শপিং করা বা কেনাকাটা করা বাঙালিদের জন্মগত অধিকার! এই অধিকার আমরা নিয়েই জন্মেছি! আমাদের মোটামুটি শপিংবাজ জাতি বলা যেতে পারে। আমরা পুজোর আগে শপিং করি, চৈত্র সেলের বাজারে ঢুঁ মারি দুপুরের ভাত ঘুম ভুলে! আমরা পয়লা বৈশাখে কিনি, সেল দিলে কিনি, সেল না দিলেও কিনি! আমরা দরাদরি করে কিনে ভাবি, ইশ, আরও একটু কম করা যেত! আমরা ধনতেরাসে সোনার দোকানের বাইরে লাইন দিই সোনা কেনার জন্য, যদিও ধনতেরাস ব্যাপারটা ঠিক কি, তা আমরা জানি না! কিন্তু জানি, ওদিন সোনার দোকানে দারুণ সব অফার দেয়! আমরা আবার অনলাইন সেলেও দু-তিন মাসের রসদ রান্নাঘরে পুরে ভাবি, যাক বাবা, অ-নে-কটা সাশ্রয় হল! মোট কথা, শপিং ব্যাপারটা আমরা মন থেকে ভালবাসি, উপভোগ করি। কিন্তু আমরা কোথায় শপিং করতে ভালবাসি বলুন তো? ঝাঁ চকচকে শপিং মলের মেকি ঠান্ডায়? নাকি রোদ্দুরের মধ্যে ঘেমে-নেয়ে রাস্তায় দরাদরি করে? দেখুন বাপু, সত্যি কথা বলতে গেলে, কলকাতাতেই হাতে গুণে কয়েকটা মল, বাকি পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা না-ই বা বললাম! সেখানে এই রাজ্যের রাস্তায়-রাস্তায় ছড়িয়ে রয়েছে একগাদা দোকান। মনোহরা জিনিসের পসরা সাজিয়ে খদ্দেরদের ডাকছে, আয়, আয় আয়! আর আমরাও সেই হাতছানিতে মিষ্টি করে সাড়া দিচ্ছি! আর দু’ হাতে ব্যাগ ভরিয়ে কেনাকাটা করছি!
কিন্তু আপনারা জানেন তো, রাস্তা থেকে শপিং (shopping) করাটা একটা শিল্প? গড়িয়াহাটে আপনি যেভাবে কিনবেন, বড়বাজারে সেভাবে কিনবেন না? কিংবা ধরুন, পাটুলি ফ্লোটিং মার্কেটে আপনি যা পাবেন, সেটা হাতিবাগানে মিলবে না? বা নিউ মার্কেট যে কারণে বিখ্যাত, সেই একই কারণে মেটিয়াবুরুজের টুকরা পট্টি বিখ্যাত নয়? এই দেখুন, আপনি অ্যাদ্দিন ভাবতেন নিশ্চয়ই যে, স্ট্রিট মার্কেট হল স্ট্রিট মার্কেট (Street Market), তার আবার অত ক্লাসিফিকেশন কীসের? এ তো আর কুলীন মল নয় যে, কোনওটা লাক্সারি আবার কোনওটা সাধারণ! কে বলল শুনি? স্ট্রিট মার্কেটেরও ইজ্জত আছে, নিজস্ব বিশেষত্ব আছে, আলাদা বাহার আছে, ভিন্ন-ভিন্ন চরিত্র আছে, আলাদা গল্প আছে! আর সেই স্ট্রিট মার্কেট শপিং গাইড নিয়েই এবার এসেছি আমরা। কলকাতাবাসীরা নতুন করে আমাদের চোখ দিয়ে চিনে নিন চিরপরিচিত স্ট্রিট মার্কেটগুলোকে আর যাঁরা কলকাতা (Kolkata) বা রাজ্যের বাইরে থাকেন, তাঁরা জেনে নিন, যদি কোনওদিন এই সব মার্কেট ঘুরে দেখার, এখান থেকে শপিং করার সুযোগ পান, তা হলে কীভাবে তার সদ্বব্যবহার করবেন!
