বিয়ের পর নতুন সংসার-পরিবারে কী-কী ঝামেলার মুখোমুখি হতে পারেন, কীভাবে তার মোকাবিলা করবেন
দেখুন, বিয়ে ব্যাপারটাই ভারী কঠিন। নতুন সঙ্গী, নতুন সংসার, নতুন বাড়ি, নতুন পরিবার, এককথায় নতুন জীবন। এই জীবনের যেমন আনন্দ আছে, ঠিক তেমনই মনে একটা ভয়ের গুরগুরানিও আছে। আফটারঅল, জন্ম থেকে আপনি যেখানে ছিলেন, তাঁদের ছেড়ে চলে আসতে হবে, বাসা বাঁধতে হবে পুরোপুরি অজানা একটি বাড়িতে। বিয়ের (marriage) ফলে আপনি অনেক কিছু পেলেন ঠিক কথা, কিন্তু সেগুলো সবই প্রায় আপনার কাছে নতুন, এটাও ঠিক। তাই এত কিছু নতুনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া একটু সময় এবং পরিশ্রমসাপেক্ষ তো বটেই। তবে মুশকিল হ্যায়, নামুমকিন নহি। আর এই নামুমকিনকে মুমকিন করার জন্য আপনার সঙ্গে আছি আমরা। অনেক মাথা খাটিয়ে আমরা এই নতুন জীবন এবং সেইজনিত চ্যালেঞ্জের (issues) একটি তালিকা তৈরি করেছি এবং সেই চ্যালেঞ্জগুলির কীভাবে মোকাবিলা করবেন, সেই উপায়ও বের করেছি। এখানে রইল তারই কথা। তবে মাথায় রাখবেন, প্রতিটি মানুষের জীবন আলাদা, কাজেই তার সঙ্গে জড়িত ঘটনাবলীও আলাদাই হবে। এখানে আমরা একটা সাধারণ ধারণা দিচ্ছি, এই আর কী।
১. চ্যালেঞ্জ নাম্বার ওয়ান: ভাগাভাগির সমস্যা
নতুন একজনের সঙ্গে আপনাকে জীবন ভাগ করে নিতে তো হচ্ছেই, তার সঙ্গে খাটবিছানা, ওয়াশরুম, আলমারি, সময়…অনেক কিছুই ভাগ করে নিতে হবে। আপাতদৃষ্টিতে দেখতে গেলে এগুলো তেমন কোনও অসুবিধেই নয়। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনের অভ্যেস পাল্টে ফেলাটা তো আর মুখের কথা নয়। এসবে মানিয়ে নিতে আপনাদের দু’জনেরই একটু সময় লাগার কথা। বিশেষত, আপনারা দুজনেই আলাদা পরিবারে, আলাদা নিয়মকানুনের মধ্যে মানুষ হয়েছেন। যেটা আপনার চোখে ঠিক, সেটা আপনার স্বামীর চোখে বিসদৃশ ঠেকতে পারে, আবার যেটা তিনি সঠিক বলে ভাবছেন, আপনি সেটা দেখে ভিরমি খেলেন, এমনটাও সম্ভব।
উপায়: একটু সময় দিন পরস্পরকে এবং তাঁর কোনও ব্যাপার আপনার খুব কেমন-কেমন ঠেকলে সেটা তাঁকে খুলে বলুন। উল্টোদিকের কথাটাও জানার চেষ্টা করবেন কিন্তু। তারপর মাঝামাঝি একটা রাস্তা বের করে ফেললে এবং দু’জনে সেটা মেনে চললেই হল।
২. চ্যালেঞ্জ নাম্বার টু: নতুন নিয়মকানুন
প্রতিটি পরিবারের নিজস্ব কিছু নিয়মকানুন থাকে। আপনার পরিবারেরও (family) ছিল, আপনার স্বামীর পরিবারেরও আছে। একটু উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে বলা যাক। আপনাদের পরিবারে হয়তো আত্মীয় বলতে বন্ধুবান্ধবদেরও বোঝানো হয়, কিন্তু আপনার সদ্যপ্রাপ্ত শ্বশুরবাড়িতে সেটা নয়। কিংবা ধরুন, আপনাদের বাড়িতে পুজোআচ্চার ঘটা বেশি ছিল, নিয়মিত সন্ধ্যারতি হত। শ্বশুরবাড়িতে এসে দেখলেন, তাঁদের সেসবের বালাই নেই। এক্ষেত্রে কী করণীয়?
উপায়: কোনও দু’টি পরিবারের সব নিয়ম মিলবে, এমন কথা ভাববেনও না। নতুন নিয়মে মানিয়ে নিতে প্রথম-প্রথম একটু অসুবিধে হবে। কিন্তু চেষ্টা করুন। নিতান্ত বেগতিক দেখলে তাঁদের বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করুন যে কেন আপনার সেই নিয়মটি মেনে চলতে অসুবিধে হচ্ছে। তবে দোহাই, বিপ্লব করতে যাবেন না! বলশেভিকরা পর্যন্ত বিপ্লব করে সোভিয়েত দেশ বাঁচিয়ে রাখতে পারল না, তো আপনি কোন ছার। আর একটু ধীরেসুস্থে এগোবেন। পি টি ঊষার গতিবেগ ট্র্যাকেই সকলের ভাল লাগে, সংসারে নয়!
