বাঙালি মেয়েরা বিয়ে-বউভাতে বেনারসি শাড়ি পরবে, এই প্রথা কবে, কে চালু করেছিলেন তা আমার জানা নেই, তবে ইদানীং কিন্তু অনেক বঙ্গললনাই বিয়েতে বেনারসি পরলেও, বউভাতে (reception) অন্য কোনও শাড়ি পরতেই বেশি পছন্দ করেন। অনেকেই আবার শাড়ি পরার কনসেপ্টটাই বাতিল করে দিয়েছেন, তাঁরা লেহঙ্গা-চোলি অথবা ফিউশন গাউন পরেন। না, আমি একবারের জন্যও বলছি না যে, আপনি আপনার বউভাতে শাড়ি পরবেন না। শাড়ি পরুন না, তবে বেনারসি বাদে আরও কত শাড়ি রয়েছে, সেগুলোও কিন্তু ট্রাই করতে পারেন! অন্তত বিয়ের পরেও অন্য ধরনের শাড়িগুলো পরতে পারবেন, বাক্সবন্দি হয়ে থাকবে না! আপনি কী-কী শাড়ি আপনার বউভাতে পরতে পারেন, এক ঝলক দেখে নিন বরং…
আরও পড়ুনঃ বেনারসির ব্লাউজের ডিজাইন
১। বালুচরী
মুর্শিদাবাদের সনাতনী শাড়ি বলতে বালুচরীকেই বোঝায়! যদিও অনেকেই তর্ক করেন যে, মুর্শিদাবাদের শাড়ি মানে হয় মুর্শিদাবাদি সিল্ক, তবে বালুচরির আভিজাত্যই আলাদা! বালুচরীর আসল কাজটাই হল আঁচলে। সুতোর নক্সায় ফুটিয়ে তোলা হয় পুরাণের কোনও কাহিনি অথবা প্রকৃতির কোনও দৃশ্য। নানা রঙের সুতোর ভারী কাজ থাকে এই শাড়িতে। শাড়ির জমিতেও থাকে ছোট ছোট বুটি বা কল্কা।
২। স্বর্ণচরী
স্বর্ণচরি হল বালুচরীরই জাতবোন! একইরকমভাবে বোনা হয় এর নকশাও। বালুচরিতে যেমন সুতোর কাজ থাকে, স্বর্ণচরিতে থাকে সোনালি জরির কাজ, এজন্যই খুব সম্ভবত এই শাড়ির নাম স্বর্ণচরী। বউভাতে স্বর্ণচরী পরলে এবং মানানসই সাজলে কিন্তু একটা সাবেকি লুকও আসবে, আবার যেহেতু শাড়িগুলো খুব বেশি ভারী হয় না, কাজেই কষ্টও হবে না।
৩। জামদানি
যদিও লোকমুখে শোনা যায়, ঢাকাই শাড়ি, তবে এই ধরনের ফিনফিনে শাড়িগুলির আসল নাম কিন্তু জামদানি। ফুলের নকশা এবং কল্কার করা কাজের জন্যই খুব সম্ভবত এই শাড়িটির নাম জামদানি। বাংলাদেশের ঢাকায় এই শাড়ি বোনার প্রচলন শুরু হয় বলে একে ঢাকাই জামদানি বলা হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গে যে জামদানী শাড়িগুলো পাওয়া যায় সেগুলো কিন্তু আদৌ ঢাকাই জামদানি নয়; শান্তিপুরি এবং ধনেখালি জামদানি।
৪। কাঞ্জিভরম
যদিও এই শাড়িটির জন্ম আমাদের বঙ্গদেশে নয়, তবুও বাঙালিদের বিয়ে-বউভাত বা অন্য অনেক অনুষ্ঠানে দাক্ষিণাত্যের এই শাড়িটি কিন্তু খুবই জনপ্রিয়। তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরম অঞ্চলের শাড়ি এটি, কাজেই অনেকেই এই শাড়িটিকে কাঞ্চিপুরম শাড়িও বলেন। উজ্জ্বল এবং ভারী জমকালো কাজের এই শাড়িটি কিন্তু আপনি অনায়াসের বউভাতের সন্ধের জন্য বেছে নিতে পারেন বেনারসির বদলে।
৫। পৈঠানি
