মাসটা মার্চ আর গত সপ্তাহেই সেলিব্রেট করা হয়েছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস; অনেকেই নারী স্বাধীনতা, ‘ওমেন এম্পাওয়ারমেন্ট’ নিয়ে অনেক কথা বলেছেন, কিন্তু সত্যি করে বলুন তো নারী কি সত্যিই স্বাধীন হয়েছে? যদি তাই হতো, যদি মেয়েদের ওপরে অত্যাচার সত্যিই বন্ধ হয়তো, তাহলে তো আর ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের কোনও কেসই করতে হতো না, তাই না?
শুধুমাত্র সাধারণ ঘরে নয়, সেলিব্রেটিদের বাড়িতেও কিন্তু সেই এক সমস্যা। আপনাদের মনে আছে কিনা জানি না, তবে গত বছর ভারতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় মহম্মদ শামির বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী হাসিন জাহান ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের অভিযোগ করেছিলেন। সেই ঘটনার সূত্রেই গতকাল অর্থাৎ ১৪ই মার্চ, ২০১৯-এ কলকাতা পুলিশ, মহম্মদ শামির বিরুদ্ধে চার্জশিট ফাইল করেছে। সুত্রের খবর অনুযায়ী, চার্জশিটে শামির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ (ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স) ধারা এবং ৩৫৪এ (যৌন নিপীড়ন) ধারা ধার্য করা হয়েছে।
আলিপুর কোর্টে এই কেস ফাইল করা হয়েছে তবে তাতে শামির ভারতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব নিয়ে খুব একটা সমস্যা হবে না বলে আইনজীবীদের মনে হয়। সেলিম রহমান, শামির আইনজীবী জানান যে তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলি হল ধর্ষণ (শামির দাদার বিরুদ্ধে), অ্যাটেম্পট টু মার্ডার এবং শারীরিক অত্যাচার। “যৌন নিপীড়ন এবং ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের দুটো অভিযোগ করা হয়েছে, কিন্তু আমরা আইনি পথেই ব্যবস্থা নেব” – বললেন শামির উকিল।
গতবছর ঠিক এরকম সময়েই মহম্মদ শামির স্ত্রী হাসিন জাহান তাঁর বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ এনে কলকাতা পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স, যৌন নিপীড়ন এবং মানসিক অত্যাচারের মতো গম্ভীর বিষয়ে তিনি অভিযোগ করেছিলেন। ওই অভিযোগ পত্রকে যাতে এফ আই আর হিসেবে গন্য করা হয় সেই অনুরোধও তিনি করেছিলেন। এরপরেই যাদবপুর থানায় শামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ।
যদিও সেই সময়ে শামি তাঁর এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে হাসিনের করা সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছিলেন। তিনি এও বলেছিলেন যে ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স (domestic violence), পণের দাবি, মানসিক অত্যাচার কিংবা ধর্ষণের মতো যেসব অভিযোগ হাসিন শামির বিরুদ্ধে এনেছেন সেগুলি সবই মিথ্যে।
গতবছর মার্চেই আলিপুর কোর্টে হাসিনের বয়ান রেকর্ড করা হয় এবং এপ্রিলে তিনি আদালতের কাছে আবেদন জানান যেন তাঁর এবং তাঁর মেয়ের ভরণপোষণের জন্য মাসে ১০ লক্ষ টাকা মহম্মদ শামির থেকে তাকে পাইয়ে দেবার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। এমনকি হাসিন গতবছর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর সাথেও দেখা করেন এবং প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে তাঁদের মধ্যে নাকি কথাবার্তা চলে। পরে হাসিন মিডিয়াকে জানান যে মুখ্যমন্ত্রী তাকে আশা দিয়েছেন যে সবরকমভাবে সরকার তাকে সাহায্য করবে।
গত বছর নভেম্বরেই অবশ্য শামিকে বেশ কয়েকবার লাল বাজারের গোয়েন্দাবিভাগের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। মনে হচ্ছে এবছরও তাকে ঠিক বিশ্বকাপের আগ দিয়ে আবারও সেই একই সমস্যায় পড়তে হবে। যদিও ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি শামির পারফরমেন্সের প্রশংসা করেছেন এবং তাঁর যে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকা নিশ্চিত সে বিষয়ে বলেছেন, তবুও একটা প্রশ্ন থেকে যায় যে ঘরের এই সমস্যা শামির কেরিয়ারে কতটা প্রভাব ফেলবে!
ছবি সৌজন্যে – YouTube
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!