আমরা যারা ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেছি এবং যারা করিনি তারা প্রত্যেকেই জানি ভারতবর্ষে আয়ুর্বেদের চর্চা হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসছে। বিভিন্ন প্রাজ্ঞ মুনি ঋষিরা এই নিয়ে বিস্তর কাজ করেছেন, অনেক পুঁথি লিখেছেন। মূলত সেগুলোর উপর ভিত্তি করেই আয়ুর্বেদ চর্চার ধারা এখনও এই দেশে অব্যাহত। শুধুমাত্র রোগ সারানোর ক্ষেত্রে নয় আমাদের সৌন্দর্য ধরে রাখাতেএবং ত্বকের নানা সমস্যায় (skin problem) আয়ুর্বেদের (ayurveda) জুড়ি নেই। ফেসিয়ালের কথাই ধরুন না। পার্লারে গিয়ে তো অনেক ধরণের ফেসিয়াল করে একগুচ্ছ টাকা খরচ করেন। এবার বাড়িতেই আয়ুর্বেদিক মতে ফেসিয়াল করে দেখুন। এর কোনও সাইড এফেক্ট নেই।
আরো পড়ুনঃ ঘরোয়া উপায়ে পাইলসের (অর্শ) যন্ত্রণা কমান
নরমাল (Normal Skin) ত্বকের জন্য
১ চামচ মূলতানি মাটি, ১/২ চামচ চন্দন গুঁড়ো, সামান্য পরিমাণ হলুদ একসঙ্গে গোলাপ জলের সঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। ভালো করে মুখ পরিষ্কার করে এই প্রলেপ লাগান। ২০ থেকে ২৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। হলুদের গুণে ত্বক উজ্জ্বল হবে।
শুষ্ক (Dry Skin) ত্বকের জন্য
অ্যালভেরার শাঁস, গোলাপের পাপড়ি, মধু, দুধের সর একসঙ্গে মিশিয়ে প্রলেপ তৈরি করুন। এটি প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বকে যে শুহদু জেল্লা সবে তা নয় দুধের সরের গুণে আর্দ্রতাও আসবে।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য (oily skin)
এই জাতীয় ত্বক খুব সমস্যা প্রবণ হয়। অতিরিক্ত তেল বেরোয় বলে রোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ব্রণ, বলিরেখা ইত্যাদি দেখা দেয়। এই ত্বকের জন্য প্রয়োজন নিমপাতার পেস্ট, লেবুর রস, মূলতানি মাটি ও সামান্য লবঙ্গের গুঁড়ো। এগুলো দিয়ে প্যাক তৈরি করুন। মুখে লাগান। মিনিট কুড়ি পর ঈষদুষ্ণ জলে ধুয়ে ফেলুন। নিমপাতা যে একটি প্রাকৃতিক অ্যানটিসেপটিক সেটা জানেন। নিমপাতা আপনার মুখের ব্রণ বা অ্যাকনে থেকে কোনও সংক্রমণ হতে দেবে না। আর লেবুর রস কাজ করবে অ্যাসট্রিনজেন্ট-এর মতো। অর্থাৎ এর কাজ হবে অতিরিক্ত তেল শুষে নেওয়া।
ব্রণযুক্ত ত্বকের জন্য (acne prone skin)
অনেক সময়ই আমাদের ত্বকে ব্রণ দেখা দেয়। তার নানা কারণ হতে পারে। রোমকূপ বন্ধ হতে পারে, পেটের সমস্যা হতে পারে বা আপনার ত্বক এমনিতেই ব্রণপ্রবণ হতে পারে। মুসুর ডাল, শিমূল কাঁটা দুধের সাথে মিশিয়ে ভালো করে পেস্ট করুন। শুধু যেখানে ব্রণ হয়েছে সেখানে লাগান। মিনিট পনেরো পরে ধুয়ে ফেলুন।
মেচেতা ভরা ত্বকের জন্য (skin with blemishes)
মেচেতা মানে কালো কালো দাগছোপ। মঞ্জিষ্ঠা, হলুদ, কুমকুম, গোলাপ জলের সাথে মিশিয়ে পেস্ট করে যেখানে মেচেতা হয়েছে লাগান। দিনে দুবার এই প্রলেপ ব্যবহার করতে পারেন। দেখবেন আস্তে আস্তে মেচেতা দূর হয়েছে এবং ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরে এসেছে।
অ্যালার্জিক ত্বকের জন্য (allergic skin)
সংবেদনশীল ত্বক নিয়ে খুব সমস্যা হয়। অনেক প্রসাধনী তাদের সহ্য হয়না। সামান্য কিছু এদিক ওদিক হলেই তাদের ত্বকে জ্বালা ও চুলকানি দেখা যায়। এই জাতীয় ত্বকে ত্রিফলা, নিমপাতা পেস্ট, তুলসি ও হলুদ একসঙ্গে জলের সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট করে লাগান। এই প্যাক শুধু অ্যালার্জি নয় ব্রণ, ফুস্কুড়ি, ব্ল্যাকহেডসও দূর করে।
কোয়েলের সৌন্দর্য তার নিখুঁত ত্বকে
জরুরি টিপস
বেশি করে জল খান।
ত্বকে নিয়মিত জলের ঝাপটা দিন।
বাইরে থেকে ফিরে কাঁচা তুলো ডুবিয়ে হাল্কা করে ডুবিয়ে নিন।
ছবি সৌজন্যঃ পেক্সেল ডট কম ও কোয়েল মল্লিকের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!