Ayurvedic Beauty Tips in Hindiউজ্জ্বল, তুলতুলে ত্বকের অধিকারী হতে সবাই চায়। আর তাই তো চটজলদি ফল পেতে বাজার চলতি হরেক রকমের কসমেটিক্সের উপরই ভরসা রেখে থাকে সিংহভাগ মহিলা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল বেশিরভাগই জানে না ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে কেমন ধরনের প্রডাক্ট ব্যবহার করা উচিত। সম্প্রতি ডার্মাটোলজি স্কিনকেয়ার স্পেশালিস্ট বা এসডিএসএস (SDSS)-এর করা এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ৮৮ শতাংশ ভারতীয় মহিলারই জানা নেই ত্বকের পরিচর্যায় কেমন ধরনের কসমেটিক্স ব্যবহার করলে কাঙ্খিত ফল মিলতে পারে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই জলের মতো টাকা খরচ হলেও মনের মতো ফল মেলে না একেবারেই। আর ঠিক এই কারণেই এই প্রবন্ধটি পড়ার প্রয়োজন রয়েছে।
কী এমন লেখা হতে চলেছে তাই ভাবছো নিশ্চয়! আসলে সুন্দরী হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ যাতে নিরাপদভাবে হয়, তা সুনিশ্চিত করতে এই প্রবন্ধে এমন কিছু আয়ুর্বেদিক উপায় সম্পর্কে (Ayurvedic Beauty Tips) আলোচনা করা হল, যা ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর মধ্যে দিয়ে স্কিন টোনের উন্নতি ঘটাবে চোখে পড়ার মতো। ফলে ত্বকের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তো থাকবেই না, উল্টে ভিতর থেকে ত্বক স্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠার কারণে একাধিক স্কিন ডিজিজ (Skin Disease) ও দূরে থাকতে বাধ্য হবে।
আরো পড়ুনঃ চুল এবং ত্বকের যত্নে মুলতানি মাটির ব্যবহার
যে যে প্রাকৃতিক উপাদানগুলি ত্বকের জেল্লা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে, সেগুলি হল…
চার চামচ চন্দন গুঁড়োর সঙ্গে ২ চামচ বাদাম গুঁড়ো এবং ৩ চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে তৈরি পেস্ট, সপ্তাহে ২-৩ দিন মুখে লাগাতে শুরু করলে ফল মিলবে একেবারে হাতে-নাতে। আসলে চন্দন গুঁড়োতে উপস্থিত অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টিসেপটিক প্রপাটিজ একদিকে যেমন ব্রণ এবং ত্বকের সংক্রমণের মতো সমস্যাকে দূরে রাখে, তেমনি বাদাম গুঁড়োতে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান স্কিন টোনের উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি ত্বকের ভিতরে পুষ্টির ঘাটতি দূর করে (Beauty Tips)। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না।
এতসব উপকার পেতে বাদাম এবং চন্দন গুঁড়োর পেস্টটি মুখে লাগিয়ে কম করে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখ।
এই দুটি উপাদান মিশিয়ে বানানো পেস্ট মুখে লাগাতে শুরু করেল ত্বকের ভিতরে অ্যান্টিসেপটিক উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে নানাবিধ ত্বকের রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে মৃত কোষের আবরণ সরে যাওয়ার কারণে ত্বকের জেল্লাও বাড়ে চোখে পড়ার মতো (Ayurvedic Beauty Tips For Glowing Skin)। শুধু তাই নয়, চালের আটাতে উপস্থিত বেশি কিছু উপাদানের কারণে ত্বকের দাগ সব মিলিয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অল্প সময়েই ত্বক সুন্দর হয়ে ওঠে।
