ছোটবেলায় অনেক বন্ধু বা আত্মীয়দের বাড়ি যেতে চাইতাম না কারণ তাদের বাড়িতে পোষ্য (pet) ছিল. কিন্তু বড়ো হবার পর ব্যাপারটা বদলে গেলো, নিজেই যখন প্রথমবার (first time) দু’টি পোষ্য (pet) নিয়ে এলাম. তবে যেহেতু কোনোরকম পুর্ব-অভিজ্ঞতা ছিলোনা, তাই ছোট পোষ্য দু’টিকে (pet) বাড়ি আনার পর নানা রকম চ্যালেঞ্জের (challenges) মোকাবিলা আমাকেও করতে হয়েছে. যা হাতের সামনে পাচ্ছে সেটাই ঝরে কামড়ে (biting) ছিঁড়ে (tearing) দিচ্ছে, সারা সন্ধ্যে ঘুমিয়ে রাতভর নিজেরাও জেগে খেলছে আর আমাকেও জাগিয়ে রাখছে, আবার সকাল হতে না হতেই তাদের খাওয়ানো (feeding), দিনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ওষুধ (medicines) খাওয়ানো (feeding) – এসব তো ছিলই, সবচেয়ে বড়ো সমস্যা (challenges) ছিল পোষ্য দু’জন (dog) যখন তখন যত্রতত্র টয়লেট (toilet) করে দিতো. সেসব দিন গেছে বটে! যাই হোক, তারা এখন বড়ো হয়েছে. বাধ্য বাচ্চার মতো সব কথা শোনে. কিন্তু আমি পরে ভেবে দেখেছি যে অভিজ্ঞতা (experience) না থাকলে বাড়িতে পোষ্য (pet) নিয়ে আসাটা এবং তাদের সমস্ত দায়িত্ব নেওয়াটা (responsibilities) বেশ কঠিন কাজ (challenges)! আপনিও কি ঠিক করছেন যে বাড়িতে পোষ্য (pet) নিয়ে আসবেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি পড়ুন, বাড়িতে প্রথমবার (first time) পোষ্য (pet) আনার আগে কি কি বিষয় মাথায় রাখা উচিত, সেটা এখানে বলা আছে
প্রথমবার (first time) পোষ্য (pet) আনবার আগে এই ৭ টি কথা অবশ্যই মাথায় রাখুন
১. আপনি কি একটি পোষ্যের (pet) দায়িত্ব (responsibilities) নিতে তৈরী?
একটি পোষ্যকে (dog) বাড়িতে নিয়ে মানে কিন্তু শুধু তার সাথে খেলা নয়, আপনাকে অনেক বড়ো একটি দায়িত্বের (responsibilities) জন্য প্রস্তুত হতে হবে. আপনার পোষ্যকে (pet) হাঁটাতে (walk) নিয়ে যাওয়া, তাকে সময় মতো খাবার (feeding) দেওয়া, ওষুধ খাওয়ানো, আরো অনেক কিছু. নিজেকে আগে প্রশ্ন করুন, যে আপনি সেই দায়িত্ব (responsibilities) নিতে তৈরী কিনা? যদি আপনার উত্তর ‘না’ হয়, এবং আপনার বাড়িতে এমন কেউ (family member) না থাকে যিনি আপনার হয়ে ওই কাজ গুলো করে দিতে পারবেন, তাহলে দয়া করে কোনো পোষ্য (pet) আনবেন না বাড়িতে.
২. আপনি কি পোষ্যটিকে (pet) নিজের বাড়ির সদস্য (family member) হিসেবে রাখতে পারবেন?
আপনার বন্ধু বাড়িতে একটি ছোট কুকুরছানা (dog) নিয়ে এসেছে, তাই আপনারও পোষ্য (pet) হিসেবে কুকুরছানা (dog) চাই; কিংবা ইন্টারনেটে বিড়ালছানার (cat) ছবি বা ভিডিও দেখে আপনার এতো কিউট মনে হয়েছে যে আপনিও ভাবছেন বিড়াল (cat) পুষবেন – এরকম যদি পরিস্থিতি হয়, তাহলে আগে থেকেই বলে রাখি, প্লিস কুকুরছানা (dog) বা বিড়ালছানা (cat) বাড়িতে আনবেননা; যদি না আপনি তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে যত্ন করতে পারেন. কারণ পোষ্য (pet) হিসেবে কুকুর (dog) বা বিড়াল (cat) বেশিরভাগেরই প্রথম পছন্দ হলেও এটা জেনে রাখা ভালো যে এই পোষ্যগুলি (pet) কিন্তু নিজের প্রভুকে কিছুতেই কাছ-ছাড়া করে না. কখনো খাটে উঠবে তো কখনো সোফায় বসে. সত্যি কথা বলতে কি আমি মাঝেমাঝে একা ওয়াশরুমেও যেতে পারি না. বাড়িতে একটা কুকুর (dog) বা বিড়াল (cat) আনার আগে ভালো করে ভেবে নিন যে আপনার জীবনযাত্রায় কি আপনার পোষ্যদের (pet) আপনি এডজাস্ট (adjustment) করতে পারবেন?
