কলমকারি কাকে বলে? মহা বাজে প্রশ্ন, এটা গড়িয়াহাটের দোকানিও জানে! সে অবশ্য তারা বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সবকিছু সম্বন্ধেই জানে! কিন্তু একটু ভেবে বলুন তো, কলমকারি ব্যাপারটা সারা কলকাতায় ছেয়ে গিয়েছে কিনা? কলমকারি ব্লাউজ, কলমকারি শাড়ি, কলমকারি স্কার্ট, কলমকারি কুর্তি, সবই আমরা এনতার পরে থাকি। কিন্তু কলমকারি (Kalamkari) আসলে ভারতের কোন প্রদেশের কাজ এবং আপনি কলমকারি বলে যেটি কিনছেন, সেটি আসলে ঠিক কী বস্তু, সে সম্বন্ধে আমাদের অনেকেরই কোনও জ্ঞান নেই। তাই দোকানি যা বোঝায়, আমরা তা-ই আহ্লাদ করে কিনি এবং ভারী খুশিও হই!
কলমকারি আসলে অন্ধ্রপ্রদেশের একটি বহু প্রাচীন শিল্প। আমরা যেমন মসলিন নিয়ে গর্ব করি, বিশ্বজোড়া নাম আছে বলে বুক ফোলাই, তেলুগুভাষীরা ঠিক তেমনই কলমকারি নিয়ে আদিখ্যেতা করে। অবশ্য করাটাও উচিত। এই শিল্প এত সূক্ষ্ম এবং এত সুন্দর, যে একবার দেখলেই যে কেউ এর প্রেমে পড়তে বাধ্য। প্রাকৃতিক রং দিয়ে, সরু তুলির সাহায্যে অন্ধ্রের শিল্পীরা কাপড়ের উপর ফুটিয়ে তুলতেন রামায়ণ-মহাভারতের গল্প। আর সেই কাপড় দিয়ে তৈরি হত নানা পোশাক, ফার্নিশিংও। কলমকারি তার মানে, এই শিল্পের নাম। এই কাজ হতে পারে সুতি কিংবা সিল্কের উপর। কিন্তু এটি করতে প্রচুর সময় লাগে এবং আঁকা হয়ে যাওয়ার পর নদীর বয়ে যাওয়া জলে তা ধুয়ে রং পাকা করতে হয়। এখন কলমকারি বলে যে বাজারে যা পাওয়া যায়, তা হচ্ছে কলমকারি আঁকার ধাঁচের প্রিন্ট (Print)। দেখবেন, অনেক সময় আউটলাইন থেকে রং বাইরে বেরিয়ে যায়, সেগুলি হচ্ছে কলমকারি ব্লক প্রিন্ট। আর যেগুলো রং আউটলাইনের মধ্যেই থাকে, সেগুলি হচ্ছে মেশিন প্রিন্ট। কলমকারি এখন সকলের প্রিয়, তা সে আম আদমিই হোন বা ডিজাইনার। স্বয়ং সব্যাসাচী মুখোপাধ্যায় পর্যন্ত এই শিল্পের প্রেমে পড়েছেন তো আমি-আপনি কোন ছার! আর সবচেয়ে বড় কথা হল, এই ধরনের প্রিন্ট পরে পশ্চিমি কিংবা ভারতীয়, যে-কোনও সাজে সাজা যায়। চলুন দেখে নেওয়া যাক, কীভাবে এই ধরনের প্রিন্ট আপনি রোজকার ফ্যাশন (fashion) রুটিনে ফেলতে পারেন।
১. কলমকারি শাড়ি
এটা হচ্ছে ইদানীং কালের বাঙালি মা-মাসিমা-বোনেদের সবচেয়ে প্রথম পছন্দ। মোটামুটি ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১,০০০ টাকার মধ্যে আপনি এই ধরনের সুতির উপর কলমকারি প্রিন্টের শাড়ি (saree) পেয়ে যাবেন। বাড়িতে পরা থেকে শুরু করে, কোনও অনুষ্ঠানে সকালের দিকে পরে যাওয়া, এই ধরনের শাড়ির জবাব নেই।
এখান থেকে কিনতে পারেন এই ধরনের শাড়ি
২. কলমকারির ব্লাউজ
এটা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই! গড়িয়াহাট-হাতিবাগানের ফুটপাথ থেকে শুরু করে সব্যসাচীর ডিজাইনার স্টোর, সর্বত্র জাঁকিয়ে বসে আছে এই ধরনের ব্লাউজ। যে-কোনও একরঙা শাড়ির সঙ্গে পরে নিন। জিনসের সঙ্গে ক্রপড টপ হিসেবে পরে উপরে চাপিয়ে নিন একটা জ্যাকেট কিংবা শ্রাগ, ফ্যাশনিস্তা হিসেবে আপনার চাকরি পাকা!
এখান থেকে কিনতে পারেন এই ধরনের ব্লাউজ
৩. কলমকারির স্কার্ট
এই প্রিন্টের লং স্কার্টের মজাটাই আলাদা। উপরে পরে ফেলুন সাদা শার্ট, হাতে একগুচ্ছ নানা রংয়ের ব্য়াঙ্গল, ব্যস, ফিউশন লুক নিয়ে রেডি আপনি। কিংবা লং একরঙা কুর্তির সঙ্গে কলমকারি স্কার্টও পরতে পারেন। তাতেও একইরকম সুন্দর লাগবে। মোট কথা, এই স্কার্ট প্রিন্টেড বলে এর সঙ্গে যে-কোনও স্টাইলই করতে পারেন আপনি।
এখান থেকে কিনতে পারেন এই ধরনের স্কার্ট
৪. কলমকারি টপ কিংবা কুর্তি
ডেনিমের সঙ্গেই বলুন কিংবা স্কার্টের সঙ্গে, অথবা পাতি সালোয়ার বা পাতিয়ালা দিয়ে এই প্রিন্টেড টপ কিংবা কুর্তির কম্বিনেশন কিন্তু দারুণ লাগে! আপনি রোগাই হোন বা মোটা, এই প্রিন্টের পোশাক পরলে কখনও বেমানান লাগবে না।
এখান থেকে কিনতে পারেন এই ধরনের কুর্তি ও টপ
৫. কলমকারি দোপাট্টা কিংবা স্কার্ফ
সাধারণ সালোয়ার-কামিজকে এক নিমেষে অসাধারণ করে তুলতে এই প্রিন্টের দোপাট্টার জুড়ি মেলা ভার। সুতির কিংবা সিল্কের কলমকারি দোপাট্টার মজা ও আভিজাত্যই আলাদা। আর যদি পশ্চিমি পোশাকের সঙ্গে গলায় জড়িয়ে নেন এই প্রিন্টের স্কার্ফ, ভিড়ে আপনি নজর টানবেনই।
এখান থেকে কিনতে পারেন এই ধরনের দোপাট্টা ও স্কার্ফ
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!