“হ্যাঁ রে দিদিভাই, এই মি টু মুভমেন্টটা কি রে?” খাবার টেবিলে বসে দিদা হঠাত করে জিজ্ঞেস করলেন। সত্যি বলতে কি আমি একটু অবাকই হচ্ছিলাম কারণ দিদার থেকে এই প্রশ্নটা আমি আশা করিনি। দিদাকে জিজ্ঞেস করলাম, “তুমি মি টু মুভমেন্টের কথা কি করে জানলে?” তাতে আবার দিদার উত্তর, “ওই কাগজে পড়ছিলাম!” দিদার প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ‘মি টু মুভমেন্ট’ সম্বন্ধে আমি যা যা জানি বলতে আরম্ভ করলাম। তনুশ্রী দত্ত-নানা পাটেকর থেকে আরম্ভ করে বিনোদন জগতের অনেকের কথাই উঠে এলো, কথা বলতে বলতে। দিদা ভাবছিল যে শুধুমাত্র হয়ত বিনোদন জগতেই এই আন্দোলন হয়েছে, আর দিদা আমাকে অবাক করে আরও একটা কথা বললেন, “তার মানে তনুশ্রী দত্তই এই মি টু মুভমেন্ট আরম্ভ করেছে বল?” আমি না হেসে পারলাম না। আসলে আমার দিদার মতো আরও অনেকেই আছেন, যারা হয়ত ‘মি টু মুভমেন্ট’-এর কথা শুনেছেন কিন্তু সেটি কি, কবে আরম্ভ হয়েছিল, কে আরম্ভ করেছিলেন আর কেনই বা হয়েছিল, সে সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞান নেই।
মি টু মুভমেন্ট ব্যাপারটা কি?
সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট এবং যৌন নিপীড়ন ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে সোচ্চার হবার একতা সোশ্যাল ক্যাম্পেন হল মি টু মুভমেন্ট। যে সমস্ত মহিলারা কোনও না কোনও ভাবে কখনও যৌন নিপীড়ন ও শোষণের শিকার হয়েছেন, তাঁদেরকে বাঁচার একতা পথ দেখানর জন্য ২০০৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আরম্ভ হয় এই মুভমেন্ট বা আন্দোলন। কিন্তু ২০০৭ সালের মাঝামাঝি হলিউডের একজন বড় মাপের প্রযোজক হারভে ওয়েন্সটাইনের বিরুদ্ধে যখন সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট করার অভিযোগ আনা হয়, তখন অনলাইনে মি টু মুভমেন্ট-এর খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। অনেক মহিলাই তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে নিজেদের টুইটার হ্যান্ডেলে #MeToo বলে অভিযোগ জানান, এঁদের মধ্যে অ্যালিশা মিলানো এবং অস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী জেনিফার লরেন্সও ছিলেন যারা এই আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন।
কে প্রথম এই আন্দোলন আরম্ভ করেন?
নিউ ইয়র্ক সিটির একজন সমাজসেবিকা তারানা বুর্ক আজ থেকে প্রায় ১০ বছর আগে এই মি টু মুভমেন্ট আরম্ভ করেছিলেন। নিম্নবিত্ত কালো মেয়েদের ওপরে যে যৌন নিপীড়ন হচ্ছিল তার প্রতিবাদে তিনি এই আন্দোলন আরম্ভ করেছিলেন। কম বয়সি এই মেয়েগুলিকে সাপোর্ট দেবার জন্য এবং তাঁরা যে একা নন সেটা বোঝাতে তিনি দুটি শব্দের সাহায্য নেন আর সেই থেকেই ‘মি টু’-র প্রচলন।
এরপরে যখন অ্যালিশা মিলানো তার টুইটার হ্যান্ডেলে #MeToo দিয়ে নিজের ওপরে হওয়া সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের (sexual harrasment) কথা লেখেন তখন আবার এই আন্দোলন সোচ্চার হয়।
ভারতে মি টু মুভমেন্ট
মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের পর পৃথিবীর নানা প্রান্তে এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে, জাপান, ফ্রান্স এবং ইতালির পর ভারতেও মি টু মুভমেন্ট দেখা যায়। বলিউডের অভিনেত্রী রাধিকা আপ্তে এবং কল্কি কোচলেন এই আন্দোলনে সরব প্রতিবাদ জানান। এই আন্দোলন এতটাই প্রবল ছিল যে বলিউডের আরও অনেকে এবং বলিউডের বাইরেও অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রির অনেক মহিলাই নিজেদের ওপরে হওয়া যৌন নিপীড়ন এবং শোষণের কথা সবার সামনে এসে বলেন এবং মি টু মুভমেন্ট এক অন্য পর্যায়ে চলে যায়। ভারতে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট এবং যৌন শোষণ কতটা প্রবল সে সম্বন্ধে অভিনেত্রী রিচা চাড্ডাও তার ব্লগে লেখেন। এঁদের দেখাদেখি আরও অনেক সাধারণ মহিলাও মুখ খোলেন নিজেদের ওপরে হওয়া অত্যাচারের ব্যাপারে।
তবে অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত যখন গতবছর সেপ্টেম্বরে বলিউডের অভিনেতা নানা পাটেকরের বিরুদ্ধে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের অভিযোগ আনেন তখন মি টু আন্দোলন চরমে পৌঁছয়। তনুশ্রী জানান যে ২০০৮ সালে যখন ‘হর্ন ওকে প্লিজ’-এর শুটিং চলছিল সেই সময়ে নাকি নানা তার সাথে আপত্তিকর আচরণ করেছিলেন, সেকথা সিনেমার অন্যান্য কলাকুশলীদের জানানো সত্বেও তাঁরা নানার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেন নি সেই সময়ে। ফলে তনুশ্রী ওই সিনেমার কাজ থেকে নিজেই বেরিয়ে যান। তিনি সেই সময়ে প্রকাশ্যে এই ঘটনার কথা জানালেও কারও কাছ থেকে কোনও সাহায্য তো পাননি, উলটে তাকে বার বার হুমকি দেওয়া হয় এবং অ্যাটাকও করা হয় বলে তিনি জানিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতে যখন তিনি এই মি টু মুভমেন্ট দেখেন তখন আবার তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে তার ওপরে হওয়া অত্যাচারের বিরুদ্ধে আবার তিনি সরব হবেন।
তবে শুধুমাত্র যে বলিউডে এই সমস্যা হয়েছে অর্থাৎ মহিলাদের ওপরে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট হয়েছে তা নয়, বিনোদন জগতের আরও অন্যান্য ক্ষেত্রেও অনেক মহিলাই তাঁদের পুরুষ সহকর্মীদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন। AIB-র প্রাক্তন কমেডিয়ান এবং লেখক উৎসব চক্রবর্তির বিরুদ্ধে তারই এক মহিলা সহকর্মী সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের অভিযোগ করে মি টু মুভমেন্টে সামিল হয়েছেন। শুধু তাই নয়, ‘কুইন’-এর পরিচালক বিকাশ ভাল-এর বিরুদ্ধেও ফ্যান্টম ফিল্মস-এর একজন প্রাক্তন মহিলা কর্মচারী এবং স্বয়ং কঙ্গনা রানাওত আপত্তিকর আচরণের অভিযোগ করেছেন।
এছাড়াও ফ্লিপকার্ট-এর সিইও বিনি বনশলকে ইস্তফাও দিতে হয়েছে তার পূর্ববর্তি আপত্তিকর আচরণ এবং মহিলাদের ওপরে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে। প্রাক্তন ইউনিয়ন মিনিস্টার এম জে আকবরের বিরুদ্ধেও ৬জন মহিলা সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের অভিযোগ এনেছেন।
#MeToo Stories – কয়েকজন সাধারণ মহিলা তাঁদের ওপরে হওয়া সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট এবং যৌন শোষণের কথা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।
খেয়াল করে দেখবেন অনেক মহিলাই (এবং পুরুষও) নিজের সোশ্যাল মিডিয়াতে স্ট্যাটাস আপডেট করেছেন বা করছেন #MeToo এই কথাটি লিখে। অনেকে সেটাকে সাপোর্ট করছেন আবার অনেকেই বলছেন আদিখ্যেতা। তবে আপনাদের মনে কখনও এই প্রশ্নটা জেগেছে যে কেন এই দুটো শব্দ নিয়ে এতো কথা চলছে? তার কারণ, সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট এবং যৌন নিপীড়ন সমাজের এমন ব্যাধি যা সবসময়ে হয় ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে অথবা ইগনোর করা হয়েছে, কিন্তু তার কোনও প্রতিকার করা হয়নি। মি