আমার ঠাকুমা বলতেন, শাক হল এমন একটি পদ, যা বাঙালিদের খাদ্যতালিকায় তো থাকবেই, কিন্তু শাককে নাকি কখনও অবহেলাও করতে নেই আবার শাকের প্রশংসাও নাকি করতে নেই। বুঝলেন না তো? মানে, যখন খেতে বসে কেউ জিজ্ঞেস করবেন যে শাকের অমুক পদটি খেতে কেমন হয়েছে, তখন নাকি উচ্ছ্বসিত হয়ে শাকের রেসিপির প্রশংসা করতে নেই; তাতে নাকি শাক বড্ড সন্তুষ্ট হয় এবং আপনাকে ছেড়ে কোনওদিনও যায় না – অর্থাৎ সারাজীবন নাকি আপনাকে শাক-ভাতই খেয়ে কাটাতে হতে পারে। আবার অন্যদিকে যদি আপনি শাকের পদটিকে অবহেলা করেন, তাতে নাকি শাক এমন রেগে যায় যে সারাজীবন আপনাকে তাড়া করে বেড়ায়! কাজেই, কেউ যদি জিজ্ঞেস করেন যে শাকের অমুক পদটি কেমন খেতে লাগল, তাহলে নাকি হ্যাঁ বা না কোনও কিছুই না বলে হাসিমুখে মাথা নাড়তে হয়।
এসব গল্পকথার সত্যতা বিচার করতে যাবেন না, বরং শাক দিয়ে তৈরি নানা পদের দারুণ কয়েকটি নিরামিষ ও আমিষ রেসিপি (Bengali Shaak Recipes) চট করে জেনে নিন। এরপর আপনার রান্না করা শাক খাইয়ে না হয় কাউকে জিজ্ঞেস করবেন, ‘শাকের পদটা খেতে কেমন হয়েছে?’
বাঙালি বাড়িতে খাবারের থালায় প্রথমদিকের পদ হিসেবে শাক খাওয়ার অভ্যাস এখনও অনেক পরিবারেই রয়েছে, রইল একটু অন্যরকম কয়েকটি নিরামিষ পদের রেসিপি (Bengali Shaak Recipes), যার প্রধান উপকরণটি কিন্তু শাক।
লাল শাক ভাজার রেসিপি টি (Lal Saag Recipe) যদিও খুবই সহজ, তবুও আরও একবার ঝালিয়ে নিতেই পারেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক কীভাবে এই বাঙালি রেসিপি টি রান্না করা যায় খুব সহজভাবে
লাল শাক ভাজা করতে যা যা উপকরণ প্রয়োজন (Ingredients) –
তিন-চার আঁটি লাল শাক, বাদাম – আধ কাপ, সর্ষের তেল – দুই টেবিল চামচ, শুকনো লঙ্কা – তিন-চারটি, নুন ও চিনি – স্বাদ অনুযায়ী
কীভাবে পদটি রান্না করবেন (Method) –
১। প্রথমেই খুব ভাল করে লাল শাকগুলো ডাঁটি থেকে আলাদা করে জলে ধুয়ে নিন যাতে বালি বা কাদা না থাকে, এবং নেটের একটি জালিতে জল ঝরানোর জন্য রেখে দিন। জল ঝরে গেলে শাক কুঁচিয়ে নিন।
২। একটি কড়াই গরম করে তাতে কুঁচিয়ে রাখা লাল শাক ও সামান্য নুন দিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখুন যাতে লাল শাক থেকে জল বেরিয়ে যায়। নুনের পরিমাণ খুব সামান্য দেবেন কারণ শাক নরম হয়ে এলে পরিমাণে অনেকটা কমে যায়, ফলে নুন বেশি দিলে রেসিপিটির স্বাদই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৩। শাক সেদ্ধ হয়ে গেলে অতিরিক্ত জলটা ফেলে দিন (Lal Saag Recipe) এবং আলাদা করে রেখে দিন।
