অভিনয়ে আসা অনেক ছোট্ট বয়সে। তেরো পার্বণ ছিল তাঁর প্রথম কাজ। তিনি যে লম্বা রেসের ঘোড়া, প্রমাণ মিলেছিল সে সময়ই। তিনি ইন্দ্রাণী হালদার। এত বছরেও একটুও কমেনি তাঁর অভিনয়ের ধার। বরং ক্রমে বেড়েছে। তার প্রমাণ মিলেছে ইন্দ্রাণীর (indrani) শেষের দুটি ধারাবারিকেও। সীমারেখা এবং গোয়েন্দা গিন্নি, দুটোই তুমুল হিট। বর্তমানে কাজ করছেন ‘শ্রীময়ী’ নামে এক ধারাবাহিকে। ইতিমধ্যেই শ্রীময়ী নজর কেড়েছে অনেকের। তাঁর অভিনয় প্রশংসা কুড়িয়েছে। কেমন লাগছে প্রথমবার স্টার জলশায় কাজ করতে? শ্রীময়ী কি কোনও লড়াকু মেয়ের গল্প? এমন নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন ইন্দ্রাণী হালদার (indrani haldar)। শুনল POPxo বাংলা।
১. শ্রীময়ী কে?
আমাদের মা-বোনেরা যেমন, শ্রীময়ীও ঠিক তেমনই। সে পরিবার অন্তপ্রাণ। পরিবারের জন্য সে দিবা-রাত্র প্রাণপাত করতে পিছপা হয় না। যদিও তাঁর এই প্রয়াসকে কুর্নিশ জানানোর লোকের বড়ই অভাব। প্রশংসা করে না কেউই। যদিও তাতে কিছু এসে যায় শ্রীময়ীর। তাঁর কাছে পরিবারই শেষ কথা। এমন একজন মেয়ে যখন নিজের ইচ্ছা পূরণের লড়াইয়ে নামে, তখনই গল্প বাঁক নেবে এক অন্য় দিকে। এক কথায় বললে, এক অতি সাধারণ গৃহবধুর নিজেকে চেনার গল্প হল শ্রীময়ী।
২. আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে এই গল্প মহিলাদের নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে অনুপ্রাণিত করবে?
অবশ্যই করবে। কিন্তু একথা ঠিক প্রতি বাড়িতেই একজন করে শ্রীময়ী রয়েছেন। যিনি চাকরিও করছেন আবার ঘরও সামলাচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের এই ভূমিকাকে সম্মান জানাই না আমরা কেউই। মুখে আমরা উইমেন লিবারেশন কথা বলি ঠিকই। কিন্তু কাজে কী করি? মনে তো হয় না। মা বাড়িতে আছেন বলে তিনিই বাড়ির কাজ করবেন, তার জন্য আলাদা করে উৎসাহ দেওয়ার কী আছে, এই ধরণায় বদল আসাটা জরুরি। আর সেই কাজটাই হয়তো করবে শ্রীময়ী।
৩. তা হলে গল্পটা শ্রীময়ীকে কেন্দ্র করেই? গল্পটা সম্পর্কে যদি একটু কিছু বলেন।
পরিবার অন্ত প্রাণ একজন গৃহবধু নানা ঘাত প্রতিঘাতের পরে যখন নিজেকে চিনতে শুরু করে। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু করে, তখন তাঁর সেই পরিবারই বেঁকে বসে। প্রতি পদে শ্রীময়ীকে আটকাতে চায় তাঁরা। তার পরেও শ্রীময়ী এগিয়ে যায়। একজন সাধারণ মহিলা কীভাবে নিজেকে গড়ে তুলবেন, সেই গল্পই বলে এই ধারবাহিক।
৪. সহজ কথায় বললে একজন নারীর বেড়ে ওঠার, জেগে ওঠার গল্প হল শ্রীময়ী?
একদম ঠিক ধরেছেন। তাই আবারও বলছি এই ধারাবাহিক যে অনেক মহিলাকেই নিজের পায়ে দাঁড়াতে উৎসাহ জোগাবে সে বিশ্বাস রয়েছে আমার।
৩. গোয়েন্দা গিন্নির পরে আবারও একবার অন্য ধাঁচের গল্পে কাজ করছেন। জেনে-বুঝেই এমন গল্পের নির্বাচন, নাকি এই ধাঁচেরই গল্প আসছে আপনার কাছে?
