ভেবে দেখতে গেলে, ব্যাপারটা কিন্তু বেশ মজার এবং একইসঙ্গে ইন্টারেস্টিং! বিজ্ঞানীরা বলেন, কোনও মানুষকে সঠিকভাবে চেনার জন্য নাকি হাতের লেখার (handwriting) অ্যানালিসিসই (analysis) যথেষ্ট! বিজ্ঞানসম্মত ভাষায় একে বলে গ্রাফোলজি (graphology)। এই বিজ্ঞানের সাহায্যে নাকি কোনও ব্যক্তির হাতের লেখা খুঁটিয়ে দেখে বলে দিতে পারা যায় তাঁর সম্পর্কে অনেক কিছুই। অন্তত তিনি মানুষটি কেমন, সে সম্বন্ধে তো ধারণা দেওয়া যেতেই পারে। তাই আপনিও আপনার পছন্দের মানুষটির অনেক স্বভাব বা বৈশিষ্ট্যই জেনে নিতে পারেন তাঁর হাতের লেখা দেখে!
আসলে আমরা যখন কোনও কিছু লিখি, তখন আমাদের মস্তিষ্কের কোষগুলি সচল হয়ে ওঠে। তাই আমাদের হাতের লেখা হল আসলে আমাদের মস্তিষ্কের লেখা! মানে, আমরা যা ভাবছি, সেটাই লিখছি। তাই আমাদের লেখার ধরন, অক্ষর আঁকার কায়দা, কমা-দাঁড়ি-ফুলস্টপ দেওয়ার ভঙ্গি, সবকিছু একসঙ্গে মিলিয়েই নাকি ফুটে ওঠে আমাদের চরিত্র। মানে, আমি মানুষটা ঠিক কেমন, আমি কী ভাবি, কী করি, সবকিছুর কার্যকারণ সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যাবে আমাদের হাতে লেখা দেখলেই! আমরা সকলে এই বিজ্ঞান সম্বন্ধে জানি না, তাই হাতের লেখা দেখে মানুষকে চিনে নিতেও পারি না। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছি আমরা।
হাতের লেখা দেখে চিনে নিন আপনার পার্টনারকে
এটা করার জন্য প্রথমেই আপনাকে ভারী ন্যাকা-ন্যাকা সেজে মনের মানুষটিকে বলতে হবে বেশ কয়েকটা চিঠি লিখতে আপনাকে! কারণ, নইলে তাঁর হাতের লেখার নমুনা পাবেন কোত্থেকে! আজকাল এই এসএমএস আর হোয়্যাটসঅ্যাপের যুগে চিঠি লেখার পাট প্রায় চুকেই গিয়েছে! তাই ন্যাকা সেজে না বললে একটাও চিঠি আপনার ভাগ্যে জুটবে না আর আপনারও আমাদের বলে দেওয়া টিপস অনুসারে তাঁকে চিনে নেওয়া হবে না! নমুনা পেলে তা কীভাবে খুঁটিয়ে দেখবেন এবং তা থেকে কী-কী বুঝবেন, বলে দেওয়া হল এখানে…
১. অক্ষরগুলি বড়-বড় নাকি ছোট-ছোট: যাঁদের হাতের লেখার ধরন বড়, মানে, যাঁদের লেখা অক্ষরগুলো বেশ গোটা-গোটা, তাঁরা সাধারণতই বেশ খোলামেলা, দিলদরিয়া গোছের হন। এঁরা মনের ভাব লুকিয়ে রাখেন না, স্পষ্ট কথা স্পষ্ট করে বলতে ভালবাসেন! ফলে এঁদের মনের ভাব বুঝে নেওয়াটা মোটেও সমস্যার হয় না। এমন মানুষের সঙ্গে সময় কাটানো এবং সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া বেশ সহজ! এঁরা নিজেরা সাধাসিধে এবং দুনিয়াটাকেও সোজাসুজি দেখতেই ভালবাসেন। প্রেমিকার প্রতি ভালবাসা খোলাখুলি জানাতে পছন্দ করেন এবং তাঁকে উপহার-আহ্লাদে ভরিয়ে রাখতেও পছন্দ করেন। আর যাঁদের হাতের লেখা ছোট এবং একটু জড়ানো? এঁরা ভাই অল্প কথার মানুষ! এঁরা কোনও জিনিস নিয়ে আদিখ্যেতা পছন্দ করেন না এবং অন্যরা আদিখ্যেতা করলেও ভারী রেগে যান। তাই এমন মানুষ আপনার পছন্দের হলে সাবধান! একটু বুঝেশুনে এঁদের মোকাবিলা করতে হবে। এঁরা জন্মদিনে উইশ করবেন না, অ্যানিভার্সারিতে অফিসে যাবেন গটমটিয়ে এবং কোনদিন আপনাদের প্রথম দেখা হয়েছিল, তা জিজ্ঞেস করলে ভারী বিরক্ত হবেন!
