স্প্লিট-এন্ড্স অর্থাৎ দু’মুখ চুলের সমস্যা (Split ends) মোটামুটি আমাদের সবারই কখনো না কখনো দেখা দিয়েছে এবং তার থেকে রেহাই পাবার না জানি কতরকমের চেষ্টা আমরা করেছি. কিন্তু আবার সেই সমস্যা কিছুদিন পর ফিরে এসেছে. বিশেষজ্ঞদের মতে, চুল বাড়ার সাথে সাথে স্প্লিট-এন্ড্স (Split ends) হতেই থাকে, কিন্তু আমরা নিত্য-নতুন নানারকম স্টাইলিং, কালার এবং কেমিকাল ট্রিটমেন্ট করে চুলকে বেশি ড্যামেজ করি এবং ফলে স্প্লিট-এন্ড্সের সমস্যা সময়ের অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যায়. চুলের কিউটিকল নষ্ট হয়ে গেলে স্প্লিট-এন্ড্স দেখা যায়. দূষণ, ধুলো, ধোঁয়া এবং অযত্ন – এই সমস্যার মূল কারন. স্প্লিট-এন্ড্স শুধু যে দেখতে খারাপ লাগে, তা নয়, চুলকে ভেতর থেকে নষ্ট করে দেয়, যার ফলে চুল হয় দুর্বল এবং সময়ের আগেই ঝরে যায়. এখানে কয়েকটা উপায় দিচ্ছি, স্প্লিট-এন্ড্সের (Cure Split ends Problem) সমস্যা থেকে মুক্তি পাবার জন্য. যদি আপনি সত্যিই চান যে আপনার চুল হয়ে উঠুক স্বাস্থ্যোজ্জ্বল এবং ঝলমলে, তাহলে নিয়মিত এই উপায়গুলি চালিয়ে যান.
সপ্তাহে অন্তত একবার চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ডিপ কন্ডিশনিং করাটা অত্যন্ত জরুরি. আপনি বাড়িতে কিংবা স্যালোঁতে গিয়ে এই ট্রিটমেন্ট করতে পারেন. Kerastase Nutritive Nutridefense Masque ট্রাই করে দেখতে পারেন, এতে চুলের আয়ু বৃদ্ধি হয় এবং চুলের পুষ্টির জন্য এই মাস্ক খুব ভালো. যদি আপনি ঘরোয়া পদ্ধতিতেই বিশ্বাসী হন, তাহলে দই, ডিম অথবা বিয়ার ব্যবহার করতে পারেন.
স্নান করার সময় (কন্ডিশনার সমানভাবে চুলে স্প্রেড করার জন্য) অথবা স্নানের পরে, যখনি চুল আঁচড়াবেন, চওড়া দাঁতওয়ালা চিরুনি দিয়েই আঁচড়াবেন. ভেজা চুল আঁচড়াবেন না, এতে চুলের গোড়া আলগা হয়ে চুল উঠে যাবার সম্ভাবনা থাকে এবং চুল ছেঁড়েও বেশি.
যদি আপনি বাড়িতে ব্লো-ড্রাই করেন, তাহলে সবসময়ে Nozzle ব্যবহার করবেন, যাতে বেশি হিট চুলে না লাগে. যতবেশি হিট লাগে, স্প্লিট-এন্ড্সের সমস্যা ততটাই বাড়তে থাকে. চুল শুকিয়ে গেলে ড্রায়ারের ‘Cool’ সেটিং ব্যবহার করুন. Kerastase Elixir Ultime সিরাম ব্যবহার করতে পারেন. এতে চুল ভাঙেনা এবং ফ্রিজিও দেখায়না. যদি চুলে স্ট্রেটনার বা কার্লার ব্যবহার করেন, তাহলে আগে Schwarzkopf Osis+Flatliner Sleek Flattening Iron Serum লাগিয়ে তারপর ব্যবহার করুন.
চুল পরিষ্কার রাখা খুবই জরুরি কিন্তু বেশি শ্যাম্পু করলে চুলের ন্যাচারাল অয়েল হারিয়ে যায় এবং চুল শুস্ক হতে আরম্ভ করে. শুধুমাত্র চুলের গোড়াতে এবং মাথার তালুতে শ্যাম্পু লাগিয়ে পরিষ্কার করুন, আগায় শ্যাম্পু না করা ভালো, এতে চুলের আগা শুস্ক হয়ে যায় এবং স্প্লিট-এন্ড্স (Splitends) হতে শুরু করে.
আপনি যতই চুলের যত্ন নিন না কেন, যখন চুল রং করেন কিংবা রিবন্ডিং ট্রিটমেন্ট কোরান, তখন চুলের টেক্সচারই বদলে যায়. না, একেবারেই বলছি না যে চুলের স্টাইলিং করবেন না, কিন্তু একটার পর একটা না করিয়ে কিছুদিনের গ্যাপ দিয়ে করান. এতে চুলের সাথে সাথে আপনার পকেটেও টান পড়বেনা. ধরুন আপনি চুল হাইলাইট করিয়েছেন, ৬-৭ মাসের গ্যাপ দিয়ে অন্য একটা ট্রিটমেন্ট করান, যদি চান.
আপনি যদি ভাবেন যে আপনি তো ব্লো-ড্রাই, হেয়ার কালার কিংবা অন্য কোনো কেমিকাল ট্রিটমেন্ট করান না, তাহলে আপনার স্প্লিট-এন্ড্সের (Splitends) সমস্যা হবে না, তাহলে খুব ভুল ভাবছেন. চুল লম্বা করার জন্য আমরা চুল কাটাইনা, কিন্তু এর ফলে চুলের আগা রুক্ষ, বেজান আর দু’মুখো হয়ে যায়. সেজন্য ৬-৮ সপ্তাহ পর পর চুল ট্রিম করাটা খুব প্রয়োজন.