শরীর সুস্থ রাখতে আমজনতার চেষ্টায় যে কোনও খামতি নেই, তা তো যে কারও মোবাইল ঘাঁটলেই স্পষ্ট হয়ে যায়। খেয়াল করে দেখবেন, আজকাল প্রায় সবার ফোনেই স্টোর রয়েছে গুচ্ছের সব হেলথ অ্যাপ (can you trust health apps for healthy lifestyle), যার কেনওটা ক্যালরি মাপে, তো কোনও-কোনওটা হার্ট বিট বা প্রেসার মাপতে সক্ষম। কিছু অ্যাপ তো ওজন কমানোর এক্সারসাইজও দেখিয়ে দেয়। এমনকী, খুঁজলে হয়তো ডায়েট চার্টেরও সন্ধন মিলবে নানা অ্যাপে।
তাই তো গত কয়েক বছরে আমাদের দেশের পাশাপাশি সারা বিশ্বেই হেলথ অ্যাপের জনপ্রিয়তা আকাশ ছুঁয়েছে, যার প্রমাণ মেলে কয়েক বছর আগে প্রকাশিত একটি রিপোর্টের দিকে নজর ফেরালেই। সেই সমীক্ষা অনুসারে প্রায় ২০-৩০ শতাংশ স্মার্টফোনেই নাকি নানা রকমের হেলথ অ্যাপের সন্ধান মেলে। শুধু তাই নয়, আগামী দিনে সারা বিশ্বে প্রায় ৫০০ মিলিয়ান মানুষ নানা রকমের হেলথ অ্যাপ ব্যবহার করবেন বলে ভবিষ্যত বাণী করে রেখেছেন অনেক বিশেষজ্ঞই।
কিন্তু প্রশ্ন হল, ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠা নানা হেলথ অ্যাপের উপর আদৌ ভরসা রাখা যায় কি? এই অ্যাপগুলি সত্যিই কি শরীরের উপকারে লাগে, নাকি দেহের মারাত্মক ক্ষতি করে দেয়? এই সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হবে এই প্রতিবেদনে।
হেলথ অ্যাপগুলো ঠিক কতটা ভরসাযোগ্য?
আজকাল গুগল স্টোরে এমন অনেক হেলথ অ্যাপের সন্ধান মেলে, যেগুলি ব্লাড প্রেসার মাপার পাশাপাশি কোলেস্টেরল, সুগার, হার্ট রেট, এমনকী কত ঘন্টা ঠিক মতো ঘুম হয়েছে, সেই সংক্রান্ত তথ্যও দিয়ে থাকে। কিন্তু এই সব ডেটা কতটা সঠিক, সে নিয়ে প্রশ্নই থেকেই যায়। কারণ, অনেকে ক্ষেত্রেই অ্যাপে দেখতে পাওয়া তথ্যের সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল থাকে না।
একথা মেনে নিয়েছেন রুবি জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ আশীষ মিত্র। তাঁর মতে, ভুলেও কোনও অ্যাপের সাহায্য়ে প্রেসার-সুগার মাপা যেমন উচিত নয়, তেমনই হার্ট রেট মাপতেও অ্যাপের উপর ভরসা না রাখাই নিরাপদের। কারণ, অ্যাপে যে তথ্য় পাওয়া যায়, তা কতটা ভরসাযোগ্য, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে অল্পবিস্তর হাঁটাহাঁটি বা শরীরচর্চার পরে কতটা ক্যালরি ঝরলে, তা মাপতে নিশ্চিন্তে অ্যাপের সাহায্য নিতেই পারেন। কিন্তু ভুলেও অ্যাপ দেখে এক্সারসাইজ করতে যাবেন না যেন!

এমন কেন? আন্তর্জাতিক কেটেল বল অ্যাথলিট এবং মাস্টার কোচ সম্রাট সেনের মতে প্রতিটা মানুষেরই শরীরের গঠন আলাদা। এমনকী, কার কত দ্রুত ওজন কমবে, তাও নির্ভর করে শরীরের গঠনের উপর। তাই তো হেলথ অ্যাপের উপর ভরসা রাখাটা একেবারেই উচিত নয়। কারণ, বেশিরভাগ অ্যাপেই শুধুমাত্র ওজন এবং উচ্চতা সম্পর্কিত তথ্যের উপর নির্ভর করে এক্সারসাইজের উল্লেখ থাকে। সেখানে শরীর সম্পর্কিত কোনও তথ্য দেওয়ার প্রয়োজনই পরে না।
তাই তো চোখ-কান বুজে অ্যাপ দেখে কেউ যদি এক্সারসাইজ করে যান, তাহলে উপকার কতটা মিলবে জানা নেই, কিন্তু শরীরের যে মারাত্বক ক্ষতি হয়ে যাবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। বিশেষ করে কোমর, কাঁধ এবং ঘাড়ে চোট লাগার আশঙ্কা যেমন থাকে, তেমনই হার্টের ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই যদি শরীরচর্চা করতেই হয়, তাহলে অ্যাপের কথা ভুলে গিয়ে ট্রেনারের তত্ত্বাবধানে নিজের ‘বডি টাইপ’ এবং ‘বডি কন্ডিশন’ অনুসারে এক্সারসাইজ করা শুরু করুন। দেখবেন, অল্প দিনেই উপকার মিলবে। উপরন্তু শরীরের কোনও ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আর থাকবে না।
একই মত ডাঃ মিত্রেরও। তাঁর মতে, যে কোনও ধরনের এক্সারসাইজ শুরু করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া উচিত। বিশেষ করে বয়সের কোটা চল্লিশ পেরিয়ে গেলে তো আরও সাবধান হতে হবে। তা না করে যদি অন্ধের মতো অ্যাপের উপর ভরসা রাখেন, তাহলে তো বিপদ!
POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!
বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন #POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!