সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সিগারেট পুড়িয়ে দিয়েছে অপর্ণা সেনের শাড়ি। অপমানিত সৌমিত্র বলছেন তিনি আত্মহত্যা করবেন।ভালোমানুষ মুখ করে চিন্ময় রায়ের (Chinmoy Roy) প্রশ্ন সৌমিত্র কি অপর্ণাকে চোখ মেরেছিলেন?উত্তেজিত সৌমিত্রকে আরও একটু উস্কে দিয়ে ফুট কাটেন চিন্ময় (Chinmoy Roy)। তারপর সেই বিখ্যাত সংলাপ, “চোখ মারাটা কোনও ক্রাইম নয়, পকেট মারা ইজ আ ক্রাইম!’’ ব্যাস দর্শকও হেসে কুটোপাটি। বুঝতেই পারছেন আমি ‘বসন্ত বিলাপ’ ছবিটার কথা বলছি। আর শুধু এই ছবিটাই নয় আরও অসংখ্য ছবিতে হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরিয়ে দিয়েছেন তিনি। তিনি হাসির রাজা চিন্ময় রায় (Chinmoy Roy)।কাল রাত দশটা নাগাদ আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন তিনি। আমাদের বিনম্র প্রণাম এই বর্ষীয়ান অভিনেতাকে। রইল চিন্ময় রায়ের (Chinmoy Roy) সেরা ১০টি ছবির তালিকা, যা তাঁকে চিরস্মরণীয় করে রাখবে বাঙালির কাছে।
চারমূর্তি
নারায়ন গঙ্গোপাধ্যায়ের বিখ্যাত চরিত্র ‘টেনিদা’কে অমর করে দিয়েছেন চিন্ময় রায়। এখনও আমরা টেনিদা বলতে তাঁকেই বুঝি। টেনিদা ও তার তিন চেলা হাবুল, ক্যাবলা আর প্যালা পরিক্ষার পর ছুটি কাটাতে চলে যায় ঝনটিপাহাড়ি। আর সেখানেই নানা রহস্য আর মজা।
বসন্ত বিলাপ
এই ছবি দিয়েই আজকের লেখা শুরু করেছি। দমফাটা হাসির ছবিতে চিন্ময় রায়ের সঙ্গে যোগ্য সঙ্গতে হাস্য সম্রাট রবি ঘোষ ও অনুপ কুমার। চিন্ময় রায়ের মুখে সেই বিখ্যাত সংলাপ, “একবার বোলো উত্তমকুমার” কাল্ট সংলাপে পরিণত হয়েছে।
ননী গোপালের বিয়ে
মুখ্য চরিত্রে অবশ্যই চিন্ময় রায়। আর নায়িকা মানসীর ভূমিকায় চিন্ময় রায়ের বাস্তব জীবনের সহধর্মিণী জুঁই বন্দ্যোপাধ্যায়। তরুণ ছাত্র ননী আর মানসীর প্রেম, তাদের পরিবারের সঙ্গে ঝামেলা, দুজনের মনোমালিন্য এবং আবার এক হয়ে ছাদনাতলায় যাওয়া এইসব নিয়েই নানা মজাদার মুহূর্তে ভরা এই ছবি।
আপনজন
ভারী সুন্দর মায়াময় এই ছবি। যদিও এই ছবির নায়ক বলুন আর নায়িকাই বলুন সবই ছায়াদেবী। তবু চিন্ময় রায় তার ছোট্ট চরিত্রে বড় ছাপ রেখে গেছেন। ছায়াদেবী যখন পাড়ার ছেলেদের কাছে তার অল্প বয়সের গল্প বলছেন তখনই ফ্ল্যাশব্যাকে আসেন চিন্ময়। অল্প বয়সী ছায়াদেবীর স্বামীর চরিত্রে তিনি। স্বদেশী করেন, গলা ছেড়ে গান করেন, আবার বউকে ভালোবাসেন। অন্যরকম চরিত্রে দুর্দান্ত চিন্ময়।
মৌচাক
উত্তম সাবিত্রীর হিট জুটি। সঙ্গে মিষ্টি সঙ্গতে রঞ্জিত মল্লিক আর মিঠু মুখার্জি। তবে চাকরের ভূমিকায় নিজস্ব ছাপ রেখে গেছেন তিনি।
গল্প হলেও সত্যি
চাকরের চরিত্রের কথা যখন উঠল তখন এই ছবির উল্লেখ না করে পারছিনা। যদিও এই ছবি এক এবং একমাত্র রবি ঘোষের। তবু চিন্ময়ের মুখে সেই বিখ্যাত সংলাপ, “চাকরকে কি কেউ ঘরের ছেলে ভাবে মা? এসব চাকর ভুলানো কথা!’’ বাঙালি মনে রাখবে চিরদিন।
ধন্যি মেয়ে
বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় বিষয় ফুটবল নিয়ে এই ছবি। তবে একদম ফাটাফাটি রোলে চিন্ময়। যার জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য জয়া ভাদুড়ি আর পার্থ মুখোপাধ্যায়ের মধ্যে ডিভোর্স করানো। বঁটি হাতে চিন্ময়ের পিছনে ছুটছেন জয়া। আজও এই দৃশ্য দেখে হেসে খুন হন বাঙালি।
গুপি গায়েন বাঘা বায়েন
ছোট্ট চরিত্র কিন্তু তিনি আজও অমলিন। হাল্লার দুষ্টু মন্ত্রীর বেচারা গুপ্তচর হিসেবে চিন্ময়ের চরিত্র মনে রাখবেন সবাই।
এখনি
তপন সিনহার এই ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ সহ অভিনেতার বিএফজে পুরস্কার পেয়েছিলেন চিন্ময় রায়।
সোরগোল
বদমেজাজি নায়িকা আল্পনা গোস্বামীকে শায়েস্তা করতে আসে বিশ্বজিৎ। এদিকে আল্পনার প্রেমিক চিন্ময় রায়। সে দাবি করে তার নাকি প্যারিসে জন্ম অথচ জাতে সে রেড ইনডিয়ান। আর সেই নিয়ে নানা হাসির মুহূর্ত।
Picture Courtsey : YOUTUBE
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!