এখন প্রশ্ন হল এতসব উপকার পেতে কীভাবে তৈরি করতে হবে এই পেস্টটি? এক্ষেত্রে ২ চামচ হলুদ গুঁড়োর সঙ্গে ২ চামচ চালের আটা এবং ২ চামচ টমেটোর রস মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই মিশ্রনটি মুখে এবং গলায় লাগিয়ে কম করে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। যখন দেখবে পেস্টটা ড্রাই হতে শুরু করেছে, তখন ঠান্ডা জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখ।
ত্বকের পরিচর্যায় অ্যালোভেরার যে কোনও বিকল্প নেই, তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ এই প্রাকৃতিক উপাদানটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বকের ভিতরে প্রবেশ করা মাত্র টক্সিক উপাদানদের ধ্বংস করে দেয়। ফলে বলিরেখা কমতে শুরু করে। আর এমনটা হলে ত্বকের বয়স কমতে যে সময় লাগে না, তা তো বলাই বাহুল্য। তবে ৩ চামচ অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে যদি ১ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে সেই মিশ্রনটি মুখে লাগানো যায়, তাহলে কিন্তু আরও বেশি মাত্রায় উপকার মেলে। কারণ অ্যালোভেরা জেলে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পাশাপাশি লেবুর রসে থাকা একাধিক উপকারী উপাদানও ত্বকের ভিতরে প্রবেশ করার সুযোগ পেয়ে যায়। ফলে ত্বকের বয়স কমার পাশাপাশি স্কিন টোনের উন্নতি ঘটে চোখে পড়ার মতো।
এক্ষেত্রে একটি জিনিস মাথায় রাখার প্রয়োজন রয়েছে। তা হল, এই পেস্টটি রাতে শুতে যাওয়ার আগে মুখে লাগালে এবং সকাল পর্যন্ত রাখলে উপকার মেলে সবথেকে বেশি মাত্রায়।
১০ টা তুলসি পাতা এবং ১০ টা নিম পাতা একসঙ্গে বেটে নিয়ে তাতে ২ চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে সেই পেস্টটি মুখে লাগিয়ে কম করে ২০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখ। এইভাবে সপ্তাহে ৩-৪ দিন ত্বকের পরিচর্যা করলে নিমের স্পর্শে একদিকে যেমন ত্বক চাঙ্গা হয়ে উঠবে, তেমনি তুলসি পাতার গুণে স্কিন সেলের মেটাবলিজম রেটের উন্নতি ঘটার কারণে ফল মিলবে একেবারে হাতে-নাতে!
পরিমাণ মতো জাম নিয়ে তার পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর এর সঙ্গে ২ চামচ পেঁপের পেস্ট মিশিয়ে সেই মিশ্রনটি মুখে লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখ। এইভাবে সপ্তাহে ২-৩ দিন ত্বকের যত্ন নিতে শুরু করলে ত্বকের ভিতরে একদিকে যেমন অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজের মাত্রা বাড়তে শুরু করবে, তেমনি আরও বেশ কিছু উপকারী উপাদানের ঘাটতি দূর হবে, যে কারণে ত্বকের উপরি অংশে জমে থাকা মৃত কোষের স্তর সরে যাওয়ার পাশাপাশি স্কিন টোনেরও উন্নতি ঘটবে। ফলে সার্বিকভাবে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময় লাগবে না।
এই ফেসপ্যাকটি তৈরি করার সময় জামের পরিবর্তে ইচ্ছা হলে গুজবেরির গুঁড়োও ব্যবহার করতে পারো। কারণ এমনটা করলেও সমান উপকার পাওয়া যায়।
পরিবেশে উপস্থিত টক্সিক এলিমেন্ট এবং আরও নানাবিধ ক্ষতিকর উপাদানের কারণে ত্বকের যাতে কোনও ধরনের ক্ষতি না হয়, সেদিকে নজর রাখে মধু। অন্যদিকে লেবুর রস একদিকে যেমন ত্বকের বয়স কমায়, তেমনি স্কিন যাতে আর্দ্রতা না হারায় সেদিকেও নজর রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। এবার বুঝেছো তো ত্বকের যত্নে এই দুটি প্রাকৃতিক উপাদানকে কাজে লাগানোর প্রয়োজন কতটা। কিন্তু প্রশ্ন হল কীভাবে কাজে লাগাতে হবে মধু এবং লেবুর রসকে?