৩. পোষ্য Adopt আগে ভেটের (Vet) সাথে আলোচনা করুন
পেটশপ (pet shop) থেকে একটা কুকুরছানা (dog) বা বিড়ালছানা (cat) কেনার থেকে adopt করা অনেক ভালো. অন্তত একজন হলেও একটা পরিবার পাবে. কিন্তু কুকুরছানা (dog) বা বিড়ালছানা (cat) adopt করার আগে পশু চিকিৎসক অর্থাৎ ভেটের (vet) সাথে খুব ভালোভাবে আলোচনা করে নিন. ধরুন আপনি সারাদিন বাড়িতে থাকেন না কিন্তু আপনি একটি জার্মান শেফার্ড (German Shepherd Dog) নিয়ে এলেন, তাহলে কিন্তু মুশকিল, কারণ জার্মান শেফার্ডের (German Shepherd Dog) সাথে বেশ সময় কাটাতে হয়, তাকে বেশিক্ষন বেঁধে রাখা মুশকিল এবং বেশিরভাগ সময়টা যদি জার্মান শেফার্ডকে (German Shepherd Dog) একা রাখা হয় তাহলে পোষ্যটি (pet) খিটখিটে হয়ে যেতে পারে কারণ জার্মান শেফার্ডের (German Shepherd Dog) মধ্যে ‘সেপারেশন এংজাইটি’ (separation anxiety) অর্থাৎ তার মালিকের থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার একটা ভয় ভীষণভাবে কাজ করে.
৪. আপনার বাড়িতে পোষ্য (pet) কি Comfortable ফীল করবে?
আপনি হয়তো জোর করে একটা কুকুরছানাকে (dog) পোষ্য (pet) হিসেবে নিয়ে এলেন, কিন্তু আপনার বাড়ির লোক খুব একটা সেটা পছন্দ করছেন না এবং কুকুরছানাটিকে (dog) তারা সময় দেন না – এই অবস্থায় আপনি কি করবেন? কিংবা ধরুন আপনার ট্রান্সফারেবল চাকরি, আর আপনি পোষ্য (pet) নিয়ে আসতে চান. কিন্তু ধরুন যখন আবার ২ বছর বা ৩ বছর বাদে আপনার অন্য কোথাও ট্রান্সফার হয়ে গেলো তখন হয় আপনি আপনার পোষ্য কুকুরটিকে (dog) একা ফেলে চলে গেলেন কিংবা কোনো শেল্টারে দিয়ে এলেন. এটা কি করণীয়? না তো! এরকম কোনো পরিস্থিতি জীবনে ঘটতে পারে কিনা, সেটা ভেবে পোষ্য (pet) আনুন.
ধরে নিলাম এরকম কোনো পরিস্থিতির সম্মুখীন আপনাকে বা আপনার প্রিয় পোষ্য কুকুরটিকে (dog) হতে হবে না. তবুও যখন বাড়িতে পোষ্য হিসেবে কুকুরছানা (dog) আনবেন, কয়েকটা জিনিস মাথায় রাখবেন.
- যেখানে সেখানে চ্যুয়িং গাম, ওষুধের স্ট্রিপ, এলুমিয়াম ফয়েল বা সিগারেটের বাট ফেলবেন না. এটা কুকুরের (dog) পেটে চলে গেলে অনেক বড়ো ক্ষতি (deadly) হয়ে যেতে পারে.
- খেয়াল রাখবেন যেন আপনার পোষ্যটির (pet) মুখে কোনোভাবেই চুল (human hairs) না যায়.
- বাড়িতে যেখানে সেখানে ইলেক্ট্রিক তার (electrical wires, chargers, earphones) কিংবা পর্দা ঝোলানোর রড রাখবেন না.
