে। খুব ক্লান্ত লাগছিল তাই ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে উঠে চক্ষু চড়কগাছ। বই আবার যথাস্থানে ফিরে গেছে এবং সেই ২২ নম্বর পাতায় বুকমার্ক। অথচ আমার স্পষ্ট মনে আছে যে বইটা আমি বন্ধ করে সরিয়ে রেখেছি। সকালে পেপার পড়া ছিল। আমি বেল বাজিয়ে বেয়ারাকে ডেকে বইটা ফেরত দিয়ে লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড বিভাগে দিয়ে দিতে বললাম। ভূতে আমি বিশ্বাস করি না কোনওদিনই। তাই বিষয়টাকে গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু রাতে রুমে ঢুকে যা দেখলাম, আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেল! দেখলাম সেই বাইবেল আবার টেবিলের উপর এবং ২২ নম্বর পাতায় বুকমার্ক! দেরি না করে আবার সেই বেয়ারাকে ডেকে পাঠালাম। সে অনেক খুঁজেও লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেকশনে বইটি পেল না। অথচ সেই রুম চাবি দেওয়া থাকে! অধ্যাপকদের সঙ্গে কথা বলে সেই রাতেই রুম পাল্টে ফেললাম।      

ADVERTISEMENT

বিষ্ণুপ্রিয়া সেনগুপ্ত, অধ্যাপিকা, কলকাতা 

আশেপাশে আছে!

ফেসবুকে একটি মেয়ের সঙ্গে বছরদশেক আগে আমার আলাপ হয়েছিল। সম্পর্ক প্রেমে গড়াল। দু’পক্ষেরই বাড়ি থেকে কোনও আপত্তি ছিল না। সবই ঠিক ছিল। আমার শুধু দুটো ব্যাপারে খটকা লাগত। ও ভীষণ পোজেসিভ ছিল আর ছিল ভয়ানক উচ্চাকাঙ্ক্ষী। আমি গৃহশিক্ষকতা করি এটা ও মেনে নিতে পারত না। চাইত আমি অনেক বড় চাকরি করি। যদিও আমার মতো সাধারণ ছেলের পক্ষে সেটা সম্ভব ছিল না। আমাদের বিয়ে ঠিক হল। ও দাবি করত ব্যাঙ্কক বা মালয়েশিয়ায় হনিমুনের টিকিট কাটতে। সেটা আমার পক্ষে কিছুতেই সম্ভব ছিল না। এই নিয়ে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হত। একদিন ও আমায় ফোনে জানতে চায় যে, আমি টিকিট কেটেছি কিনা। আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিলাম আমার পক্ষে এটা সম্ভব নয়। ও ফোন রেখে দিল। সেই রাতেই কীটনাশক খেয়ে ও আত্মহত্যা করে! অনেক হয়রানি হয়েছিল আমার এবং বাড়ির লোকেদের নিয়ে। তবে ওর বাড়ির লোকেরা জানত যে, আমার কোনও দোষ নেই। বেশ কিছু বছর পর আমার বাড়ির লোকেরা বিয়ের জন্য মেয়ে খুঁজতে শুরু করে। আশ্চর্যের বিষয় হল বিয়ে পাকা হওয়ার আগেই প্রতিবারই ভেস্তে যেত! মেয়ের বাড়ির লোকেরা বলতেন, একটি মেয়ে নাকি তাঁদের ফোন করে বিয়ে ভেঙে দিতে বলে! এ-ও বলে যে, তাঁর সঙ্গে আমার বিয়ে হওয়ার কথা! আমি অনেকবার ফোন নম্বরের সূত্র ধরে সেই মেয়েকে খোঁজার চেষ্টা করেছি কিন্তু পাইনি। ফেসবুকও আর করতে পারি না। বার-বার কেউ অ্যাকাউন্ট লক করে দেয়! ও বোধ হয় আমাকে আজও মুক্তি দেয়নি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, খড়দহ 

