সভ্যতার শুরু থেকে মানুষের সঙ্গে যে ফলটির সম্পর্ক তা হল আপেল (apple) । আপনি আদম আর ইভের গল্প তো নিশ্চয়ই জানেন। আপেলে কামড় বসিয়ে তো সম্পর্কের শুরু। শুরু মনুষ্য জাতির। অন্তত ইতিহাস তো তেমন কথাই বলে। এমন একটি ফলকে অযথা হেলাফেলা করা চলে না। বড় যত্নে রাখতে হয়। তাই তো? টুকটুকে লাল হোক বা হালকা হলুদ, কখনও গায়ে লেগে থাকে সবুজের আভা। যেমনই হোক না কেন, আপেল শরীরের (Health) উপকারে লাগে।
আপেল রোসাসি (পরিবারের ম্যালিয়াস ডমেস্টিকা প্রজাতিভুক্ত। আপেল মূলত তার মিষ্টি স্বাদের জন্য জনপ্রিয়। সারা পৃথিবীব্যাপী আপেলের চাষ হয়ে থাকে। সবচেয়ে বেশি চাষ হয় জেনাস ম্যলুস প্রজাতির আপেল। মধ্য এশিয়াকে আপেলের উৎপত্তিস্থল মনে করা হয়। যেখানে এখনও তার পূর্বতন বুনো প্রজাতি ম্যলুস সিভেরসিকে দেখতে পাওয়া যায়। হাজার হাজার বছর ধরে এশিয়া এবং ইউরোপ জুড়ে আপেলের চাষ হয়ে আসছে এবং ইউরোপীয় বসতি স্থাপনকারীদের মাধ্যমে লাতিন আমেরিকায় এর পদার্পণ হয়। অনেক সংস্কৃতিতে আপেলের ধর্মীয় এবং পৌরাণিক তাৎপর্য আছে, এদের মধ্যে নর্স, গ্রীক এবং ইউরোপীয়ান খ্রিস্টীয় ঐতিহ্য অন্যতম। সাধারণত আপেলের জাতগুলি মূলের কলমের মাধ্যমে তৈরি করা হয়, যা ফলস্বরূপ গাছের আকার নিয়ন্ত্রণ করে। আপেলের প্রায় ৭৫০০ টির বেশি পরিচিত জাত রয়েছে। মনে করা হয়, যে সমস্ত উদ্ভিদ সর্বপ্রথম চাষের আওতায় আসে, আপেল তাদের মধ্যে অন্যতম এবং হাজার বছর ধরে নির্বাচনের মাধ্যমে এর মান উন্নত হয়ে আসছে । ধরা হয় আলেকজাণ্ডার দি গ্রেট সর্বপ্রথম ৩২৮ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে কাজাখস্তানে খাটো প্রজাতির আপেল খুঁজে পান যেসব তিনি মেসিডোনিয়াতে নিয়ে যান।
আপেল গাছ ৫-১২ মিটার দীর্ঘ এবং চওড়া ও শাখা প্রশাখা যুক্ত শীর্ষভাগ বিশিষ্ট বৃক্ষ। আপেল ফল হেমন্ত কালে পাকে এবং ৫-৮ সেমি ব্যাসের হয়ে থাকে। আপেল সম্পর্কে একটা প্রবাদ আছে যে দিনে একটি আপেল খান, রোগ মুক্ত জীবন পান। লাল আপেলের চেয়ে সবুজ আপেলের গুণ বেশি। সবুজ আপেল লাল আপেলের মতো তেমন স্বাদযুক্ত না হলেও এই আপেলের রয়েছে অনেক উপকারিতা।
আপেলের মধ্যে কোন কোন পুষ্টিগুণ রয়েছে (Nutrition)
আপেলকে নিউট্রিশন বা পুষ্টিগুণের পাওয়ার হাউজ বলা হয় এক কথায়। অর্থাৎ আপেলের মধ্য ভরপুর উপকার রয়েছে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক আপেলের মধ্যে কী কী উপাদান রয়েছে।
- আপেলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। এর মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরের যে কোনও রকম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- আপেলের মধ্যে রয়েছে বি কমপ্লেক্স ভিটামিন। এই ভিটামিনের কাজ হল শরীরে লোহিত রক্ত কণিকা সৃষ্টি করা। শরীরের নার্ভের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এই ভিটামিন। সব মিলিয়ে শরীর ভাল রাখতে সাহায্য করে।
- আপেলের মধ্যে রয়েছে ডায়েটরি ফাইবার। রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা কমানো এর কাজ।
- আপেলের মধ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়াম।