কলকাতায় দক্ষিণী খাবারের সেরা ঠিকানা এই সাউথ ইন্ডিয়ান রেস্তোরাঁ গুলো
কলকাতা স্ট্রিট মার্কেটের ইতিহাস ও কিছু মজার তথ্য (History Of Kolkata Street Market)
দেখুন, ভারতবর্ষের অন্য শহরের তুলনায় আমাদের এই কল্লোলিনী একটু নবীন হলেও, এই শহরের গল্পের ভাণ্ডার কিন্তু কম নয়! কম নয় তার বিভিন্ন স্ট্রিট মার্কেটের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ইতিহাসও। সেই রাস্তা ধরে যদি হাঁটি, তা হলে জোব চার্নক যখন সুতানুটি, গোবিন্দপুর আর কলকাতা গ্রাম নিয়ে শহর কলকাতার পত্তন করেন, তখন একটিই মাত্র বাজার ছিল সেখানে, যার নাম বড়বাজার! তারপর ব্রিটিশদের হাত ধরে একে-একে পত্তন হয় নিউ মার্কেটসহ আরও অনেক ছোট-ছোট বাজারের। যেমন-যেমন শহর কলকাতা ডালপালা বিস্তার করে এগিয়েছে, তেমন-তেমনভাবেই তার মধ্যে যুক্ত হয়েছে নানা নামের, নানা ধরনের বাজার। মজার ব্যাপার হল, গোড়ার দিকে প্রতিটি বাজারেরই একটা নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ছিল। যেমন, বড়বাজার বিখ্যাত ছিল কাপড়, সুতোর কারবারের জন্য। আবার নিউ মার্কেটের সুনাম ছিল সাহেবি বাজার হিসেবে! কিন্তু ধীরে-ধীরে লোকসংখ্যা বাড়তে থাকার দরুণ প্রতিটি বাজারেই প্রায় সব রকমের জিনিসপত্রের বিকিকিনি শুরু হয়। আস্তে-আস্তে নিজস্বতা হারাতে থাকে কলকাতার আদি বাজারগুলি! অবশ্য তা নিয়ে দুঃখ করার কোনও কারণ নেই। কারণ, নিজস্বতা খানিকটা হারালেও, স্বাতন্ত্র হারায়নি। বরং ক্রেতাদের কাছে আরও লোভনীয়, আরও মোহময়ী হয়ে উঠেছে এই স্ট্রিট মার্কেটগুলি!
চলুন, এবার বেরনো যাক স্ট্রিট মার্কেট জরিপে! আপনাদের জন্য রইল কলকাতার বিখ্যাত স্ট্রিট মার্কেটগুলির গাইড।
মধ্য কলকাতার বিখ্যাত স্ট্রিট মার্কেটগুলি (Street Markets In Central Kolkata)
এই অঞ্চলটির চরিত্র একেবারেই আলাদা কলকাতার অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায়! এই অঞ্চলেই তৈরি হয়েছিল আদি কলকাতার প্রথম পাইকারি বাজারটি, আবার এখানেই তৈরি হয় কলকাতার প্রথম সাহেবি মার্কেটও! চলুন, দেখে নেওয়া যাক, এখন মধ্য কলকাতার কোন-কোন স্ট্রিট মার্কেটগুলি সবচেয়ে বেশি খদ্দের টানে নিজ গুণে!
১। নিউ মার্কেট (New Market)
বাঙালির সায়েবিআনার জ্বলজ্বলে প্রমাণ হচ্ছে হগ সাহেবের তৈরি করা এই বাজারটি! এটিকে কলকাতার অন্যতম ল্যান্ডমার্ক বললেও ভুল বলা হবে না। ১৮৭৪ সালের জানুয়ারি মাসে কলকাতার সাহেবদের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে লন্ডনের রেল স্টেশনের আদলে তৈরি, সাতটি ভাগে বিভক্ত এই বাজারটি খুলে দেওয়া হয় সর্বসাধারণের জন্য। কাঁচা আনাজ থেকে শুরু করে পোশাক, সবই পাওয়া যায় এখানে। নিউ মার্কেটের বিশেষত্ব হল, বিভিন্ন সময়ে এই মার্কেট চরিত্র পাল্টায়! আপনি পুজোর সময় এই মার্কেটের যে রূপ দেখবেন, বড়দিনে সেই রূপ কিন্তু একেবারেই পাল্টে যাবে! আর এখন নিউ মার্কেট শুধুমাত্র পুরনো হগ সাহেবের বাজারেই সীমাবদ্ধ নেই! নিউ মার্কেট নিউ কমপ্লেক্সের পরে তা ছড়িয়েছে লিন্ডসে স্ট্রিট, গ্র্যান্ড হোটেলের তলায়, ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে, গ্লোব সিনেমার গলিতেও।
টিপস (Tips): এখানকার ফুটপাথের বাজার ঘুরে দেখুন, ব্যাগ-কস্টিউম জুয়েলারি-জুতোর অঢেল সম্ভার ছড়ানো আছে। তবে দরাদরি ব্যাপারটাকে প্রায় শিল্পের পর্যায়ে না নিয়ে যেতে পারলে সমস্যা আছে! শপিং করতে-করতে খিদে পেলে ঢুকে পড়ুন আমিনিয়া, কারকো কিংবা স্কুপে! চেখে দেখতে পারেন এখানকার বিখ্যাত সব স্ট্রিট ফুডও। এগজটিক বিদেশি ফল এবং সবজি কেনার জন্য কলকাতার অন্যতম সেরা মার্কেট। বিভিন্ন রকমের মাংস যেমন, হ্যাম, বিফ, টার্কি, পর্ক ভাল পাবেন। কাঁচা বাজারের পিছন দিকে আছে বেতের আসবাবপত্রের পট্টিও। আর বড়দিনে লাইন দিন বিখ্যাত পার্সি বেকারি নাহুমস-এ!
