আমরা অনেকেই সাজগোজ করার সময়ে চুলের উপরেও নানা এক্সপেরিমেন্ট করি। কখনও চুলে রং করি, আবার কখনও বা চুল পারমানেন্ট স্ট্রেট করিয়ে নিই আবার অনেক সময় শুধু স্মুদনিং করাই। আসলে এই ধরনের ট্রিটমেন্ট করলে চুল বেশ সিল্কি লাগে দেখতে। এই রিবন্ডিং (rebonding) করানোর অর্থ হল চুলে নানারকমের রাসায়নিক প্রয়োগ করে চুলের টেক্সচার বদলে ফেলা। কিন্তু এত রাসায়নিক প্রয়োগের ফলে চুলের বেশ ভালমতো ক্ষতি হয়। ফলে কিছুদিন পরেই চুল রুক্ষ ও ফ্রিজি হয়ে পড়ে এবং চুল ঝরতে শুরু করে। তবে, রিবন্ডিং করানোর পর যদি কয়েকটি নিয়ম (hair care) মেনে চলা যায় তাহলে চুলের ক্ষতি অনেকটাই আটকানো সম্ভব।
জেনে নিন, রিবন্ডিং করানোর পর কিভাবে চুলের যত্ন নেবেন
১। চুল রিবন্ডিং করানোর পর আপনাকে পার্লার থেকেই কিছু প্রোডাক্ট দিয়ে দেওয়া হয় যেগুলো এ’ধরনের ট্রিটমেন্ট করা চুলের জন্যই ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু মিনে রাখবেন, শ্যাম্পু করার আগে চুলে ভাল করে তেল মাখা খুব জরুরি। নারকেল তেল সামান্য গরম করে চুলের গোড়ায় ভাল করে মাসাজ করুন। এরপর ভাল করে মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে নিন। উষ্ণ জলে তোয়ালে ভিজিয়ে নিংড়ে নিয়ে তা দিয়ে মিনিট কুড়ি চুল জড়িয়ে রেখে তারপরে শ্যাম্পু করুন।
২। যদি আপনাকে পার্লার থেকে কোনও শ্যাম্পু না দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে আপনি নিজেই কিনে নিন আপনার চুলের উপযোগী শ্যাম্পু। সাধারণ চুলে যেরকম শ্যাম্পু আপনি ব্যবহার করতে পারেন, রিবন্ডিং করা চুলে কিন্তু সেই শ্যাম্পু একেবারেই করা যাবে না। শ্যাম্পু করার আগে ভাল করে স্ক্যাল্প ও চুল ভিজিয়ে নিন। স্ক্যাল্পে সরাসরি শ্যাম্পু ঢালবেন না। একটা মগে অল্প জল নিয়ে শ্যাম্পু গুলে নিন এবং শ্যাম্পু মেশানো জল অল্প অল্প করে মাথায় ঢালুন। আলতোভাবে স্ক্যাল্প মাসাজ করুন। শ্যাম্পুর ফেনা চুলের ডগা পর্যন্ত নিয়ে আসুন। ভুল করেও কিন্তু চুল ঘষবেন না হাত দিয়ে, এতে স্প্লিটএন্ডসের আশঙ্কা থাকে। সম্ভব হলে সপ্তাহে দুই-তিন দিন শ্যাম্পু করুন।
৩। সপ্তাহে একদিন হেয়ার প্যাক লাগাতে পারেন। একটি ডিম, এক চা চামচ করে ক্যাস্টর অয়েল বা নারকেল তেল, মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে হেয়ার প্যাক তৈরি করে নিন। চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত লাগিয়ে এক ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে নিন। যদি এসব কিছুই করতে ইচ্ছে না করে সেক্ষেত্রে অবশ্য আপনি বাজারচলতি কোনও হেয়ারপ্যাক যা রিবন্ডিং করা চুলের জন্য উপযোগী, তা কিনেও ব্যবহার করতে পারেন।
৪। রিবন্ডিং করানোর কিছুদিন পর যদি চুল রুক্ষ হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে স্নানের সময়ে দু’লিটার জলে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে সেই জল দিয়ে চুল ধুতে পারেন। তবে এটি রোজ করবেন না। আপনার রিবন্ডিং করানো চুলে যদি রং না করানো থাকে সেক্ষেত্রে চায়ের লিকার ঠান্ডা করে সপ্তাহে একবার করে তা দিয়ে চুল ধুতে পারেন। এতে চুল বেশ মোলায়েম ও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
৫। রিবন্ডিং করা চুলে কিন্তু কখনও গরম জল দেওয়া যাবে না। কাজেই যতবার চুল ধোবেন, ঠান্ডা জলেই ধুতে হবে।
৬। নিয়মিত চুল ট্রিম করাতে ভুলবেন না। এছাড়াও রিবন্ডিং করানোর পর অন্তত এক বছর চুলে অন্য কোনও রাসায়নিক ট্রিটমেন্ট করাবেন না।