৪। এবারে কড়াইতে সর্ষের তেল গরম করে তাতে শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন এবং ওই একই তেলে বাদাম ভেজে নিন। আপনি চাইলে বাদামগুলো ভেঙেও দিতে পারেন আবার গোটাও রাখতে পারেন।
৫। এবারে সেদ্ধ হয়ে যাওয়া লাল শাক (Lal Saag Recipe) দিয়ে দিন এবং বেশ ভাল করে ভাজা ভাজা করে নিন এবং শুকনো লঙ্কা ও বাদামের সঙ্গে ভাল করে মিশিয়ে দিন। যখন দেখবেন একদম সুন্দর ভাজা হয়ে গেছে, তখন গ্যাস থেকে নামিয়ে নিন।
আজকাল ব্যস্ত জীবনে শাক বাছার এবং রান্না করার সময় কারও অত নেই, কিন্তু শাক খাওয়ার যে বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে, তা তো আর আপনি অস্বীকার করতে পারবেন না! তাছাড়াও এমন অনেক বাঙালি রান্নার রেসিপি (Bengali Veg Recipes) রয়েছে যা আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। সেরকমই একটি রেসিপি হল পাট শাক ভাজা।
পাট শাক ভাজা করতে যা যা উপকরণ প্রয়োজন (Ingredients) –
দুই আঁটি পাট শাক, এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, তিন টেবিল চামচ সর্ষের তেল, স্বাদ অনুসারে নুন ও চিনি, ফোড়ন দেওয়ার জন্য কয়েকটি গোটা শুকনো লঙ্কা
কীভাবে পদটি রান্না করবেন (Method) –
১। প্রথমেই পাট শাক খুব ভালভাবে ডাঁটি থেকে আলাদা করে নিন। এই কাজটি কিন্তু খুব সাবধানে করতে হবে, কারণ পাট শাকের পাতার মাঝখানে একটি আঁশ থাকে বোঁটা পর্যন্ত যা পেটে গেলে অনেকসময়ে পেট ব্যথা হতে পারে। কাজেই খুব ভাল করে বোঁটা ও আঁশ ছাড়িয়ে পাত শাকের পাতা আলাদ করে নিন।
২। ভাল করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে রেখে দিন। যদি পাটশাক কচি না হয় সেক্ষেত্রে সামান্য একটু জলে ভাপিয়ে তারপর জল জড়িয়ে রাখুন।
৩। কড়াইতে তেল গরম করে গোটা শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন এবং পাট শাকগুলো দিয়ে দিন।
৪। এবারে পরিমাণ মতো নুন ও হলুদ দিয়ে বেশ ভাল করে নাড়তে থাকুন। একটু ভাজা ভাজা হয়ে এলে অল্প চিনি দিয়ে মিশিয়ে নিন। অনেকসময়ে পাট শাক একটু তিতকুটে স্বাদ মনে হয়, সেজন্যই চিনি দেওয়া।
৫। মিনিট পাঁচেক ঢাকা দিয়ে আঁচ কমিয়ে রাখুন। পাঁচ মিনিট পর দেখবেন শাক সেদ্ধ হয়ে এসছে, তখন আবার আঁচ বাড়িয়ে আরেক্তু ভাজা ভাজা করে নিন। গরম ভাতের সঙ্গে কাসুন্দি সহযোগে পাট শাক ভাজা পরিবেশন করুন।