- আপেলে রয়েছে প্রচুর মিনারেল বা জল। অর্থাৎ প্রতিদিন একটা করে আপেল খাওয়ার অর্থ আপনার শরীরে জলের ঘাটতি কিছুটা হলেও পূরণ।
- এ ছাড়াও আপেলের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণে রয়েছে ফ্যাট, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন ই, ফসফরাস, ভিটামিন বি সিক্স, ভিটামিন কে, আয়রন, সোডিয়াম, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেটের মতো প্রয়োজনীয় উপাদান। যা সর্বোপরি আপনার শরীর ভাল রাখতে সাহায্য করবে।
আপেলের গুণাগুণ (Benefits)
আপেল একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ফল। শরীর ভাল রাখতে প্রতিদিন একটা করে আপেল খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। বেশিরভাগ সমস্যায় আপেল খুব উপকারি। আবার ধরুন আপনি ডায়াবেটিসের রোগী। ভাবছেন, আপেল তো মিষ্টি ফল। আপনার খাওয়া বারণ। ভুল ভাবছেন। ডায়াবেটিস থাকলেও আপনি আপেল খেতে পারবেন। এমন আর কোন কোন শারীরিক সমস্যার সমাধানে আপেল ম্যাজিকের মতো কাজ করে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।
১) ওজন কমায় (Good for Weight Loss )
আপেলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আর জল থাকে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে লাঞ্চের আগে একটা গোটা আপেল খেলে পেট অনেক ভর্তি লাগে। আপেলের জুস খেলে কিন্তু এটা হবে না। আবার দিনের প্রথম খাওয়াটাও আপেল দিয়ে শুরু করতে পারেন। তাতেও ঢের উপকার। প্রায় ৫০ জন ওভারওয়েট মহিলার ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গিয়েছে আপেল খেয়ে ১০ সপ্তাহে ১ কেজির বেশি ওজন কমেছে। একই ক্যালোরি এবং ফাইবার যুক্ত অন্য খাবার খেয়ে যা হয়নি।
২) হার্টের জন্য ভাল (Good for Your Heart)
আপেল খেলে হার্টের অসুখের সম্ভাবনা কমে। আপেলের মধ্যে যে ফাইবার থাকে তা রক্তে কোলোস্টরলের মাত্রা কমায়। ব্লাড প্রেশার কমে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পরিমাণ মতো আপেল খেলে ২০ শতাংশ স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমে। ২৫ গ্রাম আপেল অর্থাৎ চার থেকে পাঁচ টুকরো আপেল প্রতিদিন খেলে ৯ শতাংশ স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমে।
৩) ডায়াবেটিসের আশঙ্কা কমায় (Lower Risk of Diabetes)
প্রতিদিন একটা করে আপেল খেলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা ২৮ শতাংশ কমে যায়। প্যানক্রিয়াসের বিটা সেলের টিস্যুর ক্ষতি রুখতে পারে আপেল। ফলে প্রতিদিন না পারলেও সপ্তাহে অন্তত পাঁচটি আপেল খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ।
৪) ভাল ব্যাকটেরিয়াকে প্রোমোট করে (Promote Good Gut Bacteria)
আপেলের মধ্যে পেকটিন নামের একটি ফাইবার আছে। যা প্রিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ দেহে ভাল ব্যাকটেরিয়ার জন্ম দেয়। এছাড়াও বেশ কিছু এমন কম্পাউন্ড তৈরি করে যা সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সে কারণেই আপেল ওবেসিটি, টাইপ টু ডায়াবেটিস এবং হার্টের সমস্যা থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে।
