চিন বা জাপানের মতো দেশে যেখানে চায়ের সংস্কৃতি হাজার বছর ধরে গড়ে উঠেছে, সেখানে আমাদের দেশে চায়ের জনপ্রিয়তা বাড়ে ইংরেজদের হাত ধরে। তাই তো চা পানের নানা অঙ্গিক নিয়ে জাপানি ভাষায় যত কবিতা-উপন্যাসের খোঁজ মেলে। বাংলা সাহিত্যে চায়ের উপস্থিতি সেভাবে চোখে পরে না। তবু একথাও অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই যে বঙ্গ জীবনের সঙ্গে চায়ের একটা আত্মার যোগ রয়েছে। তাই তো এক পেয়ালা চায়ে চুমুক না দিয়ে বাঙালির যেমন সকাল হয় না, তেমনই দিনের শেষে চায়ের ঠেকে ঢুঁ না মারলে রাতের খাবার হজম হতে চায় না। বিশেষত, রবিবাসরীয় চায়ের ঠেক হল বাঙালির ‘স্ট্রেস’ রিলিফের একমাত্র জায়গা। তাই বাঙালির আবেগ, অনুভূতি এবং আনন্দের সঙ্গে যে এই পানীয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। যে কারণে কলকাতা শহরের (Kolkata) অলি-গলিতে একাধিক চায়ের ঠেকের সন্ধান মেলে, যেখানে ‘আম আদমি’ তাঁর জীবনের মানে খুঁজে পায়। তবে এত শত চায়ের গুমটির মঝে কিছু টি-স্টল গত কয়েক বছরে বেজায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, যাদের মধ্যে বাছাই কিছু চায়ের দোকানের সন্ধান দেওয়া হল এই প্রতিবেদনে।
কলকাতার সেরা চায়ের দোকান
১. তিওয়ারি ব্রাদার্স
এই দোকানের গরম-গরম শিঙারা আর চা (Chai) যে খাননি তাঁর তো জীবনটাই বৃথা! কারণ তিওয়ারির চায়ের স্বাদ যেমন মুখে লেগে থাকার মতো, তেমনই এঁদের শিঙারা যে একবার চেখে দেখেছে, সে বারে-বারে ফিরে আসবে, সে কথা হলফ করে বলা যেতে পারে। এই কারণেই তো সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই দোকানের সামনে ভিড় কখনও পাতলা হয় না। তাই আপনি যদি চা রসিক হয়ে থাকেন, তা হলে তিওয়ারি ব্রাদার্সে একবার ঢুঁ মারতে ভুলবেন না যেন!
ঠিকান: ১৪৪, কোটন স্ট্রিস, বড় বাজার, কলকাতা। এই শহরে এদের বেশ কয়েকটি শাখা রয়েছে। কিন্তু বড় বাজারের দোকানটাই সবচেয়ে জনপ্রিয়।
মাস্ট ট্রাই: চায়ের সঙ্গে গরম-গরম শিঙারা মাস্ট! এদের জিলিপও কিন্তু বেজায় সুস্বাদু।
দু’জনের খরচ: ১০০ টাকা।
২. বলওয়ান্ত সিং-এর টি স্টল
এই টি-স্টলটির নাম কলকাতা শহরে কেউ শোনেনি, এমন লোক খুঁজে পাওয়া দায়। কারণ এই শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় চায়ের দোকান হল এটি। এখানকার জাফরান চা যেমন বিখ্যাত, তেমনই বলবন্ত সিংয়ের কচুরি এবং জিলিপও কম মুখরোচক নয়। বিশেষত, এরা দুধ কোলা বলে এক ধরনের পানীয় বিক্রি করে থাকে, যা কলকাতা শহরের আর কোনও দোকানে পাওয়া যায় না। তাই তো চব্বিশ ঘণ্টাই এই দোকানের সামনে চা প্রেমীদের ভিড় লেগে থাকে।
ঠিকানা: ১০/বি, হরিশ মুখার্জি রোড, কলকাতা। ভবানীপুর গুরুদ্বারের ঠিক পিছনে এই চায়ের দোকান।
মাস্ট ট্রাই: চা তো রয়েছেই। সঙ্গে কচুরি আর জিলিপির অর্ডার দিতে ভুলবেন না যেন! এদের পরোটাও খুব সুস্বাদু!
দু’জনের খরচ: ১৫০-২০০ টাকা।
৩. অরুনের চায়ের দোকান
কোনও এক ছুটির দিনে গরম-গরম এক পেয়ালা চায়ের সঙ্গে যদি সুস্বাদু হিংয়ের কচুরির স্বাদ নিতে মন চায়, তা হলে অরুণের টি-স্টলে ঢুঁ মারতেই হবে। এখানকার চা যতটা জনপ্রিয়, ততটাই হট ফেভারিট ক্লাব কচুরি। হিং-এর কচুরিও কম মুখরোচক নয়।
ঠিকানা: ২৫/, শেক্সপিয়ার সরণি, থিয়েটার রোড, কলকাতা।
মাস্ট ট্রাই: প্রথমে অর্ডার করুন এক পেয়ালা চা। পরে ক্লাব কচুরি, নয়তো হিং-এর কচুরির সঙ্গে জিলিপি অর্ডার করতে ভুলবেন না যেন!
দু’জনের খরচ: ৯০-১০০ টাকা।
৪. শর্মা টি-হাউজ
চা-ই যাঁদের জীবন, তাঁদের জন্য তো এই দোকানটি সেরা ঠিকানা। কারণ, শর্মার চায়ের স্বাদ সত্যিই মুখে লেগে থাকার মতো। আর সঙ্গে যদি গরম-গরম নিমকি, নয়তো আলু পুরি অর্ডার করেন, তা হলে তো কথাই নেই! তাই নিজেকে যদি চা প্রেমী হিসেবে দাবি করে থাকেন, তা হলে এই রবিবারই পৌঁছে যান শর্মার চায়ের দোকানে। নিরাশ যে হবেন না, সে কথা দিলাম আমরা।
ঠিকানা: ৫ সি, শম্ভুনাথ পণ্ডিত স্ট্রিট, ভবানীপুর, কলকাতা।
মাস্ট ট্রাই: চায়ের সঙ্গে নিমকি, নয়তো আলু পুরি।
দু’জনের খরচ: ৮০-১০০ টাকা।
৫. ডলি’স টি শপ
টি-স্টলটি ছোট্ট বটে, তবে খাঁটি দার্জিলিং চায়ের স্বাদ যদি নিতে হয়, তা হলে এখানে একবার আসতেই হবে। চায়ের সঙ্গে মিলবে নানা স্বাদের স্যান্ডউইচও। তাই তো ছুটির দিনের ব্রেকফাস্ট ডেস্টিনেশন হিসেবে ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই ক্যাফেটি।
ঠিকানা: জি ৬২, দক্ষিণাপণ মার্কেট, ২ গড়িয়াহাট রোড, কলকাতা।
মাস্ট ট্রাই: গরম-গরম দার্জিলিং চায়ের সঙ্গে হ্য়াম স্য়ান্ডউইচ চেখে দেখা মাস্ট!
দু’জনের খরচ: ৩০০-৪০০ টাকা।
মূল ছবি সৌজন্য: ইনস্টাগ্রাম
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!