- বাড়িতে বা বাগানে যদি কোনো বিষাক্ত গাছ (toxic plants) থাকে, এখনই তা উপড়ে ফেলুন.
- কোনো ক্যামিক্যালযুক্ত বস্তু আপনার পোষ্য কুকুরছানা (dog) বা বিড়ালছানার (cat) হাতের নাগালে রাখবেন না. আপনার ছোট্ট পোষ্যটি (pet) অবোধ, আপনাকেই দায়িত্বশীল (responsibilities) হতে হবে.
- ফিনাইল বা ডেটলের বদলে নুন দিয়ে ঘর মুছুন. কারণ একফোঁটা ফিনাইল যদি কুকুরছানা (dog) বা বিড়ালছানার (cat) পেটে কোনোভাবে চলে যায় তা মারাত্মক (deadly) হতে পারে.
- খেয়াল রাখবেন আপনার বাগানের ঘাস থেকে যেন পোষ্যের (dog) গায়ে পোকা (ticks and warms) না হয়. কিংবা আপনার বাড়িতে যদি কোনো পাখি পোষ্য (pet) হিসেবে থাকে তাহলে তার মল (poop) যেন কোনোভাবেই ছোট কুকুরছানাটির (dog) পেটে না যায়. ঘাসের পোকা বা পাখির মল থেকে কুকুরদের ‘পার্ভ’ (Parvo) নামের একটি অসুখ হতে পারে যেটি মারাত্মক (deadly).
৫. পোষ্যের (pet) খাবার সম্বন্ধে জেনে নিন
প্রথমবার (first time) যখন বাড়িতে পোষ্য (pet) হিসেবে কুকুরছানা (dog) আনবেন, মাথায় রাখবেন যে তাকে কিন্তু বারেবারে খাওয়াতে (feeding) হবে. বাড়িতে যথেষ্ট পরিমানে খাবার (dog food) মজুত রাখুন. অনেক পোষ্য (pet) আছে খাওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা করে না, কিন্তু আবার অনেককেই খাওয়ানো (feeding) মানে একটা যুদ্ধ. আপনি যদি বাজার থেকে ডগ ফুড (dog food) এনে খাওনোর কথা ভাবেন, তাহলে তা কেনার সময় খেয়াল রাখবেন যে আপনি সঠিক বয়েসের ডগ ফুড (dog food) কিনছেন কিনা. একটু ভেঙে বলছি, ধরুন আপনার পোষ্য কুকুরটি (dog) ১ মাস কিংবা ২ মাসের, তার জন্য কখনোই ‘এডাল্ট’ (adult) ডগ ফুড (dog food) কিনবেন না; আবার ধরুন আপনি পোষ্য (pet) হিসেবে পাগ (pug) নিয়ে এসেছেন, তাহলে ‘স্মল ব্রিড’-এর (small breed) ডগ ফুড (dog food) কিনুন.
আবার আপনি যদি বিড়ালকে (cat) পোষ্য হিসেবে পোষেন তাহলে কিন্তু তার আলাদা খাবার (cat food), তাকে ডগ ফুড (dog food) দেওয়া যাবে না.
এ তো গেলো রেডিমেড ডগ ফুডের (dog food) কথা. কিন্তু বেশিরভাগ পশু চিকিৎসক পরামর্শ (vet) দেন, বাড়িতে রান্না করা খাবার (home cooked food) পোষ্যকে খাওয়ানোর জন্য. যদি আপনিও আপনার কুকুর (dog) বা বিড়ালকে (cat) বাড়িতে রান্না করা খাবার (home cooked food) খাওয়াতে চান (feeding) তাহলে রান্নায় ভুল করেও তেল দেবেন না. মনে রাখবেন, আমরা পোষ্যটিকে (dog) ভালোবাসি বা পাশে নিয়ে শুই বলে কিন্তু ওরাদেরকে আমাদের খাবার খাওয়াতে (feeding) পারবো না! তেল-মশলাযুক্ত খাবার খেলে প্রথমত কুকুর (dog) বা বিড়ালের (cat) লিভারের সমস্যা দেখা দেয় এবং গায়ের লোম (shedding) উঠে যায়.
