এটা কিন্তু যেমন-তেমন মেডিটেশন নয়, একে ইংরেজরা ‘ওয়াকিং মেডিটেশন’ নামে ডেকে থাকেন। আর নাম থেকেই যেমনটা বুঝঝেন, এক্ষেত্রে পদ্মাসনে বসে মেডিটেশন করার প্রয়োজন পড়ে না, বরং হাঁটতে হাঁটতেই সে কাজ হয়ে যায়। বলেন কী! হাঁটতে হাঁটতে মেডিটেশন, সেটা কীভাবে সম্ভব? এক্ষেত্রে হাঁটার সময় প্রতিটি পদক্ষেপের দিকে নজর রাখতে হয়। তাতে মন স্থির হয়, সেই সঙ্গে এদিক-সেদিকের চিন্তাও আর মাথায় ভিড় করে না। ফলে একাগ্রতা বাড়ে, যার প্রভাবে স্ট্রেস-অ্যাংজাইটির প্রকোপ তো কমেই, তার পাশাপাশি ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পেতেও সময় লাগে না। আর হাঁটাহাঁটি করার কারণে আলাদা করেও অনেক উপকার পাওয়া যায়। বিশেষ করে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াটেবিসের মতো রোগ ধারেকাছেও ঘেঁষতে পারে না, সেই সঙ্গে হার্টের ক্ষমতাও বাড়ে। তাই ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি এবং রোগভোগ থেকে মুক্তি, এক ঢিলে দুই পাখি মারার ইচ্ছে থাকলে ওয়াকিং মেডিটেশন (Walking Meditation) শুরু করুন কাল থেকেই!
‘ওয়াকিং মেডিটেশন’ করার সময় মাথায় রাখুন এই বিষয়গুলি
১. ঠিক জায়গা নির্বাচন করাটা জরুরি
পার্কে, নয়তো মাঠে হাঁটতে যাবেন। রাস্তায় ভুলেও নয়। কারণ, রাস্তা মানেই হাজার গাড়ি, আর হাজার গাড়ি মানেই কান ফাটানো হর্নের আওয়াজ। এমন পরিবেশে মন স্থির করবেন কীভাবে বলুন! তাই পার্ক অথবা মাঠই হল ওয়াকিং মেডিটেশনের জন্য আদর্শ জায়গা। বাড়ির মধ্যে ২০টা স্টেপ নেওয়ার জায়গা থাকলে বাড়িতেই হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। তবে ভুলেও খুব দ্রুত হাঁটবেন না। কারণ, এক্ষেত্রে প্রতিটা স্টেপের দিকে নজর রাখার মধ্যে দিয়েই মেডিটেশন করা হয়ে থাকে। তাই জোরে হাঁটলে সেই কাজটা আর ঠিকমতো করে ওঠা সম্ভব হবে না। ফলে তেমন কোনও উপকারই মিলবে না।
২. হাঁটতে-হাঁটতে বিশ্রাম নেওয়াটা জরুরি
একটানা হাঁটলে চলবে না। বরং খান দশ-কুড়ি স্টেপ নেওয়ার পরে মিনিটপাঁচেক বিশ্রাম নিয়ে আবার হাঁটতে হবে। যখন বিশ্রাম নেবেন, তখন চোখ বন্ধ করে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে নিতে কিছুক্ষণ মনে-মনে ‘ওম’ উচ্চারণ করবেন, তাতে মন এবং শরীরের চাপ কমবে। দেখবেন, ক্লান্তিও দূর হবে।
৩. প্রতিটি পদক্ষেপের দিকে নজর রাখতে হবে
ওয়াকিং মেডিটেশনের প্রথমিক শর্তই হল হাঁটার সময় প্রতিটি পদক্ষেপের দিকে নজর রাখতে হবে। এমনকী, শরীরের ওজন কোন পায়ের উপর কতটা পড়ছে, সেদিকেও নজর রাখতে হবে। তাতেই একাগ্রতা বাড়বে। সেই সঙ্গে মেডিটেশনের অন্যান্য উপকারগুলিও মিলবে।
ওয়াকিং মেডিটেশনের উপকারিতা
১. একাগ্রতা বাড়বে
গৌতম বুদ্ধ প্রথম ওয়াকিং মেডিটেশনের নানা উপকারিতার উপর আলোকপাত করেছিলেন। আর আজ তো আধুনিক বিজ্ঞানও সে কথা মেনে নিয়েছে। নিয়মিত প্রাণায়াম করলে যে-যে উপকার পাওয়া যায়, তার থেকেও বেশি উপকার মেলে ওয়াকিং মেডিটেশনের উপর ভরসা রাখলে। বিশেষ করে একাগ্রতা তো বাড়েই, সেই সঙ্গে ব্রেন পাওয়ার বাড়ার কারণে স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটতেও সময় লাগে না।
২. জয়েন্টের ক্ষমতা বাড়ে
নিয়মিত অল্পবিস্তর হাঁটাহাঁটি করার কারণে শরীরের প্রতিটি জয়েন্ট এবং পেশির ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে হাড়ের ক্ষমতাও বাড়ে। ফলে জয়েন্ট এবং হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না বললেই চলে।
৩. স্ট্রেসের প্রকোপ কমে
আজকাল কমবয়সিদের মধ্যে স্ট্রেস-অ্যাংজাইটির প্রকোপ যে হারে বাড়ছে, তাতে সকলেরই নিয়ম করে ওয়াকিং মেডিটেশন করা উচিত। তাতে স্ট্রেস-অ্যাংজাইটির প্রকোপ তো কমবেই, সঙ্গে ডিপ্রেশনের মতো সমস্যাও আর ধারেকাছে ঘেঁষতে পারবে না। তাছাড়া হাঁটার সময় আমাদের শরীরে বেশ কিছু ‘ফিল গুড’ হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যে কারণেও স্ট্রেস-অ্যাংজাইটিও দূরে পালায়। তবে নিয়মিত অন্তত মিনিটদশেক ওয়াকিং মেডিটেশন করতেই হবে, তবেই উপকার পাবেন।
৪. খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়
বিশেষজ্ঞদের মতে নিয়ম করে ওয়াকিং মেডিটেশন করা শুরু করলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে হঠাৎ করে হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!