স্মার্টফোন (phone)। বর্তমান যুগে একাধারে বন্ধু এবং শত্রুও বটে। এর সঠিক ব্যবহার যেমন আপনাকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করবে, তেমনই এর ভুল ব্যবহারের ফলে চরম বিপদও আসতে পারে। আর যখন স্মার্টফোন আপনার সন্তান ব্যবহার করছে, তখন তো চিন্তা থাকে অনেক গুণ বেশি।
ছোটদের স্মার্টফোন নিয়ে অন্য আকর্ষণ থাকেই। আর এখন প্রায় সকলের কাছেই স্মার্টফোন। সুবিধের জন্যই হয়তো আপনি সন্তানকে স্মার্টফোন কিনে দিয়েছেন। টিউশন থেকে ফিরতে দেরি হলেও যেমন সে আপনাকে ফোন করে জানিয়ে দিতে পারছে, ঠিক তেমনই কোনও প্রজেক্টের জন্য কোনও ইনফরমেশন প্রয়োজন হলে নিজেই ফোনে গুগল ঘেঁটে দেখে নিচ্ছে।
এ তো গেল স্মার্টফোনের পজিটিভ দিক। কিন্তু এর বিপদও তো কম নয়। আর সেই আশঙ্কাতে অনেক মা নিজের সন্তানের (kid) ফোন চেক করেন। কখনও প্রকাশ্যে। কখনও বা লুকিয়ে। তার ফোনে হোয়াটস্অ্যাপ বা ছবির গ্যালারি আলাদা করে চেক করাটা যেন মায়েদের কর্তব্য। কখনও ভেবে দেখেছেন, আপনার এই আচরণ কতটা ঠিক? আপনার সন্তানের প্রাইভেসিকে তো একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না, বরং তাকে অবিশ্বাস করছেন। কখনও বা মায়েরা সন্তানের নিরাপত্তার অজুহাতে ফোন চেক করেন। সেটাই কি আদৌ ঠিক, ভেবে দেখুন। এই পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী অনেকেই। ঠিক কী করবেন বলুন তো?
১) প্রাথমিক ভাবে সন্তানকে বিশ্বাস করুন। অবিশ্বাসের ভিতের উপর কোনও সম্পর্কই মজবুত হতে পারে না।
২) যে কোনও সমস্যায় সন্তান যাতে আপনার কাছে সব কথা খুলে বলতে পারে, সেই স্পেসটা রাখুন। আপনাকে ভয় পেয়ে লুকিয়ে রাখার প্রবণতা সন্তানের মধ্যে যেন তৈরি না হয়।
৩) স্মার্টফোন সন্তানের হাতে দেওয়ার সময়ই এর খারাপ দিকগুলো বুঝিয়ে বলুন। কোনও অচেনা ব্যক্তিকে ফোন নম্বর দেওয়া বা তার সঙ্গে কোনও মাধ্যমে চ্যাট করা হয়তো বিপদ ডেকে আনতে পারে, সে বিষয়ে সতর্ক করে দিন।
৪) ইন্টারনেট ব্যবহারের খারাপ দিকটা সন্তানকে বুঝিয়ে বলুন। সাইবার ক্রাইম সম্পর্কে সাধারণ ধারণা থাকা প্রয়োজন।
৫) আপনার সন্তানের বন্ধু এবং তাদের বাবা-মায়ের সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকা প্রয়োজন। সন্তান কোথায় কোথায় যেতে পারে, সে সম্পর্কে আপনার জেনে নেওয়া জরুরি।
৬) স্মার্টফোনে সন্তানের ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রবণতার উপর লক্ষ্য রাখতে পারেন। কিছু অস্বাভাবিক মনে হলে সরাসরি কথা বলে নিন।
৭) সারাক্ষণ স্মার্টফোনে কথা বলা বা চ্যাটে যদি আপনার সন্তান ব্যস্ত থাকে, তাহলে দিনভর ফোনে ডুবে থাকার কারণ জেনে নিন।
৮) সর্বোপরি আপনি তার প্রাইভেসিকে সম্মান করছেন, এই বোধটা সন্তানের মধ্যে তৈরি হতে হবে। আপনি জোর করে তার বিষয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না, এটা বুঝিয়ে দিন। কোনও ভাবেই অবিশ্বাস করে তার ফোন ঘাঁটছেন না, এই বোধটা সন্তানের মধ্যে তৈরি করুন। যাতে সমস্যায় পড়লে প্রথমেই আপনার সঙ্গে শেয়ার করার স্পেসটা তৈরি হয়।