নাম শুনেই নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন হাইড্রেটিং ফেসিয়াল (Hydrating Facial) ব্যাপারটি কী। কিন্তু তবুও যখন কষ্ট করে লিখতে বসেছি, তখন আমি আপনাদের বেশ বিশদে জানাবো যে অন্য ফেসিয়ালের সঙ্গে হাইড্রেটিং ফেসিয়ালের কী তফাৎ; কিভাবে হাইড্রেটিং ফেসিয়াল করতে হয়, আপনি বাড়িতে বসেই কিভাবে হাইড্রেটিং ফেসিয়াল করতে পারেন, সেরা কিছু হাইড্রেটিং ফেসিয়ালের কিট কোনগুলো ইত্যাদি। কিন্তু সবার আগে আপনাদের জানাবো কেন করবেন হাইড্রেটিং ফেসিয়াল (Hydrating Facial Benefits In Bengali), অর্থাৎ এ ধরনের ফেসিয়ালের উপকারিতা।
হাইড্রেটিং ফেসিয়ালের উপকারিতা (Benefits of Hydrating Facial)
দেখে নেওয়া যাক, হাইড্রেটিং ফেসিয়ালের কী কী উপকারিতা (Benefits of Hydrating Facial) রয়েছে –
১। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে
শিশুর ত্বকের মত মোলায়েল ও বাউন্সি হয়ে উঠতে পারে আপনার ত্বকও। আসলে হাইড্রেটিং ফেসিয়াল (Hydrating Facial) করার সময়ে যে যে প্রোডাক্ট ব্যবহার করা হয় তা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
২। ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি পায়
যেহেতু ত্বক ভিতর থেকে পরিস্কার ও আর্দ্র থাকে কাজেই ত্বকের উপরিভাগে কোনওরকম দাগ ছোপ বা র্যাশ বেরনোর আশঙ্কাই থাকে না। ফলে ত্বক হয়ে ওঠে উজ্জ্বল।
৩। ত্বকের কমপ্লেকশন একরকম থাকে
আমাদের অনেকেরই ত্বকে একটা সমস্যা দেখা দেয়, এক এক জায়গায় এক একরকমের রং! মানে, কোনও কারনে কমপ্লেকশন একরকম হয় না। তা ট্যানের জন্য হতে পারে, দাগ-ছোপ বা র্যাশের জন্য হতে পারে আবার অন্য কোনও সমস্যার জন্যও হতে পারে। তবে হাইড্রেটিং ফেসিয়ালের সাহায্যে কিন্তু ত্বকে ইভেন টোন ফিরে পাওয়া সম্ভব।
৪। ত্বক হয়ে ওঠে কোমল ও মসৃণ
আগেই বলেছি যেহেতু হাইড্রেটিং ফেসিয়াল (Hydrating Facial) ত্বকের আর্দ্রতা বাড়াতে ও বজায় রাখতে সাহায্য করে, কাজেই ত্বক হয়ে ওঠে কোমল ও মসৃণ। অনেকের ত্বকের ধরন শুষ্ক হয়, তাঁদের জন্য এ ধরনের ফেসিয়ালটি (Benefits of Hydrating Facial) কিন্তু দারুনভাবে উপযোগী।
৫। ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্তভাব দূর হয়
যাদের ত্বকের ধরন তৈলাক্ত, তাঁদের হাইড্রেটিং ফেসিয়াল (Hydrating Facial) করানোর প্রয়োজন নেই – এমনটা মনে করার কোনও কারন নেই কিন্তু! অনেকসময়েই, বিশেষ করে গরম ও বর্ষাকালে তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা ভালই বুঝতে পারেন যে তাঁদের ত্বক অতিরিক্ত তেলতেলে হয় থাকে। এটিও কিন্তু আর্দ্রতা হারানোর লক্ষন। কাজেই এই ফেসিয়ালটি করিয়ে নিতে পারেন।
৬। অ্যাকনে থেকে মুক্তি
ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করার সঙ্গেই হাইড্রেটিং ফেসিয়াল ত্বকের তৈলগ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত তেল ক্ষরণ রোধ করে (Benefits of Hydrating Facial)। ফলে ত্বকের লোমকূপে ময়লা জমে থাকার আশঙ্কা কমে ও অ্যাকনে বা ব্রন-ফুস্কুড়ি থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হয়।
