কপালে না থাকলে ঘি, ঠকঠকালে হবে কী? বাংলায় এই প্রাচীন প্রবাদ সবারই জানা আছে। আসলে ঘি (Desi Ghee) বস্তুটিই খুব দুর্মূল্য এবং কাজের। এখন যদিও অনেকেই মোটা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় এবং কোলেস্টরল বেড়ে যাওয়ার চিন্তায় ঘি খাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছে। তবু ঘিয়ের উপকারিতা অস্বীকার করা যায় না। আর ঘি বলতে এখানে অবশ্যই গাওয়া বা গব্য ঘৃতর কথা বলা হচ্ছে। গাওয়া ঘি শব্দটি এসেছে গব্য ঘৃত কথাটি থেকে। গোরুর দুধ থেকে যে ঘি তৈরি হয় তাকেই গাওয়া ঘি বলা হয়। প্রাচীন ভারতে বৈদিক যুগে ব্রাহ্মণদের দুপুরের খাওয়া হত ভাত, গাওয়া ঘি, মধু আর তিল দিয়ে। তাই ঘি শুধু স্বাস্থ্যরক্ষা বা চুল ও ত্বকের যত্নের সঙ্গে জড়িত নয়। ঘি হল সুখ আর সমৃদ্ধির প্রতীক (Benefits of Ghee for Health)। ঋষি চার্বাক সেই কারণেই বলে গেছেন, ঘি খেতে হলে প্রয়োজনে ধার করবে তবুও ঘি খাওয়া ছাড়বে না! আজ তাই আমরা এই বিশেষ প্রতিবেদন নিয়ে এসেছি আপনাদের জন্য। যেখানে আমরা আলোচনা করব ঘি এর উপকারিতা নিয়ে।
Table of Contents
- গাওয়া ঘি আসলে কী? (What Is Ghee?)
- স্বাস্থ্যরক্ষায় ঘিয়ের উপকারিতা (Health Benefits of Ghee)
- ত্বকের যত্নে ঘিয়ের ব্যবহার (Desi Ghee Benefits For Skin)
- চুলের যত্নে ঘিয়ের ব্যবহার (Benefits of Ghee For Hair)
- সেরা দশটি গাওয়া ঘি ব্র্যান্ড (10 Best Ghee Brands In India)
- বাড়িতে কীভাবে তৈরি করবেন গাওয়া ঘি? (How To Make Ghee At Home?)
- ঘিয়ের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া (Side Effects of Ghee)
- ঘি নিয়ে জরুরি প্রশ্নোত্তর (FAQs)
গাওয়া ঘি আসলে কী? (What Is Ghee?)
গাওয়া ঘি আসলে গব্য ঘৃত। অর্থাৎ গরুর দুধ থেকে যে খাঁটি ঘি (Desi Ghee Benefits) প্রস্তুত হয় তাকেই গাওয়া ঘি বলে। সাধারণত গরুর দুধ বেশ অনেকক্ষণ ধরে জ্বাল দিয়ে তারপর এই ঘি তৈরি হয়। বাড়িতে তৈরি ঘিয়ে কোনও কিছু মেশানো হয়না তাই এর রং একটু স্বচ্ছ এবং সাদাটে হয়।
স্বাস্থ্যরক্ষায় ঘিয়ের উপকারিতা (Health Benefits of Ghee)
ঘিয়ের সঙ্গে স্বাস্থ্যরক্ষার বিশেষ যোগ আছে (Benefits of Ghee for Health)। ঘি খেলে শরীর ভাল থাকে এটা অনেকেই বিশ্বাস করেন। আর কথাটা নেহাত ভুলও নয়। হিন্দি ভাষায় “পাঁচ উংলিয়া ঘি মে” বা পাঁচ আঙুল ঘিয়ে এই প্রবাদ তো এটাই প্রমাণ করে যে কবজি ডুবিয়ে ঘি যে খায় সে অত্যন্ত স্বাস্থ্যবান ও ধনী। তাই প্রথমেই আমরা দেখে নেব স্বাস্থ্যরক্ষায় গাওয়া ঘি এর উপকারিতা (Desi Ghee Benefits) ঠিক কী কী।
১| খাঁটি এবং উপকারি (Pure and Beneficial)
মাখন এবং চিজের মতো গাওয়া ঘিয়ে ট্রান্স ফ্যাট নেই। খাঁটি ঘিয়ে আর্দ্রতা কম থাকে বলে এটি দীর্ঘদিন রেখে দেওয়া যায়। অনেক বাড়িতেই পুরনো ঘি রেখে দেওয়ার চল আছে। বলা হয় ঘি যত পুরনো হয় তত তার গুণ বাড়ে। প্রতিদিন গরম ভাতে একটু করে ঘি খেলে শরীর ভাল থাকে (Desi Ghee Benefits)।
