আপনার দুলের ডিজাইনে যদি জোড়া চাঁদ যোগ করা থাকে, যারা পরস্পরকে অসীম আশ্লেষে জড়িয়ে আছে, আর যাদের গা খচিত নানা রংয়ের পাথর কিংবা কুন্দনের কারুকাজে, তা হলে জানবনে, সেটিই প্রকৃত চাঁদবালি (Chandbali)! যে দুল এককালে স্রেফ নবাবি খানদানের মহিলাদের কানের শোভা বৃদ্ধি করত, সেই দুলের কাহিনির শুরুতে এটুকু কাব্য তো করাই চলে, কী বলেন! নবাবি আমল থেকে এই দুল চালু হলেও, হালফিলে বলিউডি তারকারা এই দুলকে সর্বসাধারণের মধ্যে জনপ্রিয় করে দিয়েছেন। এখন আট থেকে আশি, সকলেই চাঁদবালির প্রেমে পাগল! আর শুধু কী তাই, খাঁটি ভারতীয় এই দুলটি আসলে সোনা-রুপোয় মোড়া হলেও, বা তার গায়ে হিরে-মোতি বসানো থাকলেও, এখন নানা ডিজাইনের এবং নানা ভার্শনের চাঁদবালি পাওয়া যায় বাজারে। তাই আপনিও স্বচ্ছন্দে, বাজেটের মধ্যে কিনে ফেলতে পারেন এই ডিজাইনের দুল (earring) এবং তা পরেও ফেলতে পারেন ভারতীয় কিংবা পশ্চিমি, যে-কোনও ধরনের পোশাকের সঙ্গে! আপনাদের জন্য রইল চাঁদবালি গাইড, যেখানে আমরা বলে দিচ্ছি, কোন চাঁদবালি কিনবেন, কোথা থেকেই বা কিনবেন এবং কীভাবে তা পরে হয়ে উঠবেন খাঁটি ফ্যাশনিস্তা!
চাঁদবালির ইতিহাস
নিজামদের আমল থেকে হায়দরাবাদে শুরু হয় মুক্তোর চাষ এবং তার হাত ধরে আসে মুক্তোবসানো গয়নার চল। হায়দরাবাদি চাঁদবালির বৈশিষ্টই হল মুক্তোর ঝালর! দুলটি যে ধাতুরই তৈরি হোক না কেন, তার নীচে মুক্তোর ঝালর থাকবেই। অনেক রকম ডিজাইনে তৈরি করা হত এই দুল, যার মধ্যে উল্লেখ্য হল, পাতা, ড্যাঙ্গল, স্পাইক, ফিলিগ্রি, ড্রপ, ঝুমর ইত্যাদি। তবে সবকটির তলাতেই দেওয়া থাকত মুক্তোর ঝালর। ইদানীং সেই ট্র্যাডিশনাল ডিজাইনে বৈচিত্র্য এসেছে, মুক্তোর ঝালরের পরিবর্তে বসানো হচ্ছে নানা সেমি প্রেশাস স্টোনের ঝালর। কিন্তু দুলের সৌন্দর্য আছে একই রকম!
