কান চলচ্চিত্র উৎসব (cannes) নিয়ে কানাকানির শেষ নেই! কে কীরকম সাজে সাজল, কে কী পরল, সেই নিয়ে আদিঅন্ত চর্চা হয়েই চলেছে। এর মধ্যে একটা নিরীহ প্রশ্ন কখন যে এই বিশাল-বিশাল গাউনের ভারে চাপা পড়ে গেছে সেই খেয়াল কেউ করেনি, বা বলা চলে করতে চায়নি। আর সেই প্রশ্ন হল, এটা তো সিনেমার উৎসব নাকি? তা হলে সিনেমা নিয়ে কেউ একটাও শব্দ খরচ করছে না কেন? দুঃখের বিষয় হল, যে ভারতীয় নায়িকাদের সাজপোশাক নিয়ে এত মাতামাতি, কিন্তু ভারতীয় ছবি নিয়ে কেউ কিস্যু বলছে না।
আসলে বলার মতো কিছু নেই! কানে কোনও ভারতীয় ছবিই কোনওরকম ছাপ রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। আর তার মধ্যেই আশার আলো জাগিয়েছেন মধুরা পালিত (Modhura Palit)। সিনেমাটোগ্রাফিতে বিভাগে এনজেনেয়াক্স স্পেশাল এনকারেজমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন (awarded) আমাদের শহর কলকাতার (Kolkata) মেয়ে মধুরা পালিত। আর শুধু তাই নয় মধুরাই প্রথম ভারতীয়, যিনি এই সম্মান পেলেন!
এই ঘটনা এতটাই আশ্চর্য করে দেওয়ার মতো যে, মধুরার কাছে যখন প্রথম এই বিষয়ে মেল আসে, তিনি বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না! তাঁর মনে হয়েছিল, এই নিয়ে কেউ কোনও ঠাট্টা করছে। পরে অবশ্য আবার এই বিষয়ে মেল আসে ইন্ডিয়ান উইমেন সিনেমাটোগ্রাফার সংস্থার তরফ থেকে। সেখান থেকেও জানানো হয় যে, এবারের কান চলচিত্র উৎসবে এনজেনেয়াক্স স্পেশাল এনকারেজমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন তিনি। এবার আর এই মেল এড়িয়ে যেতে পারেননি মধুরা। বুঝতে পেরেছেন খবরটা সত্যি।
ক্যামেরার সঙ্গে মধুরার এই প্রেম একদম ছোটবেলা থেকেই শুরু। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে মধুরার বাবা এবং মা দুজনেই ফোটোগ্রাফার। ছোটবেলা থেকেই নানা রকমের ক্যামেরা এবং তার লেন্স দেখতে-দেখতে বড় হয়েছেন তিনি। তখনই একটা ভাল লাগা জন্মে গিয়েছিল মনের মধ্যে। পরে যেটা ভালবাসায় পরিণত হয়। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়ার সময় মধুরা বুঝতে পারেন, সিনেমাটোগ্রাফিই হচ্ছে তার প্রিয় বিষয়। এটা নিয়েই তিনি পড়াশোনা করতে চান। শুনতে একটু অদ্ভুত লাগলেও, মধুরা বুঝতে পেরেছিলেন অন্য কিছু নিয়ে পড়াশোনা করলে বা কেরিয়ার গড়লে সেটা তার ভুল সিদ্ধান্ত হবে। ছেলেমেয়েদের উপর জোর কিছু চাপিয়ে দেওয়ার ঘোর বিরোধী মধুরা। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে একটা স্টুডিয়ো আছে। সেখানে আলোর কাজ করতে গিয়ে মধুরার এই ধারণা বদ্ধমূল হয়।
সেন্ট জেভিয়ার্স থেকে স্নাতক হওয়ার পর, এসআরএফটিআই (SRFTI) বা সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট থেকে পড়াশোনা করেন মধুরা। এখনও পর্যন্ত কম বাজেটের ছবিতেই কাজ করেছেন মধুরা। তবে সেই প্রত্যেকটা ছবি প্রশংসা কুড়িয়েছে সমালোচকদের কাছ থেকে। ‘দ্য পেপার বয়’, ‘ওয়াচমেকার,’ ‘দ্য লাস্ট রেন’ এ ক্যামেরার কাজ দেখে অনেকেই বলেছেন মধুরার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। যদিও সেই বিষয়ে নিজেই যথেষ্ট দ্বিধায় আছেন তিনি। মধুরার বক্তব্য, হিন্দি ও বাংলা দুটো ভাষাতেই সিনেমার ইন্ডাস্ট্রি পুরুষ শাসিত। এখানে একজন মহিলাকে ক্যামেরার পিছনে দেখতে অনেকেই অভ্যস্ত নয়। আজকের দিনে কোনও কাজেই আর ছেলে মেয়ের বিভেদ নেই। তবুও নানা ধরণের মন্তব্য শুনতে হয় এই কৃতি মহিলাকে। আশা করা যায় মধুরার এই পুরস্কার মানুষের ধ্যান ধারণায় কিছুটা হলেও পরিবর্তন আনবে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!
Picture Courtsey: Facebook Account of Modhura Palit