২| ক্যানসারের হাত থেকে রক্ষা করে (Prevents Cancer)
বেশি তাপমাত্রায় বেশরভাগ তেল ভেঙে যায় এবং তার থেকে কিছু অস্থির উপাদান বেরোয় যাকে ফ্রি বা মুক্ত র্যাডিক্যাল বলে। অতিরিক্ত মাত্রায় এই ফ্রি র্যাডিকাল যদি শরীরে প্রবেশ করে তাহলে সেটা খুব ক্ষতিকর। কারণ এই র্যাডিকাল শরীরের কোষ ভেঙে দিয়ে ক্যানসারের সংক্রমণ ত্বরান্বিত করে।তবে ঘিয়ে এই সমস্যা নেই। ৫০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটেও ঘি ভেঙে যায়না।
৩| ঘিয়ে আছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট (Rich Source of Antioxidants)
আমাদের শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের কাজ হল শরীরের সব বিষাক্ত ফ্রি র্যাডিক্যালগুলো শোষণ করে নিয়ে কোষ ও টিস্যু মজবুত করা। ঘিয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। বিশেষ করে এর মধ্যে ভিটামিন ই উপস্থিত থাকায় এটি শরীর সুস্থ রাখতে (Benefits of Ghee for Health) কাজ দেয়।
৪| ঘিয়ে আছে সিএলএ’র সুরক্ষা কবচ (Contains Cancer-Fighting CLA)
গাওয়া ঘি তৈরি হয় গরুর দুধ দিয়ে। গরু খায় সবুজ ঘাস। এই সবুজ ঘাসে রয়েছে কনজুগেটেড লিনোলিক অ্যাসিড বা সিএলএ। প্রমাণিত হয়েছে ঘি এর উপকারিতা এত যে এই বস্তুটি ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম। তাই ঘি খেলে এই মারণ রোগ থেকে আপনি অনেকটাই সুরক্ষিত থাকবেন।
৫| হার্টের জন্য ঘি একদম সুরক্ষিত (Good For Heart)
আমরা অনেকেই মনে করি যে ঘি খেলে হার্টের ক্ষতি হয়। যারা হার্টের রোগী তাঁরা সেই ভয়েতেই ঘি খান না। এই ধারণা একদমই ভুল। কনজুগেটেড লিনোলিক অ্যাসিড বা সিএলএ শুধু হার্টের জন্য ভাল (Benefits of Ghee for Health) তাই নয়, এটি বিভিন্ন রকমের কারডিও ভাস্কুলার রোগ থেকে হার্টকে রক্ষা করে।
৬| পুষ্টিগুণে ভরপুর (Rich In Nutrition)
ঘিয়ে আছে ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে। এই সব কটি ভিটামিনই ফ্যাট সলিউবল অর্থাৎ এটি চট করে ফ্যাতে দ্রবীভূত হয়ে যায়। এই প্রত্যেকটি ভিটামিন শরীর সুস্থ রাখায়, মস্তিষ্ক সচল ও সক্রিয় রাখায় এবং শরীরের রোগ সংক্রমণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করায় সহায়তা করে। তাছাড়া ঘি শরীরে প্রবেশ করলে অন্যান্য খাদ্যবস্তুর ফ্যাতে দ্রবীভূত ভিটামিন খুব তাড়াতাড়ি শোষণ করে নেয়।
৭| যাঁদের দুগ্ধজাত বস্তুতে অ্যালার্জি আছে তাঁরাও খেতে পারেন (Suitable For Lactose Intolerant People)
অনেকেই আছেন যাঁদের ডেয়ারি প্রোডাক্ট বা দুগ্ধজাত বস্তু খেলে অ্যালার্জি হয়। কিন্তু ঘি তৈরি হয় দুধের উপরিভাগ জ্বাল দিয়ে। বারবার জ্বাল দেওয়ার ফলে এর মধ্যে খুব সামান্যই ল্যাকটোজ থাকে। তাই ঘি খেলে অ্যালার্জি হওয়ার আশঙ্কা নেই। বরং এতে শরীরে প্রোটিন সরবরাহ হবে।
