এই বিষয় নিয়ে কথা বলা বেশ স্পর্শকাতর। সত্যি কথা বলতে গেলে, এই আলোচনা কিছুদিন আগেও প্রাসঙ্গিক ছিল না। বিয়ের পরে ভারতীয় মেয়েদের স্বামীর পদবি নেওয়াটাই চিরকাল ধ্রুব সত্য বলে জেনে এসেছি আমরা। সেই নিয়মের পরিবর্তনের প্রয়োজন আদৌ আছে, দেখবেন, এখনও এই কথা অনেককে বোঝাতে রীতিমতো মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হবে! বিয়ের পরে শ্বশ্রূকুলের পদবি (surname) নামের শেষে না জুড়লে নাকি তাঁদের উপযুক্ত সম্মান দেখানো হয় না, যাঁরা সেটা করেন না, তাঁরা নাকি সাহেবি কেতায় অভ্যস্ত, ওসব নাকি সাধারণ, মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারে একেবারেই চলে না, এমন যুক্তি দেখাবেন অনেকে। আর এখানে আরও একটা কথা বলে রাখা জরুরি। আমরা কিন্তু একেবারেই এই ধারা সঠিক নাকি বেঠিক, সেই বিষয়ে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করছি না। শুধুমাত্র আপনাদের সামনে সুবিধে-অসুবিধেগুলো (advantages-disadvantages) তুলে ধরছি। আপনারা বুদ্ধিমতী, এখান থেকে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছবেন, সেটা একান্তভাবে আপনাদের নিজস্ব…
১. বিয়ের পরে পদবি পাল্টানোর সুবিধে
পক্ষের গল্প দিয়েই আলোচনা শুরু করা যাক। যদিও ভারতীয় আইনে কোথাও লেখা নেই যে, বিয়ের পরে স্বামীর পদবি নেওয়া বিবাহিতা ভারতীয় মহিলাদের আইনত উচিত, কিন্তু এটাই আমাদের দেশে প্র্যাকটিস এবং বেশিরভাগ মহিলারা সেটাই করে থাকেন…
- বিয়ের পরে পদবি পরিবর্তন এতটাই স্বাভাবিক যে, সেটা না করলেই কেমন যেন বিসদৃশ ঠেকে! তাই আপনি যদি পদবি পাল্টে নেন, তা হলে লোকচক্ষুর অযাচিত কৌতূহলের হাত থেকে যে বাঁচবেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
- যেহেতু বিয়ের পরে মিসেস লেখাটা একরকম মেনেই নেওয়া হয়েছে আমাদের সমাজে, তাই এক্ষেত্রেও আপনার সুবিধেই হবে। লোককে বেশ ভারীক্কি চালে ‘আমি হলাম মিসেস অমুক’ বলে স্বামী (husband) গর্বে গরবিনী হওয়ার সুযোগটা অনেকেই ফস্কাতে চান না!
- আজকাল আবার অনেকে মেডেন নেম, মানে, কুমারী অবস্থায় নিজের নামের শেষে স্বামীর পদবিটুকু জুড়ে শান্তি পান। হাঁটতে পারেন সেই পথেও। তাতে সাপও মরবে আবার লাঠিটিও অটুট থাকবে!
- বিয়ের পরে পদবি না পাল্টানোজনিত শ্বশুরবাড়ির চাপের সম্মুখীন হতে হবে না। তাতে মানসিক চাপও হবে না, সাংসারিক শান্তিও বজায় থাকবে।
বিয়ের পরে পদবি পাল্টে ফেলার অসুবিধে
সবকিছুরই যখন ভাল-মন্দ, দু’দিকই থাকে, তখন পদবি পাল্টানোরই বা থাকবে না কেন, বলুন! এবার অসুবিধের দিকগুলো একটু দেখে নেওয়া যাক…
- আইডেন্টিটির সমস্যা! কাল অবধি আপনি ছিলেন প্রিয়ঙ্কা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিয়ের পর থেকে আপনাকে হতে হল প্রিয়ঙ্কা সামন্ত! কী চাপ ভাবুন দিকি। এক তো নিজেকে পাল্টাতে হচ্ছে, ঘরবাড়ি পাল্টাতে হচ্ছে, তার উপর নামটাও আর নিজের রইল না! এমনকী, এর ফলে নিজের সইটাও পাল্টে ফেলতে হবে। অসুবিধে হওয়ারই তো কথা, তাই নয় কী?
- সব সরকারি কাগজপত্রে নাম পাল্টানোর একটা দীর্ঘ লড়াইয়ের জন্য় তৈরি হোন। ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, পিপিএফ, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি যেখানে-যেখানে আপনি বিয়ের আগের নামে জ্বলজ্বল করছিলেন, সেখানে-সেখানে আবার নতুন করে নিজেকে চেনান। এই চেনানোর প্রসেসটি যে কী কষ্টকর, বিশেষত যাঁরা চাকরিবাকরি করেন তাঁদের জন্য, তা যাঁরা করেছেন, তাঁরাই জানেন!
- আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশিরভাগ লোকেরই উপস্থিতি বেশ মজবুত। সেখানে যদি নিজের আগের নামে প্রোফাইল খুলে থাকেন, তা হলে সেটিরও পরিবর্তন প্রয়োজন।
- তথাকথিত প্রগতিশীল বন্ধুসমাজের কাছ থেকে একটি জ্বালাধরানো হ্যাটা খাওয়ার জন্যও নিজেকে তৈরি রাখবেন! তাঁরা আপনাকে শুধু যে এর কুফলগুলি শোনাবেন তা-ই নয়, আপনার মতো শিক্ষিত মহিলার কাছ থেকে এমন অর্বাচীন সিদ্ধান্ত যে তাঁরা একেবারেই এক্সপেক্ট করেননি, সেটাও ঠারেঠোরে ভাল করেই বুঝিয়ে দেবেন!
উপসংহার
এবার আসি শেষের কথায়। দেখুন, আবারও বলছি, বিয়ের পরে আপনি পদবি পাল্টবেন নাকি পাল্টাবেন না, সেটা একান্তভাবেই আপনার নিজস্ব সিদ্ধান্ত। সেখানে পরিবার তো দূর স্থান, আইনও আপনাকে বাধ্য করতে পারে না। ফলে যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তা ভেবেচিন্তে নেবেন। আর মনে রাখবেন, এই সিদ্ধান্ত একবারেরই। বারবার তো আর নাম-পদবি পাল্টানো সম্ভব নয়!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এসে গেল #POPxoEverydayBeauty – POPxo-র স্কিন, বাথ, বডি এবং হেয়ার প্রোডাক্টস নিয়ে, যা ব্যবহার করা ১০০% সহজ, ব্যবহার করতে মজাও লাগবে আবার উপকারও পাবেন! এই নতুন লঞ্চ সেলিব্রেট করতে প্রি অর্ডারের উপর এখন পাবেন ২৫% ছাড়ও। সুতরাং দেরি না করে শিগগিরই ক্লিক করুন POPxo.com/beautyshop-এ এবার আপনার রোজকার বিউটি রুটিন POP আপ করুন এক ধাক্কায়…