নিত্যদিন তাপমাত্রা যে হারে বাড়ছে, তাতে গরমকাল আসতে যে আর বেশি দেরি নেই, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর গরমকাল মানেই ঘাম (sweat)। আর ঘাম মানেই হাজার রকমের রোগ (diseases)!
বেশ কয়েকটি স্টাডিতে দেখা গেছে বাসে-ট্রামে যাওয়ার সময় অথবা জিমে কসরত করার সময় অন্যের ঘাম গায়ে লাগলে বা ত্বকের সংস্পর্শে এলে তা থেকে বেশ কিছু জটিল শারীরিক সমস্যা হতে পারে (beware of this infection)। বিশেষত, সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। তাই পাবলিক প্লেসে একটু সাবধানে না থাকলে কিন্তু বিপদ!
সাধারণত অন্যের ছোঁয়া থেকে যে যে রোগগুলি হতে পারে, সেগুলি হল…
এমআরএসএ বা ম্যাথিকিলন রেজিসটেন্স স্টেফিলোকক্কাস অ্যারিসাস (Methicillin resistant Staphylococcus aureus) জীবাণুটি খুব সহজেই ঘামের মাধ্য়মে একজনের শরীর থেকে পৌঁছে যেতে পারে আরও অনেকের শরীরে (bacteria)। আর এমনটা হলে মারাত্মক ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় বেড়ে। আর সবথেকে ভয়ের বিষয় হল বাজার চলতি বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকই এই জীবাণুটিকে মারতে পারে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রোগ জটিল আকার ধারণ করতে যে সময় লাগে না, তা তো বলাই বাহুল্য! এক্ষেত্রে সাধারণত যে যে লক্ষণগুলি প্রকাশ পেয়ে থাকে, সেগুলি হল- ত্বকের বিভিন্ন জায়গা ফুলে গিয়ে লাল হয়ে যাবে, যন্ত্রণা হবে এবং ফোসকা পড়বে।
এমন সব লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্র দ্রুত যদি চিকিৎসা শুরু করা না যায় তাহলে সংক্রমণ রক্তে ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা যেমন থাকে, তেমনি এমন ধরনের ইনফেকশনের কারণে ফুসফুস এবং ইউরিনারি ট্র্যাক্ট আক্রান্ত হওয়ার ভয়ও থাকে।
সরাসরি ঘামের মাধ্যমে এই ভাইরাসটি না ছড়ালেও অসুস্থ ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে অথবা আরও কোনওভাবে এই জীবাণু যদি স্কিনের উপরি অংশে এসে পৌঁছায়, তাহলে কিন্তু তা ঘামের মাধ্যমে খুব সহজেই আরেকজনের শরীরে গিয়ে বাসা বাঁধতে পারে। আর এমনটা হলে বারে বারে ভাইরাল ফিবারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় বেড়ে (can you catch a cold from someone’s sweat)। তাই গরমকালে বাসে-ট্রামে একটি সাবধানে থাকা উচিত। সাবধানে থাকা উচিত জিম বা অন্যান্য পাবলিক প্লেসেও। বিশেষত, কেউ হাঁচলে-কাশলে তার কাছাকাছি না যাওয়াই শ্রেয়।
স্টেফিলোকক্কাস অরিসাস (Staphylococcus aureus) নামক একটি জীবাণুর কারণে হওয়া এই স্কিন ইনফেকশন খুব সহজেই আরও অনেকের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষত, ভিড় বাসে-ট্রামে, মেট্রোতে এবং জিমে এমন ধরনের সংক্রমণ এক থেকে একাধিক জনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার ভয় থাকে বেশি। তাই নিজেকে এমন ধরনের জীবাণুর খপ্পর থেকে বাঁচিয়ে রাখতে বছরের এই বিশেষ সময়ে যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলাই ভালো।
স্কিন-টু-স্কিন কনট্যাক্টের কারণে যেমন এইচএসভি-১ এবং এইএসবি-২ (HSV-1 and HSV-2 ) ভাইরাস একাধিক মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে, তেমনি ঘামের মাধ্যমেও এই জীবাণু কিন্তু আরও অনেকের মধ্য়ে ছড়িয়ে যেতে পারে (can you get hepatitis from sweat)। আর একবার এমনটা হলে হার্পিসের মতো ত্বকের রোগে আক্রান্ত হতে যে এক মুহূর্তও সময় লাগে না, তা তো বলাই বাহুল্য! তাই বাড়ি থেকে বেরনোর পর থেকে প্রতিটি সেকেন্ড সাবধানে থাকার প্রয়োজন রয়েছে। না হলেই বিপদ!
হার্পিসের মতো রোগে আক্রান্ত হলে ত্বক লাল হয়ে যাওয়া, আক্রান্ত জায়গায় মারাত্মক যন্ত্রণা হওয়া, চুলকানি এবং চামড়া ওঠার মতো লক্ষণ দেখা দেয়।
এক্সারসাইজ করার সময় না চেয়েও অনেক সময় অন্য অনেকের সঙ্গে বডি কনট্যাক্ট হয়ে যায়। আর সেই কারণে বেশ কিছু সংক্রমণে আক্রান্ত (diseases) হওয়ার ভয় থাকে বৈকি! যেমন ধরো এসটিএপিএইচ (STAPH) নামক একটি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সবথেকে বেশি থাকে। সেই সঙ্গে লেজুড় হতে পারে অ্যাথেলিট ফিট এবং রিং ওয়ার্ম বা দাদের মতো রোগও। এখন প্রশ্ন হল এমন সব সংক্রমণ থেকে দূরে থাকা যায় কীভাবে? এক্ষেত্রে যতটা সম্ভব অন্যের স্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। সেই সঙ্গে এক্সারসাইজের পর ভালো করে স্নান করে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এর পাশাপাশি প্রতিটি জিম ইকুইপমেন্ট ব্যবহারের পরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। আর ভুলেও খালি পাায়ে এক্সারসাইজ করা চলবে না।
জিম এবং পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ছাড়াও ওয়াশরুম, রেঁস্তোরা, সুইমিং পুল আর মুভি থিয়েটারেও প্রচুর পরিমাণে ভাইরাস এসে ভিড় করে। তাই এই সব জায়গা থেকে বাড়ি ফিরে আসার পরে ভালো করে স্নান করতে হবে। না হলে কিন্তু সংক্রমণের (diseases) ভয় যে থেকেই যাবে, তা তো বলাই বাহুল্য!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!