আমার কাজ যাতে মেয়েদের দিশা দেখায়, তাঁদের অনুপ্রাণিত করে, সেই চেষ্টাই থাকে। তাই এমন গল্প নির্বাচনের চেষ্টা করি যা আমাদের সমাজের কথা বলবে, মেয়েদের নিত্য লড়াইয়ের ছবিটা তুলে ধরবে। তাই বলতে পারেন এমন গল্প নির্বাচন কতটা জেনে-বুঝেই করে থাকি।
৪. এর পরেও কি তা হলে এমনই চরিত্রে দেখা যাবে ইন্দ্রাণীকে?
দর্শকরা যাতে নিরাশ না হন, তার জন্য সব সময়ই চেনা ছকের বাইরে গিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি। সেই চেষ্টা এখনও করে চলেছে। তাই যখন যেমন ভাল স্ক্রিপ্ট পেয়েছি কাজ করেছি। যখন পাইনি তখন নিজেকে দূরে রেখেছি। কিন্তু তাই বলে কোনও কিছু নিয়ে আপস করিনি কখনও। আগামী দিনেও করবো না।
৫. আপনার কেরিয়ার শুরু টেলিভিশনে। আজও সমান দক্ষতায় কাজ করে যাচ্ছেন। টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে কেমন বদল এসেছে বলে আপনার মনে হয়?
গত কয়েক বছরে চ্যানেলের সংখ্যা বেড়েছে। তাল মিলিয়ে বেড়েছে কাজের সুযোগও। এখন নিত্য নতুন গল্প নিয়ে কাজ করতে আর কেউ ভয় পায় না। অডিয়েন্সের চিন্তা-ভবনাতেও বদল এসেছে। তারও এখন নতুন কিছু দেখতে চায়। তাই তো নানা ধরনের কাজ হচ্ছে। পারিশ্রমিকও মন্দ নয়। সব মিলিয়ে এখন আর নবাগতদের সেই লড়াইটা করতে হয় না, যেটা আমাদের সময় করতে হত। তখন এত সুযোগ ছিল না। সে সময় অভিনয়কে কেরিয়ার হিসেবে বেছে নেওয়ার সাহস খুব কম লোকেরই ছিল। এখন কিন্তু আর সেই অবস্থা নেই।
৬. আর কোনও প্রজেক্ট কাজ করছেন?
হাতে দু-তিনটে ছবি রয়েছে। তার মধ্যে বেশ কয়েকটার ডাবিংও শেষ। তবে এর বাইরে এখন আর কোনও কাজ করার সময় নেই। শ্রীময়ীর জন্য এতটা সময় চলে যাচ্ছে যে অন্য় কিছু নিয়ে ভাবার সময় পাচ্ছি না। তবে ভাল স্ক্রিপ্টের অপেক্ষায় রয়েছি। তেমন গল্প হাতে এলে সময় সুযোগ মতো কাজ করতে কোনও অসুবিধা হবে বলে তো মনে হয় না।
৭. ইন্দ্রাণী হালদার মানেই সিরিয়াল হিট। এত বছর পরেও এমন প্রত্যাশার চাপ সহ্য করে এতটা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পান কোথা থেকে?
বললে হয়তো অবাক হবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার কাজ নিয়ে নানা সময় নানা লেখা চোখে পরে। দর্শকদের এমন উৎসাহ দেখে আরও ভাল কাজ করার ইচ্ছা জাগে, অনুপ্রাণিত হই বই কী। বলতে পারেন আমার দর্শকরাই আমাকে প্রতিনিয়ত উৎসাহ দিয়ে চলেছে।
৮. সব শেষে একটা প্রশ্ন দিদি, হঠাৎ জি বাংলা ছেড়ে স্টার জলসায় কাজ কাজ শুরু করলেন কেন?
এটা ঠিক যে এর আগে স্টার জলসায় কাজ করা হয়ে ওঠেনি। তবে গত কয়েক বছরে স্টার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কয়েক বার কথা হয়েও নানা কারণে কাজ করা করা হয়নি। এবার গল্পটা এত ভাল ছিল যে রাজি না হয়ে উপায় ছিল না। স্টারের সঙ্গে কাজ করতেও মন্দ লাগছে না। আগামী দিনে ভাল প্রজেক্ট পেলে স্টারের সঙ্গে আরও কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!