রিকিতা আর অঙ্কনের কাগজ দেখে সম্বন্ধ করে বিয়ে (arranged marriage) হয়েছে। বিয়ের বয়স মাত্র এক বছরও পেরোয়নি কিন্তু দু’জনের মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে নানা সমস্যা। বিশাল বড় কোনও বিষয় নিয়ে কিন্তু ওঁদের মধ্যে সমস্যা নেই, ছোট ছোট তুচ্ছ কারণে প্রথমে কথা কাটাকাটি, তারপর সেখান থেকে জল গড়িয়ে ঝগড়া-অশান্তি! অন্যদিকে অঙ্কনেরই ছোটবেলার বন্ধু সৌম্য আর তার স্ত্রী সুরঞ্জনার লাভ ম্যারেজ (love marriage)। কলেজে বন্ধুত্ব, সেখান থেকে বেশ কয়েক বছর চুটিয়ে প্রেম করে একে অন্যকে ভাল করে দেখে-বুঝে তারপর ছাদনাতলায় এসেছিল ওঁরা। কিন্তু ওই, বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ওঁদের মধ্যেও ধুন্ধুমার কান্ড।
জানেন, আমি আমার কিশোরীবেলা থেকে একটা কথা শুনে এসেছি, সম্বন্ধ করে হওয়া বিয়ে নাকি বেশি সুখের হয়; আর ভালবেসে বিয়ে করলে নাকি সে বিয়ে সুখের হয় না। বিশ্বাস করুন, আজ পর্যন্ত এই বক্তব্যের পিছনে থাকা মহান কারণটি আমার জানা হয়নি। তবে, আমার যা মনে হয়, কোনও সম্পর্কই (relationship) ‘পারফেক্ট’ হয় না, তাকে ‘পারফেক্ট’ করে তুলতে হয়।
আবার অনেকে বলেন, ভালবেসে বিয়ে করলে নাকি সে বিয়ে টিকে থাকার সম্ভাবনা বেশি, সে বিয়ে সুখের হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। কারণ, একে অন্যকে অনেকদিন ধরে চেনেন, কার কি পছন্দ-অপছন্দ সে সম্পর্কে ওয়াকিবহল হওয়া সুবিধে। আসলে ব্যাপারটা হল, আপনি যখন কারও সঙ্গে একটি রোম্যান্টিক সম্পর্কে থাকেন, কিন্তু ২৪ ঘন্টা বা দিনের পর দিন তাঁর সঙ্গে থাকেন না; ফলে সামনের মানুষটি সম্পর্কে সব কিছু খুটিনাটি জেনে ফেলাও সম্ভব হয় না। এমন অনেক বিবাহিত দম্পতি আছেন, যারা হয়ত একে অন্যকে ভালবেসে বহুদিনের সম্পর্কে থাকার পর বিয়ে করেছেন, কিন্তু সে বিয়ে সুখের হয়নি। আবার অন্যদিকে এমনও অনেকে আছেন যাদের রীতিমত সম্বন্ধ করে বিয়ে হয়েছে, বিয়ের আগে হয়ত একে অন্যকে ভালভাবে তাঁরা চিনতেনও না, কিন্তু বিয়ের পর সম্পর্কে কোনওদিন ভাঙন ধরেনি! আসলে বিয়ে ব্যাপারটাই একটা জটিল কিন্তু সহজ খেলা। আর এই খেলার নিয়মগুলো যদি আপনি ঠিকঠাক জানেন এবং কখন কোন দান দিতে হবে সে বিষয়ে ধারণা থাকে, তাহলে যে-কোনও সম্পর্কই খুব ভালভাবে টিকে যায়।
কীভাবে সুখী দাম্পত্য এনজয় করবেন, সে বিষয়ে কয়েকটি ছোট্ট টিপস দিয়ে দিই বরং
১। আপনাদের কাগজ দেখে বা ম্যাট্রিমনিয়াল সাইট দেখে সম্বন্ধ করে বিয়ে হোক বা বেশ কয়েক বছর চুটিয়ে প্রেম করে তারপরে বিয়ে হোক, বিয়ের পরে আপনাদের সম্পর্কটা কেমন হবে তা সম্পূর্ণভাবে আপনাদের দু’জনের উপরে নির্ভর করে। এই কথাটা মাথায় খুব ভাল করে গেঁথে নিন।
২। আপনারা দু’জনে দুটো আলাদা মানুষ। সম্বন্ধ করে বিয়ে হলে তো বটেই, কিন্তু যদি একে অন্যের সঙ্গে ভালভাবে মিশে তারপরেও বিয়ে করেন, সেক্ষেত্রেও কিন্তু এটা মনে রাখা জরুরি যে আপনি যেমন আপনার সঙ্গী তেমন নাও হতে পারেন! আপনার যদি পটলের তরকারি খেতে ভাল লাগে, এটা জরুরি না যে তাঁর মাছের ডিমের ঝোল ভাল লাগবে না! একে অন্যের পছন্দকে সম্মান করুন। সম্ভব হলে আপনিও তাঁর পছন্দকে আপন করে নেওয়ার চেষ্টা করুন আর তাঁকেও বলুন আপনার পছন্দ-অপছন্দগুলো মাথায় রাখতে।
৩। আপনাদের যদি ভালবেসে বিয়ে হয়, সেক্ষেত্রে একটা কথা মাথায় রাখুন যে বিয়ের আগে ও পরে কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়। বিয়ের আগে কারও কাঁধেই বিশাল দায়িত্ব থাকে না, কিন্তু বিয়ের পর দুজনের কাঁধেই কিন্তু কিছু কিছু দায়িত্ব এসে পড়ে। কাজেই বিয়ের আগে যদি আপনার প্রেমিক আপনাকে সারাদিনে তিনশ বার ফোন করে খোঁজ নিতেন, কিন্তু বিয়ের পর আপনার বর দু’বারের বেশি ফোন করেন না – এই কারণে যদি আপনি রেগে যান, তাহলে মুশকিল!
POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!