আগামী লোকসভা (General Election 2019) নির্বাচনের প্রার্থী তালিকায় প্রায় ৪০ শতাংশ সিট মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়। তাতে বেশ কিছু বছর ধরে সক্রিয় রাজনীতিতে থাকা মুনমুন সেন এবং শতাব্দী রায়ের নাম যেমন জায়গা করে নিয়েছে, তেমনি নতুনদের তালিকায় নাম রয়েছে টলিউড অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী এবং নুসরত জাহানেরও (Nusrat Jahan)। কিন্তু এই দুই সেলিব্রিটিকে নির্বাচনের টিকিট দেওয়া কি আদৌ ঠিক সিদ্ধান্ত হয়েছে? প্রশ্ন তুলছে আমজনতা। এমনকি কয়েকজন তো মিমি এবং নুসরতকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে সরাসরি ব্যঙ্গ করতেও ছাড়েনি (Mimi Chakraborty and Nusrat Jahan trolled on socil media)।
সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং “ফ্রিডম অব স্পিচ” এক অন্য মাত্রায় গিয়ে পৌঁছেছে। আজ চিত্রতারকা থেকে রাজনীতিবিদ, এমনকি খেলোয়াড়রাও র্যাডারের বাইরে নয়। যেই না একটা ভুল পদক্ষেপ, অমনি মতামতের ফুলঝুরি ছোটে সমগ্র সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে। যদিও এমনটা হওয়া ভুলও নয়, বরং কিছু ক্ষেত্রে কাঙ্খিত বটে। কারণ আমাদের সমাজ ঠিক দিকে যাবে, না ভুল দিকে, তা তো সাধারণ মানুষই ঠিক করবে। আর তাই মত প্রকাশের প্রয়োজন আছে বৈকি।
কিন্তু হঠাৎ করে এই দুই অভিনেত্রীকে (Mimi Chakraborty) নিয়ে এত ক্ষোভ কেন জনতার? আসলে বেশিরভাগই প্রশ্ন তুলছেন কোন যোগ্যতায় এদের টিকিট দেওয়া হল। তাই তো একজন লিখেছেন…
Bong glam dolls like mimi n nusrat r contesting from TMC. What a cheap way to get votes? Is this empowerment ? Nusrat is gf of prime accused kadir khan, of park street rape case. #TMC #MamataBanerjee #mimichakraborty #NusratJahan #Bengal
— tanaya12345 (@tanayadutta) March 13, 2019
কেউ কেউ তো সরাসরি আক্রমণ করতেও ছাড়েনি…
Election h ya ..?
TMC Loksabha candidates Mimi Chakravarty & Nusrat Jahan soliciting votes jointly for both their constituencies!
Keep it up babes ! pic.twitter.com/QEAkwN3CAo
— I❤ India 🇮🇳 Chowkidar🙏 Big Breaking 🇮🇳 (@big_breaking_) March 14, 2019
দ্বন্দ্বটা যোগ্যতা আর জনপ্রিয়তার:
প্রার্থী লিস্ট ঘোষণা হওয়ার পর (Lok Sabha Election 2019) সিংহভাগ মানুষই একটা কথাই বলছেন। তাদের মতে ক্যান্ডিডেট হিসেবে এমন প্রার্থী নির্বাচন করা উচিত ছিল যারা এই দেশ বা সমাজের জন্য কিছু করেছেন। শুধু ভোট ব্যাঙ্কের কথা ভেবে রাজনীতিতে সদ্য নাম লেখানো মিমি বা নুসরতকে নির্বাচন করা মোটে ঠিক হয়নি! তবে এমন ঘটনা যে এই প্রথম ঘটছে, এমনটা বলা যায় না। গত লোকসভা নির্বাচনে প্রথমবার দাঁড়িয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিলেন আরেক জনপ্রিয় টলিউট অভিনেতা দেব। এমনকি বাবুল সুপ্রিয়র কথা ভুলে গেলেও চলবে না। কারণ তিনিও সেবার প্রথমবারের জন্য ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। আর সাধারণ মানুষ কিন্তু সেবার যোগ্যতার পরিবর্তে জনপ্রিয়তাকেই বেছে নিয়েছিল। তাই শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় হইহুল্লোর করলেই চলবে না, বরং আমজনতাকে ভোট দেওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে তারা যেন ভুল করে আরও একবার যোগ্যতার পরিবর্তে জনপ্রিতার স্রোতে ভেসে না যায়!
যাদবপুর এবং বসিরহাট:
বাংলার রাজনীতিতে এই দুই জায়গার গুরুত্ব কম নয়। কারণ এক সময় সব হেভিওয়েট নেতারা এই দুই লোকসভা কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়াতেন। তাই মিমি এবং নুসরতের ক্ষেত্রে ভোটের লড়াইটা যে সহজ হবে না, তা তো বলাই বাহুল্য।
তৃণমূল কি না ভেবেচিন্তেই এদের নির্বাচন করেছে?
না, এমনটা ভেবে নেওয়াটা ভুল হবে। কারণ এবারের ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস যেমন নতুন এবং কম বয়সী ভোটারদের পকেটস্থ করতে চায়, তেমনি বরাবরের মতো সংখ্যালঘু ভোটে যাতে চিড় না ধারে, সেই নিয়েও চিন্তা রয়েছে। উপরন্তু বিজেপির জনপ্রিতা ধীরে হলেও যে বাড়ছে, সেটাও উপেক্ষা করা সম্ভব নয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে। তাই এমন পরিস্থিতিতে টলিউড অভিনেত্রীদের প্রার্থী হিসেবে বেছে নেওয়াটা যে একেবারে হাওয়ায় গুলি চালানো নয়, বরং পরিকল্পিকত মাস্টার স্ট্রোক, তা তো বলাই বাহুল্য!
ছবির কৃতজ্ঞতা স্বীকার: instagram
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!