প্রথমবার (first time) যারা বাড়িতে পোষ্য (pet) আনেন, সত্যিই তাদের সঠিক ধারণা থাকে না যে তার পোষ্যটিকে কতটা খাবার দেওয়া উচিত. অনেক সময়েই আমরা বেশি বা কম খাবার দিয়ে ফেলি. তাই আপনার আদরের পোষ্যকে (pet) কতটা খাবার দেবেন এবং কখন কখন খেতে দেবেন সেটা পশু চিকিৎসক (vet) কিংবা অন্য কোনো অভিজ্ঞ ব্যক্তির (experienced dog parents) থেকে জেনে নিয়ে তার পরেই খেতে দিন.
৬. এডজাস্ট (adjustment) করতে হবে, এটা মাথায় রাখুন
নতুন কোনো জায়গায় গেলে আমাদের যেমন এডজাস্ট (adjustment) করতে সময় লাগে, ঠিক সেরকমই যখন আপনি বাড়িতে একটি চারপেয়েকে (dog) পোষ্য হিসেবে প্রথমবার (first time) নিয়ে আসেন, তখন এটা বুঝতে হবে যে সেই ছোট্ট বাচ্চাটিরও একটা নতুন বাড়িতে নতুন পরিবেশে মানিয়ে (adjustment) নিতে সময় লাগবে, কাজেই তার ওপরে কোনো কিছু চাপিয়ে দেবেন না. আপনাকেও অনেক এডজাস্ট (adjustment) করতে হবে, এটা মাথায় রাখুন. কুকুরছানারা (dog) কিন্তু রাত্রে মাঝেমাঝেই উঠে কাঁদে বা খেলতে চায়. আমার মনে আছে যখন আমার পোষ্য (pet) দুটি ছোট ছিল প্রতিরাতে তারা ঠিক একটা নির্দিষ্ট সময়ে উঠতো সেই সাথে আমাকেও জাগিয়ে তুলতো. তাদেরকে ঘুম পাড়িয়ে যখন ওদের বিছানাতে শোয়াতাম ঠিক উঠে পড়তো আর কাঁদতো. আবার কোলে নিয়ে ঘুম পারালে ঘুমোতো. এভাবে মোটামুটি সারা রাত জেগে থাকার পর সকালে আমি যখন ঘুমোতে যেতাম, তখন আবার তারা দুজন (dog) উঠে খেলতে আরম্ভ করে দিতো. তাই বলছি, আপনি কি এগুলোর জন্য প্রস্তুত?
শুধু যে রাত জাগতে হবে তা কিন্তু না, যখন কুকুরছানা (dog) বা বিড়ালছানা (cat) ছোট থাকে অর্থাৎ যখন তাদের নতুন দাঁত ওঠে তখন এদের কামড়ানোর (biting) প্রবণতা বেড়ে যায়. হাতের সামনে যা পায়, সেটা খবরের কাগজ হোক জামা-কাপড় হোক, বাটি-ঘটি- জুতো যাই হোক, এরা সেটা নিয়ে কামড়াতে (biting) থাকে. তবে সব থেকে বেশি এরা কিন্তু মালিকের হাত কামড়াতে (biting) ভালোবাসে. কাজেই প্রচুর আঁচড় (scratching) এবং কামড়ের (biting) জন্য প্রস্তুত হন.
আপনি যদি প্রথমবার (first time) পোষ্য (pet) আনেন, মনে রাখবেন এডজাস্টমেন্ট (adjustment) আপনাকেই বেশি করতে হবে. কারণ আপনি তাকে নিয়ে এসেছেন, সে নিজে থেকে আসেনি আপনার বাড়িতে; দ্বিতীয়ত আপনার ছোট্ট পোষ্যটি (dog) অবোধ.
৭. পোষ্যকে (pet) ট্রেনিং (basic training) দিতে হবে
আপনি পোষ্য (pet) হিসেবে মাছ, কচ্ছপ, পাখি কিংবা বিড়াল আনলে তাকে বেসিক ট্রেনিং (basic training) দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই, কিন্তু যে মুহূর্তে আপনি কুকুর (dog) আনার কথা ভাববেন, মাথায় রাখবেন যে কুকুরকে (dog) কিন্তু বেসিক ট্রেনিং (basic training) দিতেই হবে. যেমন ধরুন, নির্দিষ্ট জায়গায় টয়লেট করা, নির্দিষ্ট জায়গায় খাওয়া, নির্দিষ্ট সময়ে হাঁটতে যাওয়া, প্রতিদিনের এক্সারসাইজ, কমান্ড ট্রেনিং – সবই কিন্তু দিতে হবে.
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!