২। ময়দান মার্কেট (Maidan Market)
নিউ মার্কেট যদি হয় সাহেবদের জায়গা. তা হলে ময়দান মার্কেট হবে নিম্নবিত্তদের নিউ মার্কেট। অন্তত শুরুর দিকে সেটাই ছিল। কম দামের পোশাক এবং খেলাধুলোর সামগ্রী বিক্রি হত এই স্ট্রিট মার্কেটটিতে। এখনও মূলত তাই হয়। কলকাতার ক্রীড়াপ্রেমীদের এখনও এক নম্বর পছন্দ ময়দান মার্কেট। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্পোর্টস সরঞ্জাম বিক্রি করেন এখানকার অনেক দোকান। কলকাতায় এই ধরনের দোকানের সমষ্টিওয়ালা মার্কেট আর নেই বললেই চলে।
টিপস (Tips): এখানকার নামী দোকানগুলি সম্বন্ধে একটু সার্ভে করে যাবেন শপিং করতে যাওয়ার আগে। অনেক দোকানই ‘আমাদের কাছ থেকেই সৌরভ গাঙ্গুলি ব্যাট কিনতেন’ বলে দাবি করে, যা আদপেই ঠিক নয়!
৩। বড় বাজার (Kolkata Bara Bazar)
শহর কলকাতার প্রথম বৃহৎ বাজার ছিল এটি, তাই নাম বড়বাজার! ১৮ শতকের কোনও এক সময় ঢাকা, কাশিমবাজারের তাঁতি বসাকেরা ও সুরাটের তাঁতি শেঠেরা মিলে তৈরি করেছিল মূলত টেক্সটাইল বেচাকেনার এই বাজারটি। তারপর গঙ্গা দিয়ে যত জল গড়িয়েছে, বড়বাজার তত ডালপালা মেলে এখন ভারতের অন্যতম প্রধান হোলসেল বাজারে পরিণত হয়েছে। হাওড়া ব্রিজের নীচ থেকে শুরু করে তা এগিয়ে গিয়েছে প্রায় মহাত্মা গাঁধী রোডের জাংশন পর্যন্ত! আর টেক্সটাইলে আটকে না থেকে বড়বাজার বিভিন্ন জিনিসের জন্য তৈরি করে নিয়েছে এক-একটি পট্টি। এই জায়গার ভূগোল এতটাই গোলমেলে যে, দোকানের গোলোকধাঁধায় হারিয়ে যাওয়াও কিছু বিচিত্র নয়!
টিপস (Tips): অস্বাভাবিক সস্তা দরে জিনিস পাবেন এখানে। তবে পরিমাণে একটু বেশি করে না কিনলে কিন্তু অনেক দোকানই হোলসেল দামে দেবে না। এখনও মাল বয়ে দেওয়ার জন্য এখানে কুলি পাওয়া যায়! পার্কিংয়ের জায়গা প্রায় নেই বললেই চলে। তাই নিজের গাড়ি নিয়ে না যাওয়াই ভাল। আর পুরো বাজারটাই পায়ে হেঁটে ঘুরতে হবে। ফলে আরামদায়ক জুতো পরে যাবেন।
৪। বউবাজার (Bowbazaar)
‘বধূ’ শব্দের অপভ্রংশ হল এই বউ শব্দটি। অনেকে বলেন যে, এই অঞ্চলের অন্যতন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব বিশ্বনাথ মতিলালের বধূর নামেই এই বাজারের নামকরণ! ডালহৌসি স্কোয়্যার থেকে শুরু করে শিয়ালদহ পর্যন্ত বিস্তৃত এই স্ট্রিট মার্কেট! রাস্তার দু ধারে সার দিয়ে শুধু সোনার গয়নার দোকান, ঐশ্বর্য আর ঝলমলানিতে চোখ ধাঁধিয়ে যাবে! একেবারে ছোট জুয়েলার থেকে শুরু করে বড়-বড় ব্র্যান্ড, আপনি স্বর্ণ ব্যবসায়ী অথচ বউবাজারে আপনার একটা দোকান নেই, তা হলে মশাই আপনি পাতে দেওয়ারও যোগ্য নন! আরও একটি কারণে এই বাজারের নাম আছে, সেটি হল চশমার দোকান! বেশ কয়েকটি নামী-দামি চশমার দোকানও আছে এখানে।
টিপস (Tips): আগে থেকে ঠিক করে যান, কোন-কোন সোনার দোকানে ভিজিট দেবেন! নইলে চোখে ধাঁধা লেগে যাবে এই মর্মে সতর্কতাবাণী দিয়ে রাখলাম আমরা!
