ঠিক দু’দিন আগে অর্থাৎ গত সোমবার ছিল পয়লা বৈশাখ, বাঙালিদের একটি বড় উৎসব। চেনা হোক কিংবা অচেনা, যার সাথেই দেখা হয়েছে আমরা একে অপরকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি যাতে নতুন বছরের প্রতিটি দিন সকলের ভালো কাটে। কিন্তু সেদিনই ঘটে গেল একটি সাংঘাতিক ইভটিজিং-এর মতো ঘটনা, আরও একবার! কালনার বাঘনাপাড়া অঞ্চলে এই ঘটনা ঘটে।
প্রতীকী ছবি
কি হয়েছিল সেদিন? একদল কিশোরী পয়লা বৈশাখের (Poila Boishak) অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিলেন কালনার বাঘনাপাড়া অঞ্চলে। সেখান থেকে অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে একদল ছেলে তাদের পিছু নেয় এবং নানা অশ্লীল মন্তব্য তাদের দিকে ছুড়তে থাকে। মোট ৭ জন কিশোরী ছিলেন। তারা অনুষ্ঠান শেষে অটো করে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়েই তিনজন ইভটিজার তাদের পিছু নেয় স্কুটারে চেপে। তিনজনেই মদ্যপ অবস্থায় ছিল। কখনও অটোর পেছনে তারা স্কুটার নিয়ে ধাওয়া করে আবার কখনও বা অটোর পাশে এসে নোংরা মন্তব্য করতে থাকে। সাত কিশোরী তাদের এই অসভ্য আচরণে প্রথমে স্বাভাবিকভাবেই ভয় পেয়ে যায়। ফলস্বরূপ ওই মদ্যপ ইভটিজারদের সাহস আরও বেড়ে যায় এবং সেই সাথে বাড়তে থাকে কটূক্তির মাত্রা।
কিশোরীদের বক্তব্য অনুযায়ী, নতুন বছরের উৎসব উদযাপন উপলক্ষ্যে কালনার বাঘনাপাড়া অঞ্চলে তারা সাত জন একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করতে গিয়েছিলেন। সাথে তাদেরই একজনের পরিবারের একজন মহিলা সদস্যাও ছিলেন। যে অটোতে করে তারা বাড়ি ফিরছিলেন সেই অটোচালকের মেয়েও গিয়েছিল ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করতে। অনুষ্ঠান সেরে বাড়ি ফিরতে সেদিন যেহেতু রাত হয়ে গিয়েছিল তাই রাস্তায় তুলনামূলকভাবে লোক চলাচলও কমে এসছিল।
প্রতীকী ছবি
বাঘনাপাড়া থেকে এস টি কে কে রোড ধরে অটো করে বাড়ি ফেরার সময়ে একটি স্কুটারে করে তিনজন ছেলে তাদের অটোর পেছন পেছন আসতে থাকে। প্রথমে ব্যাপারটাকে অতো বেশি গুরুত্ব কেউই দেননি। তারা ভেবেছিলেন যে তাদের মতই হয়তো কেউ বাড়ি ফিরছে। কিন্তু যখন ওই তিন যুবক অটোর পাশে এসে কিশোরীদেরকে দেখে নানা কুমন্তব্য করতে থাকে তখন অটোর ভেতরে বসে থাকা কিশোরীরা বুঝতে পারে যে এরা তিনজনেই মদ্যপ এবং ইভটিজার (Eve Teasers)। তাদের অভিযোগ যে ওই তিন মদ্যপ ইভটিজার ইচ্ছে করে অটোর ভেতরে পেছনের সিটে বসা কিশোরীদের মুখেও স্কুটারের হেডলাইটের আলো ফেলছিল। যখন এই ঘটনার প্রদিবাদ করা হয় তখন ওই তিনজন যুবক কিশোরীদের দিকে নানা নোংরা মন্তব্য ছুড়তে থাকে। এমনকি আটোচালক এবং মহিলার সাথে তাদের বাগবিতণ্ডাও হয়। এরপর কালনা শহরের মিত্রপাড়ায় পৌঁছে ওই সাত কিশোরী অটো থেকে নেমে ওই তিন মদ্যপ ইভটিজারকে ধরে ফেলেন এবং তাদের চেঁচামেচিতে পাড়ার লোকজনও ছুটে আসেন। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে বুঝতে পেরে ওই তিন যুবক কিশোরীদের পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়ে নেয়। যদিও পুলিশের কাছে আর ওই কিশোরীরা বা তাদের পরিবারের কেউ অভিযোগ জানাননি।
নতুন বছরের প্রথম দিনেই এরকম একটা খারাপ অভিজ্ঞতার শিকার হতে হল ভেবে যদিও তাদের মন খারাপ তবুও শেষ পর্যন্ত যে নারীশক্তির জয় হল, তাতে মনে খানিকটা হলেও শান্তি!
ছবি সৌজন্যেঃ ইউটিউব
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!