আকারে ছোট্ট বলে ফেলনা ভাববেন না যেন! কারণ, শরীর এবং ত্বকের যত্নে কিশমিশের কোনও বিকল্প আজ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। কারণ, এই প্রাকৃতিক উপাদানটিতে উপস্থিত পটাশিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, ডায়েটারি ফাইবার এবং ক্যালসিয়াম একাধিক রোগ-ব্যাধিকে দূরে রাখতে যেমন বিশেষ ভূমিকা নেয়, তেমনই কিশমিশে মজুত ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপকারী উপাদানও নানা ভাবে ত্বক এবং শরীরের যত্নে কাজে আসে। তাই শরীরকে রোগমুক্ত রাখার পাশাপাশি চটজলদি ত্বকের লাবণ্য যদি বাড়িয়ে তুলতে হয়, তা হলে কিশমিশ (raisins) খেতে ভুলবেন না যেন! কিন্তু প্রশ্ন হল, ছোট-বড় নানা রোগকে দূরে রাখার পাশাপাশি এই প্রাকৃতিক উপাদানটি আর কী-কী উপকারে লাগে, সে সম্পর্কে জানা আছে কি?
১. ক্যান্সারের মতো রোগকে দূরে রাখে
এক্কেবারে ঠিক শুনেছেন! এমন মারণ রোগকে দূরে রাখতে কিশমিশের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ, এতে উপস্থিত cateching নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, টিউমার সৃষ্টিকারী কোষগুলিকে যেমন ধ্বংস করে দেয়, তেমনই কোলন ক্যান্সারকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
২. অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমে
২০১৭ সালে প্রকাশিত Global Nutrition Report অনুসরে ভারতের মোট মহিলা জনসংখ্যার প্রায় ৫১ শতাংশই অ্যানিমিয়ার মতো রোগের শিকার। এমন পরিস্থিতিতে ১৫ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সি মহিলাদের নিয়মিত এক মুঠো করে কিশমিশ খাওয়ার প্রয়োজন যে রয়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই! কারণ, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এবং কপার, যা লোহিত রক্তকণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়, যে কারণে অ্যানিমিয়ার মতো রোগ দূরে পালাতে সময় লাগে না।
৩. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে
কিশমিশে উপস্থিত polyphenolic নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, রক্তে মিশে থাকা বিশেষ কিছু টক্সিক উপাদানদের নিমেষে ধ্বংস করে দেয়, যে কারণে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি তো ঘটেই, সেই সঙ্গে অল্প বয়সে চোখে ছানি পড়ার আশঙ্কাও আর থাকে না। অসময়ে muscular degeneration-এর মতো সমস্যার খপ্পরে পড়ার আশঙ্কাও কমে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কিশমিশে মজুত ভিটামিন এ, বিটা-ক্যারোটিন এবং A-Carotenoid-এর মতো উপাদানও চোখের দেখভালে নানাভাবে সাহায্য করে থাকে।
৪. সংক্রমণের প্রকোপ কমে
উত্তরবঙ্গে যে হারে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে সেখানকার বাসিন্দাদের নিয়মিত কিশমিশ খাওয়া উচিত। কারণ, বর্ষার সময় চারিপাশে নানা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া এবং জীবাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, যে কারণে নানাবিধ সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেমন থাকে, তেমনি ভাইরাল ফিবারের মতো রোগের প্রকোপও বাড়ে চোখে পড়ার মতো। তাই তো সারা বর্ষাকাল জুড়ে কিশমিশ খাওয়ার প্রয়োজন রয়েথছে। কেন এমন উপদেশ তাই ভাবছেন? আসলে এই প্রাকৃতিক উপাদানটিতে রয়েছে polyphenolic phytonutrients নামক একটি উপাদান, যা প্রকৃতিতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল। তাই তো রসুন খাওয়া মাত্র শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর জীবাণুরা সব মারা পরে। ফলে বর্ষাকালীন নানা রোগ-ব্যাধির খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা আর থাকে না।
৫. ত্বকের যত্নেও কাজে আসে কিশমিশ
শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদানগুলির কারণে স্কিন সেলের যাতে কোনও ধরনের ক্ষতি না হয়, সেদিকে নজর রাখে কিশমিশে উপস্থিত নানা উপকারী উপাদান এবং নানা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সেই সঙ্গে collagen এবং elastin-এর মাত্রাও বৃদ্ধি পায়, যে কারণে অসময়ে ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না। তবে এখানেই শেষ নয়, এই প্রাকৃতিক উপাদানটি আরও নানাভাবে ত্বকের যত্নে কাজে আসে। যেমন ধরুন, কিশমিশে resveratrol নামে একটি উপকারী উপাদান রয়েছে, যা ত্বককে ভিতর থেকে সুন্দর করে তোলে। ফলে ত্বকের জৌলুস বাড়ে চোখে পড়ার মতো। ব্রণ এবং psoriasis-এর মতো রোগের প্রকোপ কমাতেও এই প্রাকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা নেয়। কারণ, এতে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম, শরীরে অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, যে কারণে এমন সব ত্বকের রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।
৬. চুলের সৌন্দর্য বাড়ে
কিশমিশে রয়েছে প্রচুর পরিমণে আয়রন এবং ভিটামিন সি, যা চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। ফলে চুল পড়ার হার তো কমেই, সেই সঙ্গে চুলের সৌন্দর্যও বাড়ে চোখে পড়ার মতো। এমনকী, খুশকি এবং মাথা চুলকানির মতো সমস্যার প্রকোপ কমতেও সময় লাগে না।
৭. দাঁত ও হাড়ের শক্তি বাড়ে
এতে উপস্থিত oleanolic acid এবং ক্যালসিয়াম, মুখগহ্বরে উপস্থিত ক্ষতিকরব্যাকটেরিয়াগুলিকে মেরে ফেলে, যে কারণে cavities-এর মতো সমস্যা যেমন দূরে থাকতে বাধ্য হয়, তেমনই মুখ থেকে বদ গন্ধ বেরনোর আশঙ্কাও কমে। হাড়ের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটে চোখে পড়ার মতো। ফলে আর্থ্রাইটিস এবং গাউটের মতো রোগের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা আর থাকে না। তাহলে বুঝতেই পারছেন, মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত শরীরের প্রতিটি অঙ্গকে চাঙ্গা রাখতে রসুনের জুড়ি মেলা ভার। তাই সুস্থ থাকতে চান তো নিয়মিত কিশমিশ খেতে ভুলবেন না যেন!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!