দ্রুত ওজন কমানোর চেষ্টায় সিংহভাগই ভাত খাওয়া ছেড়ে দেন। একই কারণে অনেকে রুটির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করতেও পিছনা হন না। ভাবেন, কার্বোহাইড্রেট বেশি খেলে যদি ওজন বেড়ে যায়, তখন তো বিপদ! একথা ঠিক যে শরীরে প্রয়োজন অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেটের প্রবেশ ঘটা ঠিক নয়, তাতে ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে বই কী! কিন্তু তাই বলে ভাত-রুটি খাওয়া বন্ধ করে দিলেও বিপদ।
কারণ, শরীরকে সচল রাখতে ভিটামিন-মিনারেলের যেমন প্রয়োজন, তেমনই কার্বোহাইড্রেটের ঘাটতি মেটাও জরুরি। তাই কোনও শর্তেই কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া বন্ধ করা চলবে না। বরং একটা কাজ করতে পারেন। কী কাজ? আজকাল অনেকেই ‘কার্ব সাইক্লিং’ করে বেশ উপকার পাচ্ছেন। বিশেষ করে ওজন কমাতে তো কার্ব সাইক্লিং-এর জুড়ি মেলা ভার। কী এই কার্ব সাইক্লিং (carb cycling) তাই ভাছেন নিশ্চয়? তাহলে চলুন এই নিয়ে একটু খোঁজ-খবর করে নেওয়া যাক।
শরীরের সামগ্রিক ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ওজন কমাতে আজকাল অনেকেই কার্ব সাইক্লিং ডায়েটে মেনে খাওয়া-দাওয়া করে থাকেন। দিনের মধ্যে যে সময় কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাওয়ার উপকারিতা বেশি, সে সময় বেশি করে ভাত-রুটি খেতে হবে। আর যে সময় অল্প পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট শরীরে প্রবেশ করা জরুরি, সে সময় একেবারে অল্প পরিমানে কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এই বিশেষ ধরনের ডায়েট প্ল্যানকেই কার্ব সাইক্লিং বলা হয়ে থাকে।
সপ্তাহ ব্যাপী কার্ব কার্ব সাইক্লিং (carb cycling) করার ইচ্ছা থাকলে যে যে দিন শরীরচর্চা করছেন, সেই দিনগুলিতে নিশ্চিন্তে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খেতে পারেন। তবে যে সব দিন এক্সারসাইজ করছেন না, সেই সব দিন কম পরিমাণে ভাত রুটি খাবেন। এক্ষেত্রে দিনে এক বাটি ভাত আর দুটো রুটি খাওয়া চলতে পারে। প্রয়োজনে এই নিয়ে একবার কোনও ডায়াটেশিয়ানের সঙ্গেও আলোচনা করে নিতে পারেন।
এক্ষেত্রে আরেকটা নিয়ম মেনেও চলতে পারেন। কী নিয়ম? সারা সপ্তাহ জুড়ে carb cycling diet প্ল্যান মেনে চলার ইচ্ছা থাকলে যে কোনও দু’দিন বেশি মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট (২০০-৪০০ গ্রাম) খেতে হবে। বাকি দু’দিন একটু অল্প পরিমাণে খেতে পারেন, এই ধরুন ১০০ গ্রামের মতো। আর শেষ তিনদিন ভাত-রুটি ভুলেও ছোঁবেন না। খুব ইচ্ছা হলে ৩০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খেতে পারেন। কিন্তু ভুলেও এর থেকে বেশি পরিমাণে খাবেন না যেন! কিন্তু এই সাতদিন নিয়ম করে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। তাতে করে দেখবেন ওজন কমতে একেবারে সময়ই লাগবে না।
একটা জিনিস বুঝে নেওয়া খুব জরুরি। ওজন কমার সঙ্গে ক্যালরির সরাসরি যোগ রয়েছে। তাই মেদ ঝরাতে হলে ক্যালরি জাতীয় খাবার খাওয়া কমাতে হবে। তা না করলে কোনও ডায়েট প্ল্যান মেনেই কিন্তু ওজন কমবে না। এক্ষেত্রে কার্ব সাইক্লিং (carb cycling) চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নিয়ম করে অল্পবিস্তর হাঁটাহাঁটি বা জগিং করুন। সঙ্গে হাই ক্যালরি খাবার এড়িয়ে চলুন। দেখবেন, ওজন কমবেই কমবে! প্রয়োজনে এই বিষয়ে একবার ডায়েটিশিয়ানের সঙ্গে আলোচনা করে নিতে পারেন। তাতে কোনও ভুলচুক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আর থাকবে না।
আলবাত রয়েছে! শরীরের carbohydrate manipulation-এর দিকে নজর রেখেই এই ডায়েট প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, পেশীর গঠনে যাতে কোনও খামতি না থাকে, সেদিকেও নজর রাখে কার্ব সাইক্লিং ডায়েট। সেই কারণেই তো শরীরচর্চার দিন বেশি করে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তাতে কী উপকার মেলে? এতে করে পেশীর muscle glycogen-এর ঘাটতি মেটে। ফলে শরীরের ক্ষমতা যেমন বাড়ে, তেমনই পেশী ভেঙে গিয়ে শরীরের ক্ষতি হওয়ার কোনও আশঙ্কাও থাকে না।
কার্ব সাইক্লিং-এর (carb cycling) কারণে মেটাবলিজম রেটের উন্নতি ঘটে, যে কারণে দেহের মেদ ঝরার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। ফলে শরীরের ইতি-উতি জমে থাকা মেদে ঝরে যেতে সময় লাগে না। তবে খেয়াল রাখতে হবে এটা একটা দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। যদি ভেবে থাকেন সপ্তাহ খানেক কার্ব সাইক্লিং ডায়েট প্ল্যান মানলেই উপকার মিলবে, তাহলে ভুল ভাবছেন!
এই ডায়েট মেনে খাওয়াদাওয়া করলে ইনসুলিনের ক্ষমতা বাড়বে। সঙ্গে মেটাবলিজম রেটেরও উন্নতি ঘটবে, যে কারণে ওজন যেমন নিয়ন্ত্রণে থাকতে বাধ্য় হবে, তেমনই গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যার প্রকোপও কমবে। শুধু তাই নয়, এই ডায়েট প্ল্যানের গুণে testosterone এবং leptin হরমোনের ক্ষরণ ঠিক মতো হয়। ফলে শরীর চাঙ্গা থাকে।
POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!
বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন #POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!