তেতো কথা শুনতে যেমন কারও ভাল লাগে না, তেমনই তেতো খাবার যে অনেকেরই মুখে রোচে না, সে তো জানা কথা। কিন্তু সুস্থ থাকতে হলে তেতো খাবার খাওয়া ছাড়া যে আর কোনও উপায় নেই, সে কথা এক বাক্যেই স্বীকার করেন চিকিৎসকেরা। বিশেষ করে হার্ট সুস্থ রাখতে এবং ডায়াবেটিসের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখতে হলে সপ্তাহে বারচারেক তেতো করলা খেতেই হবে! কারণ, একাধিক স্টাডিতে একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে এই সবজিটিতে উপস্থিত ভিটামিন বি১, বি২, বি৩ এবং সি যেমন নানা ভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে, তেমনই করলায় মজুত ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, বিটা-ক্যারোটিন, ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়ামের মতো খনিজও ছোট-বড় নানা রোগ-ব্যাধিকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেই সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে এবং নানাবিধ ত্বকের রোগের চিকিৎসাতেও করলার (karela) কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এছাড়াও একাধিক রোগের প্রকোপ কমাতে এই সবজিটিকে নানা ভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে, যে সম্পর্কে জানতে হলে এই প্রতিবেদনটি পড়ে ফেলতে দেরি করবেন না যেন!
১. ওজন কমতে সময় লাগে না
অতিরিক্ত ওজনের কারণে যাঁরা চিন্তায় রয়েছেন, তাঁরা প্রায় দিনই যদি করলার রস খাওয়া শুরু করেন, তা হলে দেখবেন ওজন কমবে তরতরিয়ে। কারণ, করলায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা শরীরের ইতিউতি জমে থাকা মেদ ঝরিয়ে দেয়, সেই সঙ্গে নতুন করে যাতে মেদ জমতে না পারে, সেদিকেও নজর রাখে। ফলে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না বললেই চলে।
২. ক্যান্সারের মতো রোগকে দূরে রাখে
করলায় মজুত রয়েছে নানা অ্যান্টি-ক্যান্সার উপাদান, যা রক্তে মেশামাত্র ক্যান্সার সেলগুলিকে ধ্বংস করে দেয়। ফলে এমন মারণ রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। বিশেষত, করলার বীজে উপস্থিত বেশ কিছু ফ্যাটি অ্যাসিডের কারণে ব্রেস্ট, লিভার এবং কোলন ক্যান্সার দূরে থাকতে বাধ্য হয়।
৩. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে
দিনের বেশিরভাগ সময় যাঁদের কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করতে হয়, তাঁরা সপ্তাহে দিনতিনেক করলা খেতে ভুলবেন না যেন! কারণ, এই সবজিটিতে মজুত রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন এবং ভিটামিন সি, যা ছানির সমস্যাকে দূরে রাখতে যেমন বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, তেমনই দৃষ্টি শক্তির উন্নতি ঘটাতেও নানা ভাবে সাহায্য করে থাকে। তাই তো নিয়মিত করলার রস খেতে ভুলবেন যেন! তবে প্রতিদিন ৩০ এম এল-এর বেশি খাবেন না যেন! কারণ এর থেকে বেশি পরিমাণে করলার রস খেলে উপকারের চেয়ে অপকার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে পেটে ব্যথা এবং ডায়েরিয়ার মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই সাবধান!
৪. ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বাড়বে
করলায় মজুত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ এবং সি, একদিকে যেমন ত্বকের ভিতরে জমে থাকা টক্সিক উপাদানদের ধ্বংস করে দিয়ে ত্বকের বয়স কমাতে বিশেষ ভূমিকা নেয়, তেমনই এই সবজিটিতে উপস্থিত নানা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান eczema, চুলকানি এবং psoriasis-এর মতো ত্বকের রোগের প্রকোপ কমাতেও নানা ভাবে সাহায্য করে থাকে। তবে, এত সব উপকার পেতে প্রায় দিনই যেমন করলা খেতে হবে, তেমনই করলার পেস্টকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন!
সপ্তাহে বারতিনেক করলার রস দিয়ে চুল ধুলে স্ক্যাল্পের ভিতরে ভিটমিন এ, সি এবং জিঙ্কের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে, যে কারণে চুল পুড়ার হার তো কমেই, সেই সঙ্গে অসময়ে চুল পেকে যাওয়ার আশঙ্কাও কমে। এমনকী, খুশকি এবং মাথা চুলকানির মতো সমস্যা কমতে সময় লাগে না।
৫. ভাবী মায়েদের জন্য় উপকারী
প্রেগন্যান্ট মহিলাদের শরীরে কোনওভাবেই যাতে ফলেটের ঘাটতি না হয়, সেদিকে নজর রাখা একান্ত প্রয়োজন। কারণ, এই উপাদানটি মা এবং বাচ্চার শরীরকে সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো ভাবী মায়েদের করলা খাওয়া পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। কারণ এই সবজিটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফলেট, যা শরীরের চাহিদা মেটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে এখানেই শেষ নয়, করলায় উপস্থিত ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আরও নানা উপকারী উপাদান গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরের দেখভালে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে foetus-এর বৃদ্ধি যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকেও খেয়াল রখে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!