এতসব উপকার পেতে ১ চামচ মধুর সঙ্গে ২ চামচ লেবুর রস যোগ করে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই মিশ্রনটি ধীরে ধীরে ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে হালকা গরম জল দিয়ে পেস্টটা ধুয়ে ফেলতে হবে।
প্রথমে এক কাপ জলে এক চিমটে জাফরান মেশাতে হবে। যখন দেখবে কাপের জলটা হালকা হলুদ বর্ণ নিতে শুরু করেছে তখন তাতে ২-৩ ড্রপ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর একটা তুলো নিয়ে সেই মিশ্রনে ভিজিয়ে সারা মুখে ধীরে ধীরে ঘষতে হবে। কয়েকবার এমনটা করার পর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখ। এইভাবে সপ্তাহে ৩-৪ দিন ত্বকের পরচর্যা করলে যে কোনও ধরনের দাগ মিলিয়ে যেতে যেমন সময় লাগবে না, তেমনি স্কিন টোন এবং স্কিন টেক্সচারের উন্নতি ঘটবে চোখে পড়ার মতো। আর এমনটা হলে সার্বিকভাবে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে যে সময় লাগবে না, তা তো বলাই বাহুল্য!
১ চামচ বেকিং সোডার সঙ্গে ১ চামচ অলিভ অয়েল এবং হাফ চামচ মধু মিশিয়ে বানানো পেস্ট, সপ্তাহে একবার মুখে লাগাতে হবে। এমনটা করলে ত্বকের উপরে জমতে থাকা মৃত কোষের স্তর যেমন সরে যাবে, তেমনি ত্বকের জেল্লা বাড়বে। সেই সঙ্গে আরও বেশ কিছু উপকার মিলবে। যেমন ধরো-ত্বকের ভিতরে পিএইচ লেভেল ঠিক থাকবে, প্রদাহের মাত্রা কমবে এবং ত্বক মসৃণ হয়ে উঠবে।
এমন সব উপকার পেতে এই পেস্টটি মুখে লাগিয়ে কম করে ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে হলকা গরম জলে মুখ ধুয়ে নিয়ে যে কোনও ময়েশ্চারাইজার ত্বকে লাগিয়ে কিছু সময় মাসাজ করতে হবে। এইভাবে প্রতি সপ্তাহে ত্বকের যত্ন নিলে দেখবে কাঙ্খিত ফল মিলতে একেবারেই সময় লাগবে না।
এই দুটি উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগাতে শুরু করলে একদিকে যেমন ত্বকের ভিতরে জলের ঘাটতি দূর হবে, তেমনি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করার কারণে কোনও ধরনের ত্বকের রোগের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা যাবে কমে। সেই সঙ্গে স্কিন টোনের উন্নতি ঘটতেও সময় লাগবে না। এখন প্রশ্ন হল এক্ষেত্রে কী পরিমাণে এই দুটি উপাদান মেশাতে হবে?
এক্ষেত্রে এক মুঠো শসার কুচি নিয়ে তাতে ২-৩ চামচ দই যোগ করে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই পেস্টটা মুখে, ঘাড়ে এবং গলায় লাগিয়ে ৫-১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখ। সপ্তাহে ৩-৪ দিন এইভাবে ত্বকের যত্ন নিলে দেখবে স্কিন নিয়ে আরও কোনও চিন্তাই থাকবে না।
১ কাপ জলে ১ চামচ গ্রিন টির পাতা মিশিয়ে জলটা কিছু সময় ফুটিয়ে নিতে হবে। তারপর জলটা এটু ঠান্ডা করে নিয়ে তাতে ২ চামচ ব্রাউন সুগার মিশিয়ে নিতে হবে। এবার সেই জলটা ধীরে ধীরে মুখের উপর ঢালতে হবে এবং মাসাজ করতে হবে। এইভাবে ১০ মিনিট মাসাজ করার পর ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিতে হবে মুখে। সপ্তাহে ১-২ বার এইভাবে ত্বকের পরিচর্যা করলে দেখবে ফল মিলবে একেবারে হাতে-নাতে!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এগুলোও আপনি পড়তে পারেন
জানুন অ্যালোভেরা কিভাবে আমাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে
Ayurvedic Beauty Tips in Hindi