৭। র্যাশ বা জ্বালা-পোড়ার সমস্যা কম হয়
যাদের ত্বক শুষ্ক, তাঁদের বেশিরভাগ সময়েই ত্বকে র্যাশ, চুলকানি ও জ্বালা-পোড়ার মত নানা সমস্যা দেখা দেয়। হাইড্রেটিং ফেসিয়াল এসব সমস্যার সমাধান।
কিভাবে হাইড্রেটিং ফেসিয়াল করা যায় – টিউটোরিয়াল (How To Do A Hydrating Facial At Home)
ত্বকের, বিশেষ করে মুখের যত্ন নেওয়া খুব জরুরি কারণ আমাদের মুখের ত্বক শরীরের বাকি অংশের ত্বকের থেকে অনেক বেশি নরম ও সংবেদনশীল হয়। কাজেই, মাসে অন্তত একবার করে ফেসিয়াল করা খুব প্রয়োজন। ত্বকের উপরিভাগ থেকে মরা কোষ দূর করা, গভীরভাবে ত্বকে আর্দ্রতা জোগানো, ত্বক পরিষ্কার করা – এগুলো সবই হয় ফেসিয়ালের মাধ্যমে। আমরা বলে দিচ্ছি ঘরোয়া কিছু উপকরণ দিয়েই কীভাবে আপনি বাড়িতেই হাইড্রেটিং ফেসিয়াল করতে পারবেন
যা যা প্রয়োজন –
- দুই টেবিল চামচ দুধ
- তুলো
- স্ক্রাব
- আপনার রোজকার মাখার ফেস ক্রিম
- এক টেবিল চামচ মধু
কীভাবে করবেন –
ফেসিয়াল করার প্রথম ধাপ হল ক্লেনজিং। মুখের উপরিভাগে থাকা ময়লা পরিষ্কার না করে যদি আপনি বাকি ধাপগুলো ফলো করেন তাহলে ত্বকের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। দুধে তুলো চুবিয়ে নিয়ে তা দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। এবারে প্রয়োজন ত্বকের উপরিভাগের মরাকোষ দূর করা। তার জন্য আপনাকে স্ক্রাব করতে হবে। জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ভাল করে স্ক্রাব করুন। বিশেষ করে নাকের পাশে, চিবুকে এবং কপালে স্ক্রাবিং খুব দরকার কারণ এখানে ব্ল্যাকহেডস বেশি থাকে। স্ক্রাব করা হয়ে গেলে মুখ ধুয়ে নরম একটি তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে ফেস ক্রিম লাগান। প্রতিদিন যে ক্রিমটি ব্যবহার করেন, আপাতত তা দিয়েই মাসাজ করুন। মিনিট ২০ মাসাজ করে মুখ ধুয়ে নিন। এবারে ফেসপ্যাক লাগাতে হবে। ফেসপ্যাক হিসেবে মধু ব্যবহার করতে পারেন কারণ সব ধরনের ত্বকেই মধু ব্যবহার করা যায়। সামান্য জলের সঙ্গে মধু মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করে নিন এবং মুখে ও গলায় লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন। মনে রাখবেন যেদিন ফেসিয়াল করবেন সেদিন মুখে কোনও রাসায়নিক ক্রিম বা কসমেটিকস ব্যবহার না করাই ভাল।
সেরা পাঁচটি হাইড্রেটিং ফেস মাস্ক (Top 5 Hydrating Face Mask)
১। বিউটি বাই আর্থ ক্লিয়ার কমপ্লেকশন হাইড্রেটিং ফেস মাস্ক (Beauty by Earth Hydrating Face Mask)
ব্যবহারবিধি – উষ্ণ জলে নরম একটি তোয়ালে নিংড়ে তা দিয়ে মুখ পরিস্কার করে নিন। এতে লোমকূপ খুলবে। এবারে মাস্কটি লাগিয়ে নিন। কানের পিছনে এবং চোখের পাশে লাগাবেন না। দশ থেকে পনের মিনিট পর ভেজা তোয়ালে দিয়ে মুখ পরিস্কার করে নিন আর ম্যাজিক দেখুন!
