হাতে একটু সময় নিয়ে যদি আপনার পাড়ার কয়েকটা বাড়িতে একটু খোঁজখবর নেন দেখবেন এরকম অনেক মহিলা(working mothers) পেয়ে যাবেন যারা সন্তান হওয়ার পর চাকরি (career tips) ছেড়ে দিয়েছেন। অনেকেই মনে করেন মাতৃত্ব (working mothers) মানে কেরিয়ারে একটা বড় রকমের ফুলস্টপ। আবার অনেকে চাকরি (working mothers) ছাড়েন না ঠিকই কিন্তু সদ্য মা হওয়ার পর, সংসার, সন্তান আর অফিস সামলাতে গিয়ে হিমসিম খান। এইসব মায়েদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি এমন কিছু দরকারি টিপস (career tips) যা আপনাকে সব বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। আপনার যদি সন্তান থাকে এবং আপনি যদি চাকরি করেন এই টিপসগুলো (career tips) নিশ্চয়ই আপনার কাজে লাগবে। মনে রাখবেন আপনি একজন ওয়ার্কিং মম (working mothers) মানে আপনার কাঁধে অনেক বেশি দায়িত্ব, তাই পা ফেলতে হবে বুঝে শুনে।
অফিসে আসা যাওয়ায় অনেকটা সময় চলে যায়। ছ’টায় ছুটি হয়ে যদি বাড়ি ফিরতে ৮টা বাজে তাহলে অনেকটাই সময় নষ্ট হয়। তাছাড়া বাড়ি এসে যদি আবার রান্না ও অন্যান্য দায়িত্বও পালন করতে হয় তাহলেও বিষয়টা বেশ কষ্টকর। তাই এমন চাকরি খোঁজার চেষ্টা করুন যারা মাঝে মধ্যে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের সুবিধা দেয় বা যেখানে আসা যাওয়ায় সাঙ্ঘাতিক কড়াকড়ি নেই।
আপনি একজন মা হয়েছেন বলে যে আপনাকে পদে পদে আত্মত্যাগ করতে হবে তার কোনও মানে নেই। ধরে নিন সন্তান হওয়ার পর আপনি বছর খানেক গ্যাপ নিয়েই চাকরিতে ঢুকেছেন তার মানে এই নয় যে আপনার প্রাপ্য স্যালারি আপনি দাবী করবেন না। আপনার যা যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সেই অনুযায়ী স্যালারি চাইবেন। একবার যদি কম স্যালারিতে রাজি হয়ে যান তাহলে সেটা আগামী দিনে আপনার কেরিয়ারের জন্য ভালো হবে না।
দীর্ঘদিন যেখানে কাজ করছেন সেখানে একটা নির্ভরতার জায়গা গড়ে ওঠে। অনেক সহকর্মী তখন বন্ধুর মতো হয়ে যান। হঠাৎ করে সংস্থা পরিবর্তন করা মানে নিশ্চিন্ত আশ্রয় ছেড়ে যাওয়া। নতুন জায়গায় সেই আস্থার জায়গা গড়ে তুলতে আপনার সময় লাগবে। একজন পুরনো সহকর্মীকে আপনি বলতেই পারেন যে আজ আপনার মেয়ের স্কুলে মিটিং আছে তাই তিনি যেন ব্যাপারটা সামলে নেন। সেই একই কথা নতুন অফিসে বলতে গেলে আপনার কুণ্ঠাবোধ হতে পারে। আপনার এই অনুরোধ নতুন সহকর্মী নাও রাখতে পারেন।
আপনার মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সন্তানের নানা বিষয়ে আপনার অফিস কীভাবে সহযোগিতা করছে বা করতে পারে সেটা ভালো করে বুঝে নেবেন। আপনার যদি পদোন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং সেটা শুধু এই ভিত্তিতে আটকে রাখা হয় যে আপনি মাঝে মাঝে ছেলে বা মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে যান, বা মাঝে মাঝে ফোন করে তার খোঁজ নেন, তাহলে অবশ্যই রুখে দাঁড়ান।