৫। সদর স্ট্রিট মার্কেট (Sudder Street Market)
এটি মধ্য কলকাতার একটি অদ্ভুত গলি! পুরনো সাহেবপাড়ার অংশবিশেষ এই সদর স্ট্রিটে এখনও রয়ে গিয়েছে বেশ কিছু সাহেবি ফার্নিচারের দোকান এবং কিউরিও শপ! এই দোকানগুলিতে ঢুঁ মারলে আপনার জিয়া নস্ট্যাল হতে বাধ্য। এই রাস্তাটির দোকালগুলিকে ঠিক মার্কেট বলা চলে না, কিন্তু এটাও ঠিক যে, হাতির দাঁতের পুরনো দাবা সেট, আপনি কলকাতার অন্য কোনও অঞ্চলের দোকানে পাবেন না! আর এখানে পাবেন নানা কম দামি জুতো, বিশেষত স্নিকার্স কিংবা ক্যাজুয়াল এবং স্পোর্টস শু।
উত্তর কলকাতা ও শহরতলির স্ট্রিট মার্কেটগুলি (Street Markets In North Kolkata)
মধ্য কলকাতার পরে প্রথম যেদিকে কলকাতার বিস্তার শুরু হয়েছিল, সেটা কিন্তু উত্তর শহরতলি! তাই স্ট্রিট মার্কেটের রমরমাও এখানে শুরু হয়েছিল অনেকটাই আগে। এখনও কলকাতার উত্তরে এবং উত্তর শহরতলিতে গমগম করে চলছে বেশ কয়েকটি স্ট্রিট মার্কেট…
১। হাতিবাগান (Hatibagan)
এককালে এখানে নাকি হাতি চলত এবং বাবুদের বাগানবাড়িতে তারা বাঁধা থাকত, তাই নাম হাতিবাগান। এখন এই অঞ্চলে কলকাতার অন্যতম পুরনো এবং জনপ্রিয় স্ট্রিট মার্কেটটি জাঁকিয়ে রাজত্ব করছে। হাতিবাগান মোড় থেকে ফরিয়াপুকুর পর্যন্ত বিধান সরণির দু পাশের মার্কেটটিই হচ্ছে হাতিবাগান। পোশাক থেকে শুরু করে হ্যান্ডিক্রাফটস, কস্টিউম জুয়েলারি থেকে শুরু করে জিভে জল আনা খাবারদাবার, সবই পাবেন এখানে। ফুটপাথের দোকানে ঢাকা পড়েছে বড় দোকানগুলি। কাজেই একটু খুঁজেপেতে নিতে হবে। ফরিয়াপুকুরে রয়েছে পাঞ্জাবি পট্টি, এখানে ছেলেদের ট্র্যাডিশনাল পোশাক পেয়ে যাবেন নানা ভ্যারাইটিরা। বিধান মার্কেট বলে হাতিবাগান অঞ্চলেই একটি ছোট মার্কেট রয়েছে, ঘুরে দেখতে পারেন সেটিও। শপিং করতে-করতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে আছে মিত্র কাফের ফিশ-চিকেন কবিরাজি, সুতানুটি-গজব রেস্তরাঁর জিভে জল আনা চাইনিজ ও মোগলাই রান্না।
টিপস (Tips): শপিং করার সবচেয়ে ভাল সময় হল দুপুরবেলা। আর এখানেও কিন্তু প্রচণ্ড পরিমাণে দরাদরি চলে। সেটা মাথায় রাখবেন।
২। শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় (Shyambazar)
হাতিবাগানের যেখানে শেষ, ঠিক সেখান থেকেই শুরু শ্যামবাজারের! আর তা ছড়িয়ে পড়েছে পুরো পাঁচমাথা চত্বর জুড়ে। পাঁচটি রাস্তা, বি টি রোড, আর জি কর রোড, বিধান সরণি, ভূপেন বোস অ্যাভিনিউ এবং আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রোড, শ্যামবাজারের এই পাঁচটি হাতেই কিন্তু অনেকটা পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছে বাজার! ন্যায্য দামে যদি জিনিস কিনতে চান, তা হলে শ্যামবাজার মার্কেটে একবার না-একবার আসতেই হবে! কাঁচা সবজি, দশকর্মা, পোশাক, ফার্নিশিং, কস্টিউম জুয়েলারি, খাবারদাবার সবকিছুরই অঢেল আয়োজন। অনেক দোকান তো হোলসেলেও বিক্রি করছে তাদের পসরা। রবিবার মূল মার্কেট বন্ধ, তবে ফুটপাথের দোকানিরা দোকান খোলা রাখেন।
টিপস (Tips): মোড়ের মাথায় কুমার্স কনসার্ন -এ একবার যেতেই হবে, যদি আপনি শিল্পী হন! রং-তুলি-কাগজের এমন সম্ভাব অনেক বড় দোকানেও থাকে না! ভূপেন বোস অ্যাভিনিউয়ের গোড়াতে পাবেন নানা ওষুধের দোকান। আর এক্কেবারে হার্ট অফ শ্যামবাজারে রয়েছে প্রায় বিশ্ব হেরিটেজের পর্যায়ে চলে যাওয়া গোলবাড়ির কষা মাংসের দোকান!
