যাঁরা শিরোনাম পড়ে যে ভাবছেন এটা আবার একটা আলোচনা করার বিষয় হল, তাঁদের উদ্দেশ্যে বলি, আপনারা কি আদৌ জানতেন যে, ছোট এলাচ হল পৃথিবীর সবচেয়ে দামি গরম মশলা, জিরে হল গিয়ে আসলে পার্সলে পাতার জেঠতুতো ভাই আর হলুদ হল আদার মাসতুতো বোন? জানেন যখন না-ই তখন তা জানতে কোনও ক্ষতি আছে কি? প্রতিদিন বাঙালি হেঁশেলে যে মশলাগুলি (interesting facts about Indian spices) আমরা ব্যবহার করি, যেগুলো ফোড়নে দিই, সেগুলো সম্বন্ধে আসলে খুবই কম জানি আমরা। তাই আজ সেই চেনা মশলাপাতির অচেনা কিছু গুণের কথা আলোচনা করব আমরা।
দারচিনি

এই ভারতীয় উপমহাদেশীয় মশলাটি এখন জায়গা করে নিয়েছে বিদেশি কিচেনেও। উপমহাদেশীয় বলছি কেন? কারণ, আদতে এটি শ্রীলঙ্কার মশলা। তখন এই দ্বীপপুঞ্জটিও ভারতীয় উপমহাদেশেরই অংশবিশেষ ছিল।
একটু কাঠ ধাঁচের গন্ধওয়ালা এই মশলাটি এখন পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নিয়েছে বিদেশি রান্নাঘরেও। সেখানকার কেক, পেস্ট্রি ও নানা ধরনের ডেসার্টে দারচিনি ছাড়া এখন চলেই না!
এক চিমটি দারচিনি গুঁড়োই যথেষ্ট এক ডেকচি পায়েসের জন্য। আর এই মশলাটি যে শুধু রান্নায় স্বাদ-গন্ধ যোগ করে, তাই নয়। দারচিনি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে, ক্যান্সার ও পার্কিনসন্সের মতো কঠিন রোগের সঙ্গে লড়াই করার জোরও যোগায়।
হলুদ

একমাত্র ভাত আর রুটি ছাড়া আর সব ভারতীয় রান্নাতেই নাকি হলুদ ব্যবহার করা যেতে পারে! এই মশলাটি আমাদের যে-কোনও রান্নায় কতটা জরুরি তা বোঝা যায় রান্নাঘরে হলুদের শিশিটি খালি হয়ে গেলে!
রান্নায় ব্যবহার শুরু হওয়ার আগে প্রাচীন ভারতে হলুদ ব্যবহার করা হত ঔষধি হিসেবে! এর অ্যান্টিসেপটিক গুণের কারণেই এই ব্যবহার করা হত।
আদতে কিন্তু হলুদ আদার ভাই! মানে, একই পরিবারের অংশ। রান্না এবং অসুখ সারানো ছাড়াও হলুদ কিন্তু স্বাভাবিক ডাই হিসেবেও ব্যবহার করা হয়!
কালো জিরে

কালো জিরে ফোড়ন দিয়ে রুই কিংবা ইলিশ মাছের পাতলা ঝোল আর গরম ভার, দুপুরে একটা মিষ্টি ঘুম আনতে এর চেয়ে বেশি কিছু চাই না বাঙালির!
সাধারণত পূর্ব ভারতীয় রান্নাতেই কালো জিরে বেশি ব্যবহার করা হয়। তা ছাড়াও নান, তন্দুরি রুটি, নানা ধরনের নানখাটাই বিস্কুট ইত্যাদিতেও এই ছোট্ট কালো মশলাটি দেওয়া হয়।
বাঙালি রান্নায় পাঁচ ফোড়ন বলে যে মশলার মিক্সচারটি আছে, কালো জিরে তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কালো জিরে এবং পাঁচ ফোড়ন, দুটিই ফোড়ন হিসেবে বাঙালি হেঁশেলে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়!
এই মশলাটির স্বাদ একটু তিতকুটে। আর কাঁচা কালো জিরে খাওয়া যায় না। তাই তেলে ভেজে কিংবা ড্রাই রোস্ট করে তবে এই মশলা রান্নায় দেওয়া হয়।
জিরে

ধনে আর জিরে, এই দুটো মশলা ছাড়া বাঙালি তথা ভারতীয় রান্নাঘরের কথা চিন্তাও করা যায় না, তা সে আপনি গোটাই ব্যবহার করুন কিংবা গুঁড়ো।
জানেন কি, ভারতীয়রা রান্নাতে যখন থেকে প্রথম মশলা ব্যবহার শুরু করেন, তখন থেকেই জিরে ব্যবহার হয়ে আসছে! প্রথমে গোটা ও তারপর বাটা জিরে দেওয়া শুরু হয় রান্নায়।
এই মশলাটি ভারতীয় হলেও, এর জাতভাই কিন্তু খাঁটি ইতালিয়ান। তার নাম পার্সলে!
কাঁচা জিরে কখনও রান্নায় ব্যবহার করা হয় না। যে গোটা জিরে আমরা দোকান থেকে কিনে আনি, সেটিও কিন্তু শুকনো খোলায় ভাজা থাকে।
হিং

জানি, সাধারণ বাঙালির কাছে এই শব্দটা আর কচুরি-ছোলার ডাল একেবারে একাকার হয়ে গিয়েছে! কিন্তু হিং সম্বন্ধে এই তথ্যগুলি আদৌ জানতেন কিনা দেখুন তো!
এটিও পার্সলে পাতার আত্মীয়! এই মশলাটির গন্ধ এতটাই তীব্র যে, কাঁচা ব্যবহারও করা যায় না। হিং সবসময় আমরা ফোড়ন হিসেবে ব্যবহার করি, তা-ও এটি তেলে দেওয়া হয় অন্য সব মশলা দেওয়ার আগে।
সারা দেশে নানা রান্নায় এটি ব্যবহৃত হলেও মূলত কাশ্মীর ও পঞ্জাবেই হিংয়ের চাষ হয়।
জাফরানের মতো অতটা না হলেও হিংও কিন্তু বেশ দামি মশলা। একে দাম বেশি আর বেশিদিন ধরে এটি জমিয়ে রেখে দিলে গন্ধও চলে যায় বলে দেখবেন, বাজারে সব সময় হিং ছোট ডিবেতেই বিক্রি করা হয়!
POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!
বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন #POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!