কঙ্কনা সেনশর্মা (Konkona Sen Sharma)। কেউ বলবেন দুরন্ত অভিনেত্রী। কেউ বলবেন বুদ্ধিমতী, সুন্দরীও। কেউ বা বলবেন অপর্ণা সেনের মেয়ে। এসব পরিচয় ছাপিয়ে গত কয়েক বছরে কঙ্কনার আরও একটি সত্ত্বা সামনে এসেছে। আর তা হল পরিচালক সত্ত্বা। প্রথম ছবি ‘আ ডেথ ইন দ্য গঞ্জ’-এর অন্যরকম চিত্রনাট্য ভাবিয়েছিল দর্শককে। পাশাপাশি গল্প বলার মুন্সিয়ানায় নিজের জাত চিনিয়েছিলেন কঙ্কনা। আফটার অল তাঁর রক্তে সিনেমা! তাই অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনাতেও যে নিজস্ব ঘরানার ছাপ রাখবেন, তেমন প্রত্যাশা ছিলই। সে ছবি মুক্তি পেয়েছিল বছরদুয়েক আগে। তার পর দীর্ঘ বিরতি। ফের পরিচালনায় ফিরছেন কঙ্কনা। এবার হাত দিচ্ছেন ওয়েব সিরিজে (web series)।
কঙ্কনার এবারের বিষয় আরতি দাশ। কে তিনি? আক্ষরিক অর্থে কলকাতার (kolkata) প্রথম বাঙালি বার ডান্সার। চিনতে অসুবিধে হচ্ছে? আচ্ছা, মিস শেফালিকে (miss shefali) মনে পড়ে? এতক্ষণে আইডেন্টিফাই করতে পেরেছেন নিশ্চয়ই। একটা সময় কলকাতায় সন্ধে নামত মিস শেফালির নামে।তাঁর আসল নাম যে আরতি তা হয়তো আজও অনেকেরই অজানা। স্ট্রাগলের ইতিহাস পেরিয়ে বৈভবের চূড়ায় পৌঁছেছিলেন তিনি। সেসবই কঙ্কনা ফ্রেমবন্দি করবেন বলে খবর। পাশাপাশি ছয়ের দশকে বাংলার রাজনীতিও নাকি জায়গা করে নেবে ওই ওয়েব সিরিজে।
আরতির জন্ম বাংলাদেশে। দেশভাগের সময় তিনি কলকাতায় আসেন। বেঁচে থাকার রসদ জোগাড় করতেই নাচ শুরু করেন। মাত্র ১৩ বছর বয়সে ফারপোজ হোটেলে প্রথম ক্য়াবারে নাচেন তিনি। তার পর ধীরে-ধীরে তৎকালীন কলকাতার সাংস্কৃতিক জগতের নামীদামি ব্যক্তিত্বদের চোখে পড়েন। অভিনেতা তরুণকুমারের হাত ধরে আসে প্রথম মঞ্চে অভিনয়ের সুযোগ। একে একে ‘চৌরঙ্গী’, ‘সম্রাট সুন্দরী’, ‘সাহেব বিবি অউর গুলাম’-এর মতো ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান আরতি। এমনকী, সত্যজিৎ রায়ও তাঁর দুটি ছবি ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ এবং ‘সীমাবদ্ধ’তে আরতিকে কাস্ট করেছিলেন। হাওয়াইয়ান ডান্স দিয়ে বিখ্যাত হয়েছিলেন শেফালি। স্বয়ং উত্তমকুমারও তাঁর গুণমুগ্ধ ছিলেন। অবশ্য সে সময় তিনি কলকাতার ‘কুইন অব ক্যাবারে’।
আটের দশকে নাচ ছেড়ে দেন শেফালি। তারপর বহু সিনেমার অফার এলেও তিনি ফিরিয়ে দেন। কারণ? একবার এক সাক্ষাৎকারে শেফালি জানিয়েছিলেন, সকলেই ছবিতে তাঁর প্রোফেশনের গ্ল্যামারকে ব্যবহার করতে চাইতেন। চাইতেন, শরীরী প্রদর্শন। কিন্তু বহু স্ট্রাগলের পর নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করে ফেলা শেফালির সেসব করতে আর মন চায়নি। আক্ষেপ ছিল, তাঁকে নিয়ে কেউ কোনও ছবির কথা ভাবেননি। সম্ভবত সেই আক্ষেপের এবার অবসান। কঙ্কনার ওয়েব সিরিজ জুড়ে থাকবে শেফালিরই জীবন।
লড়াই করে নিজের শর্তে জীবন বাঁচা মেয়েরা সব সময়ই কঙ্কনাকে ইন্সপায়ার করে। তিনি তাঁদের নিয়ে কাজও করতে চান। আর কলকাতার মেয়ে হওয়ার ফলে শেফালির ইতিহাস তাঁর জানা। কঙ্কনা জানিয়েছেন, এখনও কাস্ট ফাইনাল হয়নি। স্ক্রিপ্ট নিয়েও কাজ চলছে। পরের বছরের গোড়ার দিকে শুরু হতে পারে তাঁর নতুন ওয়েব সিরিজের শুটিং। তবে এই সিরিজ কোন ভাষায় হবে এবং কোন ওয়েব স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে তা দেখানো হবে, সে বিষয়ে এখনও মুখ খোলেননি পরিচালক!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!