৩। কলেজ স্ট্রিট মার্কেট (College Street Maket)
বই পড়তে আর বই ঘাঁটতে যাঁরা ভালবাসেন, তাঁরা যান এখানে! যাঁরা নস্ট্যালজিয়ায় মাখামখি হয়ে কফির মগে চুমুক দিতে চান, তাঁরা যান কফিহাউসে, যাঁরা শাড়ি কিনবেন, তাঁরা মহাত্মা গাঁধী রোড ধরে হাঁটাহাঁটি শুরু করুন! যাঁরা স্যানিটারিওয়্যারের খোঁজে এসেছেন, তাঁরা ইউনিভার্সিটির মোড় থেকে আরও এগিয়ে যান সোজা, যাঁরা মিষ্টিপ্রেমী অথবা টাটকা পনির কিনতে চান, তাঁরা আরও এগিয়ে যান নাক বরাবর…মানে, বুঝতেই পারছেন কলেজ স্ট্রিট মার্কেটে আপনি স-অ-ব পাবেন।
টিপস (Tips): এটা শুধু মার্কেট চত্বর নয়, বাঙালির বড্ড কাছের জায়গা। তাই ভাল করে এক্সপ্লোর করুন। ঘুরতে-ঘুরতে পেট চুঁইচুঁই করলে পুঁটিরামের কচুরি আর প্যারামাউন্টের ডাবের সরবত খেয়ে ফেলুন! এখানকার বই পাড়ায় নতুন বইয়ের পাশাপাশি পুরনো নামীদামি বইরেও বিপুল স্টক আছে। দরকারে, দেখে নিতে পারবেন অপেক্ষাকৃত দুষ্পাপ্র্য বই পাওয়া যাচ্ছে কিনা!
৪। দমদম হকার্স কর্নার (Dum Dum Hawkers Corner)
দমদম জাংশনের ঠিক পাশে রয়েছে বিশাল বড় পাইকারি কাঁচা আনাজ ও মাছের বাজার। রাস্তার উল্টোদিকে নজর টানবে দমদম হকার্স কর্নার। এখানো পোশাক থেকে শুরু করে টুকিটাকি সংসারের নানা দরকারি জিনিস পাবেন। আর ব্রিজ পেরিয়ে যদি লীলা সিনেমা-সেন্ট মেরিজ স্কুলের গেট পর্যন্ত যেতে পারেন, তা হলে কাঁচা বাজারের কেনাকাটাটা আরও জবরদস্ত হবে।
টিপস (Tips): এই বাজার সকালেও বসে, আবার রাতেও বসে। দুই সময়েই পাবেন তাজা শাকসবজি আর মাছ।
৫। নাগেরবাজার (Nagerbazar)
দমদম ছেড়ে এবার এগোনো যাক আরও উত্তরে, নাগেরবাজারের দিকে। মতিঝিল থেকে শুরু করে এই স্ট্রিট মার্কেট বংশবিস্তার করেছে একদিকে প্রায় কাজিপাড়া ও অন্যদিকে শ্যামনগর পর্যন্ত! কাঁচা বাজার, মাছ. কস্টিউম জুয়েলারি, শাড়ি, অন্য পোশাক, আসবাবপত্র, কী নেই এখানে! যাঁরা উত্তর শহরতলিতে আশেপাশেই থাকেন, তাঁরা স্বচ্ছন্দে এখানে চলে আসতে পারেন কেনাকাটা করার জন্য।
৬। বাগুইআটি বাজার (Baguiati Market)
আপনি ঠিক উত্তর শহরতলির শেষ প্রান্তের বাসিন্দা? ঘরের কাছেই জমজমাট স্ট্রিট মার্কেটের খোঁজ চান? তা হলে যান বাগুইআটি বাজারে। মূল মার্কেটটি বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে, তার পেটের ভিতরে লুকনো আছে এত বড় খাজানা! মূল মার্কেটে আপনি পাবেন আনাজপাতির দোকান, রিজনেবেল দামে। আর বাইরে বেরিয়ে একটু ভিতর দিকে এগোলে পাবেন সারি দিয়ে শাড়ি ও অন্য পোশাকের দোকান।
টিপস (Tips): হাল ফ্যাশনের জিনিস আশা করবেন না।
দক্ষিণ কলকাতার বিখ্যাত স্ট্রিট মার্কেটগুলি (Street Markets In South Kolkata)