৩. চ্যালেঞ্জ নাম্বার তিন: নতুন নিয়মে খাওয়াদাওয়া
বাঙালি পেটুক জাতি বলে ভুবনবিদিত। কাজেই পেটে টান পড়লে কারও মাথাই ঠিক থাকে না। আর বিশ্বাস করুন, বিয়ের পরে এই খাবারদাবার নিয়েই সবচেয়ে বড় সমস্যা তৈরি হয়। যতই আপনার বাঙালি পরিবারে বিয়ে হোক, দেখবেন, একটু না-একটু আলাদা ব্যাপার আছেই। হয় মেনু নিয়ে, নয় খাবারের সময় নিয়ে।
উপায়: এই বিষয়ে আপনাকে তৈরি হতে হবে বিয়ের আগে থেকেই। একটু জেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন নতুন পরিবারের খাবারদাবার সংক্রান্ত নিয়মগুলি। মানে, তাঁরা মাছ-মাংস খেতে ভালবাসেন কিনা, ভাত-রুটি কোনটা পছন্দ করেন, বাড়িতে রান্নার লোক আছে নাকি নিজেদেরই হেঁশেল ঠেলতে হয়, বাজারের দায়িত্ব কার ইত্যাদি ইত্যাদি। সেই সঙ্গে মিনমিন করে হলেও, নিজের পছন্দ-অপছন্দগুলিও জানিয়ে দিতে ভুলবেন না।
৪. চ্যালেঞ্জ নাম্বার চার: পরিবারের বাকি সদস্যরা
বিয়ের পরে যদি আপনার স্বামী এবং আপনি আলাদা সংসার পাততে চলেছেন, তা হলে বলব আপনি ভাগ্যবতী, আপনার শিবপুজোর সাঙ্ঘাতিক জোর ছিল! মোটামুটি স্বামীটিকে বাগে এনে ফেলতে পারলেই আপনার আগামী দিনগুলি সোনায় মোড়া হয়ে যাবে। কিন্তু সকলের তো আর এরকম কপাল হয় না। তাঁদের অন্যদের নিয়েও চলতে হয়। আর সমস্যার সূত্রপাত হয় সেখান থেকেই। নানা মুনির নানা মতের মতো, শ্বশুরবাড়ির নানা সদস্যের মন জুগিয়ে চলা যা কঠিন কাজ, তার সামনে চন্দ্রলোক অভিযানও নস্যি ঠেকবে!
উপায়: প্রথম মাসকয়েক একটু দাঁতে-দাঁত চিপে লড়ে যান। সকলের মন জুগিয়ে চলার চেষ্টা করুন। খুব খারাপ না লাগলে কারও সঙ্গে ঝামেলা বা তর্কাতর্কিতে যাবেন না। তারপর সকলের মানসিকতা যখন মোটামুটি বুঝে যাবেন, তখন আস্তে-আস্তে নিজের ভাল লাগা-মন্দ লাগাগুলোও বুঝিয়ে দিতে শুরু করুন। তবে পুরোটাই একেবারে আর্ট ফিলিমে দেখা পরিশীলিত বাঙালি পরিবারের মতো, কমার্শিয়াল ছবির মোটা দাগের পারফরম্যান্স একেবারেই চলবে না।
৫. চ্যালেঞ্জ নাম্বার পাঁচ: টাকাপয়সাজনিত স্বাধীনতা
আপনি চাকুরিরতা হোন বা না হোন, বিয়ের আগে অন্তত টাকাপয়সা নিয়ে আপনাকে মা-বাবার কাছে জবাবদিহি করতে হত না। কিন্তু বিয়ের পরে সেই স্বাধীনতায় টান পড়বেই। কপাল ভাল হলে ভাল কথায়, কপাল মন্দ হলে কী হতে পারে, সেকথায় না-ই বা গেলাম। কাজেই এক্ষেত্রে কী করবেন, সেটা আগে থেকে ভেবে রাখাটাই ভাল।
উপায়: এক্ষেত্রে একজন, এবং মাত্র একজনই আপনাকে সাহায্য করতে পারেন আর তিনি হলেন আপনার পতিদেবতাটি। কাজেই সুযোগ পেলে তাঁর সঙ্গে গোড়া থেকেই এই ব্যাপারে কথা বলে রাখুন। আর যদি আপনি নিজে রোজগার করেন, তা হলে একটি অব্যর্থ উপায় হল, নিজের রোজগার কমিয়ে বলা। সেক্ষেত্রে আপনার হাতে বাড়তি টাকাপয়সা থাকবে এবং কাউকে সেই ব্যাপারে জবাবদিহিও করতে হবে না!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এসে গেল #POPxoEverydayBeauty – POPxo-র স্কিন, বাথ, বডি এবং হেয়ার প্রোডাক্টস নিয়ে, যা ব্যবহার করা ১০০% সহজ, ব্যবহার করতে মজাও লাগবে আবার উপকারও পাবেন! এই নতুন লঞ্চ সেলিব্রেট করতে প্রি অর্ডারের উপর এখন পাবেন ২৫% ছাড়ও। সুতরাং দেরি না করে শিগগিরই ক্লিক করুন POPxo.com/beautyshop-এ এবার আপনার রোজকার বিউটি রুটিন POP আপ করুন এক ধাক্কায়..