একটানা বৃষ্টিতে মনেও মেঘ জমেছে? জেনে নিন কী করে বর্ষাকালীন ডিপ্রেশন কাটাবেন

বর্ষাকাল যে বেজায় রোমান্টিক ঋতু, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু একথাও ঠিক যে বছরের এই সময় নানা সংক্রমণের প্রকোপ যেমন বেড়ে যায়, তেমনি মানসিক অবসাদের খপ্পরে পাড়ার আশঙ্কাও থাকে। কিন্তু বর্ষাকালে মানসিক অবসাদের মতো সমস্যার প্রকোপ বাড়ে কেন? বেশ কিছু স্টাডি অনুসারে বছরের এই সময় (Monsoon) নানা কারণে melatonin এবং serotonin নামক দুটি হরমোনের ক্ষরণও ঠিক মতো হয় না, যার প্রভাবে ডিপ্রেশনের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তবে আরেকটা কারণেও এই সময় মন বড় খারাপ হয়ে যায়। কী কারণ? একে তো ঝড়-বৃষ্টি, তার উপর জল-কাদার মধ্যে বাড়ির বাইরে বেরতেও ইচ্ছা করে না। ফলে সারাক্ষণ বাড়িতে থাকার কারণে স্বাভাবিকভাবেই অবসাদ (Depression) ঘাড়ে চেপে বসে। সঙ্গে লেজুড় হয় ক্লান্তি এবং খিদে কমে যাওয়ার মতো সমস্যাও। এক্ষেত্রে মনকে চাঙ্গা রাখার দুটো উপায় আছে। এক তো বিশেষ কিছু খাবারকে রোজের ডায়েটে জায়গা করে দিতে হবে, তাতে শারীরিক কারণে মানসিক অবসাদের শিকার হওয়ার আশঙ্কা কমবে। অন্যদিকে নিজেকে এমন সব কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে, যাতে মন-মেজাজ চাঙ্গা থাকে, তাহলেই কেল্লা ফতে!

মনকে চাঙ্গা রাখুন এই খাবারগুলি খেয়ে

১. গ্রিন টি

বর্ষাকালে দিনে দু’কাপ করে গ্রিন টি পান করলে মানসিক অবসাদের মতো সমস্যা ধারেকাছেও ঘেঁষতে পারে না। কারণ, এই পানীয়টিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং নানা উপকারী অ্যামিনো অ্যাসিড, যা নিমেষে মনকে চাঙ্গা করে তোলে। সঙ্গে স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটির মতো সমস্যার প্রকোপও কমায়।

২. দারচিনি

এক কাপ জলে পরিমাণমতো চা পাতা এবং এক চামচ দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে মিনিটদশেক জলটা ফুটিয়ে নিয়ে ছেঁকে নিন। তারপর সেই চা পান করুন। বর্ষাকালে নিয়মিত দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে তৈরি চা পান করলে শরীরে এমন কিছু উপকারী উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যার প্রভাবে ব্রেন সেলের ক্ষমতা এতটাই বেড়ে যায় যে মানসিক অবসাদের (Depression) প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।

৩. কাজুবাদাম

এক্কেবারে ঠিক শুনেছেন! মানসিক অবসাদের চিকিৎসায় কাজু বাদামের জুড়ি মেলা ভার। কারণ, এতে উপস্থিত ভিটামিন বি এবং riboflavin, শরীরে প্রবেশ করার পরে বেশ কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে, যে কারণে ব্রেন পাওয়ার তো বাড়়েই, সঙ্গে মানসিক অবসাদের মতো সমস্যাও দূরে পালাতে বাধ্য হয়।

৪. চর্বিযুক্ত মাছ

বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত চর্বিযুক্ত মাছ খাওযা শুরু করলে শরীরে Docosahexaenoic acid এবং Eicosapentaenoic acid-এর মতো ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে, যে কারণে মানসিক অবসাদ, স্ট্রেস, অ্যাংজাইটি এবং ইনসমনিয়ার মতো সমস্যার খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা প্রায় পঞ্চাস শতাংশ কমে যায়। সেই সঙ্গে ব্রেন পাওয়ারও বাড়ে চোখে পড়ার মতো। তাই তো বলি, বর্ষাকালে মনকে চাঙ্গা রাখতে রোজ মাছ খেতে ভুলবেন না যেন!

 

এই কাজগুলি করলেও মন আনন্দে থাকবে

১. মেডিটেশন

নিয়মিত মিনিটকুড়ি প্রাণায়ম করলে brain chemistry-তে কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে, যে কারণে ‘ফিল গুড’ হরমনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যার প্রভাবে মানসিক অবসাদের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে মনোযোগ ক্ষমতার যেমন বিকাশ ঘটে, তেমনই স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে চোখে পড়ার মতো। দূর হয় ক্লান্তিও।

২. পছন্দের সিনেমা দেখলেও মন্দ হয় না

বৃষ্টিতে বাড়ির বাইরে বেরতে পারছেন না? তাহলে ঝটপট নেটফ্লিক্স নয়তো অ্যামাজনে নজর বুলিয়ে দেখে নিন না কোন কোন সিনেমা এখনও দেখা হয়নি। সেগুলি এক এক করে দেখতে শুরু করে দিন। মাঝে মাঝে ইচ্ছা হলে এক পেয়লা চা, নয়তো ওয়াইন বা ঠান্ডা বিয়ারে চুমুক লাগাতেই পারেন, তাতে সময়টা আরও ভাল কাটবে বই কী! ফলে মন-মেজাজও চাঙ্গা হয়ে উঠবে।

৩. রান্নার হাতটা একটু পাকিয়ে নিন

ঘ্যানঘ্যান বৃষ্টিতে কি মনেও পলি জমতে শুরু করেছে নাকি? তা হলে একটা কাজ করুন। ইউটিউবে যে-কোনও একটা রান্নার চ্যানেল খুলে নিজের পছন্দ মতো কয়েকটা ডিশের রেসিপি দেখে তা তৈরি করে ফেলুন। তাতে বর্ষার দিনে পেট পুজোটা যেমন মন্দ হবে না, তেমনই সময়টাও বেশ কেটে যাবে। ফলে মন খারাপ হওয়ার কোনও সুযোগই মিলবে না।

৪. চুটিয়ে আড্ডা মারলেও মুখে হাসি ফুটবে

একা একা জানলার ধারে বসে বৃষ্টি না দেখে মা-ককিমা ফ্রি থাকলে তাঁদের নিজের ঘরে ডেকে নিন। ছোট্ট বোন থাকলেও তাঁকেও হাঁক মারুন। সবাই মিলে বসে গরম-গরম পিঁয়াজি-সিঙ্গারা সহযোগে চুটিয়ে আড্ডা মারুন। দেখবেন, মনের মেঘ কেটে যেতে সময় লাগবে না।

POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!

আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!