কচি মুলো শাক শীতকালেই পাওয়া যায়। অনেকেই মুলো খেতে পছন্দ করেন না, তবে মুলো শাক ভাজা শীতের মধ্যে খেতে কিন্তু মন্দ লাগে না। তবুও যদি আপনার মনে হয় যে মুলো শাকের একটা অদ্ভুত নিজস্ব গন্ধ রয়েছে, সেক্ষেত্রে রসুন দিয়ে এই রেসিপিটি ট্রাই করতে পারেন। জেনে নিন মুলো শাক ভাজার সহজ একটি রেসিপি।
মুলো শাক ভাজা করতে যা যা উপকরণ প্রয়োজন (Ingredients) –
এক আঁটি মুলো শাক, একটি ছোট মুলো, দুই-তিনটি গোটা শুকনো লঙ্কা, এক টেবিল চামচ সর্ষের তেল, পরিমাণমতো নুন ও চিনি
কীভাবে পদটি রান্না করবেন (Method) –
১। প্রথমেই মুলো শাকটি খুব ভাল করে ধুয়ে নিন এবং জল জড়িয়ে নিয়ে কুঁচিয়ে নিন। কোঁচানো মুলো শাকের মধ্যে অল্প নুন মাখিয়ে রাখুন যাতে শাকটি নরম হয়ে যায় (Bengali Veg Recipes)। মুলো শাকটি একদম চটকে নিন খুব ভাল করে যাতে জল বেরিয়ে আসে
২। ছোট যে মূলোটি নিয়েছিলেন তা কুরিয়ে রাখুন এবং মুলো শাকের মতো করেই চটকে নিন।
৩। কড়াইতে তেল গরম করুন এবং শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন। এবারে চটকে নরম করে রাখা মুলো শাকটি জল চিপে ঢেলে দিন। একটু কষিয়ে নিয়ে কুরিয়ে রাখা মুলো দিয়ে দিন এবং বেশ ভাল করে মিশিয়ে নিন।
৪। ভাজা ভাজা হয়ে এলে সামান্য জলের মধ্যে চিনি গুলে শাক ভাজায় ছড়িয়ে মিশিয়ে দিন। মিনিট পাঁচেক রান্না করুন এবং আপনার নিরামিষ মুলো শাক ভাজা তৈরি।
নিরামিষ ছোলার শাক করতে যা যা উপকরণ প্রয়োজন (Ingredients) –
৫০০ গ্রাম ছোলার শাক, একটি ছোট বেগুন, তিন চারটি কাঁচা লঙ্কা, এক চা চামচ আদা বাটা, দস-বারোটি ডালের বড়ি, ভাজা মশলা – ১এক চা চামচ, এক চিমটি পাঁচফোড়ন, একটি গোটা তেজ পাতা, এক টেবিল চামচ চালের গুঁড়ো, এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, একটি গোটা শুকনো লঙ্কা, স্বাদ অনুযায়ী নুন ও চিনি, দুই টেবিল চামচ সর্ষের তেল
কীভাবে পদটি রান্না করবেন (Method) –
১। ছোলার শাক ভাল করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে কুঁচিয়ে নিন।
২। কড়াইতে তেল গরম করে বড়ি ভেজে তুলে রাখুন। ওই একই তেলে বেগুন ভেজে নিন এবং তুলে রাখুন।
৩। এবারে আরেকটু তেল দিয়ে তাতে তেজপাতা, পাঁচ ফোড়ন ও শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে দিন। এবারে আদা বাটা দিয়ে কষিয়ে নিন। এবারে আগে থেকে কুঁচিয়ে রাখা ছোলার শাকটি (Bengali Veg Recipes) দিয়ে দিন। এবারে ছোলার শাকের মধ্যে একে একে কাঁচা লঙ্কা, হলুদ ও নুন দিয়ে ভাল করে নাড়াচাড়া করতে থাকুন। মিনিট দুয়েক ঢাকা দিয়ে রাখুন।
