ক্যানসারকে হারিয়ে মস্কোতে টেবিলে টেনিসে সোনা পেল শ্রীরামপুরের খুদে অরণ্যতেশ গঙ্গোপাধ্যায়
মাত্র আট বছর বয়স তার। আর ইতিমধ্যেই সে সাড়া ফেলে দিয়েছে ক্রীড়া জগতে। আট বছরের এই খুদের নাম অরণ্যতেশ গঙ্গোপাধ্যায়। খুদে প্রতিভার বাড়ি হুগলি জেলার শ্রীরামপুরে (Serampore)। কিছুদিন আগেই মস্কোতে শেষ হয়েছে World Children’s Winners Game 2019। আর এই প্রতিযোগিতাতেই সবাইকে পিছনে ফেলে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেছে অরণ্যতেশ গঙ্গোপাধ্যায় (Aronyatesh Ganguly)। তবে এই জয় খুব সহজ ছিল না। ক্যানসারের (cancer) মতো মারণ রোগের সঙ্গে লড়াই করছে এই ছোট্ট প্রাণ। প্রতি বছর মস্কোতে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় সেই সব ছোট্ট খেলোয়াড়দের নিয়ে যারা ক্যানসার ও অন্যান্য মারণ রোগের সঙ্গে প্রতিদিন লড়াই করছে। টেবিল টেনিস ছাড়াও এখানে ফুটবল, দাবা, টেবিল টেনিস ও সাঁতারের মতো প্রতিযোগিতাও হয়ে থাকে।
২০১৬ সালে এপ্রিল মাসে ঘটে সেই মর্মান্তিক ঘটনা। গঙ্গোপাধ্যায় পরিবার জানতে পারে যে ছোট্ট অরণ্য লিউকেমিয়া বা ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত। তখনই অরণ্যকে নিয়ে মুম্বই চলে যায় তার পরিবার। সেখানে টাটা ক্যানসার সেন্টারে তার টানা কেমোথেরাপি চলে অরণ্যতেশের। তার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য চিকিৎসাও চলছিল। ধীরে-ধীরে ক্যানসারের করাল থাবা থেকে কিছুটা হলেও নিস্তার পেয়েছে সে। এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়নি অরণ্য। চলছে তার চিকিৎসা। অরণ্য সোনা জেতায় দারুণ খুশি টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। কারণ ভারত থেকে মাত্র ১০ জন শিশু এই সুযোগ পেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ থেকে এই সুযোগ একমাত্র অরণ্যই পেয়েছে। অরণ্যর মা কাবেরী গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, এই রকম শারীরিক অবস্থা নিয়েও অরণ্য যখন মস্কোতে খেলার সুযোগ পায় তখন আনন্দে আত্মাহারা হয়ে পড়ে। ও যে এরকম একটা রোগে আক্রান্ত সেটা যেন ও ভুলেই গিয়েছিল। আর এখন এই জয় ওকে আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে।
এই প্রতিযোগিতায় যাবে বলে টানা দু’মাস ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে ছোট্ট অরণ্য। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে মস্কোতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যে যে খেলার কথা বলা হল, প্রতিযোগীদের সেই সবগুলোই করতে হয়। অরণ্যতেশ এই সবগুলোতেই দক্ষ। তবে তার এই দক্ষতা এমনি এমনি আসেনি। প্রতিদিন ভোর সাড়ে পাঁচটায় ও উঠে পড়ত। তারপর সকাল ছ’টা থেকে সাতটা পর্যন্ত হত ট্র্যাক আর ফুটবলের অভ্যেস। একটু বিশ্রাম নিয়েই সাঁতার, দাবা আর টেবিল টেনিসের প্র্যাকটিস করত সে। সন্ধেবেলা হত শুটিংয়ের ক্লাস। শ্রীরামপুরে এরকম কোনও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র না থাকায় সেখান থেকে ভদ্রেশ্বর আসত অরণ্য। ছোট্ট এই প্রতিভার প্রশংসায় পঞ্চমুখ কোচ পঙ্কজ পোদ্দার। তিনি অরণ্যকে রাইফেল শুটিং সেখান। পঙ্কজ মনে করে শান্ত স্বভাবের অরণ্য ঈশ্বরের আশীর্বাদ হয়ে ওর কাছে এসেছে। অরণ্যর প্রতিভা শুধু নয় অধ্যাবসায় দেখেও মুগ্ধ তিনি।
আগামী দিনে অরণ্যর জন্য রইল অনেক শুভেচ্ছা। সম্পূর্ণ রোগমুক্ত হয়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করুক সে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!