দক্ষিণ কলকাতা আসলে অনেক পরে রাজ্যপাট বিস্তার শুরু করেছে! দেশভাগের পর যখন দলে-দলে শরণার্থী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পাট চুকিয়ে আশ্রয় নিতে শুরু করল কলকাতায়, তখনই মূলত দক্ষিণ কলকাতার রবরবা শুরু হয়! লোকবসতি বাড়লে বাড়বে বাজারও, এ তো অর্থনীতির মামুলি চাহিদা-জোগানের খেলা।
১। গড়িয়াহাট (Gariahat)
গড়িয়া অঞ্চলের যে হাট বসত, তার নামেই নামকরণ গড়িয়াহাট রোডের এবং সেই রাস্তার নামে আবার নামকরণ হয়েছে এই বাজারের। কোত্থেকে এর শুরু হয়েছিল, সরকারি জাবদা খাতায় তার উল্লেখ না থাকলেও, বর্তমানে ট্রায়াঙ্গুলার পার্ক থেকে শুরু করে বিজন সেতু পর্যন্ত এবং বালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে শুরু করে গোলপার্ক পর্যন্ত শাখা-প্রশাখা ছড়িয়েছে এই বাজার! নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত, সকলের জন্যই এখানে কিছু না-কিছু আছে। আপনি শাড়ির দোকান পাবেন নামজাদা, গয়নার বড়-বড় ব্র্যান্ডের শোরুম পাবেন, পুরনো বইয়ের দোকান পাবেন, জিভে জল আনা রেস্তরাঁ পাবেন, ফুটপাথে দরাদরি করা কস্টিউম জুয়েলারি পাবেন, ঘর সাজানোর ফার্নিশিং পাবেন, জুতো পাবেন, দরজি পাবেন, চাবিওয়ালা পাবেন, অসময়ে ইলিশ পাবেন, গাছপাকা আম পাবেন, সুস্বাদু আচার পাবেন, ঠাকুরকে সাজানোর পোশাক পাবেন, নামী মিষ্টির দোকান পাবেন, ফুচকাওয়ালা পাবেন, মোমো পাবেন, এগরোল পাবেন, বাঙালি খানা পাবেন…কী পাবেন না, সেটাই বরং ভাবতে হবে। আর পাবেন এক্কেবারে হাল ফ্যাশনের সেরা জিনিসটি।
টিপস (Tips): ফুটপাথ থেকে বাজার করলে দরাদরি করতে হবে। আর কিছু-কিছু দোকান এখন হোলসেলে জিনিস বেচাও শুরু করেছে! ভোর পাঁচটা থেকে শুরু হয়ে যায় মূল কর্পোরেশন মার্কেটে তরিতরকারি, ফুল-ফলের বিকিকিনি। মূল মার্কেট খোলে এগারোটার পর। রবিবার বন্ধ, তবে ফুটপাথের বেশ কিছু দোকানে বেচাকেনা চালু থাকে।
২। লেক মার্কেট-দেশপ্রিয় পার্ক (Lake Market-Deshapriya Park)
গড়িয়াহাটের ভিড়ে যাঁদের দম বন্ধ হয়ে আসার জোগাড় হয়, তাঁরা বরং চলে আসুন লেক মার্কেট, দেশপ্রিয় পার্কের দিকে! এটি একটি অদ্ভুত জায়গা! কারণ, বাজারটা বড় রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঠিক চোখেই পড়বে না! লেক মার্কেট মূলত বিখ্যাত ফুলের বাজার হিসেবে। অনেক ভোরবেলা থেকেই এখানে শুরু হয়ে যায় ক্রেতার আনাগোনা। অনেক দোকান তো হোলসেলেও ফুল বিক্রি করে। এখন লেক মার্কেটে তৈরি হয়েছে লেক মল, পুরনো কাঁচা বাজারটিকে সরিয়ে, সেই জায়গায়। কিছু-কিছু দোকান পুনর্বাসন পেলেও, বেশিরভাগ দোকানিই দোকান শিফট করে দিয়েছেন আশপাশের গলিতে। এই বাজারের সঠিক স্বাদ পেতে গেলে ঢুঁ মারতে হবে সেই গলিগুলিতে। লেক মার্কেটের আরও একটি আকর্ষণ হল বিখ্যাত দক্ষিণ ভারতীয় খাবারের দোকান প্রেমা বিলাস। খাঁটি দক্ষিণী স্বাদের খাবার চাখতে হলে এখানে যান। কথা দিচ্ছি, নিরাশ হবেন না!