সুবিধে
- ত্বক তুলতুলে করে তোলে
- গভীর থেকে ত্বকের ময়লা পরিস্কার করে
- কোনও রাসায়নিক নেই
অসুবিধে
- অতিরিক্ত তেলতেলে লাগতে পারে
২। মরিতা ময়শ্চারাইজিং হ্যলুরনিক অ্যাসিড ফেসিয়াল শিট মাস্ক (Dr. Morita Hyaluronic Acid Hydrating Facial Mask)
ব্যবহারবিধি – ভাল করে মুখ ধুয়ে এই হাইড্রেটিং ফেসিয়াল মাস্কটি (Hydrating Facial Mask) মুখে লাগিয়ে নিন। যেহেতু এটি শিট মাস্ক কাজেই লাগানো সহজ। দশ মিনিট পর ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
সুবিধে
- ত্বক মোলায়েম ও উজ্জ্বল করে তোলে
- ত্বকের ইলাস্টিসিটি মজবুত হয়
- ত্বক তরতাজা করে তোলে
অসুবিধে
- সব ধরনের ত্বকের উপযোগী নয়। ব্যবহার করার আগে একবার প্যাচ টেস্ট করে নেওয়া ভাল
৩। অ্যাডভান্সড ক্লিনিকাল হ্যলুরনিক অ্যাসিড ময়শ্চারাইজিং জেল মাস্ক (Advanced Clinical Hyaluronic Acid Moisturizing Gel Mask)
ব্যবহারবিধি – ভাল করে মুখ ধুয়ে এই হাইড্রেটিং ফেসিয়াল মাস্কটি মুখে লাগিয়ে নিন। চোখে ও তার চারপাশে লাগাবেন না। দশ মিনিট পর ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ভাল রেজাল্টের জন্য সপ্তাহে তিনবার ব্যবহার করতে হবে।
সুবিধে
- বড় লোমকূপ ছোট করে দেয়
- বলিরেখা ও দাগছোপ দূর করে
- প্যারাবেন ও মিনারেল অয়েল নেই
অসুবিধে
- সব ধরনের ত্বকের উপযোগী নয়
- খুব বেশিদিন চলে না
৪। আনন্দ অ্যালো জেল অ্যান্ড রোজ ডিসটিলেট হাইড্রেটিং ফেসিয়াল মাস্ক (Ananda Aloe Gel & Rose Distillate Hydrating Facial Mask)
ব্যবহারবিধি – ভাল করে মুখ ধুয়ে এই হাইড্রেটিং ফেসিয়াল মাস্কটি (Hydrating Facial) মুখে লাগিয়ে নিন। চোখে ও তার চারপাশে লাগাবেন না। দশ মিনিট পর ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার অন্তত ব্যবহার করুন।
সুবিধে
- চটচটে নয়
- ত্বকে একটা আলাদা জেল্লা এনে দেয়
- যেকোনোও ধরনের ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন
অসুবিধে
- বেশ দামী
৫। ডারমেলজিকা স্কিন হাইড্রেটিং মাস্ক (Dermalogica Skin Hydrating Masque)
ব্যবহারবিধি – ভাল করে মুখ ধুয়ে এই হাইড্রেটিং ফেসিয়াল মাস্কটি মুখে লাগিয়ে নিন। চোখে ও তার চারপাশে লাগাবেন না। পনের মিনিট পর উষ্ণ জলে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুবার অন্তত ব্যবহার করুন।
সুবিধে
- অতিরিক্ত তেলতেলে নয়
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিনে সমৃদ্ধ
- সুগন্ধি
অসুবিধে
- বেশ দামী
- গ্লিসারিনে অ্যালার্জি থাকলে ব্যবহার করা যাবে না
সেরা পাঁচটি হাইড্রেটিং ফেস সিরাম (Top 5 Hydrating Face Serum)
১। বায়োটিক বায়ো ড্যান্ডেলিয়ান ভিসিবলি এজলেস সিরাম (Biotique Bio Dandelion Visibly Ageless Serum)
সুবিধে
- সব ধরনের ত্বকে ব্যবহার করা যায়
- প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন
- পকেটসই
অসুবিধে
- কিছুই নেই
২। সেন্ট বোটানিকা হ্যলুরনিক অ্যাসিড ফেসিয়াল সিরাম (StBotanica Hyaluronic Acid Face Serum)
সুবিধে
- সংবেদনশীল ত্বকের জন্যও উপযোগী
- ভেগান
- সিলিকন নেই
অসুবিধে
- বেশ দামী
৩। ল্যাকমে অ্যাবসল্যুট আরগান অয়েল রেডিয়ান্স ওভারনাইট অয়েল ইন সিরাম (Lakmé Absolute Overnight Oil-in-Serum)
সুবিধে
- খুব হাল্কা ও তেলতেলে নয়
- প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য ভাল
- সব সময়ে ক্যারি করতে পারেন
অসুবিধে
- বেশ দামী
- সিলিকন রয়েছে
৪। খাদি গ্লোবাল ন্যাচারাল হ্যলুরনিক অ্যাসিড সিরাম (Khadi Global Natural Hyaluronic Acid Serum)
সুবিধে
- পকেটসই
- প্যারাবেন নেই
- সংবেদনশীল ত্বকের জন্যও উপযোগী
