টেলিভিশনে তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর সিনেমায় ডেবিউ করছেন মধুমিতা (Madhumita) সরকার। ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে মুক্তি পাবে প্রতিম (pratim) ডি গুপ্ত পরিচালিত ‘লভ আজ কাল পরশু’। সেখানে অর্জুন চক্রবর্তীর সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন তিনি। ছবি মুক্তির আগে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন অভিনেত্রী।
টেলিভিশনে তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর সিনেমা শুরু করলেন। এটা আপনার প্রথম সিনেমা। এই স্ক্রিপ্টটা বেছে নিলেন কেন?
সিরিয়াল আমাকে শিখিয়েছে, আমি যে চরিত্রগুলোতে অভিনয় করেছি, অর্থাৎ পাখি বা ইমন এদের আলাদা দর্শক আবার মধুমিতার আলাদা দর্শক। ওই সিরিয়ালের ইমেজ থেকে বেরতে চেয়েছিলাম। ভাল স্ক্রিপ্ট চেয়েছিলাম, যেটাতে অভিনেত্রী হিসেবে আরও সমৃদ্ধ হতে পারব। সেই মতো নিজেকে গ্রুম করছিলাম। ‘কুসুমদোলা’ শেষ হওয়ার পর প্রতিমদা ফোন করেছিল। এই ছবিটাতে তিনটে আলাদা লুক বা চরিত্র রয়েছে। আলাদা আলাদা করে লাইন বলতে হয়েছিল। সিনের এত সুন্দর বিল্ড আপ আর কনসেপ্টটা এত ভাল লেগেছিল যে এই ছবিটা করতে আর কিছু ভাবতে হয়নি। মনে হয়েছিল, এই ছবিটা করার জন্য সব রকম প্রিপারেশন আমি নিতে পারব।
কী কী প্রিপারেশন নিতে হয়েছিল?
কোন কোন ফিল্ম দেখতে পারি, সেটা প্রতিমদাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। এটা একেবারেই অরিজিনাল স্টোরি। কিন্তু অনেক সময় এক একটা ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা এক একটা চরিত্রের সঙ্গে অন্য কোনও ছবির অন্য কোনও চরিত্রের মিল থাকে, সেটার জন্যই ছবি দেখার অভ্যেসটা খুব দরকার। অর্জুনের সঙ্গে বসে স্ক্রিপ্ট পড়েছিলাম। ওর সব ছবি দেখে নিয়েছিলাম। বাকিটা প্রতিমদার গাইডেন্স।
সিরিয়াল আর সিনেমার শুটিংয়ের মধ্যে কী কী পার্থক্য দেখলেন?
পরিচালকের সঙ্গে নতুন জুটি। ছবি ইনস্টাগ্রামের সৌজন্যে।
টেলিভিশন (TV) শিখিয়েছিল, অভিনয় কীভাবে রপ্ত করতে হয়। টেকনিকালিটিস অনেক বেশি ইমপ্রুভ করেছি টেলিভিশন থেকে। ওটা একটা স্কুলের মতো। স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে তারপর কলেজ বা ইউনিভার্সিটিতে যাওয়ার মতো হচ্ছে সিনেমা। ফিল্মের মজাটা হচ্ছে, আমরা শেষটা জানু। কিন্তু টেলিভিশনে তো শেষটা দেখতে পাই না। ওটা টিআরপি-র উপর নির্ভর করে। কিন্তু সিনেমায় সেটা না হওয়ার জন্য মেকিং অনেক বেটার হয়। আর একটা বিষয়, টেলিভিশনে যাই হয়ে যাক, একটা নির্দিষ্ট সময়ের ফুটেজ শুটিংয়ে তুলে দিতেই হবে। ফলে নিজেকে শেষ অবধি পুশ করতে হত। ফিল্মে অনেক রিল্যাক্সে কাজ করলাম।
আন্ডার ওয়াটার শুটিং করলে প্রথমবার। অসুবিধে কী কী ছিল?
অসুবিধে তেমন কিছু হয়নি। প্রথম এক্সপিরিয়েন্স, তাই কীভাবে কাজটা হবে বুঝে নিয়েছিলাম ভাল করে। অর্জুন দারুণ হ্যান্ডেল করেছে। চ্যালেঞ্জটা নিতেই তো চেয়েছিলাম। সেটা নিতে পেরে ভাল লাগছে।
ছবি করতে গিয়ে কী কী শিখলেন, যেটা সিরিয়ালে শেখা হয়নি?
প্রথমত ক্যামেরাকেই একজন মানুষ বলে মনে হবে, কোনও অবজেক্ট বলে মনে হবে না। ছোট ছোট মাসল মুভমেন্টও ক্যামেরায় কীভাবে ধরা পড়ে, সেটা শিখলাম। বিহেভ করতে পেরেছি। আর কথা না বলাটাও যে কখনও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, সেটা শিখলাম।
যদিও খুব ক্লিশে শুনতে লাগবে, তবুও আপনার চুমুর দৃশ্য বা পোশাক নিয়ে যেমন আলোচনা হচ্ছে, তাই জিজ্ঞেস করতেই হচ্ছে, এ সব সামলাচ্ছেন কীভাবে?