যে সব মায়েরা কাজ করেন না, তারা কীভাবে সন্তানদের বেশি খেয়াল রাখছেন এইসব চিন্তা মাথায় ঠাই দেবেন না। আপনি চাকরি করেন বলে আপনি যে একজন আদর্শ মা হয়ে উঠতে পারবেন না এটা একদমই ভুল ধারণা। বরং আপনার ছেলে বা মেয়ে ছোট থেকেই দেখবে যে তার মা একজন স্বয়ংনির্ভর নারী।
অফিসে কাজ করেন বলে বাড়ির দায়িত্ব ও সন্তানদের লেখাপড়া নিয়ে ভাববেন না তা কি সম্ভব? তাই মাঝে মাঝে ‘না’ বলতে শিখুন। আপনার যেটুকু কাজ তার বাইরে যে কিছু করবেন না তা কখনওই আমরা বলছিনা কিন্তু সেটাকে নিয়ম করে ফেলবেন না। ধরুন শনিবার আপনার ছুটি থাকে। মাঝেমধ্যে শনিবার অফিস যেতে হতেই পারে। তবে সেটা যদি নিয়মিত হতে থাকে তাহলে স্রেফ না বলে দিন।
যদি কিছু কাজ বাড়িতে সেরে ফেলা যায় তাহলে সেটা সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পর অনায়াসে করে নিতে পারেন। এতে আপনার উপর চাপ কমবে এবং অফিস কর্তৃপক্ষও বুঝবেন যে আপনি কতটা প্যাশন ও দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেন।ছোট ছোট ডিটেলসে মন দেবেন আর নিখুতভাবে কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করবেন।
আপনার কেরিয়ারটাও গুরুত্বপূর্ণ। হ্যাঁ, প্রয়োজন হলে এই কথাটা ডায়েরিতে লিখে রাখুন। আর সেটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটাও একটা দরকারি কাজ। আর তাই যখন অফিসে আছেন যে কাজটা করছেন সেটা মন দিয়ে করুন। কাজ করতে করতে ছেলে/মেয়ে কী করছে বা তারা কেন অঙ্কে কম নম্বর পাচ্ছে সেটা নিয়ে খামোখা ভাববেন না। ঘন ঘন তাদের ফোনও করবেন না। ছোট বাচ্চাদেরও একটা আলাদা স্পেস আছে সেটা তাদের উপভোগ করতে দিন। আবার যখন বাড়ি আসবেন তখন অফিসের চিন্তা অফিসেই রেখে আসুন।
স্লো বাট স্টেডি উইন দা রেস। খরগোশ আর কচ্ছপের সেই গল্পটা মনে আছে তো? সেটাই করবেন চাকরির খেত্রেও। আপনার একটি সন্তান আছে এবং তার বয়স কত সেটা মাথায় রেখে অফিসে বাড়তি দায়িত্ব নেবেন। নিজেকে এফিশিয়েন্ট প্রমাণ করতে গিয়ে একগাদা দায়িত্ব নিলেন বটে কিন্তু সেটা পালন করতে পারলেন না তাহলে দুকূলই যাবে।
অনেক অফিসেই বাচ্চাদের ক্রেশ থাকে, অনেকেই কিশোর/ কিশোরী ছেলে মেয়েদেরও অফিসে নিয়ে যান। সেরকম ব্যবস্থা থাকলে সেটা উপভোগ করুন। স্কুলের পর বাচ্চা যদি আপনার সঙ্গে থাকতে পারে তাহলে ক্ষতি কোথায়? আর সেটা সম্ভব না হলে বাচ্চাকে এতদূরের স্কুলে দেবেন না যেখান থেকে আনা নেওয়া করতে আপনার অসুবিধে হয়।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!