৪। শাক নরম হয়ে এলে একটু জলের ছিটে দিয়ে আবার একটু নেড়ে নিন। এবারে শাকের মধ্যে আগে থেকে ভেজে রাখা বড়ি ও বেগুন দিয়ে মিশিয়ে নিন। এবারে তাতে চিনি মেশান ও মিনিট পাঁচেকের জন্য ঢাকা দিয়ে দিন।
৫। এবারে একটি বাটিতে জল দিয়ে চালের গুঁড়ো গুলে নিন এবং ঢাকা খুলে শাকের মধ্যে চালের গুঁড়ো গোলা জল দিয়ে দিন। খুব ভাল করে নাড়তে থাকুন।
৬। ভাজা ভাজা হয়ে এলে ভাজা মশলার গুঁড়ো ছড়িয়ে আরও একবার মিশিয়ে নিন। তৈরি হয়ে গেল আপনার নিরামিষ ছোলার শাকের ঘন্ট।
কুমড়ো শাকের চচ্চড়ি করতে যা যা উপকরণ প্রয়োজন (Ingredients) –
দুই টেবিল চামচ সর্ষের তেল, এক চিমটি পাঁচ ফোড়ন, একটি গোটা শুকনো লঙ্কা, একটি বড় আলু, অল্প কচু, দুশো গ্রাম কুমড়ো শাক, একটি ছোট বেগুন, এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, আদা-জিরে-কাঁচালঙ্কা বাটা – এক টেবিল চামচ, মটর ডাল বাটা – দুই টেবিল চামচ, নুন ও চিনি স্বাদ অনুযায়ী
কীভাবে পদটি রান্না করবেন (Method) –
১। প্রথমেই কুমড়ো শাক ধুয়ে কেটে রাখুন। এবারে আলু, বেগুন এবং কচু ডুমো করে কেটে রেখে দিন।
২। কড়াইতে তেল গরম করে পাঁচ ফোড়ন ও শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে আলু ও কচু ভেজে নিন। ভাজা হয়ে গেলে বেগুনও ওই একই তেলে ভেজে নিন।
৩। সব্জি ভাজা হয়ে গেলে তাতে কেটে রাখা কুমড়ো শাক (Bengali Veg Recipes) দিয়ে তার মধ্যে সামান্য নুন ও হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে মিনিট পাঁচেক কম আঁচে ঢাকা দিয়ে রাখুন।
৪। পাঁচ মিনিট পর ঢাকা খুলে তাতে আদা-জিরে-কাঁচালঙ্কা বাটা মিশিয়ে সামান্য একটু জল দিয়ে ঢাকা দিয়ে দিন যাতে সব্জি এবং শাক বেশ নরম হয়ে যায়।
৫। এবারে শাক ও সব্জি নরম হয়ে এলে চিনি দিয়ে দিন এবং পরিমাণ মতো জল দিয়ে ঢাকা দিয়ে রান্না হতে দিন।
৬। যতক্ষণে শাক সেদ্ধ হচ্ছে, ততক্ষনে অন্য একটি প্যানে সামান্য সর্ষের তেল গরম করে তাতে বেটে রাখা মটর ডাল দিয়ে বেশ ভাল করে ভেজে নিন।
৭। এবারে শাক ও সব্জি বেশ মাখা মাখা হয়ে এলে ভেজে রাখা মটর ডাল বাটা মিশিয়ে দিন এবং আরও দুই-তিন মিনিট ঢাকা দিয়ে দিন।
৮। দুই মিনিট পর ঢাকা খুলে দেখে নিন যে সব উপকরণ একসঙ্গে মিশে গেছে কিনা। মিশে গেলে বুঝবেন যে আপনার কুমড়ো শাকের চচ্চড়ি তৈরি।
শাকের আমিষ পদের রেসিপি, শুনে কি একটু অবাক হচ্ছেন? কেন, ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে কচু শাক খান নি কোনওদিন? রইল সেরকমই কয়েকটি জিভে জল আনা বাঙালি আমিষ রেসিপি (Bengali Shaak Recipes) যার মূল উপকরণ কিন্তু নানা রকমের শাক।
ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে কচু শাক করতে যা যা উপকরণ প্রয়োজন (Ingredients) –
এক আঁটি কচু শাক, দুটি ইলিশ মাছের মাথা, চার-পাঁচটি কাঁচা লঙ্কা, দুই-তিন টেবিল চামচ নারকেল কোরা, একটি শুকনো লঙ্কা, এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, আধ চা চামচ জিরে গুঁড়ো, এক চা চামচ চিনি, স্বাদ অনুযায়ী নুন, আধ কাপ করে পেঁয়াজ ও রসুন কুচি, দুই টেবিল চামচ লেবুর রস, তিন টেবিল চামচ সর্ষের তেল
কীভাবে পদটি রান্না করবেন (Method) –
১। কচুর শাক ধুয়ে ছোট ছোট টুকরো করে নুন-হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। মনে রাখবেন কচুর শাক থেকে প্রচুর জল বেরোয়, কাজেই যতক্ষণ না পর্যন্ত শাক সেদ্ধ হচ্ছে এবং জল শুকিয়ে যাচ্ছে, মাঝে মাঝেই কাঠের হাতা বা খুন্তি দিয়ে নাড়তে হবে।
২। অন্য একটি কড়াইতে তেল গরম করে ইলিশ মাছের মাথা ভাল করে ভেজে নিন এবং ভেঙে নিন।
৩। এবারে ওই একই তেলে পেঁয়াজ, রসুন ও শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে ভাজা ভাজা করে নিন।
৪। ভাজা হয়ে এলে সেদ্ধ করে জল ঝরানো কচুর শাক ও ভাজা ইলিশ মাছের মাথার টুকরোগুলো দিয়ে ভাল করে নাড়তে থাকুন। আঁচ কম করে ঢাকা দিয়ে দিন পাঁচ থেকে সাত মিনিটের জন্য।
৫। মিনিট সাতেক পর ঢাকা খুলে তার মধ্যে একে একে নারকেল কোরা, চিনি, কাঁচা লঙ্কা এবং লেবুর রস দিয়ে মিশিয়ে নিন। দশ মিনিট রান্না করুন। যখন দেখবেন একটু তেল ছাড়ছে, বুঝবেন যে আপনার আমিষ কচুর শাক তৈরি।
কুচো চিংড়ি দিয়ে লাল শাক করতে যা যা উপকরণ প্রয়োজন (Ingredients) –
দুই-তিন আঁটি লাল শাক, এক কাপ কুচো চিংড়ি, এক টেবিল চামচ করে পেঁয়াজ ও রসুন কুচি, আধ চা চামচ করে হলুদ গুঁড়ো ও লঙ্কার গুঁড়ো, তিন-চারটে কাঁচা লঙ্কা, দুই টেবিল চামচ সর্ষের তেল, নুন স্বাদ অনুযায়ী, পরিমাণমতো জল।
কীভাবে পদটি রান্না করবেন (Method) –
১। ভাল করে লাল শাক (Lal Shak Bhaja) ও চিংড়ি মাছ ধুয়ে বেছে নিন। চিংড়ি মাছে নুন ও হলুদ মাখিয়ে কিছুক্ষন রেখে গরম তেলে ভেজে তুলে রাখুন।
২। ওই একই তেলের মধ্যে পেঁয়াজ, রসুন এবং বাকি সব মশলা দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিন। তেল ছাড়লে কুঁচিয়ে রাখা লাল শাক দিয়ে সামান্য নুন দিয়ে নেড়ে পাঁচ মিনিটের জন্য ঢাকা দিয়ে রেখে দিন।
৩। শাক সেদ্ধ হয়ে এলে (Lal Shak Bhaja) আঁচ বাড়িয়ে ভাল করে নাড়তে থাকুন যতক্ষণ না জল শুকিয়ে যাচ্ছে।