দেশপ্রিয় পার্কে পার্কের ধার ঘেঁষে শরৎ বসু রোডের উপর রয়েছে বেশ কিছু পোশাকের দোকান। আছে বিখ্যাত শাড়ি ও পোশাকের দোকান পি মজুমদার, কাটপিসের জন্য নামী বিষ্ণুপ্রিয়া এবং সোনার জল করা ব্রাইডাল জুয়েলারি বিক্রেতা অন্ডাল। তবে এখানে দরাদরি বিশেষ হয় না।
৩। যদুবাবুর বাজার, ভবানীপুর (Jadubabur Bazaar-Bhawanipore)
যাঁরা এখন জি বাংলায় নিয়মিত রানি রাসমণি দেখেন, তাঁদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি, রানির মেজ মেয়ের একমাত্র ছেলে যাদবের নামে এই বাজারের নাম হয়েছিল যদুবাবুর বাজার। কারণ, দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের এই অঞ্চলের জমির মালিকানা ছিল তাঁরই। পরে লোকমুখে তা প্রচলিত হয় জগুবাবুর বাজার হিসেবে! মূলত পাইকারি বাজার হিসেবে এই বাজারের পত্তন হয়েছিল। গড়িয়াহাট তার হাটত্ব ছেড়ে কৌলীন্য লাভের আগে পর্যন্ত এটিই ছিল দক্ষিণ কলকাতার সবচেয়ে নামী বাজার! এখনও বহু পুরনো-নতুন দোকানের সমষ্টি নিয়ে এই বাজারটি সকলকে আকৃষ্ট করে চলেছে। এই অঞ্চলে পরে সিন্ধি ও পঞ্জাবি সম্প্রদায়ের মানুষেরা ভিড় জমিয়েছেন বলে, এখন জগুবাবুর বাজারে এই দুই জাতির নানা ধরনের খাবার ও পোশাকের দোকান চোখে পড়বে। আর দেখতে পাবেন লাইন দিয়ে কিছু সোনার দোকান, যার মধ্যে বিখ্যাত লক্ষ্মীবাবু কা আসলি সোনা-চাঁদি কা দুকান! এই নামে অন্তত গোটাকুড়ি দোকান আছে। ঘাবড়ে যাবেন না! কোনও এককালে লক্ষ্মীবাবু একটিই দোকান খুলেছিলেন, পরে তাঁর বংশধরেররা নিজেদের মধ্যে মারপিট করে একই নামে গুচ্ছখানেক দোকান খুলে ফেলেছেন! কোনটি আদি দোকান, তা আর বোঝার উপায় নেই!
টিপস (Tips): ভাল মাছ ও ফলের জন্য এখনও দক্ষিণ কলকাতার বহু আদি বাসিন্দা এখানেই ভিড় জমান! আর এখানকার সোনার দোকানগুলিতে পাবেন অথেন্টিক অবাঙালি ডিজাইন। জগুবাবুর মূল বাজারটি পিছনে রেখে একটু উত্তরে, রবীন্দ্র সদনের দিকে এগোলে ফুটপাথে কিছু কাটপিসের দোকান চোখে পড়বে, যেগুলি অস্বাভাবিক কম দামে কাটপিস বিক্রি করে! এই বাজারটিও রবিবার বন্ধ। তবে ফল-সবজি-মাছের বাজার খোলা থাকে।
৪। মেটিয়াবুরুজ হাট বা টুকরা পট্টি মার্কেট (Metiabruz Haat/Tukra Patti Market)
এই দু’টি নামের মধ্যে যে নামেই ডাকুন এই স্ট্রিট মার্কেটটিকে, দক্ষিণ শহরতলির গার্ডেনরিচ থেকে শুরু করে প্রায় মহেশতলা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চল শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয়, সারা দেশের অন্যতম বিখ্যাত গারমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারদের জায়গা! এই হোলসেল মার্কেট যে-কোনও বয়সিদের পোশাক পাবেন অবিশ্বাস্য কম দামে! বেশিরভাগ দোকান হোলসেলে প্রোডাক্ট বিক্রি করলেও, কিছু দোকান খুচরো বিক্রিও করে।
টিপস (Tips): যদি আপনার মাথায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ভূত না থাকে, তা হলে অনায়াসে চলে যান এখানে। লেটেস্ট ফ্যাশনের বাচ্চা থেকে বুড়োর পোশাক কিনুন বড় মলের প্রায় অর্ধেক দামে! তবে যেহেতু দক্ষিণ শহরতলির এক্কেবারে শেষের দিকে এই মার্কেটটি, তাই হাতে সময় নিয়েই বেরোবেন। মোটামুটি এগারোটার মধ্যে বেশিরভাগ দোকান খুলে যায় আর বিকিকিনি চলে রাত প্রায় ন’টা পর্যন্ত।
কলকাতার দু’টি বিখ্যাত হাট (Famous Local Haats Of Kolkata)
শুনতে অবাক লাগলেও, কলকাতায় এখনও হাট বসে! অবশ্য বকশিগঞ্জে পদ্মাপাড়ে যে হাট বসত, যাতে করে বংশীবদন তার ভাগ্নে মদনকে নিয়ে যেত, ঠিক তেমনটা নয়। এ হল শহুরে হাট! সেরকম দু’টি হাটের গল্প জেনে নেব এবার…
১। খান্নার হরি সা-র হাট (Khanna Harisha Haat, Kolkata)
এটা ঠিক স্ট্রিট মার্কেট নয়, হাট! শ্যামবাজারের কাছে খান্না মোড়ে এই হাট বসে প্রতি বুধ ও রবিবার। মূলত নানা ধরনের রেডিমেড পোশাকের সম্ভার নিয়ে। কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতারা আসেন এখানে খরিদারি করতে। তবে যাঁরা হোলসেলে কিনে পরে রিটেলে বেচবেন, তাঁদেরই আনাগানো বেশি। পুজোর আগে এখানকার বিক্রেতারা খুচরোও বিক্রি করেন। তবে বাকি সময়টা হোলসেল বাজারই চলে এই হাটে।
২। মংলা হাট (Mangla Haat, Howrah)
হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন এই বিখ্যাত হাটটির বৈশিষ্ট্য হল, এটি বুধ ও রবিবার সারাদিন সারা রাত খোলা থাকে! আর সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে রাত তিনটে থেকে পরদিন বেলা চারটে পর্যন্ত! পোশাকের বাজার নিয়ে এত উন্মাদনা বোধ হয় সারা ভারতবর্ষের অন্য কোনও বাজারে দেখতে পাওয়া যায় না! তবে এখানেও সাধারণত হোলসেলেই জিনিস বিক্রি করা হয়। তাই বেশি পরিমাণে কিনতে হবে, এই কথা মাথায় রেখেই এগোবেন!