টু মানে কিন্তু এটা বোঝানো যে ‘আমিও ব্যক্তিগতভাবে এই সামাজিক ব্যাধির শিকার হয়েছি এবং আমার প্রতিবাদ করার অধিকার আছে এবং আমার সঠিক বিচার চাই’। তবে এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো, সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট, যৌন নিপীড়ন বা শোষণ মানে কিন্তু ‘ধর্ষণ’ নয়, যেকোনো রকম আপত্তিকর আচরণই কিন্তু সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট-এর পর্যায়ে পড়ে। এই মি টু মুভমেন্টকে সাপোর্ট করতে POPxo বাংলা কয়েকজন সাধারণ মেয়ের সাথে কথা বলেছে এবং তাঁরা তাঁদের কাহিনী আমাদেরকে বলেছেন –
“আর তখন আমি বুঝলাম যে লোকটা প্যান্টের ওপর দিয়ে নিজের পুরুষাঙ্গ ধরে রয়েছে। তখন দুপুর ৩টে আর জায়গাটা ছিল ফ্লাইওভার”
রোজকার মতো সেদিনও আমি কলেজ থেকে ফিরছিলাম। তখন দুপুর ৩টে বাজে। ওই সময়টা আমি মেট্রো স্টেশন থেকে হেঁটেই বাড়ি ফিরি। কানে হেডফোন গুঁজে গান শুনতে শুনতে ওই পথটুকু হাঁটতে আমার ভালো লাগে। সেদিন যখন আমি ফ্লাইওভার পার হচ্ছিলাম, দেখলাম একটা ছেলে রেলিং-এর ওপরে বসে আছে। খুব বেশি বয়স না ছেলেটার। আমি অত পাত্তা না দিয়ে নিজের মনে হেঁটে যাচ্ছিলাম। কিন্তু হঠাত ঘাড়ের কাছে কিছু একটা ঠেকায় আমি যেই পিছন ফিরলাম দেখি ওই ছেলেটা ঠিক আমার পেছনে দাঁড়িয়ে। আর এমনভাবে দাঁড়িয়ে আছে যে আমি এগতে বা পিছতে পারছিলাম না। প্রথমে একটু ভয় পেলেও একটু বাদেই আমার মুখে বিরক্তি ফুটে উঠলো। সেটা দেখে হয়ত ছেলেটা বুঝতে পেরেছিল যে আমি খেয়াল করেছি ও প্যান্টের অপর দিয়ে নিজের পুরুষাঙ্গ ধরে রয়েছে। কোন কিছু না বলেই হঠাত উলটো দিকে দৌড় দিল ছেলেটা। ঘেন্নায় আমার সারা শরীর গুলিয়ে উঠেছিল। ভর দুপুরে একটা ছেলে এরকম অসভ্যতা যদি করতে পারে তাহলে সন্ধ্যার পর অনেক গুলো ছেলে একটা মেয়ের সাথে কি কি করতে পারে সেটা ভেবে আমি এখনও কেঁপে উঠি। Yes, #MeToo
ইশিতা শর্মা – জুনিয়র লাইফস্টাইল এডিটর
“আমি ওয়াশরুম থেকে বেরোতেই যাচ্ছিলাম কিন্তু আমার থেকে একটু বড় একটা লোক আমাকে জোর করে ভেতরে ঠেলে দিয়েছিল”
আমার তখন ১৬ বছর বয়স আর ওই বয়সে বন্ধুদের সাথে পার্টি করতে সবারই মজা লাগে। আমরা সব বন্ধুরা মিলে নিজেদের মতো করে একজনের ফার্ম হাউজে পার্টি করছিলাম। কোনও কারণে আমি ওয়াশরুমে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে বেরতে যাচ্ছিলাম কিন্তু হঠাতই আমার থেকে একটু বড় একটা লোক আমাকে ধাক্কা দিয়ে ওয়াশরুমের ভেতরে ঠেলে দিয়েছিল। আমার এখন ভালো করে পুরো ঘটনাটা মনে না থাকলেও এটুকু মনে আছে যে আমিও ভয় পেয়েছিলাম ঘটনার আকস্মিকতায়, তবে লোকটাকে ধাক্কা মেরে বেরিয়ে এসছিলাম। সারারাত খুব কেঁদেছিলাম। আমার বন্ধুরা আমাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিল। লোকটাকে ধরা গেলেও সেই সময়ে তাকে পুলিশে দেওয়া হয়নি, বরং তাকে পার্টি থেকে বার করে দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকে আমি মানসিকভাবে খুব ভেঙ্গে পড়েছিলাম। বেশ অনেকদিন ওই ঘটনা মনে পরলেই আমি ভয় পেতাম আর কেঁদে ফেলতাম।
নিত্যা উপল – সহ সম্পাদিকা
“ভগবানের অশেষ কৃপা যে আমি বুদ্ধি করে লোকটাকে গাড়ি চালিয়ে যেতে বলেছিলাম সেদিন”