অসুবিধে
- কিছুই নেই
৫। প্লাম ব্রাইট ইয়ারস সেল রিলিউয়াল সিরাম (Plum Bright Years Cell Renewal Serum)
সুবিধে
- প্যারাবেন ও SLS নেই , ফলে ত্বকের জন্য ক্ষতিকর নয়
- ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখে
- ত্বকের গভীরে গিয়ে কাজ করে
অসুবিধে
- তেমন কিছুই নেই
বাড়িতেই তৈরি করে নিন হাইড্রেটিং মাস্ক ও সিরাম (Homemade Hydrating Face Mask and Serum)
ছবি সৌজন্যে: পিক্সাবে
বাজারচলতি প্রোডাক্টের উপরে যদি আপনার ভরসা না থাকে অথবা হাতে বেশ কিছুটা সময় থাকে ত্বকের পরিচর্যা করার, সেক্ষেত্রে আপনি অনায়াসে বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারেন হাইড্রেটিং ফেস মাস্ক এবং হাইড্রেটিং ফেস সিরাম। এগুলি তৈরি করা খুব এক্তা ঝক্কিরও নয় এবং ঘরোয়া টোটকা সব সময়েই ভাল হয়। জেনে নিন কিভাবে বাড়িতেই ফেসিয়াল করার জন্য তৈরি করবেন হাইড্রেটিং ফেস মাস্ক ও হাইড্রেটিং ফেস সিরাম।
ঘরোয়া হাইড্রেটিং ফেস মাস্ক (DIY Hydrating Face Mask)
- এক টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল
- এক টেবিল চামচ চন্দন গুঁড়ো অথবা বাটা
- এক টেবিল চামচ মধু
- দুই টেবিল চামচ কোড়ানো শসা
- কয়েক ফোঁটা গোলাপ জল
উপরে বলে দেওয়া সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন। মুখ পরিস্কার করে এই হাইড্রেটিং ফেস মাস্কটি মিনিট ১৫ মুখে, গলায় ও ঘাড়ে লাগিয়ে রেখে দিন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। মনে রাখবেন, ফেস ওয়াশ ব্যবহার করবেন না।
বাড়িতে তৈরি এই হাইড্রেটিং ফেস মাস্ক কেন ব্যবহার করবেন – ত্বকের যে-কোনও রকম সমস্যার সমাধানে অ্যালোভেরা ম্যাজিকের মত কাজ করে। ত্বকের দাগ –ছোপ দূর করতেই হোক আর ত্বক নমনীয় করে তুলতেই হোক। মধু ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ব্রিদ্ধিতে সাহায্য করে, অন্যদিকে শসা এবং চন্দন ত্বক গভীর থেকে পরিস্কার করে ত্বকের আর্দ্রতা বাড়াতে সাহায্য করে। কাজেই বুঝতেই পারছেন সপ্তাহে অন্তত একবার এই ঘরোয়া হাইড্রেটিং ফেস মাস্ক (Hydrating Face Mask) ব্যবহার করলে আদতে আপনিই লাভবান হবেন।
ঘরোয়া হাইড্রেটিং ফেস সিরাম (DIY Hydrating Face Serum)
- আধ কাপের সামান্য কম অ্যালোভেরা জেল
- দুই টেবিল চামচ গ্লিসারিন
- এক চা চামচ জোজোবা অয়েল
- একটি ভিটামন ই ক্যাপসুল
- আপনার পছন্দের যে-কোনও এসেনশিয়াল অয়েলের কয়েক ফোঁটা (ল্যাভেন্ডার, ক্যামোমাইল বা রোজ)
প্রথমেই একটি স্প্রে বোতল খুব ভাল করে পরিস্কার করে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। এবারে সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে বোতলে ঢেলে নিন। রোজ রাতে শোওয়ার আগে মুখ পরিস্কার করে এই ঘরোয়া হাইড্রেটিং ফেস সিরামটি মুখে স্প্রে করে মিনিট পাচেক আলতো করে মাসাজ করে নিন। প্রতিবার ব্যবহারের আগে বোতলটি ভাল করে ঝাঁকিয়ে নেবেন। বাড়িতে ফেসিয়াল করার সময়ে এই ঘরোয়া হাইড্রেটিং ফেস সিরামটি ব্যবহার করতে পারেন।
বাড়িতে তৈরি এই হাইড্রেটিং ফেস সিরাম কেন ব্যবহার করবেন – আগেই বলেছি, অ্যালোভেরা জেল ত্বকের নানা সমস্যা সমাধানে দারুন কার্যকরী। ত্বক শুষ্ক হোক বা তৈলাক্ত, ত্বকের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে ও বজায় রাখতে গ্লিসারিনও দারুন কাজে আসে। একই সঙ্গে ভিটামিন ই ত্বকে পুষ্টি যোগায় এবং জোজোবা অয়েল ত্বকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জোগান দেয়। ফলে বুঝতেই পারছেন, বাড়িতে তৈরি এই হাইড্রেটিং ফেস সিরাম আপনার ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষার জন্য কতটা উপকারী!