স্ট্রিট মার্কেট থেকে শপিং করার সময় মাথায় রাখুন (Things To Remember Before Shopping In Street Market)
স্ট্রিট মার্কেট গাইড তো নিলেন, এবার সেখান থেকে শপিং করার সময় এই কথাগুলি মনে রাখুন…
- ঘুরে দেখার জন্য ঠিক আছে, কিন্তু ঘরের কাছের স্ট্রিট শপিং মার্কেট থেকেই শপিং করা ভাল। তাতে কেনার পর কোনও সমস্যা হলে পাল্টাতে সুবিধে হয়।
- পোশাক বা অন্য কোনও জিনিস কেনার সময় পাকা বিল নিয়ে নেবেন।
- অনেক দোকানেই কিন্তু এখনও ক্রেডিট কিংবা ডেবিট কার্ড নেওয়া হয় না। তাই যথেষ্ট ক্যাশ রাখুন কাছে। PayTM বা Google Pay-ও ডাউনলোড করে রাখতে পারেন।
- এই ধরনের শপিংয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সমস্যা হয় ওয়াশরুমের! তাই দেখে রাখুন, ধারে-কাছে কোথায় সুলভ শৌচালয় আছে।
- ব্যাগে জলের বোতল ও বাড়তি রুমাল রাখবেন। আর টুকিটাকি স্ন্যাক্স।
- অচেনা স্ট্রিট মার্কেটে যেতে চাইলে সকাল-সকাল যান। বিশেষেত এমন জায়গায়, যেখানে আপনি আগে কোনওদিন যাননি, সেখানে তো অন্য কাউকে অতি অবশ্যই সঙ্গে রাখবেন!
স্ট্রিট শপিং নিয়ে কিছু প্রশ্নোত্তর (FAQs)
১। প্রশ্ন: পুজোর সময় কি নতুন স্ট্রিট মার্কেট ঘুরে দেখার জন্য আদর্শ?
উত্তর: হ্যাঁ-ও বটে আবার না-ও বটে! পুজোর সময় যে-কোনও জায়গাতেই পসরা অনেক বেশি বটে, কিন্তু নতুন জায়গায় কিনতে গেলে ঠকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই আগে নতুন মার্কেটে ঘুরে নিয়ে তারপর পুজোর সময়ে আবার যান!
২। প্রশ্ন: খুব বেশি দামি জিনিস কি এই ধরনের মার্কেট থেকে কেনা ভাল?
উত্তর: অবশ্যই! তবে বেশি দামি জিনিস কিনুন বড় দোকান থেকে। সাধারণত বড় দোকানগুলিতে দামের ব্যাপারে একটা ইউনিফর্মিটি রাখা হয়।
৩। প্রশ্ন: বড় বাজার কিংবা মেটিয়াবুরুজ বা মংলার হাট, মানে যে শপিং মার্কেটগুলো হোলসেলে মাল বিক্রি করে, সেখানে একা যাওয়াটা কি উচিত?
উত্তর: না, একেবারেই নয়। এসব জায়গায় গলির গলি, তস্য গলি এত বেশি যে, হারিয়ে যাওয়ার চান্স আছে। তাই সঙ্গে এমন কাউকে নিয়ে যান, যিনি ওই মার্কেটে আগে গিয়েছেন।
৪। প্রশ্ন: স্ট্রিট মার্কেট থেকে কিছু কেনার সময় এক্সচেঞ্জ করার কথা কি বলে নেওয়া উচিত? বিশেষ করে জামাকাপড়ের ক্ষেত্রে যেখানে ট্রায়াল দেওয়ার সুযোগ নেই
উত্তর: অবশ্যই করা উচিত। বিশেষত, ফুটপাথের অনেক দোকানই অস্থায়ী। তাই এসব জায়গা থেকে কেনাকাটা করলে এক্সচেঞ্জের নিয়ম সম্বন্ধে আগেই জেনে নিন। কখন এলে এক্সচেঞ্জ করা যাবে, সেটা জেনে নিতেও ভুলবেন না।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!