ভালবাসার মৃত্যু হয় না

ADVERTISEMENT

pexels.com

আমি জানি না কীভাবে এই ঘটনা ব্যাখ্যা করব। আমার কলেজের প্রিয় বান্ধবী ছিল মিতালি। মিতালি আর তন্ময় প্রেম করত। পরে ওরা বিয়েও করে। আমি অন্য শহরে চাকরি করতাম বলে ওদের বিয়েতে আসতে পারিনি। অনেকদিন পরে তন্ময়ের সঙ্গে দেখা। বলল ওদের ডিভোর্স হয়ে গেছে। আমি মিতালিকে খোঁজার চেষ্টা করি কিন্তু ওরা বাড়ি পাল্টে ফেলায় সেটা আর পারিনি। অফিস যাতায়াতের পথে আমার বারবার তন্ময়ের সঙ্গে দেখা হত। সত্যি বলতে কি ওর শুকনো মুখ দেখে খুব খারাপ লাগত। আমরা পরস্পরের প্রেমে পড়ে গেলাম। যদিও মিতালির সঙ্গে আমার কোনও তুলনা হয়না। ও ছিল ডানাকাটা পরি। আর আমি নেহাতই সাদামাটা। একদিন মধ্য রাতে তন্ময়ের মা আমায় ফোন করেন। ওঁর গলা শুনেই মনে হচ্ছিল যে, উনি খুব ভয় পেয়েছেন! আমি তাড়াতাড়ি আমার বাবাকে নিয়ে ওর বাড়ি চলে যাই। গিয়ে দেখলাম তন্ময় পাগলের মতো এ ঘর ও ঘর দৌড়চ্ছে আর বলছে ‘ছেড়ে দে, আমায় ছেড়ে দে!’ কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। দিন-দিন ওর পাগলামি বেড়েই চলল। বাধ্য হয়ে মেনটাল অ্যাসাইলামে দিতে হল তন্ময়কে। পরে অন্য এক বন্ধুর কাছে শুনেছিলাম ক্যান্সারে ভুগে-ভুগে মিতালি তিন বছর আগেই মারা গেছে! আমি আর বিয়ে করিনি। 

কিঙ্কিনি চট্টোপাধ্যায়, আইটি প্রফেশনাল, কাশীপুর।

কান্নার শব্দ

ADVERTISEMENT

pixabay

শহর থেকে দূরে নিরালায় একটা ছোট্ট বাগানবাড়ি কিনেছিলাম বছর পাঁচেক আগে। ইচ্ছে ছিল প্রতি উইকেন্ডে ওখানে গিয়ে থাকব। ছেলে মেয়েরা বাইরে থাকে। আমি আর আমার স্বামী চলে যেতাম। আর কী বলব থাকা মাথায় উঠল। প্রতি রাতে শোনা যেতে লাগল গুমরে-গুমরে কান্না। এই বাড়িতে কেউ যেন খুব কষ্টে কেঁদে চলেছে। ভয়ে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠত। কিন্তু যে কাঁদত তাঁকে দেখা যেত না। বাড়িতে শান্তি-স্বস্ত্যয়ন, যজ্ঞ সব করালাম। কান্না তবু থামে না। সবাই বলল এ বাড়ি অশুভ, অপয়া, এ বেচে দেওয়াই ভাল। বিদেশ থেকে ছেলেমেয়েরাও তাই বলল। একদিন রাতে মাথায় কীরকম জানি জেদ চেপে গেল কান্নার আওয়াজ ধরে ধরে সূত্র খোঁজার চেষ্টা করলাম। আমার স্বামী ছিলেন। বাড়ির একদম পিছনে একটা বাথরুম আছে। ওখানে গিয়ে কান্নাটা থেমে গেল। আমরা দু’জন চুপ করে দাঁড়িয়ে। রাত তখন প্রায় দুটো। আবার কান্না শুরু হল। চমকে উঠলাম আমরা। আমি আস্তে করে বাথরুমের দরজা খুললাম। কেউ নেই, তবে কান্না এবার একটু মৃদু হয়েছে। আমি আলতো করে দেওয়ালে কান পাতলাম। আমার স্বামীকে বললাম “চলো, যা বোঝার বুঝে গেছি।” পরের দিন লোক ডাকিয়ে বাথরুমের দেওয়াল ভাঙতে বললাম। খানিক ভাঙার পরেই বেরিয়ে পড়ল একটা কঙ্কাল! পুলিশ এল। পরীক্ষা করে জানা গেল বছর বাইশের একটা মেয়ের কঙ্কাল। বছর কুড়ি পুরনো। সবাই আমার বুদ্ধির খুব তারিফ করল। আমি ঈশ্বরের কাছে সেই অজানা অচেনা মেয়েটির আত্মার শান্তি কামনা করলাম। তবে কান্নার আওয়াজ আর পাইনি। 

শম্পা চক্রবর্তী, গৃহবধূ, প্রতাপাদিত্য রোড

 

ADVERTISEMENT

POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!

আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু! 

12 Jul 2019

Read More

read more articles like this
good points

Read More

read more articles like this
ADVERTISEMENT