কবি বলেছিলেন অন্ধজনে দেহ আলো। ভাবুন তো যারা এই সুন্দর পৃথিবীকে দু চোখে দেখতে পায়না তাদের কষ্ট কতটা গভীর। তারা দেখতে পায়না আকাশ রাঙিয়ে সূর্য ওঠা। তারা দেখতে পায়না তাদের জন্মদাত্রী মাকে। তারা দেখতে পায়না তারায় ভরা ঝলমলে আকাশ। সবচেয়ে বড় কথা হল তারা দেখতে পায়না নিজেদেরও। এত কথা কেন বলছি জানেন? বলছি কারণ জন্মান্ধ যারা তারা ছাড়া আমরা অনেকেই আমাদের এই চোখ দুটোকে সেভাবে গুরুত্ত্ব দিইনা। শুধু চোখের মেকআপ করা মানেই চোখের যত্ন নেওয়া নয়। চোখের সঠিক যত্ন নিতে হলে দরকার তার সঠিক পুষ্টি (nutrition)। শুনেছেন নিশ্চয়ই গর্ভবতী (pregnant) মাকে বারবার করে পুষ্টিকর খাবার খেতে বলেন ডাক্তার ও বাড়ির লোকজনেরা। পুষ্টির অভাবে চোখ নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমাদের প্রতিদিনের ডায়েটে চোখের যত্নে পুষ্টি উপাদান (elements necessary for eyes) রাখতে হবে।
কী ধরণের উপাদান (elements) প্রয়োজন
আমাদের চোখের (eyes) জন্য প্রয়োজন দু ধরণের পুষ্টি উপাদান। এসেনশিয়াল (essential) বা অপরিহার্য উপাদান এবং নন এসেনশিয়াল বা গৌণ উপাদান।
নন এসেনশিয়াল উপাদান আমাদের শরীরের ভিতরেই তৈরি হয়। কিন্তু এসেনশিয়াল উপাদান আসে বাইরের খাদ্যবস্তু থেকে।
কোন উপাদানে কী আছে
ভিটামিন এ (Vitamin A)
এটি চোখের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অনেক সময় নানা অসুখের কারণে এই ভিটামিনের অভাব দেখা দেয় শরীরে।সাধারণত ছেলেদের প্রতিদিন ৯০০ মাইক্রো গ্রাম ভিটামিন এ এবং মেয়েদের ৭০০ মাইক্রো গ্রাম ভিটামিন এ দরকার। এই ভিটামিন পেতে গেলে খেতে হবে পাতাওয়ালা শাক যেমন পালং। সবজি যেমন মিষ্টি আলু, গাজর এবং রঙিন ফল যেমন পেঁপে, আম ইত্যাদি। এই ধরণের ফলে থাকে বিটা ক্যারোটিন যাকে আমাদের শরীর ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত করে।
ভিটামিন ছাড়াও চোখের জন্য প্রয়োজন অ্যাণ্টি-অক্সিডেন্ট, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং খনিজ।
চোখের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এ
ভিটামিন ই (Vitamin E)
বিটা ক্যারোটিন সহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান শোষণ করতে সাহায্য করে ভিটামিন ই। এটি পাওয়া যায় আমন্ড, চিনা বাদাম, ভুট্টার তেল থেকে। দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এই ভিটামিন।
অ্যাণ্টি-অক্সিডেন্ট-এর মধ্যে আছে লিউটিন এবং জিয়াজ্যান্থিন খুব দরকারি। স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি, ছানি প্রতিরোধ এবং ব্যসের কারণে চোখের নানা সমস্যা দূর করে এই দুটি অ্যাণ্টি-অক্সিডেন্ট। এই দুটি পাওয়া যাবে ভুট্টা, কমলালেবু ও ব্রকোলিতে।
ফ্যাটি অ্যাসিড (Fatty Acid)
চোখের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড হল ওমেগা থ্রি ডিএইচএ এবং ওমেগা থ্রি ইপিএ। রেটিনার পেশির গঠনে এই দু প্রকার ফ্যাটি অ্যাসিডের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এই দুটি পাওয়া যাবে তেলযুক্ত মাছ, তিসির তেল, সর্ষের তেল, তোফু, আখরোট ও ডিমে।
খনিজের মধ্যে জিঙ্কের (Zinc) নাম সবার আগে আসবে। চোখের রঞ্জক পদার্থ বাঁচানোর কাজ করে জিঙ্ক। এটি পাওয়া যাবে গম ও গুগলি থেকে।
মাছ আর ডিমে পাওয়া যাবে ফ্যাটি অ্যাসিড
চেষ্টা করুন এই জাতীয় খাবার ডায়েটে (Diet) রাখতে। শুধু নিজের নয় বাড়ির সবার পাতে বিশেষ করে ছোট সদস্যদের পাতে যেন এগুলো থাকে খেয়াল রাখবেন। কারণ ছোট থেকেই চোখের সঠিক যত্ন নিলে বড় হলে সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা কম হবে।
ছবি সৌজন্যঃ পেক্সেল ডট কম
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!