৮| গাওয়া ঘিয়ে আছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট (Source of Good Fat)
সব সময় ফ্যাট ক্ষতিকর হয় না। কিছু ফ্যাট আছে যার প্রয়োজন আমাদের শরীরের আছে। এগুলোকে বলা হয় ফ্রেন্ডলি ফ্যাট। আর গাওয়া ঘিয়ে এই জাতীয় ফ্যাট আছে। মাছের মধ্যে যেমন ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায় ঠিক তেমনই ঘিয়েও প্রচুর পরিমাণে এটি মজুত থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত ঘি খান তাঁদের হার্টের অসুখ কম হয় এবং তাঁদের কোলেস্টরল বৃদ্ধিও কম হয়।
৯| পেটের অসুখ কমায় (Reduces Stomach Problems)
পেটের নানা অসুখ যেমন পেটে জ্বালা ইত্যাদি কম করে ঘি। কারণ এটি শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এবং পাচনতন্ত্র মজবুত করে। তাছাড়া এটি ব্যাকটিরিয়া বা জীবাণুও প্রতিরোধ করতে সক্ষম। ফলে যারা পেটের সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা ঘি খেলে অসুখ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে।
১০| ক্ষত সারিয়ে তোলে (Cures Infected Wounds)
কোথাও কেটে গেলে বা পুড়ে গেলে সেখানে গাওয়া ঘি (Desi Ghee Benefits), বিশেষ করে পুরনো ঘি লাগিয়ে দিলে সেই ক্ষত খুব তাড়াতাড়ি সেরে যায়। অনেকেই বাড়িতে দীর্ঘদিন পুরনো ঘি জমিয়ে রাখেন। এই পুরনো ঘি বাতের ব্যথা আর হাঁপানিও সারিয়ে তুলতে সক্ষম।
ত্বকের যত্নে ঘিয়ের ব্যবহার (Desi Ghee Benefits For Skin)
এই কথা শুনলে আপনি হয়তো অবাক হবেন যে ঘিয়ের উপকারিতা শুধু স্বাস্থ্যরক্ষাতেই সীমাবদ্ধ নয়। অনেক আগে থেকেই রূপচর্চাতেও গাওয়া ঘিয়ের ব্যাপক ব্যবহার চলে আসছে। একটু ভেবে দেখলেই এর প্রকৃত কারণ আমরা বুঝতে পারব। ঘিয়ে আছে নানা রকমের ভিটামিন এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট (Desi Ghee Benefits for Skin)। ফলে এটি ত্বক এবং চুল দুয়ের পক্ষেই খুব ভাল। আসুন দেখে নেওয়া যাক কীভাবে রূপচর্চায় কাজে লাগে গাওয়া ঘি।
১| ফাটা ঠোঁটের যত্নে (Cures Chapped Lips)
অনেকেই সাড়া বছর ঠোঁট ফাটার সমস্যায় ভোগেন। এটা হয় আর্দ্রতার অভাবে এবং পরিবেশ জনিত কারণে। আঙুলের ডগায় অল্প একটু ঘি (Desi Ghee) নিয়ে আলতো করে ঘষলে এই সমস্যার সমাধান হবে।
২| ডার্ক সার্কল দূর করতে (Reduces Dark Circles)
যেহেতু গাওয়া ঘিয়ে আছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট তাই এটি চোখের চারপাশে লাগালে ডার্ক সার্কল ধীরে ধীরে ফ্যাকাসে হয়ে আসে এবং ত্বকের স্বাভাবিক রং ফিরিয়ে আনে (Desi Ghee Benefits for Skin)। গাওয়া ঘি ডার্ক সার্কল দূর করে ত্বকে ঔজ্জ্বল্যও নিয়ে আসে।
৩| বলিরেখা রোধ করে (Reduces Wrinkles and Fine Lines)
প্রতিদিন অল্প করে গাওয়া ঘি যদি মুখে মাসাজ করা যায় তাহলে দারুণ ফল পাওয়া যায়। এর মধ্যে আছে কিছু আশ্চর্য উপাদান যা ত্বকের বয়স অনেকটাই ধরে রাখে এবং সহজে বলিরেখা পড়তে দেয়না।
