গত রবিবার মধ্য কলকাতার গালিফ স্ট্রিটে হানা দিয়ে বন্যপ্রাণী দপ্তর উদ্ধার করল ৫৫০ সংরক্ষিত (protected) পাখি (birds) । যার মধ্যে রয়েছে প্যারাকিট, এশিয়ান কোয়েল এবং পাহাড়ি ময়নার মতো দুর্লভ কয়েকটি পাখি। কলকাতার এই অঞ্চল এমনিতেই অবাধে অবৈধ(illegal) পশু পাখি (birds) বেচাকেনার জন্য কুখ্যাত ছিল। তাই অনেকদিন ধরেই ডাব্লিউসিসিবি (WCCB) বা ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর নজরে ছিল এই গালিফ স্ট্রিট। এখানে যে পশু পাখি (birds) কেনা বেচা হয় তার বেশিরভাগই সংরক্ষিত এবং দুর্লভ প্রজাতির। প্রায় একশোর উপর পাখি তাদের সদ্যজাত ছানা সমেত খাঁচায় খুব বিশ্রীভাবে বন্দী ছিল। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত নয়জন গ্রেপ্তার হয়েছে।
ইউনিয়ন মিনিস্ট্রি অফ এনভায়রনমেন্ট, ফরেস্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জের অন্তর্গত ডাব্লিউসিসিবি এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বনদপ্তর যৌথভাবে এই রেড চালায় বলে জানিয়েছেন ডাব্লিউসিসিবির অধিকর্তা অগ্নি মিত্র। যেহেতু এই দুটি বিভাগের কাছেই আগে থেকে খবর ছিল তাই পো পর দুটি রেড চালানো হয়। প্রথম রেডের পর ছ’জনকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য গ্রেপ্তার করা হয় এবং ২৫০টি প্যারাকিট উদ্ধার করা হয়।
যদিও প্রথম রেডের পরেও এই অবৈধ ব্যবসা আটকানো যায়নি। বিশেষ সূত্রে খবর পাওয়া যায় কিছু বিক্রেতা আবার অন্যত্র এই ব্যবসা ফেঁদে বসেছে। আর বেশি সময় নষ্ট না করে দ্বিতীয় রেড করা হয় এবং তখন আরও ৩০০টি পাখি উদ্ধার করা হয়। ভাবার মতো বিষয় হল এই যে দ্বিতীয়বার রেড করার সময় উদ্ধারকারীরা দেখে যে প্রচুর সদ্যজাত পাখির ছানাকে একসঙ্গে একটি খাঁচার মধ্যে পুরে রাখা হয়েছে। সাধারণত এই সময় পাখির ছানাদের মায়ের পরশ ও বিশেষ যত্ন লাগে। এইভাবে তাদেরকে একসঙ্গে গাদাগাদি করে রাখলে সেটা তাদের পক্ষে ভালো হয়না এবং এতে তাদের মৃত্যু হতে পারে। পাখির ছানাগুলো উদ্ধার করে তাদের সঙ্গে সঙ্গে পশু চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে মিস্টার অগ্নি মিত্র মহাশয় জানিয়েছেন।
এই কাণ্ডে জড়িত যে ন’জন অবৈধ পাখি বিক্রেতাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে তাদের বয়স খুব একটা বেশি নয়। পুলিশ সূত্রের খবর তাদের বয়স ১৮ থেকে ৩২ এর মধ্যে। এখন তাদের জেল হেফাজতে রাখা হয়েছে।আজ অর্থাৎ সোমবার তাদের আদালতে পেশ করা হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, যে সব পাখি এন্ডেনজার্ড এবং দুর্লভ, সরকারের বিনা অনুমতিতে সেগুলো বিক্রি করা বা সেগুলো নিয়ে ব্যবসা করা আইনত অপরাধ। দুঃখের বিষয় সারা পৃথিবীতে এই ব্যবসা অবাধে চলছে। গত কয়েক বছরে আমাদের রাজ্য তথা পশ্চিমবঙ্গেও এই ব্যবসা রীতিমতো ফুলে ফেঁপে উঠেছে। বাংলাদেশের সীমানা এখান থেকে কাছে বলে এই রাজ্য থেকে বহু পশু পাখি সীমান্ত পাড় হয়ে নেপাল ও বাংলাদেশ চলে যাচ্ছে। বেশ কিছুদিন আগে দুর্লভ প্রজাতির কচ্ছপ ও মারমোসেট ধরা পড়েছিল পুলিশের হাতে। আবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। এক সঙ্গে এতগুলো সংরক্ষিত পাখি ধরা পড়ায় যথেষ্ট চিন্তায় পড়ে গেছেন পক্ষিবিদ ও পরিবেশবিদরা।
Picture Courtsey: Instagram and Shutterstock
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!