৪। জল শুকিয়ে গেলে এবং লাল শাক ভাজা ভাজা হয়ে এলে আগে থেকে ভেজে রাখা চিংড়ি মাছগুলো মিশিয়ে দিন এবং কাঁচা লঙ্কা মাঝখান থেকে চিরে মিশিয়ে নিন।
৫। গরম ধোঁয়া ওঠা সাদা ভাতের সঙ্গে কুচো চিংড়ি দেওয়া লাল শাক কাসুন্দি সহযোগে পরিবেশন করুন।
পুঁই-চিংড়ি করতে যা যা উপকরণ প্রয়োজন (Ingredients) –
দুই কাপ কোঁচানো পুঁই শাক, একটি মাঝারি আলু, দুশো গ্রাম কুচো চিংড়ি, আদা, কাঁচা লঙ্কা ও রসুন বাটা এক চা চামচ করে, এক চা চামচ পাঁচ ফোড়ন, তিন টেবিল চামচ সর্ষের তেল, নুন ও চিনি স্বাদ অনুযায়ী
কীভাবে পদটি রান্না করবেন (Method) –
১। চিংড়ি মাছ খুব ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নুন-হলুদ মাখিয়ে গরম তেলে লাল করে ভেজে তুলে রাখুন।
২। ওই একই তেলের মধ্যে আদা বাটা, রসুন বাতা ও কাঁচা লঙ্কা বাটা দিয়ে দিন। একটু নাড়াচাড়া করে আলু দিন (Pui Shaak Recipe)।
৩। এবারে পুঁই শাক দিয়ে দিন। নুন ও হলুদ মিশিয়ে ঢাকা দিয়ে দিন।
৪। মিনিট দশেক কম আঁচে আলু ও শাক সেদ্ধ হয়ে এলে আঁচ বাড়িয়ে চিংড়ি মাছ দিয়ে ভাল করে একবার নেড়েচেড়ে মিশিয়ে দিন সব উপকরণ।
৫। সুগন্ধ বেরলে এবং মাখামাখা হয়ে গেলে আঁচ বন্ধ করে দিন।
মাছের মাথা দিয়ে পুঁই শাক করতে যা যা উপকরণ প্রয়োজন (Ingredients) –
৫০০ গ্রাম পুঁই শাক, একটি রুই মাছের মাথা, দুটি মাঝারি আকারের আলু, দু-তিনটে কাঁচা লঙ্কা, ৫০০ গ্রাম মিষ্টি কুমড়ো, দুই চা চামচ করে জিরে-আদা-লঙ্কাবাটা, একটি তেজপাতা, এক টেবিল চামচ ময়দা, তিন-চার টেবিল চামচ সর্ষের তেল, এক টেবিল চামচ গাওয়া ঘি, স্বাদ অনুযায়ী নুন, হলুদ ও চিনি
কীভাবে পদটি রান্না করবেন (Method) –
১। পুঁই শাক ভাল করে ধুয়ে কেটে নিন, সঙ্গে আলু এবং কুমড়োও ডুমো ডুমো করে কেটে নিন।
২। এবারে একটি পাত্রে জল গরম করে পুঁই শাক ভিজিয়ে একটু ভাপিয়ে নিন।
৩। কড়াইয়ে তেল দিয়ে তাতে মাছের মাথাগুলো ভেজে টুকরো করে তুলে রাখুন।
৪। এবারে ওই গরম তেলের মধ্যেই কাঁচা লঙ্কা, গোটা জিরে ও তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে কেটে রাখা আলু ও মিষ্টি কুমড়ো দিয়ে দিন। একটু নুন ও হলুদ দিয়ে ভেজে নিন।
৫। এবারে ভাপিয়ে রাখ পুঁই শাক দিয়ে দিন। বাকি মশলা দিয়ে ভাল করে কষে নিন। বেশ ভাজা ভাজা হয়ে এলে ভেজে রাখা মাছের মাথা মিশিয়ে আরও কিছুক্ষন নেড়ে নিন। যদি জলের পরিমাণ বেশি থাকে সেক্ষেত্রে শুকনো করার জন্য ময়দা দিতে পারেন।
৬। গাওয়া ঘি ছড়িয়ে নামিয়ে নিন।
পুঁই রূপচাঁদ করতে যা যা উপকরণ প্রয়োজন (Ingredients) –