হাইড্রেটিং ফেসিয়াল সংক্রান্ত কিছু জরুরি প্রশ্নোত্তর (FAQs)
১। এক রাতের মধ্যে কিভাবে আমি আমার ত্বকের আর্দ্রতা বাড়াব?
এক রাতের মধ্যেই ত্বকে আর্দ্রতা বাড়ানো সম্ভব না। নিয়মিত ত্বকের পরিচর্যা করেই ত্বকের কমনীয়তা ও আর্দ্রতা বাড়িয়ে তোলা যায়। তবুও যদি হাতে সময় না থাকে অথবা আপনার উপরে আলসেমি ভর করে, সেক্ষেত্রে কোনও হাইড্রেটিং ফেস মাস্ক সারা রাত লাগিয়ে রেখে (Hydrating Facial Benefits In Bengali) নিমেষেই ত্বকের আর্দ্রতা বাড়াতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় মনে রাখবেন, নিয়মিত ত্বকের পরিচর্যা না করলে কিন্তু এই জেল্লা ও আর্দ্রতা বেশিদিন স্থায়ী হবে না।
২। ত্বক কমনীয় করে তোলার জন্য হাইড্রেটিং ফেসিয়ালই কি যথেষ্ট?
আপনি বাইরে থেকে যতই ত্বকের যত্ন নিন না কেন, ত্বক যদি ভিতরে সুস্থ না থাকে, সেক্ষেত্রে কিন্তু খুব মুশকিল। নিজের ত্বকের ধরন অনুযায়ী স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন। যদি বাড়িতে ফেসিয়াল করেন বা রূপচর্চার ক্ষেত্রে ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরন করেন, সেক্ষেত্রে এমন কোনও প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন না যা ত্বক শুষ্ক করে তোলে।
৩। হাইড্রেটিং ফেসিয়াল কিট বা প্রোডাক্ট কেনার সময়ে কী কী উপকরণ অবশ্যই দেখে নেওয়া উচিত?
আমাদের এক এক জনের ত্বকের ধরন এক এক রকমের হয়। কারও ত্বক স্বাভাবিকভাবেই তৈলাক্ত হয়, আবার কারও শুষ্ক তো কারও কম্বিনেশন ত্বক হয়। তবে আপনার ত্বক যেমনই হোক না কেন, নিয়মিত হাইড্রেট করা জরুরি। আপনি যদি বাড়িতে হাইড্রেটিং ফেসিয়াল (Hydrating Facial) করতে চান, সেক্ষেত্রে ফেসিয়াল কিট বা ফেস মাস্ক ও ফেস সিরাম কেনার সময়ে দেখে নেবেন যে আপনার কেনা প্রোডাক্টে গ্লিসারিন, সেরামাইডস, ফ্যাটি অ্যালকোহল, ল্যাকটিক অ্যাসিড – এই উপকরণগুলি যেন অবশ্যই থাকে।
৪। শুষ্ক ত্বকের প্রাথমিক লক্ষন কী?
ত্বক নিজের আর্দ্রতা হারাচ্ছে এবং ক্রমশ শুষ্ক হয়ে উঠছে, এটা বোঝার জন্য অন্য কোনও লক্ষনের প্রয়োজন নেই। যদি দেখেন ত্বকে খড়ি উঠছে অথবা র্যাশ বেরচ্ছে, কোনও কারন ছাড়াই চুলকচ্ছে, তাহলে বুঝবেন যে আপনার ত্বক শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে। সাধারনত শীতকালে এই সমস্যাগুলো দেখা যায়। অতিরিক্ত ঠান্ডায় ত্বক নিজের আর্দ্রতা হারায়।
৫। ভিতর থেকে আমি কিভাবে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখব?
শুধুমাত্র হাইড্রেটিং ফেসিয়াল (Hydrating Facial) করলে অথবা সিরাম ও মাস্ক ব্যবহার করলেই কিন্তু ত্বকের ভিতরের আর্দ্রতা বজায় থাকবে না। প্রতিদিন ছয় থেকে আট গ্লাস জল অবশ্যই খেতে হবে। এছাড়াও, ফলের রস, লিকার চা, দইয়ের ঘোল এবং লেবু জাতীয় ফল ও শাক সব্জি বেশি করে খাওয়া প্রয়োজন।