প্রেগন্যান্সি এমন একটা সময়, যখন একটি মেয়ের শরীরে ও মনে নানা পরিবর্তন আসতে বাধ্য। কিন্তু প্রেগন্যান্সির সময় হবু সন্তানের যত্ন নিতে গিয়ে মায়েরা নিজেদের অলক্ষেই নিজেদের শরীরের যত্নও নিয়ে ফেলেন! তখন তাঁরা স্বাস্থ্যকর খাবার খান, ঠিক সময়ে খাওয়াদাওয়া করে ফেলেন, ঠিক সময়ে ঘুমতে যান ইত্যাদি ইত্যাদি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকে চলে আসে জেল্লা! তার উপর শরীরে কিছু হরমোনের ক্ষরণও এই সময়ে বেড়ে যায়, যা চেহারায় ঔজ্জ্বল্য আনতে সাহায্য করে। এসব ছাড়াও হবু সন্তানের আনন্দ তো আছেই। সব মিলিয়ে মায়েদের মধ্যে বেশ একটা স্বর্গীয় আভা এসে যায়। কিন্তু সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সেই আভা হারাতেও বেশি সময় লাগে না! তখন সন্তানের চিন্তা এবং তার প্রতি মনোযোগ দিতে গিয়ে নিজের দিকে ঠিকমতো নজর দেওয়া হয় না। তা ছাড়া শারীরিক নানা পরিবর্তনের কারণে স্ট্রেচ মার্কস, পিগমেন্টেশন (pigmentation), অ্যাকনে ইত্যাদি নানা ত্বকজনিত সমস্যায় জেরবার হয়ে যান মায়েরা। এগুলির মধ্যে পিগমেন্টেশন সমস্যাটির মুখোমুখি প্রায় সব ভারতীয় মহিলারাই হয়ে থাকেন। শরীরের বিভিন্ন অংশে কালো ছোপ, ঠিক মনে হয় চামড়া কোনও কারণে পুড়ে গিয়েছে! অথচ, এই সমস্যার সমাধান ঘরোয়া পদ্ধতিতেই বেশিরভাগ সময়ে সম্ভব। এখানে প্রেগন্যান্সির (pregnancy) পরে ত্বকে কালো ছোপের (dark patches) সমস্যা কী করে দূর করবেন, সেই বিষয়েই আলোচনা করব আমরা…
কাকে বলে পিগমেন্টেশন
পিগমেন্টেশন দুই ধরনের হতে পারে, হাইপার পিগমেন্টেশন, মানে যেক্ষেত্রে ত্বকের কিছু অংশের রং, যেমন নাকের দু পাশে, কনুই, ঠোঁটের চারপাশে, চোখের নীচে, পেটে, থাইয়ে কুঁচকির দিকে, ত্বকের রং অন্য জায়গার তুলনায় অনেকটাই কালো হয়ে যায়। আর এক রকম পিগমেন্টেশন হল হাইপো পিগমেন্টেশন। এক্ষেত্রে বিশেষ কিছু অংশের রং অন্য জায়গার তুলনায় হালকা হয়ে যায় আর বাকি জায়গা দেখতে বেশি কালো লাগে।
পিগমেন্টেশন থেকে মুক্তি পাওয়ার ঘরোয়া উপায়
পার্লারে ছোটার বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন নেই। বেশ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিতেই এই পিগমেন্টেশনের সমস্যা দূর করা সম্ভব।
- অ্যালো ভেরা জেল: যেখানে-যেখানে পিগমেন্টেশনের সমস্যা হয়েছে, সেখানে এই জেল ভাল করে লাগিয়ে মিনিটপনেরো-কুড়ি মালিশ করুন। তারপর ঈষদুষ্ণ জলে ধুয়ে ফেলবেন।
- ঠান্ডা দুধে টোম্যাটো অথবা শসার রস মিশিয়ে সেই মিশ্রণটি কালো ছোপওয়ালা জায়গাগুলিতে মালিশ করুন। কিছুক্ষণ পরে ধুয়ে নেবেন ঠান্ডা জলে। এই মিশ্রণটি কালো ছোপ দূর করার পাশাপাশি ত্বককে ঠান্ডাও করে।
- কয়েকটা আমন্ড বাদাম গুঁড়ো করে তা মধুর সঙ্গে চটকে নিন। সেই মিশ্রণটি কালো ছোপের উপর লাগিয়ে সার্কুলার মোশনে মালিশ করুন। মিনিটপনেরো রেখে ধুয়ে ফেলুন।
- ভিটামিন ই এসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে মালিশ করুন এফেক্টেড জায়গাগুলি। এই তেল ত্বকের নানা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
- দুই টেবিলচামচ কাঁচা পেঁপে, এক টেবিলচামচ মধু ও এক টেবিলচামচ অ্যালো ভেরা জেল একসঙ্গে মিক্স করে ফেস প্যাক হিসেবে লাগান।
- হাফ কাপ পাকা পেঁপে, এক চা চামচ লেবুর রস, এক চা চামচ মধু ও হাফ কাপ টক দই মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করে সারা শরীরে ভাল করে লাগিয়ে রাখুন অন্তত মিনিটকুড়ির জন্য। তারপর ভাল করে স্নান করে নিন।
- সম পরিমাণ চন্দনগুঁড়ো ও হলুদ গুঁড়ো নিয়ে ঠান্ডা দুধে মিশিয়ে নিন। একটি পেস্টের মতো ঘনত্ব তৈরি করে কালো ছোপওয়ালা জায়গায় লাগান। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন।
- কমলালেবুর খোসা শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিন। তারপর ঠান্ডা দুধে এই গুঁড়ো মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে সারা গায়ে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পরে ধুয়ে ফেলুন।
- পুদিনা পাতার পেস্ট নিয়ে কালো ছোপওয়ালা জায়গার উপর লাগান। সপ্তাহে দু-তিনবার এরকম করলে কালো দাগ আস্তে-আস্তে কমে যাবে।
- সপ্তাহে অন্তত একবার ভাল কোনও স্ক্রাব দিয়ে এক্সফোলিয়েট করুন, যাতে মরা কোষ ত্বকের উপরের স্তরে জমতে না পারে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!