কথায় বলে এক বালতি দুধে এক ফোঁটা কালি দিলে পুরো দুধটাই কালো হয়ে যায়! আর এই ব্ল্যাকহেডস (blackheads) আর হোয়াইটহেডসও (whiteheads) হচ্ছে ঠিক তাই। সুন্দর মেকআপ, দারুণ পোশাক আর দুর্দান্ত হেয়ারস্টাইলে যেন একটা ছোট্ট, কিন্তু স্পষ্ট দাগের মতো! তবে তা বলে তো আর চুপচাপ গালে হাতে দিয়ে বসে থাকা যায় না। নিশ্চয়ই এর হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনও না-কোনও উপায় আছে। আলবাত আছে। তবে সেটা বাজারচলতি রাসায়নিক-যুক্ত কোনও প্রোডাক্টের সাহায্যে নয়। এ হচ্ছে একদম ঘরোয়া পদ্ধতিতে (home remedies) ও প্রাকৃতিক উপাদানের সাহায্যে ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস থেকে মুক্তি। আসুন, দেখে নিই কীভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ব্ল্যাকহেডস আর হোয়াইটহেডস দূর করা যায়।
ব্ল্যাকহেডস আর হোয়াইটহেডস আসলে কী?
যখন ত্বকের রোমকূপ বা হেয়ার ফলিকল কোনও কারণে বন্ধ হয়ে যায়, তখনই এই ব্ল্যাকহেডস আর হোয়াইটহেডস দেখা যায়। সাধারণত ত্বকের উপরিভাগ বা এপিডারমিসে যখন কেরাটিনের সঙ্গে টেল মিশ্রিত হয়ে যায় তখনই ফলিকল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর তখনই মুখে ছোট-ছোট পিম্পল বা ব্রণ দেখা দেয়। যে ব্রণর মুখ উন্মুক্ত থাকে, তাকে ব্ল্যাকহেডস আর যে ব্রণর মুখ বন্ধ থাকে তাকে হোয়াইটহেডস বলে। দুটোই একই প্রকৃতির, তবে রঙ আলাদা।
আরো পড়ুনঃ পিম্পল দূর হবে আয়ুর্বেদিক উপায়ে
ব্ল্যাকহেডস আর হোয়াইটহেডস থেকে মুক্তি পাওয়ার ঘরোয়া উপায়
কাঁচা দুধ
দুধে আছে এনজাইম, ভিটামিন ও খনিজ। দুধ ব্ল্যাকহেডস আর হোয়াইটহেডস দূর করে, ত্বকে কোলাজেন বৃদ্ধি করে বলিরেখাও কম করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন
দুই টেবিল চামচ দুধের সঙ্গে এক টেবিল চামচ লেবুর রস ও সামান্য সামুদ্রিক লবণ মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি হালকা করে মুখে লাগান। নুন যেন একটু দানা-দানা হয়। একটু পরে ধুয়ে ফেলুন।
বেকিং সোডা
রান্নাঘরেই পেয়ে যাবেন এই এক্সফোলিয়েটর। ব্ল্যাকহেডস আর হোয়াইটহেডস দূর করতে এবং ত্বকের পিএইচ সমতা বজায় রাখতে এর জুড়ি নেই।
কীভাবে ব্যবহার করবেন
এক চামচ বেকিং সোডা জলের সঙ্গে মিশিয়ে একটা কাদা-কাদা মিশ্রণ তৈরি করুন। এই প্রলেপটি মুখে লাগান আর একটু পরে ধুয়ে ফেলুন।
অ্যাপল সাইডার ভিনিগার
এটি একটি প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক ও অ্যাসট্রিনজেন্ট। যে-কোনও রকমের ছত্রাকের (Fungi) আক্রমণ রোধ করতে পারে এটি। তা ছাড়া ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস এবং অন্য দাগছোপও দূর করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন
স্নানের জলে সামান্য মিশিয়ে নিতে পারেন। অথবা এক চা-চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনিগার এক কাপ জলে মিশিয়ে সেটা তুলোয় ডুবিয়ে মুখে লাগান। এটি ত্বকের গভীরে প্রবেশ করলে ওপেন পোর্সের সমস্যা অনেকটাই দূর হবে।
ডিমের সাদা অংশ
ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ রোধ করে এগ হোয়াইট। বাইরের ধুলো-ময়লা থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রেখে ব্ল্যাকহেডস আর হোয়াইটহেডস হওয়ার প্রবণতাও কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে এর মধ্যে উপস্থিত থাকা অ্যালবুমিন ব্ল্যাকহেডসের জন্য খুব ভালো।
কীভাবে ব্যবহার করবেন
ডিমের সাদা অংশ ভাল করে এক চা চামচ মধুর সঙ্গে ফেটিয়ে নিন। ব্ল্যাকহেডস আর হোয়াইটহেডস যেখানে হয়েছে, সেখানে লাগান (পুরো মুখেও লাগাতে পারেন), খানিকক্ষণ পরে ঈষদুষ্ণ গরম জলে ধুয়ে ফেলুন।
দারচিনি আর লেবুর রস
লেবুর রস একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। ব্ল্যাকহেডস আর হোয়াইটহেডস দূর করতে সক্ষম লেবুর রস। আর দারচিনি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে ত্বক উজ্জ্বল ও নরম করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন
দুই টেবিল চামচ লেবুর রস আর দারচিনির পাউডার একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। প্রথমে গরম জলে মুখ ধুয়ে নিন যাতে ত্বকের ছিদ্র খুলে যায়। মুখে লাগিয়ে নিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। যেহেতু এখানে দুটো ভিন্ন উপাদান মেশানো হচ্ছে, সেহেতু মুখে লাগাবার আগে একবার প্যাচ টেস্ট করে নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
আরও পড়ুন ঋতুস্রাবের সময় পেট ও কোমর ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!