৫) ক্যানসার প্রতিরোধ করে (Prevent Cancer)
বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে আপেলের মধ্যে যেসব উপাদান থাকে তা ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বিজ্ঞানীদের একটা বড় অংশের মতে আপেলের মধ্যে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি অনফ্ল্যামেটরির প্রভাবে ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।
৬) অ্যাজমার সঙ্গে লড়াইয়ের শক্তি জোগায় (Can Help Fight Asthma)
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর আপেল লাঙ্গসকে ওক্সিডেটিভ ড্যামেজের হাত থেকে রক্ষা করে। প্রায় ৬৮ হাজার মহিলার ওপর গবেষণা করে দেখা গিয়েছে, যাঁরা আপেল খান তাঁদের অ্যাজমা হওয়ার সম্ভাবনা কমে গিয়েছে। প্রতিদিন পরিমাণ মতো আপেল খেলে অ্যাজমার আশঙ্কা ১০ শতাংশ কমতে থাকে। রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাও বাড়ায় আপেল।
৭) হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি (Good for Bone Health)
যে কোনও ফলই হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে। আপেলের মধ্যে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি অনফ্ল্যামেটরি হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে। চিকিৎসকদের মধ্যে দিনের কোনও একটা খাবারের সঙ্গে একটা করে আপেল খাওয়াটা বাধ্যতামূলক।
৮) পেটের সমস্য়া রোধ করে (Protect Against Stomach Injury From NSAIDs)
অনেক সময়ই আমরা বাধ্য হয়ে পেনকিলার খাই। কখনও বা চিকিৎসকরাই পেনকিলার খাওয়ার পরামর্শ দেন। দুই ক্ষেত্রেই লিভারে প্রভাব ফেলে। অর্থাৎ ক্ষতি হয়। ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, পেনকিলারের ফলে পেটের যে সমস্যা হয় তা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে আপেল। এই ফলের মধ্যে থাকা কোসোরোজেনিক অ্যাসিড এই কাজে সাহায্য করে। তবে মানুষের ওপর এই পরীক্ষা এখনও পর্যন্ত করা হয়নি।
৯) ব্রেনকে সুরক্ষিত রাখে (Protect Your Brain)
আপেলের ওপর প্রচুর গবেষণা করেছেন বিজ্ঞানীর। আপেলের রস করে খেলেও উপকার পাওয়া যায়। কিন্তু গোটা আপেল কেটে চিবিয়ে খেলে নাকি উপকার বেশি। জীব-জন্তুদের ওপর পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে আপেলের জুস ব্রেনের টিস্যুর ক্ষতিকারক রিঅ্যাক্টিভ অক্সিজেন স্পেসিস এর মাত্রা কমায়। অ্যালঝাইমারের রোগীদের জন্য আপেল খুব উপকারি। আর এই রোগের উৎস ব্রেন, তা অনেকেই জানেন। ইঁদুরের ওপর গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, আপেল স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে।
১০) ব্যাড কোলোস্টোরলের মাত্রা কমায় (Lowering levels of bad cholesterol)
ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় আপেলকে মিরাক্যাল ফ্রুট হিসেবে ব্যখ্যা করা হয়েছে। সেই গবেষণায় দেখা গিয়েছে বয়স্ক মহিলারা যাঁরা প্রতিদিন পরিমাণ মতো আপেল খান, তাঁদের ২৩ শতাংশ ব্যাড কোলেস্টরেল কমে। আর এই ফল হাতেনাতে পাওয়া গিয়েছে মাত্র ছয় মাসেই।
১১) স্ট্রোকের আশঙ্কা কমায় (Reducing your risk of stroke)