মহারাষ্ট্রের সনাতনী শাড়ি হল পৈঠানী। রঙিন, জমকালো কাজ এবং আঁচলে বড়-বড় ময়ূরের নকশা – এই হল পৈঠানীর বিশেষত্ব। আপনি চাইলে মহারাষ্ট্র থেকে আনিয়ে নিতে পারেন আসল পৈঠানী, কারণ কলকাতায় বা পশ্চিমবঙ্গে যে শাড়িগুলো পৈঠানী বলে পাওয়া যায়, সেগুলো কিন্তু আসল পৈঠানী নয়।
৬। তসর
হালকা সোনালি রঙের খসখসে এই শাড়িটি কিন্তু আদৌ পশ্চিমবঙ্গের নয়। আমাদেরই প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের তৈরি এই শাড়ি কবে কীভাবে বঙ্গললনাদের মন জয় করে একদম তাঁদের আলমারিতে জায়গা দখল করে নিয়েছে তা অবশ্য জানা যায়নি। আর সেসব কথা জেনে হবেই বা কী! বউভাতে ছিমছাম সাজতে চাইলে পরতে পারেন এই শাড়িটি। ইদানীং কিন্তু ডাই করা তসরও পাওয়া যায়, কাজেই যদি ইচ্ছে হয় তা হলে রঙিন তসরও পরতে পারেন। সঙ্গে কিন্তু অবশ্যই ফুলের মালা দেবেন খোঁপায়!
কলকাতার সেরা কয়েকটি শাড়ির দোকান
বউভাতে কেমন শাড়ি পরতে পারেন তার একটা ধারণা না হয় পেলেন, কিন্তু কিনবেন কোত্থেকে? হদিশ দিলাম আমরাই!
ইন্ডিয়ান সিল্ক হাউজ
ঠিকানা- কলেজ স্ট্রিট (বর্ণপরিচয়) গেট নং-২, মহাত্মা গান্ধী রোড, কলকাতা- ৭০০০০৭
মঙ্গল থেকে শনি সকাল সাড়ে দশটা থেকে সন্ধে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত খোলা থাকে, সোমবার বেলা দুটো থেকে সন্ধে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত খোলা থাকে এবং রবিবার বন্ধ থাকে।
ইন্ডিয়ান সিল্ক হাউজ এক্সক্লুসিভ
ঠিকানা- পি-৯২, লেক রোড, লেক টেরেস, বালিগঞ্জ কলকাতা -৭০০০২৯
মঙ্গল থেকে শনি সকাল সাড়ে দশটা থেকে সন্ধে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত খোলা থাকে, সোমবার বেলা দুটো থেকে সন্ধে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত খোলা থাকে এবং রবিবার বন্ধ থাকে।
আদি ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়
ঠিকানা- মিরানিয়া গার্ডেন্স ২, লেক টেরেস, বালিগঞ্জ কলকাতা -৭০০০২৯
প্রতিদিন সকাল সাড়ে দশটা থেকে সন্ধে সাড়ে আটটা পর্যন্ত খোলা থাকে।
কনিষ্ক
ঠিকানা- ২,১, হিন্দুস্তান রোড, ডোভার টেরেস, বালিগঞ্জ, কলকাতা – ৭০০০১৯
সোম থেকে শনি সকাল সাড়ে দশটা থেকে সন্ধে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত খোলা থাকে এবং রবিবার বন্ধ থাকে।
আদি মোহিনীমোহন কাঞ্জিলাল
ঠিকানা- ৭৯/২, মহাত্মা গান্ধী রোড, কলেজ স্ট্রিট, কলকাতা – ৭০০০০৯
প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে সন্ধে আটটা পর্যন্ত খোলা থাকে।
মূল ছবি সৌজন্যে – ইনস্টাগ্রাম
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!