শরীর সুস্থ রাখতে শরীরচর্চার যে কোনও বিকল্প নেই, সে কথা সকলেরই জানা আছে। তবু আলস্য কাটিয়ে হাত-পা ছুড়তে অনেকেরই যেমন মন চায় না, তেমনই সময়ের অভাবেও অনেকের পক্ষে নিয়মিত এক্সারসাইজ করে ওঠা সম্ভব হয় না। কিন্তু প্রশ্ন হল, যাঁদের পক্ষে নিয়মিত এক্সারসাইজ করা সম্ভব হয় না, তাঁদের সুস্থ থাকার কি কোনও উপায় নেই? আলবাত রয়েছে! কী উপায়? নিয়মিত ডন বৈঠক করতে হবে, তা হলে শরীর বাবাজিকে নিয়ে আর কোনও চিন্তাই থাকবে না। স্পোর্টস থেরাপিস্টদের মতে, প্রতিদিন মাত্র ৫০টা করে ডন বৈঠক করলেই ডাক্তারের প্রয়োজন কমবে। কারণ, এই এক্সারসাইজটি করতে শুরু করলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ফলে হার্টের রোগ, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের মতো জটিল রোগ যেমন ধারেকাছেও ঘেঁষতে পারে না, তেমনই শরীরের ফ্লেক্সিবিলিটিও বাড়ে। তবে এখানেই শেষ নয়, ডন বৈঠকের আরও বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে।
নিয়মিত ডন বৈঠক (Squats) করলে পায়ের পেশির ক্ষমতা তো বাড়েই, সঙ্গে শরীরের প্রতিটি পেশির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে quadriceps, হ্যামস্ট্রিং, অ্যাবডোমিনাল মাসল এবং লোয়ার ব্যাক মাসলের শক্তি বাড়ে অল্প সময়েই। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ডন বৈঠক হল সেই সব গুটিকয়েক এক্সারসাইজগুলির মধ্যে অন্যতম, যা একসঙ্গে এতগুলি পেশির দেখভাল করে।
অতিরিক্ত ওজনের কারণে চিন্তায় রয়েছেন? তা হলে নিয়মিত পঞ্চাশটা করে ডন বৈঠক দিন। দেখবেন, শরীরের ইতি-উতি জমে থাকা মেদ ঝরে যেতে সময় লাগবে না। কারণ, এই এক্সারসাইজটি করার সময় প্রচুর মাত্রায় ক্যালরি বার্ন হয়। সঙ্গে পেশির গঠনেও পরিবর্তন আসে, যে কারণে অল্প সময়েই দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
এক্কেবারে ঠিক শুনেছেন! এই এক্সারসাইজটি নিয়মিত করলে বাস্তবিকই হার্ট এবং ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ে। কিন্তু কীভাবে এমনটা সম্ভব হয়? নিয়মিত ডন বৈঠক করলে হার্টের পাম্পিং ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে হার্টের পেশির ক্ষমতা বাড়ে, যে কারণে অসময়ে হার্ট দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনই নানাবিধ কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। আর ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ে কীভাবে? এক্সারসাইজটি করার সময় প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেনের প্রবেশ ঘটে শরীরে। ফলে ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়তে সময় লাগে না।
বারংবার হাঁটু মুড়ে বসা-ওঠার কারণে স্বাভাবিকভাবেই জেয়েন্টের কর্মক্ষমতা বাড়ে। ফলে বেশি বয়সে গিয়ে জয়েন্টের নানা সমস্যার খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা আর থাকে না। একই সঙ্গে হাঁটু এবং গোড়ালির ক্ষমতাও বাড়ে। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত এই এক্সারসাইজটি করলে bone density-এর উন্নতি ঘটে, যে কারণে অসময়ে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা আর থাকে না।
গ্যাস-অম্বল এবং বদহজমের মতো সমস্যার খপ্পর থেকে নিস্তার পেতে চান তো নিয়মিত ডন বৈঠক দিতে ভুলবেন না যেন! কারণ, এক্সারসাইজটি করা শুরু করলে শরীরের প্রতিটি কোণায় অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত এবং উপকারী সব fluids পৌঁছে যায়, যে কারণে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলি যেমন চাঙ্গা হয়ে ওঠে, তেমনই ক্ষুদ্রান্ত্রের ক্ষমতাও বাড়ে। ফলে গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যার প্রকোপ কমে নিমেষেই।
হাঁটু হল ‘হিঞ্জ জয়েন্ট’, অনেকটা কপাটের মতো। একে ভাল রাখতে ডন বৈঠকের কোনও জুড়ি নেই। পা ফাঁক করে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাঁটুটা যতটা ভাঁজ করলে ব্যথা লাগছে না ততটা ভাঁজ করে বসার চেষ্টা করুন। সম্ভব হলে ৯০ ডিগ্রি অর্থাৎ মেঝের সমান্তরাল হওয়া পর্যন্ত নামুন। তারপরে উঠে দাঁড়ান। প্রথম-প্রথম পিছনে একটা ছোট টুল রাখতে ভুলবেন না। কারণ, টুলে নিতম্ব স্পর্শ করলেই উঠে দাঁড়াতে হবে। টুল রাখলে স্কোয়াটের পশ্চার ঠিক থাকে। একবার পশ্চার ঠিক হয়ে গেলে টুল ছাড়া এক্সারসাইজটি করা শুরু করুন। প্রথম দিকে দশবার করে করুন। ধীরে-ধীরে পঞ্চাশ বার ডন বৈঠক দেওয়ার চেষ্টা করুন, তাতে দ্রুত উপকার মিলবে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!