দুটি রূপচাঁদ মাছ, ৫০০ গ্রাম পুঁই শাক, এক কাপ পেঁয়াজ কুচি, নয়-দশটি কাঁচা লঙ্কা (মাঝখান থেকে চেরা), আধ চা চামচ করে হলুদ-ধনে-জিরে গুঁড়ো, আধ চা চামচ রসুন বাটা, আধ কাপ সর্ষের তেল, স্বাদ অনুসারে নুন
কীভাবে পদটি রান্না করবেন (Method) –
প্রথমেই বলে রাখি, শাকের এই রেসিপিটি (Pui Shaak Recipe) কিন্তু বেশ ঝাল হয়, তবে আপনি যদি ঝাল না খান সেক্ষেত্রে কাঁচা লঙ্কার পরিমাণ কমিয়ে নেবেন।
১। রূপচাঁদ মাছগুলো ভাল করে ধুয়ে নুন, হলুদ ও রসুনবাটা দিয়ে ম্যারিনেড করে আধঘন্টা রেখে দিন।
২। এবারে কড়াইতে সর্ষের তেল খুব ভাল করে গরম করে মাছগুলো ভেজে তুলে রাখুন। তেল খুব ভাল করে গরম না করে মাছ ভাজবেন না, তাতে মাছ ভেঙে যেতে পারে।
৩। এবার ওই তেলের মধ্যেই পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভেজে নিন। একটু বাদামী রঙ ধরলে তাতে পুঁই শাক এবং বাদবাকি উপকরণ একসঙ্গে দিয়ে বেশ কষিয়ে নিন এবং ঢাকা দিয়ে দিন।
৪। এবারে মিনিট দশেক পর ঢাকা খুলে যদি দেখেন যে মশলার কাঁচা গন্ধ চলে গেছে এবং শাকও বেশ সেদ্ধ হয়ে এসছে তাহলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিয়ে একটু এপিঠ-ওপিঠ করে আঁচ বন্ধ করে দিন।
১। রান্না করার কতক্ষণ আগে শাক ভিজিয়ে রাখা উচিত এবং কতক্ষণ ধরে?
উত্তর – বাজার থেকে শাক আনার পরেই রান্না করবেন না। রান্না করার আধ ঘন্টা আগে থেকে গরম জলে নুন মিশিয়ে তাতে শাক ভিজিয়ে রাখুন। এতে শাকে ব্যবহৃত রাসায়নিক অনেকটাই নষ্ট হয়।
২। শাক রান্না করার পর প্রায়ই দেখা যায় যে সবুজ রঙটি চলে যায়, কীভাবে রান্না করলে শাকের সবুজ রঙ রান্নার পরেও বজায় থাকবে?
উত্তর – সবুজ কোনও শাক রান্নার পরেও সবজে রঙ বজায় রাখার জন্য প্রথমেই শাক একটু ভাপিয়ে নিন এবং তারপরে রান্না করুন।
৩। শরীরে আয়রনের মাত্রা বাড়াতে কী কী শাক নিয়মিত খাওয়া উচিত?
উত্তর – পালং শাক, কলমি শাক, কুলেখারা শাক – এগুলো নিয়মিত খেলে শরীরে আয়রনের মাত্রা বাড়ে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আমাদের এক্কেবারে নতুন POPxo Zodiac Collection মিস করবেন না যেন! এতে আছে নতুন সব নোটবুক, ফোন কভার এবং কফি মাগ, যেগুলো দারুণ ঝকঝকে তো বটেই, আর একেবারে আপনার কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে। হুমম…আরও একটা এক্সাইটিং ব্যাপার হল, এখন আপনি পাবেন ২০% বাড়তি ছাড়ও। দেরি কীসের, এখনই POPxo.com/shopzodiac-এ যান আর আপনার এই বছরটা POPup করে ফেলুন!
Image Source: Instagram