৪| ত্বকে আর্দ্রতা যোগায় (Moisturises Your Face)
গাওয়া ঘি আওনার ত্বকে আর্দ্রতা যোগাতে সক্ষম। শুষ্ক ত্বকে জেল্লা নিয়ে আসে গাওয়া ঘি। তাছাড়া ত্বক সংক্রান্ত নানা সমস্যা যেমন ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া, নির্জীব হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্ত কিছু দক্ষতার সঙ্গে সামলায় এই ঘি।
৫| দাগছোপ দূর করে বাড়তি জেল্লা আনে (Clear Spots and Blemishes)
ঘি, সামান্য মধু আর একটু দুধ মিশিয়ে মুখে লাগান। এই প্যাক যদি সপ্তাহে দুইবার করে লাগাতে পারেন তাহলে কেল্লা ফতে। দেখবেন ত্বকের সব দাগছোপ দূর হয়ে গেছে এবং ত্বকে বাড়তি জেল্লা এসেছে। ত্বক হয়ে উঠবে কাচের মতো স্বচ্ছ।
চুলের যত্নে ঘিয়ের ব্যবহার (Benefits of Ghee For Hair)
শুধু ত্বকের যত্নে নয় চুলের যত্নেও কাজে দেয় ঘি এর উপকারিতা (Desi Ghee Benefits for Hair)। এর মধ্যে যে ভিটামিনগুলি আছে সেগুলি চুলের বৃদ্ধি ঘটাতে এবং স্ক্যাল্পের যত্নে খুব কাজে দেয়।
১| শুষ্ক চুলে আর্দ্রতা আনে (Hydrates Hair)
খাঁটি ঘিয়ের সঙ্গে সামান্য একটু মধু মিশিয়ে মাখলে শুষ্ক চুলে আর্দ্রতা আসে। মধুতে আর্দ্রতা আছে তাছাড়া ঘিয়ে যে ভিটামিন আছে সেগুলো চুলে পুষ্টি যোগায় (Desi Ghee Benefits for Hair)। ফলে শুষ্ক খসখসে এবং রুক্ষ চুল অনেক মোলায়েম হয়ে ওঠে।
২| নির্জীব চুলে প্রাণ আনে (Improves Hair Texture)
গাওয়া ঘিয়ে (Desi Ghee) আছে ভিটামিন এ আর ডি। এই দুটো ভিটামিনই নির্জীব চুলে আবার জেল্লা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম। আর স্নানের আগে চুলের (Hair) দৈর্ঘ্য বরাবর ঘি মেখে কিছুক্ষণ রেখে স্নান করে নিন।
৩| স্ক্যাল্পের যত্নে (Nourishes Scalp)
শুধু চুল নয় স্ক্যাল্পের যত্নেও কাজ দেয় গাওয়া ঘি। এতে আছে ভিটামিন ই আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই তেলের বদলে মাথায় ঘি মাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। এতে শুধু স্ক্যাল্প যত্নে থাকবে তা নয় চুল পড়া এবং চুলের ডগা ফাটাও বন্ধ হবে।
৪| চুলের বৃদ্ধি ঘটায় (Promotes Hair Growth)
চুলের দৈর্ঘ্য বাড়ছে না বলে চিন্তায় আছেন? বাজার চলতি প্রোডাক্ট ব্যবহার না করে দেশি ঘি বা গাওয়া ঘি ব্যবহার করুন হাতেনাতে ফল পাবেন। স্ক্যাল্পে গাওয়া ঘি মাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে (Desi Ghee Benefits for Hair) ফলে চুলের বৃদ্ধি অনেক তাড়াতাড়ি হয়।
৫| কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে (Works As Deep Conditioner)
বাজার থেকে কন্ডিশনার না কিনে চুলের যত্নে গাওয়া ঘি ব্যবহার করুন। মাথায় ভাল করে ঘি মেখে একটি শাওয়ার ক্যাপ পরে সারারাত থাকুন। দেখবেন চুল অনেক বেশি নরম ও মোলায়েম হয়ে গেছে।
