বিয়ে ব্যাপারটাই গোলমেলে তো সম্বন্ধ করে বিয়েটা তো আরও জবরদস্ত! একটি পরিবার, যাঁদের আপনি চেনেন না, জানেন না, তাঁদের সামনে নিজেকে পেশ করাটা বেশ সমস্যার কিন্তু! তার উপর মেয়ে দেখতে এসে তো কেউ আর আসল চরিত্র প্রকাশ করে না, পাছে সম্বন্ধের বাজারে ছেলের বাড়ির দর কমে যায়! তাই তো সিংহভাগই মুখোশের আড়ালে থাকতেই পছন্দে করেন। এই কারণেই তো অ্যারেঞ্জড ম্যারেজের (marriage) ক্ষেত্রে সামলে পা ফেলাটা যেমন বুদ্ধিমানের কাজ, তেমনই ছেলের সামনে তো বটেই, এমনকী তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার সময়ও নিজের মতামত সোজাসাপটা ভাবে বলে ফেলতে ভয় পাবেন না যেন! সেই সঙ্গে মাথায় রাখতে হবে আরও কতগুলি বিষয়, যে সম্পর্কে বাকি প্রতিবেদনে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
১. ভুলেও মিথ্যে কথা নয়, সোজাসাপটা কথা বলাই ভাল
প্রথম মিটিং-এ তো বটেই, পাত্র যেদিন দেখতে আসবেন, সেদিনও রান্নাবান্না থেকে শুরু করে পোশাকআসাক, নানা বিষয়ে হাজার প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে আপনাকে। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই মিথ্যা বলা চলবে না। বরং ঠান্ডা মাথায় মনের কথা খোলাখুলি বলে ফেলুন। বিশেষ করে আপনার পছন্দের খাবার এবং পোশাক নিয়ে আগে থাকতেই কথা বলে নেওয়াটা একান্ত প্রয়োজন। কারণ, প্রতিটি পরিবারেরই রান্না ধাঁচ আলাদা। কেউ ঝাল বেশি খান, তো কেউ মিষ্টি। উপরন্তু নতুন বউয়ের পোশাক নিয়েও ছেলের বাড়িতে কানাঘুষো কম হয় না। তাই তো এই সব ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে প্রথম দিনেই বিড়ালের গলায় ঘন্টিটি বেঁধে দেওয়া উচিত। তাতে ছেলের বাড়ির মানসিকতা সম্পর্কে আঁচ করতে যেমন সময় লাগবে না, তেমনই ছেলেটির চরিত্র সম্পর্কেও জেনে-বুঝে নিতে পারবেন। ফলে গ্রিন সিগনাল দেবেন, না রেড, সে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেখবেন আর কোনও সমস্যাই হবে না।
২. রান্না করতে না পারলে মুখের উপর বলে দিন
ছেলের বউ রান্না করতে পারে না! এমন খোঁটা শুনলে বেশিরভাগ শাশুড়ি মায়েরই কিন্তু কান গরম হয়ে যায়। তাই রান্না না জানলে সেকথা প্রথম সাক্ষাতেই বলে ফেলা উচিত। তাতে বিয়ের পরে শাশুড়ি-বউয়ে তর্কযুদ্ধ বাঁধার আশঙ্কা একটু কমবে! উপরন্তু আপনার শাশুড়ি ঝগড়াটে, নাকি শান্ত স্বাভাবের, তাও বুঝে যাবেন! তাই তো বলি, চা-সিঙাড়ার পর্ব শেষ হওয়ার আগেই মুখ ফসকে রান্না না জানার কথাটা বলে ফেলতে ভুলবেন না যেন। দেখবেন, এর পরে শাশুড়ি মায়ের স্বভাব সম্পর্কে আপনার মনে আর কোনও প্রশ্ন থাকবে না।
৩. মুখ গোমড়া করে থাকবেন না, আবার বেশি হাসাহাসি করাও ঠিক নয়
প্রথম দিনেই যদি হবু শ্বশুর-শাশুড়ির মন জয় করতে চান, তা হলে মাথায় রাখবেন ‘ব্যালেন্স ইজ দ্য কি টু সাকসেস’। মানে, সহজ কথায় বললে, শ্বশুরবাড়ির লোকেদের সামনে যেমন মুখ ফুলিয়ে বসে থাকবেন না, তেমনই বেশি হাসাহাসি করাটাও ঠিক নয়। বরং মুচকি হেসেই খেলা জমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে সিরিয়াল লুকও দিতে হবে, তা হলেই ব্যাপারটা অনেক সহজ হয়ে যাবে!