প্রায় নয় হাজার পুরুষ এবং মহিলার ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, যাঁরা প্রতিদিন অন্তত একটি করে আপেল খান, তাঁদের স্ট্রোকের আশঙ্কা অনেক কম। ওই একই পরিমাণ ক্যালোরি যুক্ত অন্য খাবারে কিন্তু এই সুফল পাওয়া যায় না।
১২) ওবেসিটি (Obesity)
আপনি কি মোটা হয়ে যাচ্ছেন? আপনি না হলেও আপনার পরিবার বা বন্ধুদের মধ্যে এই সমস্যায় ভুগছেন, এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তাঁরা বিভিন্ন ভাবে রোগা হওয়ার চেষ্টা করেন নিশ্চয়ই। আপনি সহজ উপায় বাতলে দিন। প্রতিদিন একটা করে আপেল খাওয়ার পরামর্শ দিন। ওবেসিটি কমতে বাধ্য। ২০১৪ সালে ফুড কেমিস্ট্রি জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে মোট সাত রকমের আপেল তৈরি হয়। আর এই সব কটি দেহে গুড ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে। যা ওবেসিটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
আপেল খাওয়ার ঝুঁকি (Risks)
আপেল খাওয়ার কী কী ঝুঁকি রয়েছে, এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।
- আপেলের বড় কোনও ঝুঁকি নেই, প্রথমেই বলে রাখা ভাল।
- আপেলের বীজে সমস্যা হতে পারে। আপেলের বীজ থেকে বিষ তৈরি হয়। ফলে বেশি পরিমাণ আপেলের বীজ খেলে তা ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
- আপেল অ্যাসিডিক ফুড। আপেল খেলে অনেকের অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়।
আপেল নিয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্নোত্তর দেখে নেওয়া যাক (Q/A)
আপেল নিয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব আমরা।
১) আপেলের কি খোসা ছাড়িয়ে খাওয়া উচিত?
আপেল খোসা সমেত খাবেন, নাকি ছাড়িয়ে খাবেন, তা নিয়ে অনেকের মধ্যে অনেক কনফিউশন থাকে। তবে বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে আপেলের মধ্যে যে সমস্ত ভাল গুণ রয়েছে, তার বেশিরভাগটাই রয়েছে খোসায়। ফলে খোসা না ছাড়িয়ে ভাল করে ধুয়ে স্লাইস করে কেটে বা গোটা ফলটাই কামড়েও খেতে পারেন।
২) টাইপ টু ডায়াবেটিস থাকলে কি আপেল খাওয়া যায়?
আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের বিজ্ঞানীরা একাধিকবার বিভিন্ন জায়গায় বলেছেন, আপেল পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এমন একটি ফল যা টাইপ টু ডায়াবেটিস থাকলেও আপনি অনায়াসে খেতে পারবেন।
৩) ওবিসিটিতে কি আপেল খাওয়া উচিত?
আপনার অথবা আপনার কোনও পরিচিতর ওবিসিটির সমস্যা থাকলে তাকে আজ থেকেই প্রতিদিন একটা করে আপেল খাওয়ার পরামর্শ দিন। কারণ আপেলে ফ্যাট বাড়ে, অনেকের এই ভুল ধারণা রয়েছে। আসলে আপেল ওবিসিটি কমাতে সাহায্য করে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এসে গেল #POPxoEverydayBeauty – POPxo-র স্কিন, বাথ, বডি এবং হেয়ার প্রোডাক্টস নিয়ে, যা ব্যবহার করা ১০০% সহজ, ব্যবহার করতে মজাও লাগবে আবার উপকারও পাবেন! এই নতুন লঞ্চ সেলিব্রেট করতে প্রি অর্ডারের উপর এখন পাবেন ২৫% ছাড়ও। সুতরাং দেরি না করে শিগগিরই ক্লিক করুন POPxo.com/beautyshop-এ এবার আপনার রোজকার বিউটি রুটিন POP আপ করুন এক ধাক্কায়..