নাসা যখন মঙ্গলগ্রহে স্যাটেলাইট পাঠিয়েছিল, তখন খরচ হয়েছিল মাত্র ৬,০০০ কোটি টাকা! ভারতে ইসরো (ISRO) যখন মঙ্গলযান পাঠায়, তখন সেই প্রোজেক্টর খরচ ছিল ৪৫০ কোটি টাকা!
ছোট্ট করে বলতে গেলে, এই তথ্যটুকুর উপরেই ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে অক্ষয়কুমারের (Akshay Kumar) সাম্প্রতিক ছবি মিশন মঙ্গল-এর (Mission Mangal) গল্প! অবশ্য শুধু ইসরোর বিজ্ঞানীদের সাফল্যই নয়, এই ছবির গল্পের মাধ্যমে অক্ষয়কুমার স্যালুট জানাচ্ছেন সেই মহিলা ভারতীয় বিজ্ঞানীদের টিমকেও, যাঁরা এই অসাধ্য সাধন সম্ভব করেছিলেন! সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে এই ছবিটির ট্রেলর এবং তারপরই নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে ফিল্মের মহিলা বিজ্ঞানীদের (scientists) নিয়ে একটি ছবি পোস্ট করে অক্ষয় আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন তাঁদের কথা, যাঁরা ভারতের মঙ্গল অভিযানকে সফল করার পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন!
ফিল্মের গল্প শুরু করার আগে একবার ছোট্ট করে শুনে নেওয়া যাক ভারতের মঙ্গল অভিযানের সেই দুর্দান্ত গল্পের কথা।
ইসরোর মঙ্গল অভিযানের গপপো
৫০০ জন বিজ্ঞানীর একটি দল নিয়ে যখন মঙ্গল অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করে এদেশের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো, তখন সেই দলের অনেকগুলি মুখ্য পদে রাখা হয়েছিল মহিলা বিজ্ঞানীদের! দেখে অনেকেই ভুরুও কুঁচকেছিলেন! কিন্তু দেড় বছরের মধ্যে অসাধ্য সাধন করে যখন তাক লাগিয়ে দেন তাঁরা, তখন সেই নিন্দুকেরাই আবার সাবাশিও দেন! কাঁরা ছিলেন সেখানে? নন্দিনী হরিনাথ এবং ঋতু করিঢাল সামলেছিলেন এই মিশনের অপারেশনস-এর দায়িত্ব। এমনকী, স্পেসক্রাফটের নকশার খুঁটিনাটি, মঙ্গলে পাড়ি দেওয়ার সময় তার অরবিটে পৌঁছনোর জন্য জটিল অঙ্ক, সবই টিম কষেছিল এঁদের কড়া তত্ত্বাবধানেই। অন্যদিকে মৌমিতা দত্ত এবং মিনাল সম্পত এই কাজে প্রয়োজন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি তৈরির দায়িত্বে ছিলেন। এঁরা রেকর্ড সময়ে এবং বেঁধে দেওয়া বাজেটের মধ্যে যখন মঙ্গলযানের কাজ সম্পন্ন করেন, তখন তা নিয়ে স্টোরি করেছিল অনেক মিডিয়াই। পরে নানা সাক্ষাৎকারে এই মহিলা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, তাঁরা প্রত্যেকেই বিবাহিতা। ফলে এত অল্প সময়ে ঘরে-বাইরে, দুই-ই সামাল দিয়ে এত বড় একটি মিশন সফল করতে রীতিমতো মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়েছে তাঁদের। অনেককে দিনের পর দিন পরে থাকতে হয়েছে বেঙ্গালুরুর রিসার্চ সেন্টারে! আবার মিডিয়ায় তাঁদের নিয়ে হইচই অনেকসময়ই ভাল চোখে দেখেননি তাঁদের পুরুষ সহকর্মীরা! “সত্যি কথা বলতে গেলে, আমাদের নিয়ে শোরগোলটা তাঁদের ভাল না লাগাটাই উচিত! কারণ, তাঁরাও তো আমাদের সমান পরিশ্রমই করেছেন, তাই না?” পরে হাসিমুখে বলেছিলেন নন্দিনী হরিনাথ। তবে একটা ব্যাপারে কিন্তু ইসরোর সকলেই একমত। সেটা হল, মেয়েদের অঙ্ক করার ক্ষমতা অনেকটাই বেশি। আর তাঁদের নির্ভুল অঙ্কের উপরই আসলে টিকে ছিল এই মিশনের সাফল্য! আর সেই কাজে একচুলও ভুল না করে তাঁরা ইংরেজির চালু প্রবাদটি, মানে, men are from Mars and women are from venus, এটিকে ভুল প্রমাণ করে ছেড়েছেন!
সেই গল্প নিয়েই তৈরি হয়েছে মিশন মঙ্গল!
এখানে দেখে নিন সেই ছবির ট্রেলর, যা মুক্তি পেতে চলেছে আগামী ১৫ অগস্ট। প্রসঙ্গত, মঙ্গল অভিযানের ঘোষণাও হয়েছিল ২০১২ সালের ১৫ অগস্ট!
এয়ারলিফট থেকে শুরু করে প্যাডম্যান, রুস্তম, কেসরী হয়ে অক্ষয়কুমার এবার দেখা দেবেন মিশন মঙ্গলে। সত্যি ঘটনা অবলম্বনে তৈরি ছবিতে অভিনয় করাটা ইদানীং তিনি প্রায় অভ্যেসে পরিণত করে ফেলেছেন! ছবিতে তাঁর সঙ্গে মহিলা বিজ্ঞানী ব্রিগেডে আছেন বিদ্যা বালন, সোনাক্ষী সিনহা, কীর্তি কুলহারি, তাপসী পন্নুর মতো একঝাঁক প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী। অবশ্য ফিল্মের পোস্টার নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক! পোস্টারে কেন অক্ষয়ের মুখ বড় করে দেখানো হয়েছে এবং তাঁর পাশে বাকিরা ছোট্ট বোতামের মতো করে দেখা দিচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। পাশাপাশি ছবির প্রথম টিজারেও দেখা গিয়েছে শুধু অক্ষয়কেই! নারীশক্তির জয় আর হল কই! আশা করা যায়, ১৫ অগস্ট সিনেমা হলে গিয়ে দর্শকেরা আসল মঙ্গল অভিযানের গল্পই দেখতে পাবেন, তার অ্যাডাপ্টেশন নয়!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!