ছোটবেলায় মনে আছে বিয়েবাড়িতে কলাপাতায় (banana) খেতে দেওয়া হত। ভারী মজা লাগত। চকচকে সবুজ পাতার এক কোণে নুন আর লেবু আর তারপর মহাভোজ। খাবারের স্বাদ যেন অন্যরকম লাগত কলাপাতার গুণে। তারপর এল শালপাতার থালা, যার মধ্যে কলাপাতা আটকানো থাকত। ওই দুধের সাদ ঘোলে মেটানো আর কী! আস্তে-আস্তে বিয়েবাড়ি বা অন্যান্য অনুষ্ঠানবাড়িতে কলাপাতায় (leaf) খাওয়া উঠেই গেল। অথচ দক্ষিণ ভারতে এখনও এই প্রচলন আছে। ধনী থেকে দরিদ্র সকলের বাড়ির অনুষ্ঠানেই কলাপাতায় খাওয়া হয়। সম্প্রতি কেরলের জনপ্রিয় ওনাম উৎসবেও একই দৃশ্য দেখা গেল। বাঙালিদের প্রিয় খাবার পাতুরিও কিন্তু এই কলাপাতায় মুড়েই রান্না হয়। জানেন কি কলাপাতায় কেন আগে খেতে (eating) দেওয়া হত? কারণ কলাপাতা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। আসুন দেখে নেওয়া যাক, কলাপাতায় খাওয়ার উপকারিতা।
১) কলাপাতা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ
কলাপাতায় আছে পলিফেনল, যা একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এটি খাবারের জীবাণু দূর করে এবং খাবারের মাধ্যমে এটি শরীরের ভিতরে গিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। বর্তমানে কয়েকটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘লাইফস্টাইল ডিজিজ’ বা আমাদের জীবনযাত্রার জন্য যে রোগ দেখা দেয় সেগুলো দূর করতে পারে এই পলিফেনল।
২) অর্থনৈতিক সাশ্রয় ও পরিবেশবন্ধু
কলাগাছ আমাদের দেশে প্রচুর আছে। তাই এখান থেকে পাতা নিলে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। পিকনিক বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে আপনি কলাপাতায় খাবার পরিবেশন করলে আপনার অনেকটাই টাকা বেঁচে যাবে। তা ছাড়া প্লাস্টিকের থালা পরিবেশ দূষণ তৈরি করে। কলাপাতার ক্ষেত্রে এটা একদমই হয়না। এটি পচনশীল। সুতরাং ফেলে দেওয়ার পর এটি দূষণ ঘটায় না।
৩) স্বাস্থ্যকর
খেয়াল করে দেখবেন, কলাপাতার উপরে একটা হাল্কা মোমের মতো আস্তরণ থাকে। এই আস্তরণ ময়লা ও জীবাণু খাবারে প্রবেশ করতে দেয় না। অন্যান্য বাসনপত্র আমরা যে সাবান দিয়ে ধুয়ে থাকি তাঁর মধ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিক আছে। সেগুলো ধোওয়ার পরও অনেক সময় বাসনে লেগে থাকে। যা খাবারের সঙ্গে মিশে আমাদের পেটে চলে যায়। কলাপাতার ক্ষেত্রে এরকম কিছু হওয়ার আশঙ্কা নেই। কলাপাতা শুধু একটু জল দিয়ে পরিষ্কার করলেই হয়। সবচেয়ে মজার বিষয় হল কাটার পর এর আকার এত সুন্দর হয় যে, সেখানে সব রকমের খাবার রাখা যায়। মোমের মতো আস্তরণ থাকে বলে ঝোল দিলেও কোনও অসুবিধে হয় না।
৪) খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দেয়
গোটা বিশ্বে যারা খাবার নিয়ে কাজ করেন অর্থাৎ ফুড ব্লগার থেকে শেফ, সবাই এই বিষয়ে একমত হয়েছেন। কলাপাতায় খাবার দিলে সেই খাবারের স্বাদ বেড়ে যায়। গরম খাবার পাতায় রাখলে মোমের আস্তরণ গলে যায় আর খাবারের স্বাদ ও গন্ধ বেড়ে যায়। এই মোমের আস্তরণ পেটের পক্ষেও ভাল। যারা দীর্ঘদিন পেটের সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা কলাপাতায় খাবার খেলে রোগ সেরে যাবে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!