আমি এই প্রশ্নটার উত্তর দিতে চাই। মশালা ফিল্ম হলে লোকে বলবে, বাঙালি নতুন কিছু ভাবতে পারে না। সেই সত্যজিতের পর আর নতুন কিছু হয়নি। আবার আরবান না নিউ এজ ফিল্মে চুমু থাকলে, সেটা নিয়ে সমস্যা হবে। এটা কী করে হয়? এখনকার দিনে দুটো ছেলে-মেয়ের আলাপ হলে, বন্ধুত্ব হলে যদি তাদের সম্পর্কটা এগোয়, তারা কী করে? চুমুটা তো স্বাভাবিক। হাত ধরে তো আর সিনেমা শেষ করে দিতে পারব না। আর ওয়েব দেখার পর দর্শক ভাল করে জানেন, হিউম্যান ইমোশন, ন্যাচারাল ইমোশন কীভাবে ট্রিট করা হয়। বিদেশীদের চুমু খেতে দেখলে তো কারও সমস্যা হয় না। বাঙালিদের চুমু খেতে দেখলেই মুশকিল! আর এই ছবিতে বাড়তি কোনও সিন রাখা হয়নি। যতটুকু স্ক্রিপ্টের ডিমান্ড, ঠিক ততটুকুই।
ওয়েবে ‘জাজমেন্ট ডে’- রিলিজ করল আপনার… । কনটেন্ট সম্ভবত খুবই রেলিভেন্ট?
‘জাজমেন্ট ডে’র শুটিংয়ে সোহিনীর সঙ্গে মধুমিতা। ছবি ইনস্টাগ্রামের সৌজন্যে।
হুম। আমার চরিত্রটা ওখানে রকস্টার। লাল চুল। ছেলেদের থেকে কোনও অংশে পিছিয়ে নেই। বাই নেচার চ্য়ালেঞ্জ নিয়ে নেয়। অন্যদের গ্রাজ নিয়ে নেয়। দিদিকে সব কিছুতে সাপোর্ট করে। এই মেয়েটাকে গণধর্ষণ করা হয়। মেয়েরা ছোট জামা পরলে বা সিগারেট খেলেই যেন তাদের রেপ করা যায়। তারা রেপেবল! এখন এটা একটা ওয়ার্ড! আমার দিদির চরিত্রে অভিনয় করেছেন সোহিনী সরকার। ও প্রতিবাদ করে। বোনের সাপোর্ট সিস্টেম হয়ে দাঁড়ায়। ধর্ষিতা হওয়াটা মেয়েদের কোনও ত্রুটি নয়। এটাই বেসিক স্টোরি লাইন। রেপ হওয়ার পরের সিনগুলো করাটা কঠিন ছিল। এটাতে আবার ‘অক্টোবর’ ছবিটা দেখার এক্সপিরিয়েন্স হেল্প করেছিল।
নতুন কী কাজ আসছে?
মৈনাক ভৌমিকের একটা ছবি করছি। মা-মেয়ের গল্প। ১৬ ফেরব্রুয়ারি থেকে শুটিং শুরু। সোশ্যাল মেসেজ রয়েছে ছবিটাতে।
ব্যক্তিগত জীবনের খারাপ সময় কাটিয়ে উঠে, এখন শুধুই কাজে ফোকাস করেছেন তাহলে…
হুম…। আমার আর সৌরভের ডিভোর্স হয়ে যাচ্ছে আর কয়েক দিনের মধ্যেই। প্রসেসিং তো চলছিলই। আমি চাই ও খুব ভাল থাকুক। বরাবরই ভাল কাজ করে। এখনও করছে। ওর ডিরেকশনে ‘শব্দজব্দ’ আসছে। আমি টিজার দেখলাম। ভাল লাগল। ও মন দিয়ে কাজ করুক। আমি তো পুরোপুরি কাজে ফোকাস করেছি। মন খারাপ যে একেবারে হয়নি, তা বলব না। মন খারাপ ছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় বেড়াতে গিয়েছিলাম। সোলো ট্রিপ করলাম। বাঞ্জি জাম্পিং, স্কুবা…। ফ্লাইট দেরি করেছিল বলে হস্টেল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমি লকার রুমে লাগেজ রেখে সমুদ্রের ধারে ঘুমিয়েছি। ঘাসের উপর ঘুমিয়েছি। মন ভাল করে ফিরলাম। এটা ভারতে কোথায় পাব?
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আমাদের এক্কেবারে নতুন POPxo Zodiac Collection মিস করবেন না যেন! এতে আছে নতুন সব নোটবুক, ফোন কভার এবং কফি মাগ, যেগুলো দারুণ ঝকঝকে তো বটেই, আর একেবারে আপনার কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে। হুমম…আরও একটা এক্সাইটিং ব্যাপার হল, এখন আপনি পাবেন ২০% বাড়তি ছাড়ও। দেরি কীসের, এখনই POPxo.com/shopzodiac-এ যান আর আপনার এই বছরটা POPup করে ফেলুন!