গ্র্যাজুয়েশনের সময়ে আমি গার্গী কলেজে পড়তাম। তখন আমার দ্বিতীয় বর্ষ, আর আমি কলেজের ব্যান্ডে পারফর্ম করতাম। একদিন প্রাক্টিস শেষে বাড়ি ফেরার জন্য অটো নেব, তখন এতো কথায় কথায় ওলা বা উবের ছিলোনা; হঠাত একটা গাড়ি এসে দাঁড়ালো আমার সামনে। আমি সিরি ফোরটের রাস্তায় দাঁড়িয়ে অটোর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। তখন বিকেলের দিক আর অদ্ভুতভাবে জায়গাটা ফাঁকা ছিল সেদিন। গাড়ির চালক আমাকে ভেতরে বসতে বলল। আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না যে কি হচ্ছে, একটা অচেনা লোকের গাড়িতে যে লিফট নেওয়াটা সেফ না সেটা আমি জানতাম। “তুমি কলেজে পড়ো তাই না?” লোকটি আমাকে জিজ্ঞেস করতে আমি হ্যাঁ বলায় আমাকে বলল যে আমি ‘কমনওয়েলথ গেমস’-এর জন্য ভলেন্টিয়ার হতে ইচ্ছুক কিনা। একথা কেন জিজ্ঞেশ করছে সেটা জানতে চাওয়ায় গাড়ির চালক আমাকে বলল যে সে নাকি আমাকে চাকরি দিতে পারে তবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যেহেতু এতো কথা হয়না তাই আমাকে তার সাথে হোটেলে যেতে হবে এবং সেখানে তার ঘরে বসে সব কথা হবে। আমি প্রচণ্ড অস্বস্তি বোধ করছিলাম, সেই সাথে আমার রাগও হচ্ছিল আর ভয়ও লাগছিল, কারণ রাস্তাটা একদম ফাঁকা ছিল আর কোনও অটোও আসছিল না যে আমি উঠে পড়ব। “কেন ভয় পেলি নাকি? মেয়ে হয়ে এরকম ব্রা পরিস আবার ভয় পাস?” – লোকটা রীতিমত এবারে তুই-তোকারি করতে আরম্ভ করেছিল। আমি একটা হল্টার নেক ব্রা পরেছিলাম যার ওপরে ফুলহাতা টিশার্ট পরা ছিল আমার আর সাথে জিন্স। তাতেও মানুষের কটূক্তি দেখে আমি সত্যিই অবাক হয়ে গেছিলাম। ভাগ্যিস বুদ্ধি করে সেদিন আমি লোকটাকে বলেছিলাম, “না ধন্যবাদ, আমার লিফটের দরকার নেই, আমি আমার বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছি।” লোকটা গাড়ি চালিয়ে খানিকটা সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। ভগবানের অশেষ কৃপা যে একটু পরেই একটা অটো এলো। যদিও অটোওয়ালা সেদিন অনেক বেশি ভাড়া চেয়েছিল কিন্তু আমি দরাদরি না করেই বেশি ভাড়া দিয়েই অটোতে উঠে পড়েছিলাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
“আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ও আমার কোমর জড়িয়ে ধরে আমার ঠোঁটে চুমু খেতে আরম্ভ করল”
আমার তখন ১১ বছর বয়স। স্কুলে গরমের ছুটি চলছিল। আমি আর আমার দিদি মা-বাবার সাথে মুম্বাই বেড়াতে গিয়েছিলাম। আসলে আমাদের এক আত্মীয়ের বিয়ে ছিল। সেই সূত্রেই মুম্বাই যাওয়া। যেদিন আমাদের আত্মীয়ের বিয়ে ছিল সেদিন রাতেই যে আমার সাথে এতবড় একটা দুর্ঘটনা ঘটবে সেটা আমি দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি! আমার বাবার এক পরিচিত যাকে আমি ‘কাকু’ বলে ডাকতাম, সে হঠাত আমার সাথে এসে গল্প জুড়ে দিল। আমার পড়াশুনা কেমন চলছে, বাকি আর কি কি করি ইত্যাদি খেজুরে আলাপ। এখানে বলে রাখা ভালো, যেখানে বিয়ে ছিল এবং যারা বিয়েতে নিমন্ত্রিত ছিলেন সবাই কিন্তু ‘সম্ভ্রান্ত’ পরিবারের, এই ‘কাকু’ও। হঠাত একথা-ওকথা বলতে বলতে আমি খেয়াল করলাম যে আমরা একটা কোনায় চলে এসছি এবং জায়গাটা অন্ধকার অন্ধকার। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ‘কাকু’ আমার কোমর জড়িয়ে ধরে আমার ঠোঁটে চুমু খেতে আরম্ভ করল। অনেকটাই ছোট ছিলাম, কি হচ্ছিল ঠিক না বুঝলেও এটুকু বুঝতে পেরেছিলাম যে যাই হচ্ছে সেটা ঠিক হচ্ছে না। কিন্তু বাড়িতে যেহেতু আমাদেরকে শেখানো হয়েছিল যে ‘বড়দের সম্মান করতে হয়’ তাই আমি শুধু এটুকু বলতে পেরেছিলাম যে আমাকে বাথরুমে যেতে হবে…
মানস্বী জেটলি – ওয়েডিং এডিটর
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!