৪. মনে কোনও প্রশ্ন থাকলে তা খুলে বলুন
ছেলের চাকরি হোক কী, শ্বশুরের পেনশন, কোনও কিছু নিয়ে মনে প্রশ্ন জাগলে, তা খোলাখুলি বলে ফেলতে দ্বিধা করবেন না যেন! ভুলে যাবেন না জীবনের সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন আপনি। তাই এই নিয়ে মনে কোনও ধোঁয়াশা থাকা ঠিক নয়।
৫. ফিউচার প্ল্যান নিয়ে খোলাখুলি কথা বলুন
বিয়ের পর আপনি চাকরি করার অনুমতি পাবেন কিনা, সেই নিয়ে ছেলে আর তাঁর বাড়ির লোকেদের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলে নিতে ভুলবেন না যেন! আর যদি পড়াশোনা করার ইচ্ছে থাকে, তা হলেও আলোচনা করে নিন প্রথম সাক্ষাতেই। নিজের মতামত খুলে বলতে ভয় পাবেন না! কারণ, বিয়ে করছেন মানেই সব স্বপ্নকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে হবে, এমনটা নয় কিন্তু! বরং জীবনটা যখন আপনার, তখন সেই সংক্রান্ত ছোট-বড় সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার বিয়ের পরে থাকবে কিনা, সে সম্পর্কে জেনে নেওয়াটা আপনার প্রথম এবং প্রধান কর্তব্য। তাই এই বিষয়ে কোনও রকম আপস করতে যাবেন না!
৫. ছেলেটিকেও খোলাখুলি কথা বলার সুযোগ করে দিন
আপনার মনের কথা খুলে বলুন, তাতে ক্ষতি নেই! সেই সঙ্গে ছেলেটিকেও খোলাখুলি কথা বলার সুযোগ করে দিন। তাতে একে অপরকে আরও ভাল ভাবে চেনার সুযোগ পাবেন। ফলে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশঙ্কা আর থাকবে না।
৬. নিজেকে ঠিক মতো মেলে ধরুন
নিজেকে ইন্ট্রোডিউস করাটা একটা আর্ট! এটা চাকরির ইন্টারভিউয়ের ক্ষেত্রে যেমন সত্যি, ঠিক তেমনই সত্যি বিয়ের সম্বন্ধের মিটিংয়েও। আপনি যেমন, ঠিক তেমনভাবে নিজেকে মেলে ধরুন।নিজের সম্বন্ধে কোন কথাটা বলবেন আর কোনটা বলবেন না, সেটা আগে থেকেই ঠিক করে নিন। সকলের সামনে এসে আমতা-আমতা করবেন না। ওতে আপনার সম্বন্ধে মোটেও ভাল ধারণা হবে না পাত্রপক্ষের!
তবে সবশেষে একটা কথাই বলার, যতদিন না অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ করার জন্য মন থেকে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত হচ্ছেন, ততদিন পরিবারের সদস্যদের আপনার জন্য সম্বন্ধ দেখতে বারণ করুন। কারণ, হঠাৎ করে সম্পূর্ণ অচেনা একটা পরিবেশে গিয়ে মানিয়ে নেওয়া কিন্তু সহজ কাজ নয়!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!