আমরা যখন নিঃশ্বাস বন্ধ করে পিভি সিন্ধুর লড়াই দেখছি। আর মনে মনে প্রার্থনা করছি যাতে সিন্ধু সফল হয়ে দেশের জন্য সোনা নিয়ে আসেন। তেত্রিশ কোটি ভারতীয়র আশা পূর্ণ করে সিন্ধু শুধু যে সোনা এনেছেন তা নয়, নিয়ে এসেছেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের খেতাব। আর আলোকজ্জ্বল সিন্ধুর আড়ালে কার্যত অন্ধকারেই রয়ে গেল আরও এক ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নের সাফল্য। সিন্ধুর বিশ্ব জয়ের ঠিক এক ঘণ্টা আগে প্যারাপ্লেজিক ব্যাডমিন্টন (badminton)চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণ (gold) পদক পেলেন তিরিশ বছরের মানসী জোশী (Manasi Joshi)। আপনি হয়তো ভাবছেন সিন্ধুর লড়াই অনেক কঠিন ছিল। ব্যাডমিন্টনে বিশ্বের এক নম্বর হওয়া কি আর মুখের কথা? তাহলে আপনাকে বলি, মানসীর একটি পা নেই! একদম ঠিক শুনেছেন। এই প্যারা ব্যাডমিন্টন আয়োজিত হয় তাঁদের জন্য যারা নিম্নাঙ্গের কোনও প্রত্যঙ্গে অসুবিধে আছে। মূলত দুটি পা নেই বা অচল বা একটি পা নেই এরকম প্রতিযোগীরা এখানে অংশগ্রহণ করে থাকেন। যাঁদের পায়ে সমস্যা থাকার দরুন তাঁরা ভাল করে দৌড়তে পারেন না বা নিজের শরীরের ভার বহন করতে পারেন না, তাঁরাও এই প্রতিযোগিতায় নাম দিতে পারেন। কিন্তু সিন্ধুকে নিয়ে মিডিয়া যতটা মাতামাতি করছে ততটা প্রচারের আলো মানসী পাননি। হয়তো তিনি শারীরিক দিক থেকে সক্ষম নন বলেই এই বিষয়টি ঘটেছে। কিন্তু সিন্ধুর মতো মানসীর জয়ও খুব সহজ ছিল না। কারণ মানসীর উল্টো দিকে প্রতিপক্ষ হিসেবে ছিলেন ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের দক্ষ খেলোয়ার পারুল পারমার। ব্যাডমিন্টন জগতে পারুলের নাম সর্বজনবিদিত। তাঁকে বলা হয় হেভিওয়েট প্লেয়ার। বোঝাই যাচ্ছে মানসীর কাছে বেশ কঠিন প্রতিপক্ষ ছিলেন তিনি।
নয় বছর বয়স থেকে ব্যাডমিন্টন খেলছেন মানসী। কিন্তু ২০১১ সালে একটি দুর্ঘটনায় তাঁর পা বাদ যায়। তাঁর পরেও হার মানেননি তিনি। কঠোর পরিশ্রম শুরু করেন কৃত্রিম পা নিয়েই। ২০১৫ সাল থেকে প্যারা ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় নাম দিতে শুরু করেন তিনি। ভারতীয় দলের কোচ গৌরব খান্না মানসীর এই জয়ে উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, “এর আগে পারুলের কাছে সব কটা ম্যাচে হেরে গিয়েছিল মানসী। ওর মনের মধ্যে আগুন জ্বলছিল। সেই আগুনই ওকে আজ চ্যাম্পিয়নের মর্যাদা দিল।” পুল্লেলা গোপীচাঁদের অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন মানসী। নিজের এই জয় তিনি নিজেকেই উৎসর্গ করলেন। গর্বের সঙ্গে বললেন, এই জয় তাঁকে পেতে হয়েছে অনেক কষ্ট করে। কেউ তাঁর হাতে এসে সোনার মেডেল তুলে দেয়নি। মানসীর উক্তি, “আই আর্নড দিস গোল্ড” বেশ জনপ্রিয় হয়েছে নেটিজেনদের মধ্যে। সিন্ধুর মতোও তিনিও অমানুষিক পরিশ্রম করেছেন এই স্বর্ণ পদক পাওয়ার জন্য। স্টেফি গ্রাফের অন্ধ ভক্ত এই প্রতিভাকে অসংখ্য অভিনন্দন। আগামী দিনে তাঁর আরও সাফল্য কামনা করি।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!