সেরা দশটি গাওয়া ঘি ব্র্যান্ড (10 Best Ghee Brands In India)
আপনাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি সেরা দশটি ঘিয়ের ব্র্যান্ড। এই প্রত্যেকটি ঘিয়ের ব্র্যান্ডই সুপ্রসিদ্ধ এবং সুপরিচিত। আপনি চোখ বন্ধ করে এঁদের মধ্যে যে কোনও একটি ব্র্যান্ডের উপর ভরসা করতে পারেন।
১| গোবর্ধন ঘি (Gowardhan Ghee)
দীর্ঘদিনের পরিচিত ব্র্যান্ড। এই ঘি মেশিনে তৈরি হয় এবং একদমই হাত দেওয়া হয়না।তাই এই ঘি সুরক্ষিত। ১০০ শতাংশ গরুর দুধ দিয়ে তৈরি হয় এই ঘি।
২| অনিক ঘি (Anik Ghee)
প্রায় চল্লিশ বছর ধরে নানা রকমের দুগ্ধজাত প্রোডাক্ট তৈরি করছে এই ব্র্যান্ড। এঁদের বৈশিষ্ট্য হল এই ব্র্যান্ডের ঘিয়ের গন্ধ খুব সুন্দর। নানা আয়ুর্বেদিক কাজে এই ঘি ব্যবহার হয়।
৩| আমূল ঘি (Amul Ghee)
আমূল ব্র্যান্ড নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই। এই ব্র্যান্ডের খ্যাতি সবাই জানে। চিজ, মাখন সব কিছুই তৈরি করে আমূল। আপনি চোখ বুজে কিনতে পারেন এই ঘি।
৪| মিল্কফুড ঘি (Milkfood Ghee)
পাতিয়ালার এই কোম্পানি অল্প দিনেই সবার মন জয় করেছে। কারণ এঁদের ঘি খুব সুন্দর খেতে হয়। এঁদের প্যাকেজিংও চমৎকার। এঁরা ঘিয়ে কোনও রাসায়নিক মেশান না।
৫| হেলথএইড ঘি (Healthaid Ghee)
সারা ভারতে ঘি সাপ্লাই করে পাঞ্জাবের এই সংস্থা। ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়েছে এই ব্র্যান্ড। এঁদের নাম দেখেই বোঝা যাচ্ছে একদম স্কিমড মিল্ক থেকেই এঁরা ঘি তৈরি করেন।
৬| ব্রিটানিয়া ঘি (Britannia Ghee)
ব্রিটানিয়া ব্র্যান্ডের খ্যাতি সর্বজনবিদিত। এঁরা দুই ধরনের ঘি তৈরি করেন। একটি হল শুদ্ধ দেশি ঘি এবং আরেকটি হল দানাদার ঘি। দ্বিতীয় রকমের ঘি একটু দানা দানা প্রকারের হয়।
৭| নেসলে এভ্রিডে ঘি (Nestle Everyday Ghee)
চূড়ান্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে এখানে ঘি তৈরি হয়। এই ঘি খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং এর প্যাকেজিং খুব যত্ন করে করা হয়। নেসলের চাপ থাকায় চোখ বন্ধ করে ভরসা করতে পারেন এই ঘিয়ের উপর।
৮| মধুসূদন ঘি (Madhusudan Ghee)
যারা ঘি খেতে ভালবাসেন তাঁরা ইতিমধ্যেই এই ব্র্যান্ডের সঙ্গে পরিচিত। এঁরা মোষ এবং গরু দুটোর দুধ থেকেই ঘি তৈরি করে। আর দুটোই স্বাদে ও গন্ধে অতি উৎকৃষ্ট মানের।
৯| ভারকা ঘি (Verka Ghee)
পাঞ্জাবের অন্যতম জনপ্রিয় ব্র্যান্ড। তবে এঁরা আস্তে আস্তে পাঞ্জাবের বাইরেও পা রাখছে। এঁদের ঘি বেশ সস্তা এবং পুষ্টিকর।
১০| গোপালজি আনন্দ ঘি (Gopaljee Ananda Ghee)
২৫ বছর ধরে ভারতীয়দের পাতে স্বাদে সুগন্ধে অতুলনীয় ঘি দিয়ে আসছে এই ব্র্যান্ড। অত্যন্ত সুস্বাদু এই ঘিয়ের দাম খুব একটা বেশি নয়। ঘি ছাড়াও এঁরা দই আর রাবড়ি তৈরির জন্যও বিখ্যাত।
বাড়িতে কীভাবে তৈরি করবেন গাওয়া ঘি? (How To Make Ghee At Home?)