২. লেখার প্রেশার জোরে নাকি হালকা: চিঠির কাগজটা একটু উল্টে দেখুন তো! হাতের লেখার চাপ কি কাগজের পিছনেও ফুটে উঠেছে? তা হলে ভাই আপনার প্রেমিরপ্রবরটি ভারী প্যাশনেট এবং ইমোশনাল। যে কাজই তিনি করেন, তা প্রাণ ঢেলে করেন! তা সে বাজার থেকে ইলিশ মাছ কেনাই হোক কিংবা আপনার প্রতি ভালবাসা ব্যক্ত করা! তবে প্যাশন বেশি হয়ে গেলে সেটা গোঁয়ার্তুমি হয়ে যায় কিনা, তখন হয় বিপদ! এঁরা রাম বললে আপনি কিছুতেই শ্যাম বলতে পারবেন না। এঁদের পছন্দেই আপনাকে তাল দিয়ে যেতে হবে! এঁরা আপনাকে ভারী যত্ন করে শীতকালে দার্জিলিং বেড়াতে নিয়ে যাবেন। কিন্তু আপনি তখন পুরী যেতে চাইলে কিছুতেই নিয়ে যাবেন না! আর যদি লেখার কোনও ছাপই আপনি কাগজের উল্টো দিকে দেখতে না পান? তা হলে জানবেন আপনি এক্কেবারে মাটির মানুষটিকে খুঁজে পেয়েছেন! এঁরা অত্যন্ত সমঝদার এবং যে-কোনও পরিস্থিতিতে মানিয়ে চলতে ওস্তাদ! আপনার তালে সারা জীবন এমন তাল মেলাবেন যে অনেক ক্ষেত্রে আপনারও বিরক্ত লাগতে পারে! কী রে বাবা, মাঝে-সাঝে একটু ঝগড়া, একটু মান-অভিমান না হলে জমে! নাঃ, এঁদের সঙ্গে সেসব হবে না। এঁরা পাক্কা তবলচির মতো সঙ্গতই করে যাবেন, কিছুতেই নিজের খেল দেখাবেন না!
৩. হাতের লেখা প্যাঁচালো নাকি পরিষ্কার: যদি আপনার মনের মানুষের হাতের লেখা আপনি কিচ্ছুটি বুঝতে না পারেন, তা হলে তাঁর মনের তলও কোনওদিন পাবেন না! কারণ, সে কিছুতেই মনের কথা সোজাসুজি বলবে না, লুকিয়েচুরিয়ে, বেঁকিয়ে-টেরিয়ে বোঝাবে। আপনি তা বুঝতে পারলে বুঝুন, না বুঝলে নিজেই কষ্ট পান! তার কিচ্ছুটি যায়-আসে না তাতে! আর যদি তাঁর হাতের লেখা একেবারে ছোটদের মতো কাটা-কাটা হয়? তা হলে আপনার চেয়ে সৌভাগ্যবতী কেউ নেই! কারণ, আপনার পার্টনারের সাদা মনে কোনও কাদা কোনওদিন ছিল না, এখনও নেই এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না! আপনার শিবপুজোর জোর আছে, তাই এঁকে খুঁজে পেয়েছেন!
মাথায় রাখুন এই ব্যাপারগুলিও
১. যাঁরা ইংরেজিতে t অক্ষরের মাত্রা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বড় করে টানেন, তাঁরা নাকি বেশি রাগী হন!
২. যাঁরা মোটা করে t কিংবা d লেখেন, তাঁরা নাকি একেবারেই সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না!
৩. যাঁদের হাতের লেখা কোনও লেখার শুরুতে একরকম আর শেষে গিয়ে অন্যরকম হয়ে যায়, তাঁদের কথার কোনও ঠিক থাকে না!
৪. অক্ষরের মধ্যে লুপ বেশি হলে, মানে টেনে-টেনে একটা অক্ষর থেকে অন্য অক্ষরে যান যাঁরা, তাঁরা নাকি মিথ্যে কথা বলেন কথায়-কথায়!
৫. ছোট হাতের i কিংবা j-র ডট যদি একদম পরিষ্কার হয়, তা হলে সেই মানুষটির সব সময় যে-কোনও সম্পর্কে একশো শতাংশ নৈতিক থাকেন! আর যদি ডটটি পরিষ্কার না হয়, তা হলে বিপদ!
বিধিসম্মত সতর্কীকরণ: মনে রাখবেন, এই হাতের লেখার নমুনা কিন্তু ইংরেজিতেই হওয়া চাই! কারণ, গ্রাফোলজি এখনও পর্যন্ত শুধু ইংরেজি ভাষারই জট খুলেছে। হাতের লেখা গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটাই কিন্তু মানুষ চেনার শেষ কথা নয়। কাজেই, হাতের লেখা ও সোজাসুজি স্বভাব, দুয়ে মিলেই চিনে নিন তাঁকে! তা ছাড়া তিনি কোন পরিস্থিতিতে এই নোটগুলি লিখেছেন, তা-ও গুরুত্বপূর্ণ! মানে, সময় নিয়ে, ধীরে-সুস্থে লিখলে হাতের লেখা একরকম হবে আবার তাড়াহুড়োতে লিখলে অন্যরকম। তাই সেই অনুযায়ী অ্যানালিসিসও পাল্টাবে!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!