দৈনন্দিন জীবনে সবসময়ে শাড়ি পরা না হলেও যে-কোনও অনুষ্ঠানে আমরা বাঙালি মেয়েরা কিন্তু শাড়ি (saree) পরতেই বেশি পছন্দ করি। শাড়ি পরলে দেখতে তো ভাল লাগেই আর নানারকম স্টাইলও করা যায়। আর তাছাড়া আমাদের বঙ্গদেশেই কত রকমের শাড়ি রয়েছে বলুন তো? তাঁত, ঢাকাই, বালুচরি, গরদ, তসর, কাঁথা, লিনেন, হাতে বোনা শাড়ি – উফ, নাম বলে শেষ করা যাবে না। তা শাড়ি তো না হয় পরলেন কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই আমরা যে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিই না তা হল শাড়ির যত্ন নেওয়া। দামি শাড়ি বেশিরভাগ সময়েই আমরা লন্ড্রিতে পাঠিয়ে দিয়েই নিশ্চিন্ত থাকি। কিন্তু লন্ড্রি থেকে তো না হয় শুধু শাড়িটা কেচে পরিষ্কার হয়ে এল, বাকি যত্নের কী হবে শুনি? আর আপনি কি জানেন, এক-এক রকমের শাড়ির যত্ন এক-এক ভাবে নিতে হয়? অর্থাৎ যেভাবে আপনি তাঁতের শাড়ির যত্ন নেবেন, সেভাবে কখনওই আপনার জামদানী শাড়িটির যত্ন নিতে পারেন না। জেনে নিন, কোন শাড়ির যত্ন (care) কীভাবে নেবেন।
তাঁত বা সুতির শাড়ির যত্ন কীভাবে নেবেন
তাঁতের শাড়ি হল বাংলার ঐতিহ্য। যিনি খুব একটা শাড়ি পরেন না, খোঁজ নিয়ে দেখুন তাঁর কাছে একটা হলেও তাঁতের শাড়ি আছে কিন্তু! কালেভদ্রে হয়ত শাড়ি পরা হয় আর বেশিরভাগ সময়েই তা তোলা থাকে আলমারিতে। ঠিক কীভাবে তাঁতের শাড়ির যত্ন নেওয়া উচিত যাতে অনেকদিন পর্যন্ত তা ভাল থাকে সে ব্যাপারেই আজ কথা বলব।
আপনি চাইলে বাড়িতেও কাচতে পারেন তাঁতের শাড়ি। প্রথমবার কাচার আগে ঊষ্ণ জলে সামান্য রক সল্ট (খাবার নুন ব্যবহার করবেন না) দিয়ে মিনিটদশেক ডুবিয়ে রেখে দিন শাড়িটি। এতে রঙ ওঠার ভয় থাকবে না। এবারে ঠান্ডা জলে খুব মাইল্ড কোনও ডিটারজেন্ট গুলে তাতে শাড়িটি ডুবিয়ে রেখে হাতে কেচে নিন। যদিও শাড়ি সবসময় হাতে কাচাই ভাল, তাতে শাড়ি ভাল থাকে অনেকদিন। কিন্তু যদি হাতে কাচার অসুবিধে থাকে, তা হলে মেশিনে কাচতে পারেন। মেশিনে কাচলে একদম কম পাওয়ারে (ডেলিকেট মো়ডে) কাচবেন। তাঁতের শাড়ি বা সুতির শাড়ির ক্ষেত্রে কাচার পর আরও একটা স্টেপ থাকে, তা হল শাড়িতে মাড় দেওয়া। চাইলে আপনি ভাতের মাড়ে জল মিশিয়ে তাতে শাড়ি ডুবিয়েই তুলে নিতে পারেন অথবা বাজারচলতি যে-কোনও স্টার্চ ব্যবহার করতে পারেন। মাড় দেওয়া হয়ে গেলে জল ঝরতে দিন, খুব বেশি নিংড়বেন না, এতে কাপড়ের সুতো দুর্বল হয়ে যায়। জল ঝরে গেলে ছায়ায় শুকোতে দিন শাড়িটি। সরাসরি যেখানে সূর্যের আলো আসে সেরকম জায়গায় শাড়ি শুকোবেন না, এতে কাপড়ের রঙের ঔজ্জ্বল্য নষ্ট হয়ে যায়।
লিনেন শাড়ির যত্ন কীভাবে নেবেন
গ্রীষ্ম হোক বা বর্ষা বা শীত, লিনেন কিন্তু সব ঋতুতেই পরা যায়। দেখতে ভাল এবং পরতে আরামদায়ক এই শাড়ির যত্ন কীভাবে নেবেন জেনে নিন।
যেহেতু লিনেন শাড়ি আদতে নরম হয় এবং এর বুননও খুব একটা শক্ত হয় না। কাজেই লিনেন শাড়ি কিন্তু একটু বেশিই যত্নে রাখতে হয়। ঠিকভাবে যত্ন করলে আপনার কেনা লিনেন শাড়ি আপনার পরের প্রজন্মের মেয়েরাও পরতে পারবে। লিনেনের শাড়ি যখন কাচবেন, তখন ডিটারজেন্টে না কেচে মাইল্ড কোনও শ্যাম্পু দিয়ে কাচলে ভাল। আর কখনওই মেশিনে লিনেন শাড়ি কাচবেন না এতে সুতোর বুনোট আরও আলগা হয়ে যেতে পারে। সব সময়ে হাতে কাচুন এই ধরনের শাড়ি। যদি উজ্জ্বল রঙের শাড়ি হয় তা হলে তাঁতের শাড়ির মতোই লিনেনের শাড়ি কাচার আগেও ১০-১৫ মিনিট তা নুন জলে ভিজিয়ে রাখুন। এক্ষেত্রেও কিন্তু খাবার নুন নয়, রক সল্ট ব্যবহার করবেন। এতে শাড়ির রঙ টেকসই হবে। লিনেন শাড়ি হাতে কাচা হয়ে গেলে একেবারেই নিংড়বেন না। কলের উপরে রেখে জল ঝরতে দিন এবং জল ঝরে গেলে ছায়ায় শুকিয়ে নিন। আপনি তাঁতের শাড়ি যেমন ভাঁজ করে আলমারিতে রাখতে পারেন, লিনেন কিন্তু ভাঁজ করতে পারবেন না সেভাবে। হালকা ভাঁজ করে হ্যাঙ্গারে করে ঝুলিয়ে রাখুন আলমারিতে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!