বাড়িতে তৈরি দেশি বা গাওয়া ঘি হয় সবচেয়ে শুদ্ধ। তাই বাড়িতে কীভাবে ঘি তৈরি করতে হয় সেটা শিখে নিন। প্রথমে মোটামুটি আট থেকে দশ দিন দুধের উপর থেকে মাঠা বা মালাই সংগ্রহ করে একটি পাত্রে রাখুন। পাত্রটি রোজ মনে করে ফ্রিজে রাখবেন নাহলে মালাই নষ্ট হয়ে যাবে। যখন ঘরের তাপমাত্রায় এই মালাই রাখবেন চাইলে সামান্য একটু দই মিশিয়ে দিতে পারেন। এতে জীবাণু সংক্রমণ হবে না। তারপর এটাকে ভাল করে ফেটাতে থাকুন অল্প একটু ঠান্ডা জল আর বরফের টুকরো দিয়ে। যত বেশি ফেটাবেন তত ভাল। ভাল করে ফেটালে দুধ আর মালাই একদম আলাদা হয়ে যাবে। এবার এটাকে মাইক্রোওয়েভে গরম করলে (আট থেকে দশ মিনিট) বা জ্বাল দিলেই আপনার ঘি রেডি। যতক্ষণ না ঘিয়ের রং ধরছে জ্বাল দিয়ে যাবেন।
ঘিয়ের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া (Side Effects of Ghee)
সব কিছুর যেমন ভাল দিক আছে তেমনি খারাপ দিকও আছে। ঘি খেলে যেমন কিছু উপকার পাওয়া যায় তেমনি তার কিছু খারাপ দিকও আছে। বেশি মাত্রায় ঘি খেলে কোলেস্টরল বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা আছে। যেটা পরবর্তীকালে হার্ট অ্যাটাকে পরিণত হতে পারে। তাছাড়া বেশি ঘি খেলে ওজন বৃদ্ধি পায়। যাঁদের পেটের সমস্যা খুব বেশি হয় বা যারা একাধিকবার জন্ডিসে ভুগেছেন তাঁদের ঘি না খাওয়াই ভাল। দুধ জাতীয় প্রোডাক্ট যাঁদের বেশি সহ্য হয়না তাঁদেরও ঘি খেলে অ্যালার্জি হতে পারে।
ঘি নিয়ে জরুরি প্রশ্নোত্তর (FAQs)
১| প্রশ্নঃ প্রতিদিন কতটা করে ঘি খাওয়া নিরাপদ?
উত্তরঃ বিশেষ কোনও শারীরিক সমস্যা না থাকলে রোজ সামান্য একটু ঘি খাওয়া যেতে পারে। তবে এক চা চামচের বেশি না খাওয়াই ভাল।
২| প্রশ্নঃ চুলের বৃদ্ধিতে কি গাওয়া ঘি সাহায্য করে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, স্ক্যাল্পে ঘি মাসাজ করলে এটি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে চুলেরও বৃদ্ধি ঘটায়।
৩| প্রশ্নঃ অলিভ অয়েলের চেয়ে কি ঘি দিয়ে রান্না করা ভাল?
উত্তরঃ না। অলিভ অয়েল অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।
৪| প্রশ্নঃ হার্টের রোগীদের কি ঘি খাওয়া নিরাপদ?
উত্তরঃ হার্টের অবস্থা খুব খারাপ হলে ঘি এড়িয়ে চলাই ভাল। কারণ এটি কোলেস্টরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে।
৫| প্রশ্নঃ ফ্রিজে কি ঘি রাখা যায়?
উত্তরঃ হ্যাঁ, রাখা যায়। তবে কাচের বয়ামে রাখলে বেশি ভাল। ফ্রিজের বাইরে স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেও দীর্ঘদিন ঘি রেখে দেওয়া যায়।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এসে গেল #POPxoEverydayBeauty – POPxo Shop-এর স্কিন, বাথ, বডি এবং হেয়ার প্রোডাক্টস নিয়ে, যা ব্যবহার করা ১০০% সহজ, ব্যবহার করতে মজাও লাগবে আবার উপকারও পাবেন! এই নতুন লঞ্চ সেলিব্রেট করতে প্রি অর্ডারের উপর এখন পাবেন ২৫% ছাড়ও। সুতরাং দেরি না করে শিগগিরই ক্লিক করুন POPxo.com/beautyshop-এ এবার আপনার রোজকার বিউটি রুটিন POP আপ করুন এক ধাক্কায়…