বাসে-ট্রামে কান পাতলেই শুনবেন কেউ বলছেন গ্যাসের সমস্যায় ভুগছেন, তো কারও ঘাড়ে চেপেছে প্রেসারের মতো রোগ। কম বয়সেই ভারী-ভারী সব রোগের খপ্পরে পড়েছি আমরা। এর পিছনে কারণ অনেক। তবে মূল কারণটা কি জানেন? আধুনিকতা আমাদের অলস বানিয়েছে। সিঁড়ি ভাঙতে আজ কেউই চান না। কখনও লিফট, তো কখনও এসকেলেটর। ফলে ফিজিকাল অ্যাক্টিভিটি কমছে, যে কারণে বাড়ছে মেদ। সঙ্গী হচ্ছে প্রেশার, সুগারের মতো রোগ। বাড়ছে হার্টের রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি সরকারি রিপোর্ট অনুসারে, প্রতি বছর এদেশে যত সংখ্যক মানুষ মারা যান, তাঁদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশেরই মৃত্যু ঘটে নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ, অর্থাৎ হার্ট অ্যাটাক, সুগার, কোলেস্টেরল অথবা ব্লাড প্রেশারের কারণে। আর এই সব রোগের সঙ্গেই ওবেসিটির সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। তাই তো বলি, এই সব ভয়ঙ্কর রোগের খপ্পরে পড়তে যদি না চান, তা হলে সিঁড়ি ভাঙুন নিয়মিত!
সিঁড়ি ব্যবহারের উপকারিতা (Health benefits of climbing stairs)
১. ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে
প্রতিদিন সিঁড়ি ব্যবহার করলে (Climbing Stairs) প্রচুর মাত্রায় ক্যালরি বার্ন হয়। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না। আর শরীরে মেদ না জমলে ছোট-বড় অনেক রোগই দূরে থাকতে বাধ্য হয়। বিশেষত, ডায়াবেটিস, কোলন ক্যান্সার এবং হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগ ধারেকাছেও ঘেঁষতে পারে না। প্রসঙ্গত, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক রিপোর্ট অনুসারে, প্রতিদিন হাঁটলে যে পরিমাণ ক্যালরি বার্ন হয়, তার চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি ক্যালরি ঝরে সিঁড়ি ভাঙলে! তা হলে বুঝতেই পারছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকতে সিঁড়ি ভাঙার প্রয়োজন অনেক।
২. হার্ট এবং ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ে
সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করার সময় হার্টের পাম্পিং রেট বেড়ে যায়, যে কারণে প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে যায় শরীরের প্রতিটি কোণায়। ফলে প্রতিটি অঙ্গের ক্ষমতা যেমন বাড়ে, তেমনই হার্ট এবং ফুসফুসের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায় চোখে পড়ার মতো। হার্টের ক্ষমতা বাড়লে নানা কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা কমে। এমনকী, হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কাও আর থাকে না।
৩. আয়ু বাড়ে
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত মাত্র আটটা সিঁড়ি ভাঙলেই শারীরিক ক্ষমতা এতটাই বেড়ে যায় যে, কম বয়সে মারা যাওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৩৩ শতাংশ কমে যায়! আর যদি টানা সাত মিনিট সিঁড়ি চড়তে পারেন, তা হলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ১০ বছর পিছিয়ে যায়!
৪. হাড়, পেশি এবং জয়েন্টের ক্ষমতা বাড়ে
সিঁড়ি ব্যবহার করা মানে পেশির এক্সারসাইজ হওয়া। তাই তো নিয়মিত সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলে পেশির ক্ষমতা বাড়ে চোখে পড়ার মতো। সঙ্গে জয়েন্ট এবং হাড়ের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
৫. স্ট্রেস কমে
অফিসে যেদিন একটু চাপে থাকবেন, সেদিন একটু বেশি করে সিঁড়ি ভাঙবেন। তাতে মন-মেজাজ একেবারে চাঙ্গা থাকবে! ভাবছেন, সিঁড়ি ভাঙার সঙ্গে মন-মেজাজের সম্পর্কটা ঠিক কোথায়? আসলে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার সময় endorphin নামে এক ধরনের ‘ফিল গুড’ হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যে কারণে কর্টিজল নামক স্ট্রেস হরমোনের প্রভাব কমে। ফলে স্ট্রেস লেভেল তো কমেই, সঙ্গে মানসিক অবসাদ এবং অ্যাংজাইটির প্রকোপ কমতেও সময় লাগে না।
৬. অনিদ্রার সমস্যা দূরে পালায়
সিঁড়ি ব্যবহারের অভ্যেস করলে বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যে কারণে অনিদ্রার সমস্যা দূরে পালাতে সময় লাগে না। আর যদি একসঙ্গে দুটো করে সিঁড়ি ভাঙতে পারেন, তা হলে তো কথাই নেই! সেক্ষেত্রে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা আর থাকবে না। কমবে মাথা যন্ত্রণাও।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!