চাঁদবালি কেনার সময় মাথায় রাখুন এই ব্যাপারগুলি
১. কেনার আগে দেখে নিন, আপনি ঠিক কোন ঝুলের চাঁদবালির সঙ্গে কমফর্টেবল। ওভারসাইজড চাঁদবালি থেকে শুরু করে ছোট্ট চাঁদবালি, নানা সাইজে পাওয়া যায় এই দুলটি। আপনার সংগ্রহের অন্য ঝোলা দুল দিয়ে সাইজটা আন্দাজ করে নিন। অন্য দুলের সাইজের চেয়ে চাঁদবালি একটু ছোট কিনবেন। কারণ, এর ডিজাইন অনেকটা ছড়ানো।
২. কোন পোশাকের সঙ্গে এবং কোন অনুষ্ঠানে চাঁদবালি পরবেন, তার উপর নির্ভর করে দুলটির ডিজাইন বাছুন। যদি কোনও অফিসের অনুষ্ঠানে বা কলেজে পরে যান, তা হলে অক্সিডাইজডের চাঁদবালি কিনুন, যেটা একটু ছোট সাইজের, বেশি কারুকাজ না করা। বিয়ে বা অন্য কোনও জমকালো অনুষ্ঠানে পরার জন্য বড় সাইজের সোনালি ও ট্র্যাডিশনাল কাজের চাঁদবালি কিনতে পারেন।
৩. যে চাঁদবালিতে কারুকাজ যত বেশি হবে, তার দাম তত বেশি হবে। বেশি দামের দু-একটা না কিনে মাঝারি দামের নানা ডিজাইনের চাঁদবালি কেনাই ভাল।
৪. এই দুল সাধারণতই খুব ভারী হয়। তাই কেনার আগে কানে পরে দেখে নিন, তার ভার সহ্য করতে পারছেন কিনা। তবেই কিনুন। অনলাইনে কিনলে, মেটেরিয়াল দেখে নেবেন। জার্মান সিলভার, রুপো বা সিলভার অ্যালয় দিয়ে তৈরি হলে বেশি বড় কিনবেন না। কারণ, তা ভারী হবেই। বরং ফাইবারের তৈরি চাঁদবালি কিনুন স্বচ্ছন্দে। তা সহজেই ক্যারি করতে পারবেন।
চাঁদবালির নানা ধরন
১. লং চাঁদবালি: প্রায় কাঁধ পর্যন্ত ঝোলানো এই চাঁদবালির বাহারই আলাদা! সনাতনী কাজের এই ধরনের দুলে সাধারণতই এখনও মুক্তো বা সেমি প্রেশাস স্টোনের ঝালর দেওয়া থাকে। তবে এই চাঁদবালির শেপ একটু আলাদা, লম্বাটে গোছের হয়।
এখান থেকে কিনতে পারেন এই ধরনের চাঁদবালি…
২. ওভারসাইজড চাঁদবালি: ইয়া ব্বড়, গোল আকারের সনাতনী চাঁদবালি, যা এককালে ছিল নিজামদের হারেমের একচেটিয়া ডিজাইন। আগে সোনা ছাড়া এই ধরনের চাঁদবালি তৈরিই করা হত না। কারণ, এত সূক্ষ্ম কারুকাজ এতে ফুটিয়ে তোলা যেত না। এখন অবশ্য ফাইবারের কাজেরও পাওয়া যায় এই দুল।
এখান থেকে কিনতে পারেন এই ধরনের চাঁদবালি…
৩. অক্সিডাইজড চাঁদবালি: যুগের এবং প্রয়োজনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চাঁদবালিও এখন তৈরি হচ্ছে সিলভার, সিলভার অ্যালয়, জার্মান সিলভার এবং অক্সিডাইজড-এ। আধুনিকাদের মধ্যে যথেষ্ট জনপ্রিয়ও হয়েছে তা। এই ধরনের চাঁদবালি নামী ডিজাইনার থেকে শুরু করে অনামী ফুটপাথের জাঙ্ক জুয়েলারির শপ, সকলেই তৈরি করেন ও স্টকে রাখেন!
এখান থেকে কিনতে পারেন এই ধরনের চাঁদবালি…
৪. ছোট্ট চাঁদবালি: এই দুল হচ্ছে সাবেকি চাঁদবালির সর্বাধুনিক সংস্করণ। ছোট্টর উপর চাঁদবালি এমন সুন্দরভাবে তৈরি করা হয়, যা পকেটসই, ওজনসই এবং সব সাজের সঙ্গে মানানসইও বটে!
এখান থেকে কিনতে পারেন এই ধরনের চাঁদবালি…
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!